জাহাঙ্গীর আলম শাহীন:
ঢাকা সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের উমেদার লোকমানের ঘুষ, দুর্নীতি ও জাল-জালিয়াতের কারণে তার বিরুদ্ধে দুূদকে অভিযোগ হয়েছে।
সরজমিনে দেখা যায়, ঢাকা সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের এজলাস এর সামনে রুম ভর্তি লোক দাঁড়িয়ে থাকার পরও সাব- রেজিস্টার খাস কামরায় বসে দলিলে স্বাক্ষর করেছেন এবং মাঝে-মধ্যেই উমেদার লোকমানের সাথে নিচু স্বরে কথা বলতে ও দলিলে স্বাক্ষর করতে দেখা যায়। নিয়ম অনুযায়ী এজলাস এর সামনে যতক্ষণ সেবা গ্রহীতা গন থাকবেন ততক্ষণ এজলাসে বসে কথোপকথন শেষে সাব রেজিস্ট্রার দলিলে সাক্ষর করবেন। তাছাড়াও উমেদার লোকমানকে দলিল লেখক ও দাতা - গ্রহীতাদের সাথে কমিশন নিয়ে কথা বলতে দেখা যায়। কখনো এজলাসের পাশে, আবার কখনো সাবরেজিস্ট্রারের খাস কামরার পাশে সিসি ক্যামেরা মুক্ত রেকর্ড রুমের ভিতরে যেখানে লোকমান ঘুষের টাকা লেনদেন করে থাকেন। সাব কবলা, হেবা, বন্ধকি, কমিশন বা পাওয়ার যে দলিলই হোক লোকমানের হিস্যা না দিলে পোহাতে হয় নানা ভোগান্তি। জাল নামজারি, দাখিলা,পর্চা কিংবা শ্রেণী পরিবর্তন করে দলিল করা লোকমানের কাছে এগুলো খুবই সামান্য ব্যাপার শুধু ঠিকঠাক কমিশন দিলেই সব সম্ভব।উমেদার লোকমান একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে অবৈধ ভাবে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। অসহায় সেবা গ্রহীতাগন যেন লোকমানের খেলার পুতুল। সাব- রেজিস্ট্রারকে সহযোগিতা করার জন্য কেরানি, মোহরার, সাব-মোহরার, অফিস সহকারি আছেন নামে মাত্র, সবখানেই কর্তৃত্ব খাটান উমেদার লোকমান। লোক দেখানো অনলাইন ব্যবস্থা চালু থাকলেও কাজ চলে তাদের নিয়মেই।
তেজগাঁও রেজিস্ট্রি কমপ্লেক্স এর কয়েকজন উমেদারের অনিয়ম ও ঘুষ বাণিজ্যের কারণে একাধিক ভুক্তভোগী জেলা রেজিস্টার বরাবর অভিযোগ করেছেন।যে কারণে জেলা রেজিস্টার ১৫ জন দুর্নীতিবাজ উমেদার এর তালিকা তৈরি করেছেন যার মধ্যে উমেদার লোকমানের নামও আছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তেজগাঁও রেজিস্ট্রি কমপ্লেক্সে এর একাধিক সরকারি ষ্টাফ জানায়, উমেদার লোকমান দলিল লেখকদের সাথে আতাত করে অতিরিক্ত ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে প্রত্যেকটা দলিলের কাজ সম্পন্ন করেন। তাছাড়াও উমেদার লোকমানকে ঢাকার বাইরে বদলি করা হলেও মোটা অংকের টাকা ঘুষ দিয়ে পূর্বের জায়গাতেই বহাল আছেন।
অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, উমেদার লোকমান দীর্ঘদিন একই জায়গাতে থাকার কারণে নিজস্ব একটি দুর্নীতির সিন্ডিকেট তৈরি করে গড়ে তুলেছেন সম্পদের পাহাড়। ঢাকা সদর সাব রেজিস্ট্রি অফিসে যত রেজিস্টার যোগদান করেছেন অল্প দিনের মধ্যেই তাদের সাথে গভীর সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন উমেদার লোকমান । কারণ, সাব রেজিস্ট্রারের নামে প্রতিদিন, প্রতি দলিল থেকে আদায়কৃত কয়েক লক্ষ ঘুষের টাকা সন্ধ্যার পর ওই রেজিস্ট্রারের বাসায় পৌঁছে দিয়ে আসেন। এভাবে ঘুষ, দুর্নীতি ও জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে রাজধানীর টঙ্গী, রামপুরা ও নিজের এলাকায় বিপুল পরিমান কৃষি জমি ক্রয় করেছেন বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়।
ঢাকা সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের উমেদার লোকমানের ঘুষ, দুর্নীতির বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ এবং একই অফিসে দীর্ঘদিন থাকার ব্যাপারে জানতে তার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানায়, আগের ঝামেলা সমাধান হয়ে গেছে এবং এখানে ১০-১২ বছর যাবৎ আছি।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোহাম্মদ মাসুদ || বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ২১/১ নয়াপল্টন, ঢাকা-১০০০ || মোবাইল : ০১৫১১৯৬৩২৯৪,০১৬১১৯৬৩২৯৪ || ই- মেইল: dailysobujbangladesh@gmail.com || ওয়েব : www.dailysobujbangladesh.com
Copyright © 2025 দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ. All rights reserved.