৪ বছর ঝুলে আছে কেআইবির নির্বাচন: সর্ব্বোচ্য আদালতের রায়ও মানছেন না মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির নেতারা!

স্টাফ রিপোর্টারঃ

সর্ব্বোচ্য আদালতের রায়কে শ্রদ্ধা জানিয়ে অনতিবিলম্বে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের (কেআইবি)এর নির্বাচনী তপসিল ঘোষণার দাবী তুলেছেন সাধারণ ভোটাররা। তারা মনে করেন যে, উচ্চ আদালতের রায়ের পর আর কাল বিলম্ব করা ঠিক হবে না। এমনিতেই আদালতে মামলা দায়েরের কারণে ৪ বছরের অধিক সময় অনির্বাচিতরা অবৈধভাবে পরিচালনা করছেন সংগঠনটিকে। দীর্ঘ এই সময়ে নির্বাচিত নেতা না থাকায় কতিপয় মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির নেতারা সংগঠনের সাইনবোর্ড ব্যবহার করে নানাবিধ সুযোগ সুবিধা ভোগ করছেন। তারা আর্থিকভাবেও লাভবান হয়েছেন। সে কারণেই তারা ক্ষমতা ছাড়তে চাইছেন না। নির্বাচনেও রয়েছে অনিহা। তারা সর্ব্বোচ্য আদালতের রায়ের পরও নিচ্ছেন না নির্বাচনের উদ্যোগ। ফলে সাধারন ভোটাররা ধৈর্য হারিয়ে ফেলছেন। তারা অনতিবিলম্বে কেআইবির নির্বাচন চান।
সুত্রমতে ২০১৭-১৮ মেয়াদে গঠিত কমিটি মেয়াদোতীর্ণ হয় ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে। নতুন কমিটি গঠনের জন্য ০১ নভেম্বর ২০১৮ তারিখ নির্বাচনী তপসিল ঘোষণা করা হয়। কিন্ত নির্বাচনের আগের রাতে ভোটারদের ওপর সন্ত্রাষী হামলায় রক্তাক্ত করা হয়। এমন পরিস্থিতিতে ভোট গ্রহনের পরিবেশ না থাকায় ও ভুয়া ভোটার তালিকা এবং ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা জেলা জজ কোর্ট ২২ নভেম্বর ২০১৮ তারিখ রাতে নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেন এবং পরবর্তীকালে এই মামলাও নিস্পত্তি হয়ে যায়। অথচ: সুস্পষ্ট বিধান থাকার পরও কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে বিগত ৪ বছরের অধিক সময় ধরে নানান অজুহাতে কেআইবির মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি অবৈধভাবে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে এবং নতুন কেšদ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি গঠনের কোন উদ্যোগ নিচ্ছে না।
তাছাড়া সমাজ সেবা অধিদপ্তর মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের রায়ের আলোকে ০৩/১১/২০২২ তারিখে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি বাতিল করে প্রশাসক নিয়োগ আদেশ জারি করেন। অন্যদিকে গত ০৯/০১/২০২৩ তারিখে আইনী প্রক্রিয়ায় সর্বশেষ ধাপ দায়েরকৃত লিভ টু আপীল মামলায় মহামান্য আদালত মাননীয় প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপীল বিভাগের পূর্ণাংগ বেঞ্চ বিদ্যমান মেয়াদ উত্তির্ণ কমিটি বাতিল করে প্রফেসর ড. শহীদুর রশীদ ভুইয়া কর্তৃক দাখিলকৃত লিভ-টু-আপিল আবেদন খারিজ করেন। সিভিল লিভ –টু –আপীল নং ৩০৬৬/২০২২।
এমতাবস্থায় ড. শহীদুর রশিদ ভুইয়ার নেতৃত্বে বিদ্যমান কমিটি সর্ব্বোচ্য আদালত কর্তৃক বাতিল হওয়ায় ও প্রশাসক নিয়োগ করায় মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সকল কার্যক্রম আইনত অবৈধ এবং এই কমিটি কর্তৃক যে কোন কর্মসুচি সৃজন ও পালন অবৈধ বা আদালতের আদেশ অমান্যের শামিল।
কেআইবির গঠনতšের ৬ষ্ট অধ্যায়ের ৩৪ (চ) ধারায় স্পষ্ট বলা আছে যে, যদি অনিবার্য কারণবশত নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচন সম্পন্ন করতে না পারে ,তাহলে ইসি নির্বাচনের একটি নতুন তারিখ নির্দ্ধারণ করবে,তবে কোন অজুহাতেই তা কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ থেকে ৯০ (নব্বই) দিন অতিক্রম করবে না এবং ৯০(নব্বই) দিন অতিক্রান্ত হওয়ার পরও যদি নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা সম্ভব না হয় ,তাহলে জরুরী সাধারণ সভায় গঠিত ৫ (পাঁচ) সদস্যের একটি অন্তরবর্ত্তীকালীন কমিটি পরবর্তী ৯০(নব্বই) দিনের মধ্যে নির্বাচন দিয়ে নির্বাচিত কমিটির কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে হবে। কিন্তু ২০১৭/১৮ মেয়াদে গঠিত মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি গঠনতন্ত্রের এই ধারা লংঘণ করে গত ৪ বছর যাবত অবৈধভাবে সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
উল্লেখ্য যে, কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের (কেআইবি) ২০১৯-২০ মেয়াদের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচন আদালতের আদেশে স্থগিত করা হয়েছিল। ভুয়া ভোটার অন্তর্ভুক্তির অভিযোগে একজন কৃষিবিদের করা এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আগের রাতে আদালত ওই স্থগিতাদেশ দেন। তদপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনার কৃষিবিদ নজরুল ইসলাম নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেন।
ওই দিন বিকেল ৫টার দিকে বাকৃবি উপাচার্যের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, বৃহস্পতিবার রাতের আঁধারে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েট অবসরপ্রাপ্ত মৎস্য কর্মকর্তা ও কেআইবি নির্বাচন কমিশনের সদস্য কৃষিবিদ মজিবুর রহমান, স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সম্পাদক সারোয়ার মোর্শেদ জাস্টিস, বাকৃবি ছাত্রলীগের সহসভাপতি এম আনোয়ারুল হকসহ অনেকের ওপর সন্ত্রাসী লেলিয়ে দিয়ে অতর্কিত হামলা চালায় নীতিশ-প্রিন্স প্যানেলের অনুসারীরা। বাকৃবির প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আতিকুর রহমান খোকন বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু না হওয়ার আশঙ্কায় হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ নিয়ে কেআইবিতে গেলে তা প্রথমে নিতে চাওয়া হয়নি এবং সিনিয়র কৃষিবিদ মুজিবর রহমানকে লাঞ্ছিত করা হয়। পরে বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে বিএআরসির সামনে সারোয়ার মোর্শেদ জাস্টিস, এম আনোয়ারুল হকসহ অনেকের ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়।

গত ২৭ সেপ্টেম্বর কেআইবি ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ২৩ নভেম্বর শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সারা দেশের (অস্ট্রেলিয়ার একটি কেন্দ্রসহ) ৫২টি কেন্দ্রে ৩০ হাজার ভোটারের ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। নির্বাচনে ছালেহ আহমদ-মোয়াজ্জেম হোসেন ও নীতিশ-প্রিন্স প্যানেলের পক্ষ থেকে একটি করে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি ও মেট্রোপলিটন কমিটি নির্বাচনের জন্য সারা দেশে প্রচারও চালানো হয়। কিন্তু ছালেহ আহমদ-মোয়াজ্জেম হোসেন পরিষদের পক্ষে ড. আজিজুল ইসলাম ও সুজিত রায় কেআইবির গঠনতন্ত্র না মেনে নির্বাচন কার্যক্রম পরিচালনা ও ভুয়া ভোটার তালিকার অভিযোগ তুলে ঢাকা জজ কোর্টে আবেদন করলে নির্বাচনের একদিন আগে আদালত নির্বাচন স্থগিত করার আদেশ দেন।

এ বিষয়ে কথা বললে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির মহাসচিব খাইরুল আলম প্রিন্স বলেন, আমি নিজেও চাই দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। তাহলে সংগঠনের কার্যক্রম আরো গতিশীল হবে। অপরদিকে অন্যতম নেতা ড. শহীদুর রহমান ভুঁইয়া বলেন, নির্বাচনের আগে দুই পক্ষের সমঝোতা আগে প্রয়োজন। বর্তমান কমিটির সভাপতি সালেহ আহমদ বলেন, মহামান্য হাইকোর্টের আদেশ মোতাবেক দ্রুততম সময়ে কেআইবির নির্বচন তপসিল ঘোষণা করা জরুরী।

এনআরবি ইসলামিক লাইফের ভারপ্রাপ্ত সিইও মিজানুর রহমান

স্টাফ রিপোর্টার:
এনআরবি ইসলামিক লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ভারপ্রাপ্ত মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) পদে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বীমা অধিদপ্তরের সাবেক ডেপুটি কন্ট্রোলার মিজানুর রহমানকে।

বুধবার (২৯ মে) অনুষ্ঠিত কোম্পানির বোর্ড সভায় তাকে নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। কোম্পানির বোর্ড ও বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

মিজানুর রহমান চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে এনআরবি ইসলামিক লাইফ ইন্স্যুরেন্সে কনসালটেন্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

মিজানুর রহমানকে ভারপ্রাপ্ত সিইও’র দায়িত্ব দেওয়ার মাধ্যমে কার্যত কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ জামাল হাওলাদারকে তার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, শাহ জামাল হাওলাদারের বিরুদ্ধে অভিজ্ঞতার মিথ্যা তথ্য দিয়ে এনআরবি ইসলামিক লাইফ ইন্স্যুরেন্সের সিইও পদে নিয়োগ অনুমোদন নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এছাড়া অর্থ আত্মসাতের সুনির্দিষ্ট অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন। এসব অভিযোগ আমলে নিয়ে বোর্ড সভায় তাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

তবে শাহ জামাল হাওলাদারকে কোম্পানি এখনি চাকরিচ্যুত করছে না বলে কোম্পানির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে। সূত্রটির দাবি, বোর্ড শর্ত দিয়েছে, তিনি যদি আইডিআরএ থেকে দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য সিইও পদে তার অনুমোদন নিশ্চিত করতে পারেন তাহলে পদে বহাল থাকতে পারবেন। এই অনুমোদনের পূর্ব পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত সিইও হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন মিজানুর রহমান।

এর আগে মিথ্যা তথ্য দিয়ে এনআরবি ইসলামিক লাইফের সিইও হয়েছেন শাহ জামাল শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করে দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ এর সংবাদটি আমলে নিয়ে কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে বলে জানা গেছে।

ভারপ্রাপ্ত সিইও’র দায়িত্ব পাওয়া মিজানুর রহমান ১৯৯৪ সালে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে বীমা অধিদপ্তরে প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। পরবর্তীতে উপ-বীমা নিয়ন্ত্রক হিসেবে পদোন্নতি পান এবং ২০০৪ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত তিনি এ পদে দায়িত্ব পালন করেন।

২০১৩ সালে শিপিং করপোরেশনের উপ-মহাব্যবস্থাপক পদে যোগদান করেন মিজানুর রহমান। ২০২৩ সাল পর্যন্ত তিনি এ পদে দায়িত্ব পালন করেন। ২০২৪ সালের ২ ফ্রেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠানটির মহাব্যবস্থাপক পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবস্থাপনা বিষয়ে বি.কম অনার্স এবং এম.কম ডিগ্রি লাভ করেন মিজানুর রহমান। পরবর্তীতে তিনি বীমা বিষয়ের ওপর এমবিএ সম্পন্ন করেন। এ ছাড়াও তিনি দেশ-বিদেশে বীমা বিষয়ের ওপর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম