কুমিরের দেখা মিলল রাজশাহীর পদ্মায়

নিজস্ব রিপোর্ট:

এক পাখিপ্রেমী দম্পতি পাখির ছবি তুলতে বেরিয়েছিলেন রাজশাহীর পদ্মার চরে । দেখা মিলেছেন কুমিরের। তাও আবার মিঠাপানির কুমির। প্রকৃতি সংরক্ষণবিষয়ক সংস্থাগুলোর জোট আইইউসিএন বাংলাদেশে বিলুপ্ত ঘোষণা করেছেন এই কুমিরকে । গত বৃহস্পতিবার বিকেলের  দিকে এই ঘটনা ঘটে । পাখির বদলে কুমিরের ছবি নিয়ে বাড়ি ফেরেন ইমরুল কায়েস-উম্মে খাদিজা ইভা দম্পতি।

গরু চরাতে গিয়ে সেদিন দুপুরে রাজশাহীর ষাটবিঘা চরের রাজু আহাম্মেদ প্রথম কুমিরটি দেখতে পান। রাজু জানান, কুমিরটি চরে উঠে এসেছিল। পানি থেকে তিন-চার হাত দূরে। তিনি তখন মুঠোফোনে গান শুনছিলেন। গান বন্ধ করে ছবি তুলতে গেলেই কুমিরটি পানিতে নেমে যায়। অনেকক্ষণ পর নিশ্বাস নেওয়ার জন্য একবার শুধু মুখ বের করেছিল। রাজুর সঙ্গে বন বিভাগের কর্মী সোহেল রানার পরিচয় রয়েছে। তিনি তাঁকে ফোন করে এই খবর দেন। এরপর রাজশাহী বন বিভাগের বন্য প্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বন্য প্রাণী পরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবির ফোন করেন ইমরুল কায়েসকে।

ইমরুল ও খাদিজা দম্পতির বাড়ি নগরের কাজীহাটা এলাকায়। সেখান থেকে অতি কাছেই পদ্মা নদী। নগরের শ্রীরামপুর আই বাঁধ থেকে অপর পাশে পদ্মা নদীতে যে চর পড়ে, সেখানে কাশবনের মধ্যে লাল মুনিয়া দেখা যায়। মুনিয়ার ছবি তোলার জন্য তাঁরা সেদিন সকাল সকাল নৌকা নিয়ে বেরিয়ে পড়েন।

খাদিজার ভাষায়, রোদের মধ্যে চরে হাঁটতে হাঁটতে খুব ক্লান্ত হয়ে পড়েন। ঘাটের দোকানে এসে চানাচুর, বিস্কুট ও কোমল পানীয় খেতে খেতেই ঘুমে তাঁর চোখ বন্ধ হয়ে আসছিল। ঠিক সেই মুহূর্তে কায়েসের মুঠোফোনে বন বিভাগের ফোনটা আসে। তারপর ঘুম ছুটে গেল। পাখি বাদ দিয়ে কুমিরের ছবির নেশায় নেমে পড়েন।

উম্মে খাদিজা বলেন, মাথার ওপরে তখন কড়া রোদ। অনেক ক্লান্ত। তবু ভাবছিলেন, এতটা পথ এসে কুমির না দেখে ফিরে যাবেন, তা হয় না। প্রায় হতাশ হয়ে তিনি কায়েসকে বলেন, কুমির মনে হয় এতক্ষণে চলে গেছে। তারপরও থেমে থাকতে পারলেন না। এদিকে তাঁরা যেখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন তার সামনের খাঁড়িতে কোমরসমান পানি। তাঁরা স্যান্ডেল খুলে ক্যামেরা মাথার ওপর ধরে খাঁড়ি পার হবেন, ভয়ে ছিলেন কোনোভাবে যাতে পা পিছলে না যায়।

খাদিজা বলেন, খাঁড়ি থেকে ওঠার পর বুঝতে পারছিলেন না আসলে কোন দিকে যাবেন। শেষমেশ না বুঝেই হাঁটা ধরেন, যেদিক দুচোখ যায়। হাঁটতে হাঁটতে একসময় একেবারে ভারতের সীমান্তে গিয়ে প্রত্যক্ষদর্শী রাজু আহাম্মেদের বাড়ি খুঁজে পান।

এবার রাজুকে সঙ্গে নিয়ে হাঁটতে লাগলেন। যেখানে রাজু কুমির দেখেছিলেন সেই খাঁড়ির কাছে এসে দেখেন কুমির নেই। খাদিজা বলেন, তখন মনটা আরও খারাপ হয়ে গেল। ধপাস করে একটা গাছের নিচে বসে পড়েন।

কিছুক্ষণ বসে থাকার পর কায়েস ড্রোন ওড়ালেন। প্রথমে ড্রোনটা তাঁদের ডান দিকে পাঠালেন। কৌতূহলী হয়ে তিনি কায়েসকে জিজ্ঞেস করলেন, কুমির পাওয়া গেল কি না। কায়েস মাথা নাড়া দিয়ে বোঝালেন কুমির নেই। শুনে তিনি হতাশ হয়ে মাথা নিচু করে বসে থাকলেন। একটু পর কায়েস হুট করে উত্তেজিত হয়ে বলে উঠলেন, ‘পাগলি, কুমির!’ তিনি খুশিতে লাফ দিয়ে উঠে দাঁড়ালেন। ড্রোন চালু রাখা অবস্থায় দুজনে কুমিরের দিকে হাঁটা ধরেন।

উম্মে খাদিজার ভাষায়, ‘কিছু দূর হাঁটতে হাঁটতে অবশেষে জীবনে প্রথম সামনাসামনি প্রকৃতিতে কুমিরের দেখা পেলাম। কায়েস ড্রোন দিয়ে কিছু ভিডিও নিল। আমি ক্যামেরায় কিছু ছবি তুললাম ও ভিডিও করলাম।’

ইমরুল কায়েস-উম্মে খাদিজা দুজনই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর। পেশায় তাঁরা আলোকচিত্রী।

এই কুমিরের বিষয়ে আইইউসিএনের মুখ্য গবেষক এ বি এম সারোয়ার আলম (সীমান্ত দীপু) বলেন, ২০১৫ সালে মিঠাপানির কুমিরকে বাংলাদেশে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। তারপরও পাবনায় একটা দেখা গেছে। অন্য জায়গায় আরও দুটি পাওয়া যায়। এ দুটোকে সুন্দরবনের করমজল সেন্টারে রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, এগুলো বাংলাদেশের প্রকৃতিতে বেড়ে ওঠা কুমির না হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এরা বয়স্ক। ভারতের চাম্বুল নদ থেকে আসতে পারে।

আইইউসিএনের এই গবেষক বলেন, বাংলাদেশে তিন প্রজাতির কুমির রয়েছে। এর মধ্যে লোনাপানির কুমির, যা দেখা যায় সুন্দরবনে; মিঠাপানির কুমির, যা ইতিমধ্যে বিলুপ্ত আর রয়েছে ঘড়িয়াল, যা পদ্মা–যমুনায় দেখা যায়।

শাহজাদপুরে এ.এন.এগ্রোভেট কারখানায় ভেজাল গবাদি পশুর ঔষধ উৎপাদন,প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তার নীরব ভূমিকা!

 

মোঃ ইব্রাহিম হোসেন:

সিরাজগঞ্জ শাহজাদপুর উপজেলার কুঠি সাত বাড়ীয়ায় এ.এন.এগ্রোভেট নামক একটি কারখানায় দীর্ঘদিন ধরে ভেজাল গবাদি পশুর ঔষধ উৎপাদন ও বাজারজাত করে আসছে, প্রাণীসম্পদ অফিসের নীরব ভূমিকা!

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পশুখাদ্য আইন,২০১০ এবং পশুখাদ্য বিধিমালা-২০১৩ এর আলোকে এ.এন.এগ্রোভেট নামক প্রতিষ্ঠান কে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর হতে পশুখাদ্য উৎপাদক/প্রক্রিয়াজাত কারক/ সংরক্ষক/বাজারজাতকারক (ক্যাটাগরি-১) হিসেবে শর্ত সাপেক্ষে লাইসেন্স প্রধান করেন, যার লাইসেন্স নং ৩৪৪(ক্যাটাগরি-১:ভেট প্রিমিক্স)অনুমোদন লাইসেন্স এর শর্ত অনুযায়ী এক হতে পাঁচ পর্যন্ত পণ্য গুলো প্রাথমিকভাবে অনুমোদন থাকলেও এ.এন.এগ্রোভেট প্রতিষ্ঠানটি কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন ধরে একাধিক পণ্য উৎপাদন এবং বাজারজাত করে আসছে।

সবুজ বাংলাদেশের অনুসন্ধানে বেড়িয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটির নানান রকম অনিয়ম। অনুসন্ধানে প্রতিষ্ঠানটি ঘুরে দেখা যায়, অত্যন্ত নোংরা পরিবেশের দুটি কক্ষে ঔষধ তৈরির বিভিন্ন কাঁচামাল,মোড়ক,লেভেল সঙ্গে গাদাগাদি করে ফেলে রেখেছে। এছাড়াও ভিতরে ঢুকতেই চোখে পড়ে বিভিন্ন অনিয়মের দৃশ্য! প্রতিষ্ঠানটিতে নেই কোন ল্যাব ও প্রয়োজনীয় আধুনিক যন্ত্রপাতি,এমনকি মিক্সার মেশিনটি দেখা যায় নষ্ট ! প্লাস্টিকের বালতিতে কাঁচামাল নিয়ে হাত দিয়ে তা মিশিয়ে বোতলে ভরা হচ্ছে আর এভাবেই মোড়ক/লেবেল লাগিয়ে তৈরি হচ্ছে ভেজাল গবাদি পশুর ঔষুধ! এছাড়াও অদক্ষ শ্রমিক দিয়ে ঔষধ তৈরি ও প্যাকিং করা হচ্ছে।
প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরের নিয়ম অনুযায়ী প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করার ক্ষেত্রে একজন দক্ষ কেমিস্ট ভেটেরিনারি মেডিসিন ডাক্তার(ডিভিএম) এর তত্ত্বাবধানে এ ধরনের ঔষধ তৈরি বাধ্যতামূলক হলেও এখানে-ও কোন নিয়মনীতি তোয়াক্কা করছে না প্রতিষ্ঠানটি।

এবিষয়ে,এ.এন.এগ্রোভেট প্রতিষ্ঠানটির মালিক মোঃ নুরুল ইসলাম এর সঙ্গে কথা হলে তিনি সবুজ বাংলাদেশ কে জানান,তিনি নিজেও একজন সাংবাদিক!
কি এমন বিষয়ে আমার প্রতিষ্ঠানে এসেছে বা কে পাঠিয়েছে এমন প্রশ্ন করতে থাকেন, এক পরাজয় তিনি নিজেই প্রশ্নের সম্মুখীন হয়ে যায়।
তিনি বলেন,আমি দৈনিক বাংলা খবর প্রতিদিন পত্রিকার শাহজাদপুর উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে আছেন এবং শাহজাদপুর উপজেলা রিপোর্টার্স ক্লাবের সদস্য তিনি এভাবেই নিজের পরিচয় দিতে থাকেন।

এরপর,তার প্রতিষ্ঠান এ.এন.এগ্রোভেট এমন অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সবুজ বাংলাদেশের প্রতিবেদকের কাছে সকল অনিয়মের কথা স্বীকার করে বলেন, এক ব্যক্তি মাসে দু-একবার এসে কোন কেমিক্যাল এর সঙ্গে কোনটি মেশাতে হবে সেটি দেখিয়ে দিয়ে যায়। তার দেখা কৌশল মোতাবেক আমি এই ভেজাল ঔষধ তৈরী করে বোতল ও প্যাকিং এবং বাজারজাত করি। এছাড়াও তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এ কারখানাটি আমি চালিয়ে আচ্ছি কোন সমস্যা হচ্ছে না। তিনি আরো বলেন, শাহজাদপুরের অনেকেই এই গবাদিপশুর ঔষধ উৎপাদন করছে তাদের ঔষধ ও প্রশাসনের অনুমোদন ও পরীক্ষা ছাড়াই তৈরি হচ্ছে এ-ক্যালবেট প্লাস ও হেপাটোলিভ -এন ঔষধ তৈরীসহ বিভিন্ন ঔষধ তৈরী ও বাজারজাত করে যাচ্ছে তারা-ও আইন অনুযায়ী অপরাধ করছে নিজ মুখেই তিনি সকল অনিয়মের বিষয়ে স্বীকার করেন তার ভিডিও রেকর্ড ও সবুজ বাংলাদেশ পত্রিকার সংরক্ষণে রয়েছে।

এরপর,এ.এন.এগ্রোভেট প্রতিষ্ঠানটির মালিক মোঃ নুরুল ইসলামের সাংবাদিকতা পেশায় যুক্ত হওয়ায় কারনটা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সাংবাদিকতা আমি বুঝি না ও এই পেশায় ও আমার কোন অভিজ্ঞতাও নাই তবে,আমার সাংবাদিকতার কার্ড বানানোর উদেশ্য হলো আমার প্রতিষ্ঠান পরিচালনার ক্ষেত্রে অনেক সুযোগ সুবিধা ও বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে সু-সম্পর্ক খুব সহজেই গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছি এছাড়াও অনেক সাংবাদিক প্রতিষ্ঠানে এসে ঝামেলা করে যখন তারা জানতে পারে আমিও সাংবাদিক তখন তারা আমার কিছুই করতে পারবেন না। তিনি আরো বলেন,শাহজাদপুরে আমার মত সাংবাদিকতার কার্ড ঝুলিয়ে অনেকেই অবৈধ ব্যবসা পরিচালনা করছে খুব সহজেই আপনি নিজেও তাদের কিছু করতে পারবেন না।

এরপর তার প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতিবেদক চলে আসার সময় পকেট থেকে টাকা বের করে প্রতিবেদক কে ম্যানেজ করার চেষ্টাও করে তবে প্রতিবেদক টাকা গ্রহণ করেনি বলে তিনি হুমকি দিয়ে বলেন,আপনি কত বড় সাংবাদিক হয়েছেন সেটিও আমি দেখে নিবো। এছাড়াও তিনি বলেন,আপনি যা পারেন করেন আমি বড় বড় সাংবাদিকসহ শাহজাদপুর প্রেস ক্লাব ও উপজেলা প্রাণীসম্পদ অফিসারের সবাইকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে-ই প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছি আপনি নিউজ করে যা পরেন করেন কোন সমস্যা নেই।

এবিষয়ে,শাহজাদপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ বেল্লাল হোসেনের মুঠো ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, এ.এন.এগ্রোভেট প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নিবেন। এরপর গত ১৮/৩/২০২৫ উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। এরপর প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তার মুঠোফোনে ফোন দিয়ে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলেই, কিছু না বলেই তিনি ফোন কেটে দেন।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম
বিদেশ থেকে যতটুকু স্বর্ণ আমদানি করলে দিতে হবে না ভ্যাট প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎতে যাচ্ছেন বিএনপির মহাসচিব ফকরুল বাংলাদেশে ইতিহাস গড়ল উইন্ডিজ দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন রাজউক ইমারত পরিদর্শক শামীম রাশিয়া ইউক্রেনের যুদ্ধে কে জিতবে, তা নিয়ে পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তুতি নিচেছ ট্রাম্প নাসার চন্দ্র মিশনে স্পেসএক্স জুলাই যোদ্ধা স্বীকৃতি পেতে নতুন করে দেড় হাজারের বেশি আবেদন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরাতে আপিল শুনানি শুরু প্রধান প্রকৌশলীর আস্থাভাজন ইএম ২ এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কায়কোবাদ সম্পদের পাহাড় জানানো যাচ্ছে অভিযোগ, থানায় বসলেই ভিডিওকলে হাজির এসপি