প্রতিষেধকের অভাবে সেলিম মাদবরের মৃত্যু

আজিজুর রহমান বাবু, শরীয়তপুর প্রতিনিধি:

রাসেল ভাইপার একটি বিষধর সাপ। যার কামড়ে সুচিকিৎসা না পেলে রোগীর মৃত্যু অবধারিত। এই সাপের কামড়ের পরবর্তী ১০০ মিনিটের মধ্যে ” এন্টি ভেনাম ” ইনজেকশনটি প্রয়োগ করলে রোগীর জীবন রক্ষা সম্ভব হতে পারে।

এখন কথা হচ্ছে – এই ইনজেকশনটি নেই কেন ? এমন গুরুত্বপূর্ণ ইনজেকশনের ঘাটতি কেন হবে ? কারা নজরদারি করবেন ? তাঁদের কী কোন দায় নেই ? যদিও সরকারী হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে পাওয়ার কথা ছিল কিন্তু শরীয়তপুর জেলার কোথাও এন্টিভেনাম ইনজেকশনটি পাওয়া গেলো না ।

যে পরিবার থেকে তাঁদের প্রিয় মানুষটি এভাবে চলে যায়, একমাত্র তাঁরা ই উপলব্ধি করতে পারবেন… শূন্যতা কী? সারাজীবনের অর্জিত সম্পদ শেষ বয়সে স্ত্রী পুত্র কন্যা নিয়ে উপভোগ করবেন, কত সাধ আহলাদ ছিল মনে – সব যেনো গুড়েবালি, তা আর হলো না।

সম্প্রতি সখিপুর বাজারে প্রতিষ্ঠিত ফার্নিচার ব্যবসায়ী হাসোজ্জ্বল সেলিম মাদবর সকালে বিষধর সাপ রাসেল ভাইপার কতৃক সংক্রামিত হন। জীবনের কোন মূল্য নেই। একটা ইনজেকশনের অভাবে – জীবন সবশেষ !

সময়মত একটা ইনজেকশন দিতে পারলে এমন পরিস্থিতি তৈরি হতো না। সেলিম মাদবরের পুরো শরীরে সাপের বিষ এমন ভাবে ছড়িয়ে পড়তো না।

ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এন্টি ভেনাম ইনজেকশনটি থাকার কথা। দুঃখের বিষয় সেখানেও ছিল না। ইনজেকশন প্রাপ্তির সঠিক তথ্য না থাকায় খুব বেশী সময় অতিবাহিত হয়ে যায়। মাত্র ১৫ দিনের ব্যবধানে দুটি তরতাজা প্রাণ হারিয়ে গেলো।

গুরুত্বপূর্ণ এই ইনজেকশনটি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আগাম সংরক্ষিত করে রাখলে হয়ত বেঁচে যেতে পারতেন প্রয়াত সেলিম মাদবর ।

উক্ত পরিবারের প্রতি আন্তরিক ভাবে সমবেদনা প্রকাশ করছি।

আমাদের প্রত্যাশা – যথাযথ কর্তৃপক্ষ দ্রুত এন্টি ভেনাম ইনজেকশন টি সংরক্ষণ করে, আগামীতে যেনো কোন সাপেকাটা রোগীদের প্রাণ না যায়। জীবন রক্ষার্থে জরুরী ভাবে ব্যবস্হা গ্রহণ করবেন।

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ তিতাস গ্যাস অফিসের নৈশপ্রহরী কোটি কোটি টাকার মালিক !

স্টাফ রিপোর্টারঃ

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের পাইনাদি ওয়ার্কশপের মোড় এলাকার বাসিন্দা মনির হোসেন ওরফে গ্যাস মনির তিতাসের নিরাপত্তাকর্মী পদে চাকরি করেন। মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন তিনি। এলাকায় অবৈধ গ্যাস সংযোগ, চুলা প্রতি গ্যাসের টাকা অবৈধভাবে উত্তোলন আর গ্যাসের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে মনির হোসেন অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন। তার নামের প্রভাব এতটাই যে তাকে পুরো এলাকাজুড়ে গ্যাস মনির নামে চেনেন এলাকার বাসিন্দারা।
মনির হোসেন ওরফে গ্যাস মনির তিতাস অফিসের নিরাপত্তাকর্মী অথবা নৈশপ্রহরী হলেও এলাকায় তিনি বিশিষ্ট শিল্পপতি হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছেন। স্থানীয়রা বলছেন, মনির হোসেন ওরফে গ্যাস মনির তার নিজ এলাকা পাইনাদিসহ আশপাশের এলাকা হীরাঝিল, মিজমিজি, তেরা মার্কেট, কান্দাপাড়াসহ আশপাশে তিনিই গ্যাসের অবৈধ সংযোগ দিয়ে থাকেন এবং তিতাস অফিসের সঙ্গে যোগসাজশে লাইন বিচ্ছিন্ন করে থাকেন।
মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে তিনি মালিক হয়েছেন বহুতল ভবনের। পাইনাদি ওয়ার্কশপের মোড় এলাকায় চারকাঠা জমির ওপর নির্মিত তার বহুতল ভবনটির আনুমানিক মূল্য পাঁচ কোটি টাকা। তিন কাঠা জমিসহ কয়েকটি দোকানও আছে তার। যার আনুমানিক মূল্য দুই কোটি টাকা। এলাকায় ও গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের মতলবে নামে-বেনামে জমিজমা কিনেছেন। হয়েছেন কোটি কোটি টাকার মালিক।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, তিতাস গ্যাস অফিসের নিরাপত্তাকর্মীদের ইনচার্জ মনির হোসেন নারায়ণগঞ্জ তিতাস গ্যাস অ্যান্ড ট্রান্সমিশনে ছয় বছর চাকরি করেছেন। সেই সময়ে তিনি সিদ্ধিরগঞ্জের পাইনাদি এলাকার গ্যাসের সব সংযোগ দিয়েছেন এবং অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে আবার পুনরায় চালু করেছেন। পরবর্তী সময়ে তিতাসের সোনারগাঁও কার্যালয়ে এসেও তিনি আবার শুরু করেন অবৈধভাবে আয়। বহু বাড়িতে অবৈধ গ্যাস সংযোগ ও বিচ্ছিন্নের নামে টাকা কামিয়েছেন গ্যাস মনির। এ ছাড়া অবৈধ সংযোগ রয়েছে এমন বাসা থেকে মাসিক হারে গ্যাসের বিল উত্তোলন করেছেন। সেই সুবাধে তিনি কাড়ি কাড়ি টাকার মালিক হয়েছেন। অন্যদিকে, পাইনাদী এলাকায় অবৈধ গ্যাস ও গ্যাস সংযোগের নামেও তিনি প্রচুর টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন চুনাভাট্টির মালিকদের কাছ থেকে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, বর্তমান নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ তিতাস অফিসে কর্মরত নিরাপত্তাকর্মীদের দলপতি মনির হোসেন বিভিন্ন সময়ে নানা কলাকৌশলে গ্যাস সংযোগের নামে ও আবাসিকে গ্যাস সংযোগের নামে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করেছেন।
আব্দুল করিম নামে পাইনাদি ওয়ার্কশপের মোড় এলাকার এক চা দোকানি  বলেন, ‘এখন আর সে গ্যাস মনির হোসেন নাই, বহু সম্পদের মালিক। এলাকায় বহুতল ভবন নির্মাণ করেছেন। গাড়ি হাঁকিয়ে চলাফেরা করেন। অঢেল সম্পদের মালিক বনে গেছেন। ’
হাসিবুল খন্দকার জানান, কয়েক বছরের ব্যবধানে গ্যাসের সঙ্গে লেনদেন করে মনির হোসেন এখন কোটি টাকা মালিক বনে গেছেন। এলাকায় তিনি কোটিপতি দানবীর হিসেবে চলাফেরা করেন।
ভুক্তভোগীরা জানান, বৈধ সংযোগের কথা বলে মনির হোসেন যে সংযোগ দিয়েছেন তা এখনো অবৈধই রয়ে গেছে। সরকার আবাসিকে তিতাস গ্যাসের বৈধ লাইন বন্ধ ঘোষণার পর যত সংযোগ মনির হোসেন এলাকায় দিয়েছেন, তা সবই অবৈধ হিসেবে রয়েছে। মনির হোসেন তিতাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে গোপনে আঁতাত করে এই সংযোগগুলো বৈধ করে রেখেছেন এবং সংযোগগুলো থেকে প্রতি চুলায় এক হাজার টাকা করে তোলেন। শুধু তা-ই নয়, অবৈধ সংযোগের কথা বলে বহু বাসিন্দার কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন তার ইচ্ছামতো টাকা।
নিরাপত্তাপ্রহরী হয়ে এত সম্পদের মালিক কিভাবে হলেন জানতে চাইলে মনির হোসেন বলেন, ‘আমি যা কিছু করেছি সৎপথে, সৎ উপার্জনের মাধ্যমে করেছি। অবৈধভাবে কিছুই করিনি। ’
সোনারগাঁ তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশনের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) সুরুজ আলম জানান, তিতাসের কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ লিখিত আকারে পেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় তিতাস কর্তৃপক্ষ।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ জানান, অনৈতিকভাবে কেউ যদি অঢেল সম্পদের মালিক হন, সেই বিষয়গুলো তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র্যাব-১১-এর অধিনায়ক তানভির মাহমুদ পাশা বলেন, ‘অপরাধী যে-ই হউক না কেন, তাদের কোনো অবস্থাতেই ছাড় দেওয়া হবে না। অবৈধভাবে কেউ সম্পদ অর্জন করলে তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে। ’

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম
শিক্ষার্থীরা রোডম্যাপের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিলেন শাকসু নির্বাচনের বিদেশ যেতে না পারায় মাইক ভাড়া করে এলাকাবাসিকে গালিগালাজ করলেন কিশোরগঞ্জের যুবক জুলাই সনদে স্বাক্ষর করল গণফোরাম অন্যদেরও সই করার আহ্বান কমিশনের সূচক সাড়ে ৩ মাস আগের অবস্থানে লেনদেন ৪ মাসে সর্বনিম্ন আওয়ামীলীগ ফিরলে হাসিনার পা ধরেও মাফ পাবেন না: রাশেদ খান বিমানবন্দর অগ্নিকান্ডে পুড়েছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম কুমিল্লায় গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, পালিয়েছেন স্বামী ও তাঁর পরিবারের লোকজন ঢাকা এলজিইডিতে দুর্নীতির একচ্ছত্র অধিপতি বাচ্চু মিয়া বিমান বন্দরের সামনে এখোনো উৎসুক জনতার ভীড় নেভেনি আগুন বাড়িভাড়া ৫০০ টাকা বৃদ্ধি করে প্রজ্ঞাপন জারি শিক্ষকদের