তারিখ লোড হচ্ছে...

পটিয়ায় অতিথি পাখির কিচির-মিচির শব্দে মুখরিত হাতিয়াঘোনা ডোবা

অনলাইন ডেস্কঃ

অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে পটিয়া উপজেলার কচুয়াই ইউনিয়নের হাতিয়াঘোনা (হেক্কার) ডোবা এলাকা। প্রতিদিন পাখির কিচির-মিচির শব্দে ঘুম ভাঙে এখানকার মানুষের। হাজার হাজার পাখি সারাক্ষণ মুখরিত করে রেখেছে ডোবা এলাকা। এলাকাজুড়ে অতিথি পাখির আগমন ঘটে শীত মৌসুমে। প্রতিদিন পাখি দেখতে ডোবা এলাকায় ভিড় করেন বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ।

জানা যায়, পৃথিবীতে ১০ হাজারেরও বেশি প্রজাতির পাখি রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় দুই হাজার প্রজাতির পাখি পরিযায়ী বা অতিথি পাখি। এরা নিজ দেশের তীব্র শীত থেকে বাঁচতে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আসা-যাওয়া করে থাকে। সাইবেরিয়া, ইউরোপ, এশিয়া, হিমালয় থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি নভেম্বর থেকে জানুয়ারিতে আমাদের দেশে আসে। শীতটা শেষ হলে আবার তারা পাড়ি জমায় নিজ দেশে। যেসব অতিথি পাখি শীতের সময় আমাদের দেশে আসে, তাদের মধ্যে রয়েছে- লালবুবা, বক, পানকৌড়ি, শামুককনা, গাঙ, কবুতর, থাম, পাইজ, জলপিপি, পেরিহাঁস, পাতিবাটান, পাতিকুট, গিরিয়া, পাতারি প্রভৃতি।

সরেজমিনে দেখা যায়, কচুয়াই ইউনিয়নের ফকিরপাড়া রোড ৯নং ওয়ার্ড দিয়ে পাহাড়ের পাশে মেজর শহীদ ছবুরের নামে সরকারি একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রয়েছে। স্কুলের পাশ দিয়ে পাহাড়ী এলাকায় গড়ে উঠেছে ছোট বড় বেশ শতাধিক মৎস্য প্রজেক্ট। সেই সাথে পাহাড়ী অঞ্চলের আশেপাশে কয়েক হাজার একর জমিতে নানান প্রজাতির সবজি ও ধানের চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে স্থানীয় জনসাধারণ। সেখানে হাতিয়াঘোনা (হেক্কার) ডোবায় মৎস্য প্রজেক্টে শান্ত জলের বুকে কচুরিপানার সবুজ গালিচার মাঝে ঝাঁক বেঁধে ডানা মেলছে অতিথি পাখির দল। উড়ে চলা পাখির কিচির-মিচিরে মুখরিত চারপাশ।

স্থানীয়রা জানান, কচুয়াই ইউনিয়নের পাহাড়ী এলাকা যেন অপরুপ সৌন্দর্য্যে সমারোহ। এখানে সরকারিভাবে হাতিয়াঘোন (হেক্কার) ডোবার আশপাশের এলাকা নিয়ে একটি বিনোদন স্পট গড়ে তোলার দাবি জানান তারা।

স্থানীয় ডোবার মৎস উৎপাদনকারী আবু তৈয়ব জানান, কচুয়াই ইউনিয়নে ৯নং ওয়ার্ড হাতিয়াঘোন (হেক্কার) ডোবায় ৫০ কানি জায়গা মৎস্য উৎপাদন করছি। সে সাথে আশেপাশে আমার ছোট বড় আরো ১০টি মৎস্য প্রজেক্ট রয়েছে। প্রতিবছর শীতের মৌসুম এলেই পাখিগুলো যে কোথা থেকে আসে তা জানি না। তবে প্রচুর পাখি আসে এই গ্রামের হেক্কার ডোবায়। সন্ধ্যায় রক্তিম সূর্য দেখতে খুব ভালো লাগে। আমি মনে করি সরকারের পক্ষ থেকে পাখিদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল সৃষ্টিতে পদক্ষেপ নেওয়া হলে আগামীতে এই এলাকায় পাখিদের আরো বেশি আগমন ঘটবে। সেই সঙ্গে এলাকাটি বিনোদন কেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে।

পটিয়া উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা আতিকুল মামুন বলেন, পটিয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের খাল-বিল ও পাহাড়ী অঞ্চলের জলাশয়ে অসংখ্য অতিথি পাখি আগমন করে। পাখি প্রকৃতির অলংকার। প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার জন্য পাখির বিচরণক্ষেত্র যাতে কোনভাবে ঝুঁকিপূর্ণ না হয় এ বিষয়ে আমরা সজাগ আছি। পাখি শিকার অনেকটাই বন্ধ। এখন পর্যন্ত পাখি শিকারের কোনো অভিযোগ আমরা পাইনি। সর্বস্তরের মানুষকে এ ব্যাপারে সচেতন হতে হবে।

এ ব্যাপারে কচুয়াই ইউপি চেয়ারম্যান এসএম ইনজামুল হক জসিম জানান, কচুয়াই ইউনিয়নের পাহাড়ী অঞ্চলে গড়ে উঠেছে অসংখ্য মৎস প্রজেক্ট। সেখানে ছোট বড় এই মৎস্য প্রজেক্টে শীতের মৌসুমে বিভিন্ন প্রজাতির অতিথি পাখির আগমন ঘটে। অতিথি পাখির কিচির-মিচির ডাকে এলাকা যেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য মুখরতি হয়ে উঠে।

সূত্রঃ আলোকিত বাংলাদেশ

দেশজুড়ে সেন্টমার্টিন যেতে লাগবে ট্রাভেল পাস

স্টাফ রিপোর্টার: 

সেন্টমার্টিন দ্বীপে অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন নিয়ন্ত্রণে নতুন পদক্ষেপ নিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এখন থেকে প্রবাল দ্বীপটিতে যাওয়ার জন্য জাহাজ ছাড়ার/এন্ট্রি পয়েন্টে ট্রাভেল পাসধারী পর্যটকদের অনুমোদিত জাহাজে ভ্রমণ নিশ্চিত করা হবে। সেই সঙ্গে নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন ব্যাগ এবং একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক দ্রব্যাদি পণ্য পরিবহন না করার মতো নির্দেশনা মানতে হবে।

মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব সাবরীনা রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তি বিষয়টি জানানো হয়েছে।

ওই অফিস আদেশে বলা হয়েছে, সেন্টমার্টিন দ্বীপে অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন নিয়ন্ত্রণে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির আহ্বায়ক থাকবেন কক্সবাজার সদর এবং টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। সদস্য সচিব থাকবেন কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক। সদস্য থাকবেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড, কক্সবাজারের একজন প্রতিনিধি, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ কক্সবাজারের একজন প্রতিনিধি, বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড কক্সবাজারের একজন প্রতিনিধি ও ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজারের একজন প্রতিনিধি।

কমিটির কর্মপরিধিতে বলা হয়েছে, জাহাজ ছাড়ার/এন্ট্রি পয়েন্টে শুধু বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড কর্তৃক প্রস্তুতকৃত অ্যাপস থেকে সংগ্রহকৃত ট্রাভেল পাসধারী পর্যটকদের অনুমোদিত জাহাজে ভ্রমণ নিশ্চিতকরণ। পর্যটক এবং অনুমোদিত জাহাজ কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন ব্যাগ এবং একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক দ্রব্যাদি পণ্য (পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় কর্তৃক অনুমোদিত তালিকা অনুযায়ী) পরিবহন না করার বিষয়টি নিশ্চিতকরণ। পর্যটকরা কোন হোটেলে অবস্থান করবেন তা লিপিবদ্ধকরণ এবং রেজিস্টার সংরক্ষণ। জাহাজ ছাড়ার পয়েন্টে এবং সেন্টমার্টিনে এন্ট্রি পয়েন্টে পর্যটকদের জন্য করণীয় এবং বর্জনীয় বিষয়ে বিলবোর্ড স্থাপন। পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলা অফিস সার্বিক যোগাযোগ ও সমন্বয় করবে। এবং কমিটি প্রয়োজনে সদস্য কো-অপ্ট করতে পারবে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত ২২ অক্টোবর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সভায় সেন্টমার্টিনের বিষয়ে নানা বিধি নিষেধ আরোপ করে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৮ অক্টোবর একই মন্ত্রণালয়ের উপসচিব অসমা শাহীন স্বাক্ষরিত একটি পরিপত্র জারি করে। যে পরিপত্রে পাঁচটি বিষয় উল্লেখ্য আছে। যেখানে বলা হয়েছে- সেন্টমার্টিনে নৌ যান চলাচলের বিষয়টি বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহণ কর্তৃপক্ষ পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সম্মতি গ্রহণ করে অনুমতি প্রদান করবে। নভেম্বর মাসে দ্বীপে পর্যটক গেলেও দিনে ফিরে আসতে হবে। রাত্রিযাপন করতে পারবেন না। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে রাত্রিযাপন করা যাবে। পর্যটকের সংখ্যা গড়ে প্রতিদিন ২ হাজারের বেশি হবে না। দ্বীপে রাতে আলো জ্বালানো যাবে না, শব্দ দূষণ সৃষ্টি করা যাবে না। বার বি কিউ পার্টি করা যাবে না।

এমন সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক মন্তব্য করে কর্মসূচিতে দ্বীপবাসীর পাশাপাশি হোটেল-মোটেল, রেস্তোরাঁ ও ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সহস্রাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী ও কর্মীরা ধারাবাহিক আন্দোলন করে যাচ্ছেন। এর মধ্যে কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) নিজাম উদ্দিন আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন নিয়ন্ত্রণ ও সেন্টামর্টিনগামী জাহাজ ছাড়ার পয়েন্ট নির্ধারণ সংক্রান্ত একটি কমিটি গঠন করেছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এই কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে আছেন কক্সবাজার সদর এবং টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। তাদের আদেশ মতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

 

সবা:স:জু-১৫০/২৪

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম