তারেক রহমানের নির্দেশ অমান্য: বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে কমিটি বাণিজ্যের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার বিএনপি নেতা আবুল হোসেন খানের বিরুদ্ধে দলের কার্যক্রমে স্বেচ্ছাচারিতা ও কমিটি বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে উপজেলার স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ বিরাজ করছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক দলীয় সূত্রে জানা গেছে সম্প্রতি বিএনপি’র সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে বিএনপি’র কমিটি গঠনের বিষয়টি নিয়ে সারাদেশে দলীয় নেতারা ব্যস্ত সময় পার করছেন। এরই ধারাবাহিকতায় বাকেরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ছাত্রদলের চলমান কমিটি গঠন প্রক্রিয়ায় সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের বাইরে থাকা ব্যক্তিদের সুযোগ দেয়ার অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বিএনপির মাঠ পর্যায়ের অসংখ্য নেতাকর্মী।
তারা বলেন সম্প্রতি জনাব তারেক রহমানের নির্দেশে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয় সেখানে বলা হয়, চলমান কমিটি প্রক্রিয়ায় “এক নেতা এক পথ” কৌশল অবলম্বন করে দলের ত্যাগী নেতা-কর্মী যারা দুঃসময়ে মাঠ পর্যায়ে থেকে দলকে শক্তি যুগিয়েছে তাদের কি কমিটিতে সুযোগ দেয়া হবে। কিন্তু বাকেরগঞ্জের বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য আবুল হোসেন খান তার পছন্দের ব্যক্তিদের মাধ্যমে পকেট কমিটি দেয়ার প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছেন বলে এসব নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেন। তারও আশঙ্কা করেন এই চলমান কমিটি গঠন প্রক্রিয়ায় বড় ধরনের আর্থিক লেনদেন ও সুযোগ সুবিধার মাধ্যমে এলাকায় না থাকা এবং সংগঠনের সাথে দীর্ঘদিন অনুপস্থিত ব্যক্তিদের স্থান দেওয়ার ঘটনা দৃশ্যমান। আবুল হোসেন খানের এমন স্বেচ্ছাচারী ও দলীয় নেত্রীর সাংঘর্ষিক কর্মকাণ্ডের কারণে বিগত কয়েক বছরে বিএনপির শক্তিশালী ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত বাকেরগঞ্জের মাঠ পর্যায়ের সাংগঠনিক কাঠামো দুর্বল হয়ে পড়েছে বলে দাবি স্থানীয় নেতৃবৃন্দের।

চলবে…..

দখলদারিত্বে বন্ধ পানি নিস্কাশন, আমতলী পৌর শহর পানিবন্দি

দখলদারিত্বে বন্ধ পানি নিস্কাশন, আমতলী পৌর শহর পানিবন্দি

মো: আল আমিন (বাবু), আমতলী (বরগুনা) সংবাদদাতাঃ আমতলী পৌর শহরের পানি নিস্কাশনের কালভার্ট ও ড্রেনেজ  দখল করে বসতবাড়ী ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেছেন প্রভাবশালীরা। ফলে শহরে তীব্র জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এতে বসত বাড়ির জমানো পানি পঁচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে, মশা ও মাছির জন্ম হয়ে পরিবেশ চরম আকারে দুষিত হচ্ছে। দ্রুত পৌর শহরের অর্ধলাখ মানুষকে রক্ষায় কালভার্ট ও ড্রেনেজ দখল করে স্থাপনা উচ্ছেদের দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

জানাগেছে, ১৯৯৮ সালে আমতলী পৌরসভা প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতিষ্ঠা থেকে পৌর শহরের ড্রেনেজ ব্যবস্থা ছিল নাজুক। ২০০০ সালে পৌর শহরের পানি নিস্কাশনের জন্য বাঁধঘাট চৌরাস্তায় কালভার্ট, পৌরসভার লেকে কালভার্ট ও মিঠা বাজার এলাকার ড্রেনেজ নির্মাণ করা হয়। এগুলো দিয়ে মুল পৌর শহরের পানি নিস্কাশন হয়। ওই কালভার্ট ও ড্রেনেজ দখল করে প্রভাবশালীরা শতাধিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠান ও বসতবাড়ী নির্মাণ করেছেন। ওই স্থাপনার নির্মাণ করায় কালভার্ট ও ড্রেনেজে ময়লা আবর্জনা জমে ভরাট হয়ে গেছে। এতে শহরের পানি নামছে না। ফলে পুরো বর্ষার মৌসুমে পৌর শহরের অধিকাংশ এলাকা পানি বন্দি হয়ে থাকে।

তীব্র জলাবদ্ধতায় বাসাবাড়িতে মশা ও মাছির জন্ম হয় এবং পানি নষ্ট হয়ে পরিবেশ চরম আকার ধারন করে। মানুষের পচা দুর্গন্ধে বসবাস করতে হয়। দ্রæত কালভার্ট ও ড্রেনেজ দখল করে স্থাপনা নির্মাণকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা ও স্থাপনা উচ্ছেদের দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। গত ২৫ বছরেও রাজনৈতিক প্রভাবে দখল মুক্ত হয়নি কালভার্ট ও ড্রেনেজ। অপর দিকে গত ২৭ বছর পৌরসভা কর্তৃপক্ষ অপরিকল্পিত যতগুলো ড্রেনেজ নির্মাণ করেছেন তা দিয়েও পানি নিস্কাশন হচ্ছে না। তাতে ময়লা আবর্জনায় ভরে ড্রেনেজ আটকে গেছে।

রবিবার আমতলী পৌর শহরের চৌরাস্তা কালভার্ট ঘুরে দেখাগেছে, কালভার্ট দখল করে মামুন, জামাল প্যাদা, মনির প্যাদা ও হাসান মৃধাসহ শতাধিক ব্যক্তি স্থাপনা নির্মাণ করেছেন। ওই স্থাপনার খুটিতে কালভার্টের মুখ আটকে আছে। ওই খুটির সঙ্গে ময়লা আবর্জনা জমে কালভার্টের মুখ বন্ধ হয়ে গেছে। এতে কালভার্ট দিয়ে পানি নিস্কাশন হচ্ছে না।

দখলদারিত্বে বন্ধ পানি নিস্কাশন, আমতলী পৌর শহর পানিবন্দি

অপর দিকে মিঠাবাজার ড্রেনেজের মুখ সচল থাকলেও পিছনের অংশ আটকে ব্যবসায়ী সোহেল মিয়া পাকাভবন নির্মাণ করেছেন। পৌরসভার লেকে কালভার্ট উচু হওয়ায় তা দিয়ে তেমন পানি নামছে না। পানি নিস্কাশন না হওয়ায় সবুজবাগ, কলেজ রোড, মিঠাবাজার, ওয়াবদা, ফেরিঘাট সড়ক, মাছ বাজার এলাকা ও খোন্তাকাটা চরম জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।  ওই পানি পঁচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।

মিঠাবাজার এলাকার বাসিন্দা জসিম, সেলিম, সিদ্দিক ও ময়না বলেন, ব্যবসায়ী সোহেল মিয়া ড্রেনেজ দখল করে পাকা ভবন নির্মাণ করেছে। এতে ড্রেনেজ দিয়ে পানি না নামায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। সবুজবাগ এলাকার বাসিন্দা দীলিপ মাঝি, লালু মাঝি ও গোপাল মাঝি বলেন, পানি নিস্কাশন না হওয়ায় ১৫ পরিবার পানির মধ্যে বসবাস করছি। তারা আরো বলেন, পানি পঁচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে, মশা  ও মাছি জন্ম হয়ে পরিবেশ চরম আকার ধারন করছে।

একই এলাকার বাসিন্দা শাহ আলম, এসকান্দার, আশরাফ, জসিম মৃধা ও অসিম মৃধা বলেন, অর্ধ শতাধিক পরিবার পানি বন্দি অবস্থায় আছি। কালভার্ট দিয়ে পানি নিস্কাশন না হওয়ায় চরম জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। পানি পঁচা গন্ধে এলাকায় বসবাস করা খুবই কষ্ট। তারা আরো বলেন, পৌরসভা কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি কিন্তু তারা কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

খোন্তাকাটা এলাকার বাসিন্দা ইদ্রিস আলী, সোহেল মল্লিক, ইউসুফ আলী ও রেজাউল করিম বলেন,  ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় ৪০ টি পরিবার পানি বন্দি অবস্থায় আর্ছি। বাসা-বাড়ী থেকে নামতে পারিনা। তারপর পানি পঁচে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পরছে।

ঘরে বসবাস করা কঠিন। দ্রুত পানি নিস্কাশনের দাবী জানান তারা।
ব্যবসায়ী সোহেল মিয়া বলেন, ড্রেনেজের ওপর পাকা ভবন নির্মাণ করেনি। তবে ড্রেনেজের ওপর খুটি দিয়ে রান্নাঘর নির্মাণ করেছি।

আমতলী পৌরসভার প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোঃ মামুনুর রশিদ বলেন, লোক পাঠিয়ে কালভার্ট ও ডেনেজের মুখের ময়লা-আবর্জনা পরিস্কার করে পানি নিস্কাশন ব্যবস্থা সচল করে দেয়া হবে।

আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার পৌর প্রশাসক মোঃ রোকনুজ্জামান খাঁন বলেন, দ্রুত কালভার্ট ও ড্রেনেজগুলো দখল মুক্ত করে পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা করা হবে।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম