ছাত্রদলের সাবেক নেতাদের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার

নিজস্ব প্রতিবেদক॥

অবশেষে দুবছরের বেশি সময় পর প্রত্যাহার হচ্ছে ছাত্রদলের সাবেক সেই ১২ নেতার বহিস্কার। শিগগিরই তাদের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হবে। শনিবার বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। বহিস্কারের কারণে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ কোনো অঙ্গসংগঠনে তারা এখনো কোনো পদ পাননি। ২০১৯ সালের ২২ জুন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তাদের বহিস্কার করা হয়েছিল। এতে বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলা বহির্ভূত কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সুস্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের দলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

বহিস্কৃতরা হলেন, ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি এজমল হোসেন পাইলট, ইকতিয়ার কবির, জয়দেব জয়, মামুন বিল্লাহ, সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, বায়েজিদ আরেফিন, সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক দবির উদ্দিন তুষার, সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আজম সৈকত, আব্দুল মালেক, কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য আজীম পাটোয়ারী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের ওই সময়ের সাধারণ সম্পাদক বাশার সিদ্দিকী ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রদল তখনকার সভাপতি জহির উদ্দিন তুহিন।

২০১৯ সালে ছাত্রদলের নতুন কমিটিকে কেন্দ্র করে আন্দোলনের কারণে তাদের বহিস্কার করা হয়। ওই সময় ২০০০ সালের এসএসসি পাস শিক্ষার্থীরাই ছাত্রদলের কমিটিতে পদ পাবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়। এরপর হঠাৎ করে ভেঙ্গে দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় কমিটি।

কিন্ত নতুন কমিটিতে তখন যারা পদ প্রত্যাশী ছিলেন তাদের বেশিরভাগ বয়সের সীমারেখায় বাদ পড়েন। তাই বয়সসীমা প্রত্যাহার করে ধারাবাহিক কমিটির দাবিতে ছাত্রদলের একটি অংশ বিদ্রোহ করে। এ নিয়ে দুগ্রুপের মধ্যে কয়েকদফা সংঘর্ষ হয়। ভাংচুর করা হয় নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ও।

এমন পরিস্থিতিতে বিদ্রোহীদের সঙ্গে সমঝোতায় দলের সিনিয়র নেতারা কয়েক দফা বৈঠক করেও ব্যর্থ হন। দাবি না মানা পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। পরে আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া ১২ জনকে বহিষ্কার করা হয়।

এরপর বহিস্কার প্রত্যাহারে নানাভাবে চেষ্টা করেন তারা। আর বিদ্রোহ করবে না, দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নেবে বলে হাইকমান্ডের কাছে লিখিত প্রতিশ্রুতিও দেন বহিস্কৃতরা। কিন্ত অজানা কারণে ঝুলে থাকে তাদের বহিস্কার প্রত্যাহার। অবশেষে হাইকমান্ড তাদের বহিস্কার প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিলেন।

 

 

সারজিস হাসনাতসহ ৫ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ

সারজিস হাসনাতসহ ৫ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ

ডেস্ক রিপোর্ট:

দলের রাজনৈতিক পর্ষদকে আগে থেকে না জানিয়ে কক্সবাজার ভ্রমণ করায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শীর্ষ ৫ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তাদের আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সশরীরে উপস্থিত হয়ে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে। বুধবার (৬ আগস্ট) এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দীন সিফাত স্বাক্ষরিত পৃথক চিঠিতে দলের ৫ নেতাকে শোকজ করা হয়।

এতে বলা হয় গতকাল ৫ আগস্ট জুলাই অভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তি ও রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ দিবসে আপনি এবং দলের আরও চারজন কেন্দ্রীয় সদস্য ব্যক্তিগত সফরে কক্সবাজার গিয়েছেন। এই সফর সংক্রান্ত কোনো তথ্য কিংবা ব্যাখ্যা রাজনৈতিক পর্ষদের কাছে আগে অবগত করা হয়নি। এমতাবস্থায় আপনাদের এই সিদ্ধান্তের কারণ ও প্রেক্ষাপট সম্পর্কে আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম এবং সদস্যসচিব আখতার হোসেনের নিকট স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য আপনাদের নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা যাচ্ছে।

জুলাই ঘোষণাপত্রের অনুষ্ঠান উদযাপনে ঢাকায় লাখো জনতার সমাবেশে যোগ না দিয়ে কক্সবাজার যান জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ৫ শীর্ষ নেতা। তাদের এই আকস্মিক সফর ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে ধূম্রজাল তৈরি হয়। সাবেক এক বিদেশি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে কক্সবাজারে অবস্থানরত এনসিপি নেতাদের গোপন বৈঠক হচ্ছে এমন গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা আলোচনা সমালোচনা হয়।

কক্সবাজারে যাওয়া নেতারা হলেন এনসিপির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী এবং দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা। এ সময় জারার সঙ্গে তার স্বামী খালেদ সাইফুল্লাহ এবং সারজিস আলমের সঙ্গে তার স্ত্রী ছিলেন। যাদের শোকজ করা হয়েছে তারা হলেন হাসনাত আবদুল্লাহ, সারজিস আলম, নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, ডা. তাসনিম জারা ও খালেদ সাইফুল্লাহ।

এনসিপি নেতারা বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে (ইএ-৪৩৩) ঢাকা থেকে কক্সবাজার পৌঁছান। এরপর দ্রুত তারা বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে যান। এ সময় তাদের কয়েকজনের মুখমণ্ডল মাস্কে ঢাকা ছিল। উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ঢাকায় কর্মরত থাকার সময় হাসিনা সরকারের গুম খুন এবং ভোট কারচুপির বিষয়ে সোচ্চার ছিলেন। এসব নিয়ে প্রাকাশ্যে মন্তব্য করায় তাকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের তোপের মুখেও পড়তে হয়। তবে হাসিনা সরকারের পতনের আগেই তিনি ঢাকায় তার দায়িত্ব শেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যান। বর্তমানে তিনি তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) রপ্তানিতে যুক্ত মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জির কৌশলগত উপদেষ্টা হিসাবে কর্মরত।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম