দৈনিক মাতৃভূমির খবরের সাংবাদিক পরিচয়ের আড়ালে মাদক কারবার, ৫০ কেজি গাঁজাসহ আটক ৪

 

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

সাংবাদিক পরিচয়ের আড়ালে মাদক কারবার করতো চক্রটি। ৫০ কেজি গাঁজাসহ র‍্যাবের হাতে আটক হয়েছেন চক্রের চারজন।

মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র‍্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেনেন্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।

আটকরা হলেন, বগুড়া জেলার ধুনট থানার খাদুলি গ্রামের প্রয়াত আবু বক্কর শেখের ছেলে মো. মুকুল হোসেন ওরফে মকবুল আহমেদ, তার সহযোগী কুমিল্লা জেলার বুড়িচং থানার চরণল গ্রামের প্রয়াত বসু মিয়ার ছেলে মো. আব্দুল শাহীন ওরফে নোমান হোসেন, একই গ্রামের মো. আমির আলীর ছেলে আল-আমিন হোসেন, নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও থানার গোপেরবাগ গ্রামের মো. নবীনের ছেলে মো. ফয়সাল।

সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব জানায়, সোমবার দিবাগত রাতে রাজধানীর বংশাল এলাকায় অভিযান চালায় র‍্যাব। অভিযানে একটি ব্যক্তিগত গাড়ির পেছনে বিশেষ কায়দায় লুকানো তিনটি ব্যাগ থেকে ৫০ কেজি গাঁজা জব্দ করা হয়।

র‍্যাব-৩ এর অধিনায়ক বলেন, মাদক কারবারি চক্রের মূলহোতা মুকুল হোসেন ওরফে মকবুল আহমেদ নিজেকে নারায়ণগঞ্জ ভিত্তিক লোকাল পত্রিকা দৈনিক মাতৃভূমির খবরের সিনিয়র ক্রাইম রিপোর্টার পরিচয় দিতেন। তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে চতুরতার মাধ্যমে কুমিল্লাসহ নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যক্তিগত গাড়িতে করে অবৈধ মাদকদ্রব্য গাঁজার চালান এনে তার অন্য তিন সহযোগীসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় নিজেদের হেফাজতে রেখে বিক্রি করতেন।

তার প্রধান সহযোগী ফয়সাল বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তার ব্যক্তিগত গাড়ির চালক। ছুটির দিনে বা অবসর সময়ে সুযোগ বুঝে ফয়সাল ওই গাড়িটিকে ব্যবহার করে এই চক্রের সঙ্গে মিলে মাদক চোরাচালান করতেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, গাড়ির মালিকের ব্যবহৃত আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিটের স্টিকার ব্যবহার করে তিনি নিয়মিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে বিপুল মাদকদ্রব্য আনা নেওয়া করতেন। চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে মাদক পরিবহনের সময় পথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তল্লাশি চৌকি থেকে রক্ষা পেতে নিজেদের সাংবাদিক পরিচয় দিত।

র‍্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, মূলহোতা মুকুল হোসেন গত ২৫ বছর ধরে বিভিন্ন পরিবহনের চালক হিসেবে কাজ করতেন। তিনি অবৈধ পথে সহজেই অধিক অর্থ উপার্জনের আশায় ২০১৬ সাল থেকে মাদক কারবারে যুক্ত হন। মাদক কারবারে জড়িত থাকায় চলতি বছর তিনি চাকরিচ্যুত হন। পরে চলতি বছরের জুন মাস থেকে নারায়ণগঞ্জ ভিত্তিক স্থানীয় পত্রিকা দৈনিক মাতৃভূমির খবরের গাড়ি চালক হিসেবে চাকরি নেন। চাকরির পাশাপাশি তিনি পত্রিকার লগো ব্যবহার করে গাড়িতে মাদক চোরাচালান করতেন।

পরে তার বিরুদ্ধে এসব অপকর্মের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেলে তাকে গত দুমাস আগে চাকরি থেকে বহিস্কার করা হয়। চাকরিচ্যুত হওয়ার সময় তিনি লুকিয়ে দৈনিক মাতৃভূমির খবর পত্রিকার লগো সম্বলিত একটি বুম নিয়ে আসেন। যা ব্যবহার করে মাদকদ্রব্য বহনকারী গাড়ি চালানোর সময় সিনিয়র ক্রাইম রিপোর্টার পরিচয় দিতেন। নারায়ণগঞ্জসহ কুমিল্লার বিভিন্ন এলাকা থেকে কৌশলে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গাঁজা এনে তার তিন সহযোগীসহ মাদকের বিশাল সিন্ডিকেট তৈরি করেন।

এদিকে মূলহোতা মুকুল হোসেনের নামে ২০০৮ সালে একটি সড়ক দুর্ঘটনায় এক ব্যক্তির মৃত্যুর দায়ে একটি হত্যা মামলাসহ একাধিক মাদক মামলা রয়েছে। ২০০৮ সাল থেকে আজ পর্যন্ত একাধিক মামলায় তিনি বিভিন্ন মেয়াদে হাজতবাস করেছেন।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে মালামাল না পেয়েই প্রায় ১৭ কোটি টাকার বিল পরিশোধ!

স্টাফ রিপোর্টার॥

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর মালামাল না পেয়েই প্রায় ১৭ কোটি টাকার বিল পরিশোধ করার অভিযোগ পাওয়াগেছে। আর এই বিলটি পরিশোধ করেছেন প্রাণিসম্পদ ঔষধাগারের পরিচালক ডা: মো: শাহিনুর ইসলাম । অবৈধভাবে ঠিকাদারের বিল পরিশোধের বিষয়ে মুল কলকাঠি নেড়েছেন স্টোর অফিসার ডা: আয়শা সুলতানা এবং মহাপরিচালক ড. আবু সুফিয়ান ।

সুত্র মতে, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের অধীনে সমগ্র বাংলাদেশের বিভাগীয় অফিস সমুহে কৃষকদের নিকট বিনামূল্যে গরু- ছাগল/হাঁস- মুরগীর ঔষধ সরবরাহ করার জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে বাৎসরিক ঔষধ ও ভিটামিন কেনা হয় এবং কেন্দ্রীয়ভাবে গ্রহন করে সকল দপ্তরে সরবরাহ করা হয়।

পরিচালক প্রাণিসম্পদ ঔষধাগার দপ্তর সুত্রে জানা যায়, ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে প্রায় ১৭ কোটি টাকার ঔষধ ও ভিটামিন, মিনারেল কেনার জন্য ৬ টি প্রতিষ্ঠানকে কার্য্যাদেশ প্রদান করা হয়। তনমধো (ক) একমি ল্যাবরেটরীজকে প্রায় ১০ কোটি, (খ) মেসার্স সুপার পাওয়ারকে প্রায় ৪ কোটি, (গ) মেসার্স ফার্মা এন্ড ফার্মকে প্রায় – ১.২০ কোটি, ( ঘ) মেসার্স মীর এসোসিয়েটস কে – ৬৭ লক্ষ টাকার ( ঙ) মেসার্স এসকে ট্রেডারসকে প্রায় ২০ লক্ষ টাকার ( চ) মেসার্স খান এন্টারপ্রাইজকে- প্রায় ১ কোটি টাকার । কিন্তু মূল বিষয় হলো কোন প্রতিষ্ঠানই ৫০% এর বেশী মালামাল সরবরাহ করেনি। এর মধো মীর এসোসিয়েটস এবং এমকি ল্যাবরেটরীজ ৩০% মালামাল সরবরাহ করেছে। অথাৎ ১৭ কোটি টাকার মধো মাত্র ৮ কোটি টাকার মালামাল সরবরাহ নিয়েই ঠিকাদারদের সমুদয় মালামাল গ্রহন কমিটি কতৃক গ্রহন এবং ভৃয়া স্টক এন্ট্রি দেখাইয়া স্টোর অফিসার ডা: আয়শা সুলতানা কতৃক ভৃয়া প্রত্যায়ন পত্র দিয়ে এজি হতে বিল পাশ করিয়ে ১৭ কোটি টাকার বিল পরিশোধ করা হয়েছে।

মালামাল না নিয়ে ঠিকাদারদের বিল পরিশোধের বিষয়ে পরিচালক ঔষধাগার ডা: শাহিনুর আলমের নিকট জানতে চাওয়়া হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে এ প্রতিবেদককে জানান, অবশিষ্ট মালামাল খুব শীঘ্রই পাওয়া যাবে এই শর্তে ঠিকাদারের বিল পরিশোধ করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, বিষয়টি ডিজি ড. মো: আবু সুফিয়ান মহোদয় জানেন।
অধিদপ্তরের একাধিক সুত্র জানান যে. ড. মো: আবু সুফিয়ান ডিজির দায়ি়ত্ব নেয়ার পর হতে কোন নিয়ম কানুনের ধার ধারেন না বা কাউকেই পাত্তা দেন না। তিনি তার ইচ্ছা মত যাকে খুশী কাজ বা সুবিধা দেন।
সুত্রটি আরোও জানায়, দেশের বিভিন্ন উপজেলা/ জেলা/ বিভাগীয় পর্যায়ের দপ্তরে বছরের শেষের দিকে শুধু অফিস সমুহ মেরামত/ সংরক্ষনের জন্য কয়েক কোটি টাকা রাজস্ব বাজেট হতে বরাদ্দ দিয়ে কাজ না করিয়েই সমুদয় টাকা ডিজি এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ভাগাভাগি করে নিয়েছেন। ঐ সকল দপ্তরের অফিস রক্ষণাবেক্ষণ এর কাজ এবং আনুষাংগিক খাতে খরচ সমুহ এলডিডিপি/ সক্ষমতা প্রকল্প সহ অন্যান্য প্রকল্প হতে করানো হয়েছে। খোদ অধিদপ্তরে গ্যারেজ রক্ষনাবেক্ষনের নামে ১% কাজ না করেই ২৫ লক্ষ টাকা আতনসাৎ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবু সুফিয়ানের সেল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি কল রিসিভ করেন নি।
বিষয়টি দুদুকের মাধ্যমে একটি টিম গঠন করে সরেজমিনে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য মন্ত্রণালয় ও দুদক চেয়ারম্যানের পদক্ষেপ কামনা করেছেন অধিদপ্তরের দেশ প্রেমিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ।

 

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম