৯টি শৈল্পিক গ্রুপে রিসিভার বসাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক

স্টাফ রিপোর্টার ॥

ব্যাংকের ঋণ আদায়ের জন্য এস আলমসহ ৯টি শিল্প গ্রুপে রিসিভার বসাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যাদের মূল কাজ হবে ব্যাংক ঋণের বিপরীতে জামানত এবং তাদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি খুঁজে বের করা এবং সেই সম্পত্তি বিক্রি করে ব্যাংকের দেনা পরিশোধ করা।
এসব গ্রুপের সম্পত্তি এবং অর্থ উদ্ধারের সুবিধার্ধে রিসিভার নিয়োগের সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
এছাড়া এরই মধ্যে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের স্থাবর-অস্থাবর এবং বিদেশে থাকা সম্পত্তির সন্ধানে রিসিভার নিয়োগ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

এদিকে, বকেয়া ঋণের মোট টাকা আদায়ে গ্লোবাল ট্রেডিং করপোরেশন এবং এস আলম গ্রুপের অন্য সম্পত্তিসমূহ থেকে পাওনা আদায়ের জন্য অতিরিক্ত আইনি পদক্ষেপ নিতে পারে জনতা ব্যাংক। এস আলম গ্রুপের কাছ থেকে এক হাজার ৮৫০ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ আদায়ের জন্য জনতা ব্যাংক গ্রুপটির অন্যতম সহযোগী প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ট্রেডিং করপোরেশন লিমিটেডের জামানত সম্পত্তি নিলাম করার ঘোষণা দিয়েছে।

শেখ হাসিনার ১৫ বছরের মেয়াদে এস আলম গ্রুপের বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগের মধ্যে প্রথমবারের মতো একটি ব্যাংক গ্রুপটির একটি কোম্পানির বন্ধক রাখা সম্পদ নিলামে ওঠানোর পদক্ষেপ নিলো।

গত ১ নভেম্বর জনতা ব্যাংক পত্রিকায় নিলাম সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। ওই বিজ্ঞপ্তিতে আগামী ২০ নভেম্বরকে নিলামের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে।

ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ তথ্য অনুযায়ী, এ ঋণের বিপরীতে বন্ধক রাখা হয়েছে চট্টগ্রাম ও গাজীপুরে এস আলম গ্রুপের ১৮৬০ শতাংশ জমি, যার বাজারমূল্য সর্বোচ্চ ৩৫৮ কোটি টাকা। এ দাম পাওনা টাকার চেয়ে প্রায় পাঁচগুণ কম। এ সম্পত্তি বিক্রি করে খেলাপি ঋণ পুরোপুরি আদায় করা সম্ভব নয়। বকেয়া বাকি টাকা আদায়ে আরও আইনি পদক্ষেপের প্রয়োজন হতে পারে। অর্থঋণ আদালত আইনের ১২(৩) ধারা অনুযায়ী ব্যাংক মামলা করার আগেই জামানতের সম্পত্তি বিক্রি করে টাকা আদায় সম্ভব।

বাংলাদেশের কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলের (সিএজি) ২০২১ সালের এক নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গ্লোবাল ট্রেডিং করপোরেশন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশিকা না মেনে ঋণসীমা অতিক্রম করে অতিরিক্ত ঋণ নিয়েছে।

এস আলম গ্রুপের ওয়েবসাইট অনুসারে, ২০১২ সালে প্রতিষ্ঠিত গ্লোবাল ট্রেডিং করপোরেশন শিল্প কাঁচামাল, বাণিজ্যিক পণ্য এবং নির্মাণসামগ্রীর ব্যবসায় জড়িত ছিল।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১২ সালে সাধারণ বিমা ভবনে অবস্থিত জনতা ব্যাংকের চট্টগ্রাম করপোরেট শাখা থেকে গ্লোবাল ট্রেডিং করপোরেশন প্রাথমিকভাবে ৬৫০ কোটি টাকা ঋণ নেয়।

এ ঋণ ২০২১ সাল পর্যন্ত সুদ-আসলে মোট এক হাজার ৭০ কোটি ৬৫ লাখ টাকায় পৌঁছেছে। এর মধ্যে ৬১৭ কোটি ৪৭ লাখ টাকা পিএডি (পেমেন্ট এগেইনস্ট ডকুমেন্ট), ২২৩ কোটি ১৮ লাখ টাকা এলটিআর (ট্রাস্ট রিসিপ্ট) ঋণ এবং ২২৯ কোটি ৯৯ লাখ টাকা সিসি হাইপো ঋণ। সুদ-আসল মিলিয়ে ঋণের পরিমাণ ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে এক হাজার ৮৫০ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে।

সবা:স:জু-২৬/২৪

জিরো রিটার্ন দাখিল আইনত দণ্ডনীয়

জিরো রিটার্ন দাখিল আইনত দণ্ডনীয়

ডেস্ক রিপোর্ট:

আয়কর রিটার্নে ‘জিরো রিটার্ন’ নামে কোনো ব্যবস্থা নেই এবং শূন্য আয়ের তথ্য দিয়ে রিটার্ন দাখিল করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ বলে জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এ ধরনের তথ্য-উপাত্ত গোপন করলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।

রবিবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে এনবিআর। ‘জিরো রিটার্ন’ দাখিল বিষয়ক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে আলোচনা চলছে তা ভুয়া। এমন ফাঁদে পা না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে এনবিআর।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এনবিআর জানিয়েছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘জিরো রিটার্ন’ দাখিল বিষয়ক কতিপয় ভ্রান্ত ধারণাপ্রসূত পোস্ট জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নজরে এসেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এ সকল পোস্টে রিটার্ন পূরণের সবকয়টি ঘর “শূন্য” হিসেবে পূরণ করে রিটার্ন দাখিল করা যায় মর্মে ভ্রান্ত ধারণা প্রচার করা হচ্ছে। এসকল ভ্রান্ত ধারণার বশবর্তী হয়ে কোনো কোনো করদাতা তাদের আয়কর রিটার্নে আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায়ের বিষয়ে অসত্য ঘোষণা প্রদান করে আসছেন মর্মে জানা যায়।

এতে আরো বলা হয়েছে, করদাতাগণের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, আয়কর আইন, ২০২৩ অনুসারে ‘জিরো রিটার্ন’ নামে কোনো প্রকার রিটার্ন দাখিলের বিধান নেই। আয়কর আইন অনুসারে একজন করদাতাকে তার প্রকৃত আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় অবশ্যই সঠিকভাবে আয়কর রিটার্নে প্রদর্শন করতে হবে। করদাতার প্রকৃত আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় প্রদর্শন না করে এর কোনো একটি শূন্য অথবা সবগুলো তথ্য শূন্য হিসেবে প্রদর্শন করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং এটি একটি ফৌজদারী অপরাধ।

করদাতা কর্তৃক দাখিলকৃত আয়কর রিটার্নে তার আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় সম্পর্কিত সঠিক তথ্য প্রদর্শন না করে মিথ্যা বা অসত্য তথ্য প্রদান করলে আয়কর আইন, ২০২৩ এর ধারা ৩১২ ও ৩১৩ অনুসারে করদাতাকে পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড প্রদানের বিধান রয়েছে বলে জানিয়েছে এনবিআর।

এনবিআর জানিয়েছে, করযোগ্য আয় না থাকলেও প্রকৃত তথ্য প্রকাশ বাধ্যতামূলক-শূন্য আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় দেখিয়ে রিটার্ন দাখিলের সুযোগ নেই।

সংস্থাটি মনে করিয়ে দিয়েছে, সঠিক তথ্য দিয়ে রিটার্ন দাখিল করা একজন করদাতার পবিত্র নাগরিক ও আইনগত দায়িত্ব। দেশের উন্নয়নে অংশীদার হতে সৎভাবে রিটার্ন দাখিলের আহ্বান জানিয়ে এনবিআর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো ‘জিরো রিটার্ন’-এর প্রলোভন থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে। প্রদেয় না হলেও সঠিক তথ্য-উপাত্ত প্রদর্শন না করে শূন্য আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় দেখিয়ে শূন্য বা জিরো রিটার্ন দাখিল করার কোনো সুযোগ আয়কর আইনে নেই।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম