দুর্নীতিতে মোড়ানো মাফরুল সাদিক প্রিন্স

স্টাফ রিপোর্টার: 

মাগুরা জেলার মোহাম্মদপুর উপজেলার দীঘা ইউনিয়নের ফলোশিয়া গ্রামের মাফরুল সাদিক প্রিন্স, যিনি একজন (ডেসকো) এর ডিপ্লোমা উপবিভাগীয় প্রকৌশলী।বিওবি বিভাগ খিলক্ষেত এ কর্মরত রয়েছেন। এর আগে তিনি মিরপুর ১৩ নম্বরে (ডেসকোর) সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে তৎকালীন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর ছত্র ছায়ায় ও তার মদদে (ডেসকো) তে উপসহকারী প্রকৌশলী হিসাবে যোগদান করেন।

ফরিদপুর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজেই তার রাজনীতির হাতে খড়ি।পড়াশুনার পাশাপাশি তিনি উক্ত কলেজর জিএস নির্বাচিত হন। পরবর্তী সময়ে ডিপ্লোমা শেষ করে চাকুরীর জন্য ঢাকায় আসেন।যখন তিনি ঢাকায় আসেন তখন তার কাছে মেসে থাকা খাওয়ার টাকাও ছিল না।ডেসকোতে চাকুরীতে যোগদানের পরই তিনি রাজনৈতিক ভাবে বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা প্রকৌশলী পরিষদের সভাপতি ছিলেন ।

দীর্ঘর্দিন যাবৎ ওই পদে থেকে রাজনৈতিক মদদে অবৈধ উপায়ে কোটি কোটি টাকার মালিক হন। ডেসকো নেতা হওয়ার সুবাদে নিজের স্ত্রী নামে “লাবনী এন্টারপ্রাইজ” প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। ডেসকোতে সেবা নিতে আসা অনেক ভুক্তভোগি ও ডেভেলপার কোম্পানী ইলেকট্রিক লাইন ও লোডের জন্য আবেদন করলে তাদের কাছে অবৈধ ভাবে টাকা দাবি করতেন।

এমনকি টাকা না দিলে আবেদন গ্রহণ এবং কাজ করতেন না।তিনি বিভিন্ন ভাবে গ্রাহককে তাদের লিফ্ট,জেনারেটর, সোলার,সাব-স্টেশন ইত্যাদির কাজ তার স্ত্রীর প্রতিষ্ঠানে ” লাবনী এন্টারপ্রাইজ” এ দিতে বাধ্য করতেন। গ্রাহকরা তার কথামতো কাজ না করলে তাদের আবেদন গ্রহণ করতেন না এবং কাজও দিতেন না। এইভাবে ডেসকোতে তিনি অনৈতিকভাবে প্রচুর টাকা ইনকাম করেছেন। তার রয়েছে ফলসিয়া গ্রামে থ্রি প্লেক্স বাড়ি, যা এলাকার বাসিন্দার কাছে “কিং প্যালেস” নামে পরিচিত।

দিঘা ইমতিয়াজ মোল্লা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১০ লক্ষ টাকা ক্যাশ প্রদান সাপেক্ষে তিনি আজীবন দাতা সদস্য হয়েছেন।

বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় তার রয়েছে ১৭৬০ স্কয়ার ফিট সম্মলিত বিশাল বিলাস বহুল ফ্লাট। যার ঠিকানা: ব্লক-জি, বাসা নম্বর#১৩৮, রোড নাম্বার# ১৯, বসুন্ধরা আবাসিক, ঢাকা।

এছাড়াও এন ব্লকে স্ত্রীর নামে ৫ কাঠা জায়গায় ১০ তলা বাড়ি এবং ২ টা গাড়ি রয়েছে।(২০২৪ মডেলের হুন্দাই জীপও নোয়া মাইক্রো বাস)।

লাবনী এন্টারপ্রাইজ এ দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে প্রিমিয়ার ব্যাংক, নিকুঞ্জ শাখায় অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।এছাড়াও নাম বেনামে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন। এ বিষয়ে খোঁজ নিতে বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা প্রকৌশলী পরিষদের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ডেসকো বিওবি বিভাগ খিলক্ষেত এ কর্মরত মাফরুল সাদিক প্রিন্স এর অফিসে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি।

মুঠোফোনে তার সাথে কথা হলে সংবাদ কর্মী পরিচয় পেয়ে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, আমি বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা প্রকৌশলী পরিষদের নেতা,শত কোটি টাকার মালিক, আমি যা ইচ্ছা তাই করব তাতে তোর কি? আমার বিরুদ্ধে যা খুশি লিখ তাতে আমার কিছুই যায় আসে না।

 

সবা:স:জু- ৩৭৩/২৪

যুব উন্নয়নের নামে লুট:

স্টাফ রিপোর্টার:

যুব উন্নয়নের নামে হরিলুট চলছে খোদ যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরে। সাবেক যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেলের ঘনিষ্ঠ যুব কাউন্সিলের সভাপতি মাসুদ আলম বাগিয়েছেন প্রায় ৩০০ কোটি টাকার ফ্রিল্যান্সার প্রশিক্ষণ প্রকল্প। আওয়ামী লীগের উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী এবং তার প্রতিষ্ঠান ই-লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং লিমিটেডের বিরুদ্ধে দুদকে চলছে তদন্ত। একটি প্রভাবশালী মহল মাসুদকে কাজ পাইয়ে দিতে সর্বোচ্চ অনিয়ম করেছে বলেও উঠেছে অভিযোগ।

সূত্র বলছে, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের ২৯৭কোটি টাকার ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ প্রকল্পের দরপত্র সাজানো হয় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মাসুদ আলমের ই-লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং লিমিটেডের জন্য। যার বিরুদ্ধে অর্থ পাচার, ভুয়া সার্টিফিকেট এবং ডিজিটাল প্রতারণার একাধিক অভিযোগ রয়েছে। শেখ হাসিনার পতনের পর জুলাই চেতনার সরকারের আমলেও সেই মাসুদের প্রতিষ্ঠানই এ প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব পেয়েছে। অথচ ই-লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং লিমিটেডের টেন্ডার যোগ্যতা নিয়েও ছিল প্রশ্ন। ২০২০ সালে প্রতিষ্ঠিত এ কোম্পানিকে ১০ বছরের প্রশিক্ষণ অভিজ্ঞতা থাকার শর্তে নির্বাচিত করা হয়েছে-যা টেন্ডার শর্তাবলির সরাসরি লজজ্জন।

প্রকল্প পরিচালক আব্দুল হামিদ খান ও কার্যাদেশপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান ‘ই-লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং লিমিটেড’র কর্ণধার মাসুদ আলমের ঘনিষ্ঠতা এবং তাদের একযোগে বিদেশ সফরের তথ্য নিয়ে ইতোমধ্যে চলছে নান মহলে গুঞ্জন। এই দুজনের ঘনিষ্ঠতা এবং তাদের একযোগে বিদেশ সফর স্বার্থের সংঘাত (কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট) তৈরি করেছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। অনুসন্ধানে ই-লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং লিমিটেডের সঙ্গে প্রভাবশালী আমলাতান্ত্রিক চক্রের তথ্য উদ্ঘাটন করা হয়েছে। এতে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দুই সাবেক সচিবের গভীর ব্যবসায়িক সংশ্লিষ্টতা উঠে এসেছে। প্রতিষ্ঠানটির মালিকানায় রয়েছেন সাবেক যুব ও ক্রীড়া সচিব মেসবাহ উদ্দিন। ২০২২ সালে সচিব থাকাকালে মেসবাহ উদ্দিন ৪৬.৭ কোটি টাকার একাটি প্রশিক্ষণ প্রকল্পের নকশা করেন। পরের বছর তার ঘনিষ্ঠ মাসুদ আলমের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানটি কাজ পায়। অবসরের কয়েক মাসের মধ্যেই মেসবাহ নিজেই প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ও শেয়ারহোল্ডার হন। ক্ষমতাসীন দলের ঘনিষ্ঠ আমলা মেসবাহ উদ্দিনের বিরুদ্ধে অতীতে বিচারবিভাগীয় ক্যুর চেষ্টার অভিযোগ রয়েছে। তিনি গত অক্টোবরে ‘জুলাই গণহত্যা’সংক্রান্ত একটি হত্যা মামলায় গ্রেফতার হন।

মাসুদ আলমের আরেক ব্যবসায়িক অংশীদার সাবেক সচিন আখতার হোসেনের স্ত্রী মাহবুবা আজার। তিনি মাসুদের অন্য কোম্পানি নগদহাট বাংলাদেশ লিমিটেডেরও শেয়ারহোল্ডার। কোম্পানি দুটি গঠিত হয় যথাক্রমে ২০২০ ও ২০২১ সালে। আরজেএসসির নথি অনুযায়ী, নগদহাটে মাহবুবা ছাড়াও যুক্ত ছিলেন আরেক সাবেক সচিব মো. নাসির উদ্দিন। আখতার মোসেন ২০২২ সালে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং শেষে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এসডিজি সমন্বয়ক হন। এ তথাগুলো একত্রে বিশ্লেষণ করলে স্পষ্ট হয়-প্রকল্পটি প্রাপ্তির পেছনে ছিল ক্ষমতাধর আওয়ামী ঘনিষ্ঠ আমলাদের যোগসাজশ। এই স্বার্থারেধী চক্র, যারা সরকারি টেন্ডার প্রক্রিয়াকে পাশ কাটিয়ে নিজেদের ব্যবসায়িক সুবিধা নিশ্চিত করেছে। এছাড়া ক্রয় কমিটিতে উপস্থাপিত তথ্যে দেখা যায়, দরপত্রে ২০টি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। তবে গ্রহণযোগ্য (রেগগনসিড) হয় ই-লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং লিমিটেড, বাংলাদেশ আইটি ইনস্টিটিউট, এসইও এক্সপেইট বাংলাদেশ লিমিটেড এবং নিউ হরাইজনস সিএলসি অব বাংলাদেশ। কারিগরি ও আর্থিক মূল্যায়ন যোগ করে প্রথম হয় ই-লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং লিমিটেড। প্রতিমন্ত্রী রাসেলের ঘনিষ্ঠজন হিসাবে পরিচিত মাসুদ আলমের প্রতিষ্ঠানকে আইটি প্রশিক্ষণ প্রকল্প দেওয়া নিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে গত অক্টোবরে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। ফলে সাময়িকতাবে প্রকল্প অনিশ্চিত হলেও পরে অজানা এক ক্ষমতার জোরে সেটি মাসুদের কোম্পানির অনুকূলে চূড়ান্ত হয়। অথচ, মামুদ আলম ছিলেন ঢাকা মহানগর (উত্তর) ছাত্রলীগ (রবিউল-রানা) কমিটির সহসম্পাদক। গোসাইরহাট উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী এবং স্থানীয় সংসদ-সদস্য নাহিদ রাজ্জাকের কর্মী। জাতীয় নির্বাচনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর নামে ‘শেখ হাসিনাতেই আস্থা’ নামক সোশ্যাল মিডিয়া পেজ (এমএ সপি এম) সাময়িক সচিব এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে পরিচালনা করেন এ মাসুদ। এসব কর্মকাণ্ডের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি স্বার্ট বাংলাদেশ অ্যাওয়ার্ড ২০২৩, শেখ হাসিনা ইয়ুথ ডলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড ২০২২, জাতীয় যুব পুরস্কারসহ একাধিক সম্মাননা পান। তার বাবা আজাহার উদ্দিন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তার ছোট ভাই রাসেল আলম করতেন ছাত্রলীগ। ২০২৩ সালের ২০ নভেম্বর টেলিভিশনে রাঙা সকাল নামে একটি সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠানে মাসুদ বলেন, ‘২০০১ দালে বিএনপি ক্ষমতায় এলে আমরা খুব ক্ষতিগ্রস্ত হই। আমার বাবা আজাহার উদ্দিন আওয়ামী লীগ করতেন বলে তখন তিনি পালিয়ে যান। ফলে প্রাইমারি স্কুলের পড়াশোনাও শেষ করতে পারিনি।’

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, যেহেতু সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই এবং তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে তমন্ত্র চলছে। তাই এ কার্যাদেশ বাতিল করে প্রকল্পটি আবার টেন্ডারের আওতায় আনা উচিত। তবে তার আগে যাচাই করা জরুরি-এ প্রকল্পটি আদৌ দেশের জন্য কতটন প্রয়োজনীয়। অতীতে ‘ডিজিটালাইজেশন’র নামে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছে স্বৈরাচারী সরকার। এখন সময় এসেছে খতিয়ে দেখার-এ প্রকল্পও সেই লুটপাটের ধারাবাহিকতায় অংশ কিনা? প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ও যেদিসের সাবেক সভাপতি ফাহিম মাশরুর বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার আউটসোর্সিং ও বিভিন্ন আইটি ট্রেনিংয়ের নামে কয়েক হাজার কোটি টাকা খরচ ধরেছে। লাখ লাখ তরুণকে এখন প্রশিক্ষণ নিয়েছে যার ফলাফল পুণ্য। নতুন বাংলাদেশের নামে ফ্যানিস্টের পুনর্বহাল হচ্ছে এবং যেভাবে জনগণের অর্থ অপচয় করা হচ্ছে, তা আগের চেয়েও বেশি মুঃখজনক ও উদ্বেগজনক।’
এ বিষয়ে জানতে মাসুদ আলমের সঙ্গে সরাসরি ও পরি মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম
বিমান বন্দরের সামনে এখোনো উৎসুক জনতার ভীড় নেভেনি আগুন বাড়িভাড়া ৫০০ টাকা বৃদ্ধি করে প্রজ্ঞাপন জারি শিক্ষকদের সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড মামলার পথেই হাঁটছে বকশীগঞ্জের সাংবাদিক নাদিম হত্যা মামলা রাজউকের ইমারত পরিদর্শক মনিরুজ্জামান ৭ বছরেই শত কোটি টাকার মালিক শাহজালাল বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ নতুন ইতিহাস গড়লেন দীপিকা পাড়ুকোন বাংলাদেশকে রাজস্ব ও আর্থিক খাত সংস্কার অব্যাহত রাখতে হবে ডেঙ্গুতে আরও ১ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৬১৯ ৩০ কোটি বছর আগে মহাকাশ থেকে ছুটে এসেছিল একটি বিশাল পাথর কুমিল্লায় হত্যার পর নারীর লাশ বেডশিট দিয়ে মুড়িয়ে খাটের নিচে রেখে গেল দুর্বৃত্তরা