বাড্ডার মাদক বিক্রেতা মহসিনের কর্মকান্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক:

এক সময় ড্রাইভার আরেক সময় হেলপার, কি করে নাই তারা। আবার কখনো এলাকার পাতি গুন্ডা,কখনো আবার ইয়াবা বিক্রেতা। কিছুই বাদ যাই নি তাদের। বাহির থেকে দেখলে মনে হয় “উপরে ফিটফাট ভিতরে সদরঘাট”। বলছিলাম রাজধানী মেরুল বাড্ডা বৈঠাখালীর বাসিন্দা মহসিন ও পাঁচতলা বাজারের বাসিন্দা শরিফের কথা। এই দুই জন এক সময় কেউ কারো ছায়া পর্যন্ত দেখতে পারতো না। কে কার থেকে কতটি বেশি ইয়াবা বিক্রি করবে তা নিয়ে চলতো তাদের মধ্যে লড়াই। ক্ষমতাশীল আওয়ামী লীগ এর সময় কালে বাড্ডা এলাকায় মহসিন একাধিকবার ইয়াবা বিক্রি নিয়ে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হোন। জানা যায় ইয়াবা সেবনের সময় ডিআইটি প্রজেক্ট অ আ পাঠশালার ভেতরে তার আগেও ১৫০ পিস নিয়ে পুলিশের কাছে ধরা পড়ে। এরপর মধ্যে বাড্ডা ব্রীজের নিচে একবার ৪৮ পিচ নিয়ে পুলিশের হাতে আটক হয়। নিজ বাসা থেকে বের হয়ে বনশ্রী যাবার পথে ৭৭ পিচ নিয়ে পুলিশের হাতে আটক হয়। মহসিনের নিজ এলাকা বৈঠাখালী থাকা সত্ত্বেও আধিপত্য বিস্তার করত ডিআইটি প্রজেক্টে। কারন মহসিন জানতো নিজ বাসস্থানে এসব মাদকদ্রব্য বিক্রি করা ঠিক না। তাই মাদক বিক্রির অন্যতম স্থান হিসেবে ডিএইটি প্রজেক্ট বেছে নেয়। যার ফলে ডিআইটি প্রজেক্টের পাঁচতলা বাজারের শরিফের সাথে প্রতিনিয়তই চলতো মহসিন এর মারামারি ও ঝামেলা। মহসিন যখন ডিআইটি প্রজেক্টে আসতো তখন শরিফের ভয়ে প্রজেক্টের একাধিক ছেলেদেরকে ম্যানেজ করে তার মাদক ব্যবসা পরিচালনা করতো। মহসিন এর মাদকের হাত ছিলো অনেক উপরে। তখন কম করে প্রতিদিন ২০০ ইয়াবা সেল দিতো। মাল শেষ হয়ে গেলেই মহসিন ঘা ঢাকা দিতো। আবার ১০-১২ দিন পর এসে হাজির। এভাবেই চলছিল মহসিন এর ইয়াবা বাণিজ্য। বর্তমানে মহসিন তার অতীতের কুকর্ম ঢাকার জন্য ডিআইটি প্রজেক্টের একটি হাউজের গাড়ি চালায়। তারপরও থেমে নেই তার অতীতের মাদক বানিজ্য। এ যেন সর্ষের ভিতর ভূতের খেলা। বর্তমানে আওয়ামীলীগ দল ক্ষমতা হারানোর পর মহসিন তার বাহিনী নিয়ে চেষ্টা করছে কি করে আবার বিএনপি তে যোগ দেওয়া যায়। এমন অসৎ ব্যক্তিরা হলো প্রতিটি দলের জন্য হাইব্রিড। যখন যেখানে সুযোগ পায় তখন সেখানেই বসে পড়তে চায়। জানা যায় বর্তমানে তাদের আড্ডা দেওয়ার আসর হলো ডিআইটি প্রজেক্ট এর ০৬ নাম্বার রোডের পশ্চিম পাশে অ আ পাঠশালায়। যেখানে বাচ্চারা পড়াশোনা করে সেখানে কিভাবে চলতো মহসিন গ্রুপের এমন অসামাজিক কর্মকান্ড। তা নিয়ে উদ্বিগ্ন এখন এলাকাবাসী।
বর্তমানে অ আ পাঠশালার দ্বায়িত্বে থাকা মামা মহসিনের সাথে সাংবাদিকরা মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, এমন অপকর্মের সাথে যারা যারা জড়িত তাদের সকলকেই স্কুলে প্রবেশ করতে নিষেধ করা হলেও তারা কথা শোনে না। এখন তিনি ও আতঙ্কে রয়েছেন বলে আমাদেরকে জানান।
খোঁজ নিয়ে আরো জানা যায়,বিভিন্ন সময় মহসিন ইয়াবার প্রলোভন দেখিয়ে নেশাগ্রস্ত মেয়েদেরকে নিয়ে এই পাঠশালাতে রাতের বেলায় ফুর্তি করতো। যার প্রমান রয়েছে সাংবাদিকদের হাতে। ফলে এই মহসিন গ্রুপের কর্মকাণ্ড দেখে ভয়ে মুখ খুলতেন না আশেপাশের লোকজনেরা।
আরো জানা যায়, হেলপার শরিফ প্রতিদিন নেশায় আবদ্ধ হয়ে রাস্তায় ছেলে মেয়েদের ডেকে নিয়ে ফিটিং দিত। টাকা না দিলে চলতো অমানুষিক নির্যাতন। গত কয়েকবছর আগে কে বা কারা হেলপার শরীফের ছোট ভাইকে ছাঁদ থেকে ফেলে হত্যা ও করে। বিভিন্ন সময়ে নেশার টাকা জোগাড় করতে না পারলে হেলপার শরিফ মানুষের হাতের মোবাইল,গাড়ির চাকা,গাড়ির টিউব,অন্যের জিনিসপত্র বিক্রি করে ইয়াবা সেবন করতো। তারা দুইজনেই ছিলো সাবেক আওয়ামী লীগের হাইব্রিড কর্মী। মিছিল আর মিটিং এর পেছনে থেকে মানুষ দেখানোই ছিলো তাদের কাজ।
এ বিষয় নিয়ে বর্তমানে সেনাবাহিনীর একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সাথে কথা বললে তিনি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে কেউ যদি দেশ ও জনগণের ক্ষতি করে কিংবা রাজনৈতিক পরিচয় দিয়ে নিজেকে আড়াল করতে চায় আমরা তাদের প্রত্যেককে খুঁজে বের করে এনে বিচারের আওতায় করব।

দুর্নীতির টাকায় স্ত্রীর নামে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের মাসুদ

স্টাফ রিপোর্টার:

দেখতে আপাদ মস্তক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজী পরহেজগার ব্যাক্তি। দাড়ি, টুপি সবই আছে। চাকরিও করেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ে একজন প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা হিসেবে। স্ত্রী আর তিন সন্তান নিয়ে থাকেন ভাড়া বাসায়। প্রতিদিন সকালে অফিস যান এবং এরপর কাজ শেষে বাসায় ফিরেন। বলছি ধর্ম মন্ত্রণালয় অধীনস্থ ইসলামিক ফাউণ্ডেশনের আইসিটি ও ইসলামিক এনসাইক্লোপিডিয়া অধিদপ্তরের পরিচালক আবদুল্লাহ আল মাসুদ মোল্লা’র কথা।

প্রথম দর্শনে কেউ ধারণাই করতে পারবেন না যে তার এই সহজ-সরল সাধারণ চলাচলের পেছনে রয়েছে এক ধরি মাছ না ছুঁই পানি ধরণের দুর্নীতির এক লম্বা গল্প।

পরিবার পরিজন নিয়ে পুরান ঢাকার বাংলাবাজারের বিউটি বোর্ডিংয় সংলগ্ন ৩১/২ শিরিস দাস লেনে ভাড়া থাকেন তিনি। বাসা ভাড়া দেন ২৫ হাজার টাকা৷ এরপর সার্ভিস চার্জ, বিদ্যুৎ ও গ্যাস বিল। তার বড় ছেলে পড়াশোনা করে নটরডেম বিশ্ববিদ্যালয়ে। মেঝ মেয়ে একটি বেসরকারি কলেজে। আর সবার ছোট মেয়ে মাদ্রাসায়।

এ পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। খটকা বাধে যখন দেখা যায় যে দ্রব্যমূল্যের এই দুর্বিষহ একেবারেই ভ্রুক্ষেপহীনভাবে দিব্যি চলছেন তিনি। সামান্য এই সন্দেহ থেকে অনুসন্ধান চালান এই প্রতিবেদক। আর বেরিয়ে আসে তার আসল চেহারা।

এই সরকারি চাকুরে আর ক’দিন পরেই যাবেন অবসরে। কিন্তু চাকরির এত বছরে যা ঘটানোর তা ঘটিয়ে ফেলেছেন। বিভিন্ন তদবির, বদলি বানিজ্যের মাধ্যমে পকেটে পুরেছেন কোটি কোটি টাকা৷ শুধুমাত্র বেতনভুক্ত একজন কর্মকর্তা’র ঢাকা শহরে কয়েকটি ফ্ল্যাট, জমি তার প্রমাণই বটে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, পুরান ঢাকার কলতা বাজারের কাজী আবদুর রউফ রোড’র ১৩/এ বিল্ডিংয়ে তার রয়েছে ২টি ফ্ল্যাট। তবে তা অবশ্য রেখেছেন নিজ স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা’র নামে। এছাড়া রাজিয়া সুলতানা’র নামে রয়েছে রায়েরবাগে জমি। গ্রামের বাড়ি মাদারীপুরে পৈতৃক সম্পত্তির বাহিরেও কিনেছেন বড় মাপের দামি জমি। পৈতৃক বাড়িতেও তিনি আলিশান প্রাসাদতূল্য বিল্ডিং নির্মাণ করছেন। যদিও সেটি সাময়িকভাবে লোকচক্ষু থেকে আড়াল করতে বন্ধ রেখেছেন।

অবসরকালীন ভাতা পাওয়ার আগেই এই বিপুল সম্পদের উৎস প্রসঙ্গে সন্দেহ সৃষ্টি হওয়া একেবারেই অমূলক নয়। তবে আরেকটু যাচাই বাছাই করার জন্যে আরেকটু গভীরে যেতে হবে। প্রতিবেদকের কথা হয় তার দপ্তরের একাধীক কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের সঙ্গে।

তারা জানান, মাসুদ সাহেব এমনিতে ভালো লোক। তবে তাকে যখনই কোন তদন্ত, বদলি কমিটির দায়িত্ব দেওয়া হয় তখনই তিনি হাত সাফাইয়ের কাজটি সেরে নেন। নাহলে বুঝেন না কেন, তার স্ত্রী একজন নেহাৎ গৃহিণী এতো টাকা পাবে কোথা থেকে! উনি (মাসুদ) খান (ঘুষ) তবে মাত্রাতিরিক্ত না আবার একেবারে কমও না। ওনার স্টাইল অনেক ভিন্ন।

এই প্রসঙ্গে আবদুল্লাহ আল মাসুদ মোল্লা’র সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, প্রথমেই তিনি বিব্রত হয়ে পড়েন। এরপর বলেন সম্পত্তি তার স্ত্রী’র নামে।

‘আপনার স্ত্রী তো একজন গৃহিণী, তিনি এতো টাকা কোথায় পেলেন’ এমন প্রশ্ন করা হলে, তিনি সাংবাদিক পাড়ায় অনেক পরিচিতি আছে জানিয়ে বলেন, আপনার এতো মাথা ব্যাথা কেন? আপনি আসেন। আর আমার এই প্রসঙ্গে কোন মন্তব্য নেই। যা পারেন করেন।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম