জাতীয় গৃহায়নে চলছে ঘুঘ বানিজ্য

রাহিমা আক্তার মুক্তাঃ

জাতীয় গৃহায়নে ঘুষ-দুর্নীতি-অনিয়মের আরেক নাম জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ। সিবিএ-এর নামধারী নেতাদের ছত্রছায়ায় জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের প্রতিটি টেবিলে ঘুষ বাণিজ্য। পাঁচটার পর ঘুষের ভাগ-বাটোয়ারা চলে যাচ্ছে বিভিন্ন কর্মকর্তার পকেটে। এভাবেই চলছে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের কর্মকাণ্ড। সিবিএ নেতাদের অফিসে চলছে এই অপকর্ম। অভিযোগ আছে, সব ফাইলেই সেবাপ্রার্থীদের ঘুষ গুণতে হচ্ছে। ঘুষ বাণিজ্যের হোতা সিবিএ সভাপতি মুনছুর আলম, লিজ দলিলের দায়িত্বে নিয়োজিত জুলফিক্কার আলী,বিসিবি সাংগঠনিক আসরাফ, মোহাম্মদপুর এলাকার রেকর্ডরুমের নাফিনা, মিরপুরের রেকর্ডরুমের কামরুল ইসলামের বিরুদ্ধে রয়েছে সেবা প্রত্যাশীদের অনেক অভিযোগ।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, রাজধানীর মিরপুর মোহাম্মদপুর এলাকার ফ্ল্যাটের সেল পারমিশন (বিক্রয় অনুমতি), হস্তান্তর সূত্রে বা দানসূত্রে মিউটেশন (নামজারি), চালান পাস, লিজ দলিলের স্বাক্ষর, দায় মুক্তি সনদ ও হাজিরাসহ বিভিন্ন কাজ করতে সেবা প্রার্থীদের পদে পদে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।

যারা ঘুষ দিতে দ্বিধা করে না তাদের নির্ধারিত অঙ্কের ঘুষ গুনতে হচ্ছে। এসব ঘুষ গ্রহণ করছেন জাতীয় গৃহয়ন কর্তৃপক্ষের সিবিএর প্রভাবশালী নেতারা। প্রতি টেবিলে ঘুষ দিতে হচ্ছে বলে জানান, মোহাম্মদপুর সলিমুল্ল্যাহ রোর্ডের বাসিন্দা জাকির হোসেন। তিনি বলেন, টাকা ছাড়া ফাইল নড়ে না। একটি ফাইলের নম্বর দেখতেও টাকা গুনতে হচ্ছে। এর নাম জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ।

জানা গেছে, কিছু চিহ্নিত কর্মকর্তা-কর্মচারীর সঙ্গে দালালদের সখ্যতা ব্যাপক। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে চিহ্নিত কর্মচারী ও দালালদের উৎপাত সম্পর্কে অভিযোগ করতে গেলেই সহাস্যে বলা হয়, আপনি লিখিত অভিযোগ দেন ব্যবস্থা নিচ্ছি। এরপরই সেবা গ্রহীতা তার ফাইলের কথা চিন্তা করে চুপসে যান। গত কয়েক দিন জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের প্রধান কার্যালয়ে নিচতলা, দোতলা ও তৃতীয় তলায় সরজমিন গিয়ে দেখা গেছে, প্রতিষ্ঠানটিতে বিভিন্ন কাজ করতে গিয়ে পদে পদে নির্ধারিত অঙ্কের ঘুষ দিতে হচ্ছে।

এ ব্যাপারে গতকাল জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হায়দারের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। এ কারণে তার মন্তব্য দেওয়া সম্ভব হলো না।

ভুক্তভোগীরা জানান, সেল পারমিশন (বিক্রয় অনুমতি) নিতে গেলে সর্বনিম্ন ১০-২০ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়। ফ্ল্যাটভিত্তিক সেল পারমিশন বাবদ পাঁচ হাজার টাকা, হস্তান্তর বা দান সূত্রে মিউটেশন বাবদ (নামজারি) ১০-১৫ হাজার টাকা, বন্ধকী পারমিশন বাবদ পাঁচ হাজার টাকা, চালান পাস বাবদ ৫০০ টাকা, লিজ দলিলের স্বাক্ষর বাবদ দুই হাজার টাকা, দায় মুক্তি সনদ ইস্যু বাবদ পাঁচ হাজার টাকা এবং প্রতি জনের হাজিরার জন্য এক হাজার টাকা করে ঘুষ দিতে হয়।
মিরপুর ১১নং সেকশনে প্লট বরাদ্দপ্রাপ্ত রমজান আলীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তিনি হাউজিং অফিসে কিস্তির টাকা জমা দেওয়ার জন্য এসেছেন। এরপর পাওয়ার অব এটর্নি করবে তারা। টাকা দেবে ২৫ লাখ। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা তার ছেলে বলেন, পাঁচ বছর হাউজিংয়ের কর্মকর্তাদের পেছন পেছন ঘুরেছি। কোনো কাজ হয়নি। একবার প্লট বদলিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। এর বেশি কিছু জানি না। আমাদের বেশি কথা বলতে নিষেধ করেছেন। বিকল্প বরাদ্দকৃত প্লটগুলোর মধ্যে কয়েকটি ফাইল ঘেঁটে দেখা গেছে, ৯৫ ভাগ বিকল্প বরাদ্দের ফাইলে আমমোক্তার নিয়োগ হয়ে গেছে বা লিজ ডিড হওয়ার পর বিক্রয় অনুমতির মাধ্যমে সাফ কবলা দলিল হয়েছে।

দুই রেকর্ডরুম, টাকা ছাড়া ফাইল বের হয় না : তৃতীয় তলার দুই রেকর্ড রুম যেন টাকার খনি। টাকা না দিলে ফাইল বের করা হয় না। প্লটের ঝামেলা বা রকমভেদে এ অর্থও নির্ভর করে। সরজমিন দুই রেকর্ডরুমের সামনেই দেখা যায় জটলা। যদিও রেকর্ডরুম দুটির সামনে দুটি বড় নোটিস টাঙানো রয়েছে। যাতে বলা হয়েছে, দয়া করে রেকর্ড রুমের সামনে ভিড় করবেন না। তিন তলার প্রথম রেকর্ডরুমটি থেকে লালমাটিয়া, মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন এলাকার ফাইল দেওয়া হয়। এ রেকর্ডরুমটি দেখাশোনা করেন নাফিজা নামের এক রেকর্ডকিপার। অন্যদিকে মিরপুর এলাকার রেকর্ডরুমটি দেখাশোনা করেন কামরুল ইসলাম। নির্ধারিত কিছু ব্যক্তি ছাড়া সাধারণের তাদের সামনে থাকা দায়। ফাইল খুঁজতে গেলে নানা কথা শুনিয়ে শেষে বলা হয়, সংশ্লিষ্ট ডিলিং অ্যাসিস্ট্যান্ট ছাড়া ফাইলটি বের করা যাবে না। এরপরই নানা ধাপে হেনস্তার মুখোমুখি হতে হয়। এছাড়া, তিন তলায় সিঁড়ির পাশে একটি রুম থেকে টাকা ছাড়া কোনো চিঠি ইস্যু করা হয় না। দিনের পর দিন ঘোরানো হয়।

জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের সহকারী পরিচালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সিবিএ নেতাদের প্রভাবের কারণে ভালোভাবে কাজ করা মুসকিল হয়। তিনি বলেন, আমি সাধারণ পরিবারের সন্তান, এ কারণে বাস্তবে সেবা প্রার্থীদের সেবা দেওয়ার মানসিকতা নিয়ে কাজ করতে চাই। কিন্তু কিছু সিবিএ নেতার প্রভাবের কারণে জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে।

এবিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি অফিসে গিয়ে মন্তব্য নিতে বলেন।

আগরতলা অভিমুখে বিএনপির তিন সংগঠনের লংমার্চ শুরু

সবুজ বাংলাদেশ ডেস্ক: 

আগরতলার অভিমুখে আখউড়ার উদ্দেশে লংমার্চ শুরু করেছে বিএনপির তিন সংগঠন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল। রাজধানীর নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে বুধবার সকাল ৯টায় যাত্রা শুরু করে লংমার্চের গাড়িবহর। এই কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

এই লংমার্চে রয়েছেন যুবদলের সভাপতি এম মোনায়েম মুন্না, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সস্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরসহ তিন সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা।

যুবদলের সভাপতি এম মোনায়েম মুন্না বলেন, আমরা আমাদের প্রতিবাদ, ক্ষোভ, ক্রোধ জানাতে এই শান্তিপূর্ণ লংমার্চ করছি। আমরা আখউড়া পর্যন্ত যাব, সেখান সমাবেশের মধ্য দিয়ে আমাদের এই কর্মসূচি আমরা শেষ করব।

লংমার্চে তিন সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার নিয়ে এই লংমার্চে অংশ নিচ্ছেন। কাকরাইলের নাইটিঙ্গেল রেস্টুরেন্টের মোড় থেকে ফকিরাপুলের পেট্রল পাম্প পর্যন্ত শত শত মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকার রয়েছে সারিবন্ধভাবে। প্রতিটি গাড়িতে ‘লংমার্চের’ স্টিকার লাগানো হয় এবং গাড়ির সামনে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা ও বিএনপির দলীয় পতাকা ছিল।

লংমার্চটি ইত্তেফাক মোড়, সাইনবোর্ড, চিটাগাং সড়ক রোড়, কাঁচপুর মোড়, তারাবো, ভুলতা, গাউসিয়া, মাধবদী, ইটাখোলা, মরজাল, রারুইচা হয়ে ভৈরবে পথসভা করবে। সেখান থেকে আখাউড়া পৌঁছাবে। সেখান সমাবেশ করে লংমার্চ শেষ হবে বলে জানান যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন।

ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবের সভাপতিত্বে স্বেচ্ছাসেবক দলের রাজীব আহসান ও ছাত্রদলের নাছির উদ্দীন নাছির সঞ্চালনায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে যুবদলের এম মোনায়েম মুন্না, নুরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবক দলের এসএম জিলানি, নাজমুল হাসান বক্তব্য দেন।

ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা ও জাতীয় পতাকা অবমাননাসহ ভারতীয় আগ্রাসনের প্রতিবাদে গত ৮ ডিসেম্বর ঢাকার বারিধারায় ভারতের হাইকমিশন অভিমুখে প্রতিবাদী পদযাত্রা ও স্মারকলিপি দেন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের নেতারা।

 

সবা:স:জু-৩০৫/২৪

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম
বিদেশ থেকে যতটুকু স্বর্ণ আমদানি করলে দিতে হবে না ভ্যাট প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎতে যাচ্ছেন বিএনপির মহাসচিব ফকরুল বাংলাদেশে ইতিহাস গড়ল উইন্ডিজ দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন রাজউক ইমারত পরিদর্শক শামীম রাশিয়া ইউক্রেনের যুদ্ধে কে জিতবে, তা নিয়ে পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তুতি নিচেছ ট্রাম্প নাসার চন্দ্র মিশনে স্পেসএক্স জুলাই যোদ্ধা স্বীকৃতি পেতে নতুন করে দেড় হাজারের বেশি আবেদন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরাতে আপিল শুনানি শুরু প্রধান প্রকৌশলীর আস্থাভাজন ইএম ২ এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কায়কোবাদ সম্পদের পাহাড় জানানো যাচ্ছে অভিযোগ, থানায় বসলেই ভিডিওকলে হাজির এসপি