
নিজস্ব প্রতিবেদক:
জলবায়ু পরিবর্তনের ধারাবাহিক অভিঘাতে পৃথিবীর ওপর চাপ বাড়ছে প্রতিনিয়ত। গাছপালা, মাটি, পানি ও মানুষের পরম্পরাগত সহাবস্থানে নেমে এসেছে নৈরাজ্য। দিন দিন গরমকাল দীর্ঘতর হচ্ছে, বৃষ্টির মৌসুমের আচরণ পাল্টে যাচ্ছে, আর এই পরিবর্তনের অনিবার্য পরিণতি হিসেবে দেখা দিচ্ছে মরুকরণ। বিশ্বের শুষ্ক অঞ্চলগুলো ক্রমেই রুক্ষ, অনুর্বর ভূমিতে রূপ নিচ্ছে।
গবেষণা বলছে, বর্তমানে পৃথিবীর প্রায় সাত ভাগ শুষ্ক ভূমি মরুকরণের শিকার, যার পরিমাণ প্রায় পৃথিবীর এক চতুর্থাংশ ভূমির সমান। অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার, ভূগর্ভস্থ পানি নিঃশেষকরণ, বন উজাড়, অপ্রয়োজনীয় চাষাবাদ এবং অতিরিক্ত খনিজ আহরণের ফলে এসব ভূমি উৎপাদন ক্ষমতা হারাচ্ছে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বিষয়টি আরও উদ্বেগজনক। একদিকে প্রতিবেশী দেশের একতরফা পানি প্রত্যাহার, অন্যদিকে খরা, অল্প বৃষ্টিপাত ও অপ্রত্যাশিত আবহাওয়ার কারণে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল দ্রুত শুষ্ক এলাকায় রূপ নিচ্ছে। বিশেষ করে পদ্মা ও গঙ্গা অববাহিকার অঞ্চলগুলোতে পানির অভাবে জমি চাষের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। উত্তরাঞ্চলের নদ-নদী শুকিয়ে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে এই সব অঞ্চল মরু ভূমিতে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা প্রবল।
বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষকরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বিগত শতকে প্রায় এক ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি বেড়েছে। বর্তমান হারে তাপমাত্রা বাড়তে থাকলে ২০৫০ সালের মধ্যে আরও দেড় ডিগ্রি বাড়তে পারে। এর প্রভাবে হিমবাহ গলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে বাংলাদেশসহ উপকূলীয় দেশগুলো তলিয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে পড়বে। একই সাথে মরুকরণের ফলে উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা ফসলহীন ও পানিশূন্য হয়ে পড়বে।
জাতিসংঘের উদ্যোগে ১৯৯২ সালে পরিবেশ রক্ষায় একটি আন্তর্জাতিক সনদ গৃহীত হয়। সেই সনদের আওতায় মরুকরণ প্রতিরোধে বৈশ্বিক কর্মসূচি নেওয়া হলেও, বাস্তবতায় অধিকাংশ উন্নয়নশীল দেশ এখনও প্রয়োজনীয় সহায়তা থেকে বঞ্চিত। ফলে স্থানীয় জনগণ, বিশেষ করে কৃষিজীবীরা টিকে থাকার সংগ্রামে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
বাংলাদেশের পরিবেশবিদরা বলছেন, এখনই পরিকল্পিত ভূমি ব্যবহার, বৃক্ষরোপণ, জলাধার সংরক্ষণ এবং প্রাকৃতিক সম্পদের সুষম ব্যবহার নিশ্চিত করা না গেলে আগামী এক দশকের মধ্যেই বাংলাদেশে খাদ্য ও পানির সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করবে।
বিশ্বে বহু এলাকা ইতোমধ্যেই মরুকরণে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। আফ্রিকার সাহারা অঞ্চল, মধ্যপ্রাচ্যের বিস্তীর্ণ অঞ্চল, দক্ষিণ আমেরিকার কিছু অংশ, এমনকি ভারতের রাজস্থান ইতোমধ্যে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। বাংলাদেশও সেই পথেই হাঁটছেÑ যদি না এখনই যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
পরিবেশবিদদের মতে, টেকসই কৃষি, পানিসংরক্ষণ, বিকল্প শক্তি ব্যবহার এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধিই হতে পারে এই ভয়াবহ সংকট প্রতিরোধের একমাত্র পথ। মরুকরণের গতিরোধ না করা গেলে পৃথিবীর খাদ্য ভাণ্ডার এক সময় রিক্ত হয়ে পড়বে, যা মানবসভ্যতার জন্য চরম হুমকি।
তাপমাত্রাবৃদ্ধিতে মরুকরণের ঝুঁকিতে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়া
জলবায়ু পরিবর্তনের ধারাবাহিক অভিঘাতে পৃথিবীর ওপর চাপ বাড়ছে প্রতিনিয়ত। গাছপালা, মাটি, পানি ও মানুষের পরম্পরাগত সহাবস্থানে নেমে এসেছে নৈরাজ্য। দিন দিন গরমকাল দীর্ঘতর হচ্ছে, বৃষ্টির মৌসুমের আচরণ পাল্টে যাচ্ছে, আর এই পরিবর্তনের অনিবার্য পরিণতি হিসেবে দেখা দিচ্ছে মরুকরণ। বিশ্বের শুষ্ক অঞ্চলগুলো ক্রমেই রুক্ষ, অনুর্বর ভূমিতে রূপ নিচ্ছে।গবেষণা বলছে, বর্তমানে পৃথিবীর প্রায় সাত ভাগ শুষ্ক ভূমি মরুকরণের শিকার, যার পরিমাণ প্রায় পৃথিবীর এক চতুর্থাংশ ভূমির সমান। অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার, ভূগর্ভস্থ পানি নিঃশেষকরণ, বন উজাড়, অপ্রয়োজনীয় চাষাবাদ এবং অতিরিক্ত খনিজ আহরণের ফলে এসব ভূমি উৎপাদন ক্ষমতা হারাচ্ছে।
বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বিষয়টি আরও উদ্বেগজনক। একদিকে প্রতিবেশী দেশের একতরফা পানি প্রত্যাহার, অন্যদিকে খরা, অল্প বৃষ্টিপাত ও অপ্রত্যাশিত আবহাওয়ার কারণে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল দ্রুত শুষ্ক এলাকায় রূপ নিচ্ছে। বিশেষ করে পদ্মা ও গঙ্গা অববাহিকার অঞ্চলগুলোতে পানির অভাবে জমি চাষের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। উত্তরাঞ্চলের নদ-নদী শুকিয়ে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে এই সব অঞ্চল মরু ভূমিতে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা প্রবল।
বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষকরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বিগত শতকে প্রায় এক ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি বেড়েছে। বর্তমান হারে তাপমাত্রা বাড়তে থাকলে ২০৫০ সালের মধ্যে আরও দেড় ডিগ্রি বাড়তে পারে। এর প্রভাবে হিমবাহ গলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে বাংলাদেশসহ উপকূলীয় দেশগুলো তলিয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে পড়বে। একই সাথে মরুকরণের ফলে উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা ফসলহীন ও পানিশূন্য হয়ে পড়বে।
জাতিসংঘের উদ্যোগে ১৯৯২ সালে পরিবেশ রক্ষায় একটি আন্তর্জাতিক সনদ গৃহীত হয়। সেই সনদের আওতায় মরুকরণ প্রতিরোধে বৈশ্বিক কর্মসূচি নেওয়া হলেও, বাস্তবতায় অধিকাংশ উন্নয়নশীল দেশ এখনও প্রয়োজনীয় সহায়তা থেকে বঞ্চিত। ফলে স্থানীয় জনগণ, বিশেষ করে কৃষিজীবীরা টিকে থাকার সংগ্রামে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
বাংলাদেশের পরিবেশবিদরা বলছেন, এখনই পরিকল্পিত ভূমি ব্যবহার, বৃক্ষরোপণ, জলাধার সংরক্ষণ এবং প্রাকৃতিক সম্পদের সুষম ব্যবহার নিশ্চিত করা না গেলে আগামী এক দশকের মধ্যেই বাংলাদেশে খাদ্য ও পানির সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করবে।
বিশ্বে বহু এলাকা ইতোমধ্যেই মরুকরণে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। আফ্রিকার সাহারা অঞ্চল, মধ্যপ্রাচ্যের বিস্তীর্ণ অঞ্চল, দক্ষিণ আমেরিকার কিছু অংশ, এমনকি ভারতের রাজস্থান ইতোমধ্যে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। বাংলাদেশও সেই পথেই হাঁটছেÑ যদি না এখনই যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হয়।পরিবেশবিদদের মতে, টেকসই কৃষি, পানিসংরক্ষণ, বিকল্প শক্তি ব্যবহার এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধিই হতে পারে এই ভয়াবহ সংকট প্রতিরোধের একমাত্র পথ। মরুকরণের গতিরোধ না করা গেলে পৃথিবীর খাদ্য ভাণ্ডার এক সময় রিক্ত হয়ে পড়বে, যা মানবসভ্যতার জন্য চরম হুমকি।