অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর পদত্যাগ করছেন

সবুজ বাংলাদেশ ডেস্কঃ

অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর কার্ল নেহামা বলেছেন, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে তিনি সরকারপ্রধান আর দলের নেতার পদ ছাড়বেন। জোট সরকার গঠন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এ ঘোষণা দেন।

কার্ল নেহামা জানান, তাঁর দল কনজারভেটিভ পিপলস পার্টি ও সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে জোট গড়ার আলোচনায় কিছু মূল বিষয়ে ঐকমত্য হয়নি।

এ আলোচনার প্রক্রিয়ায় উদারপন্থী হিসেবে পরিচিত নিওস নামে আরেকটি রাজনৈতিক দল যুক্ত ছিল। গত শুক্রবার আলোচনা থেকে সরে দাঁড়ায় দলটি।

অস্ট্রিয়ায় গত সেপ্টেম্বরের সাধারণ নির্বাচনে অতি ডানপন্থী রাজনৈতিক দল ফ্রিডম পার্টি নজিরবিহীন জয় পায়। তবে অন্য রাজনৈতিক দলগুলো ফ্রিডম পার্টির নেতা হার্বার্ট কিকলের সঙ্গে জোট সরকার গড়ার সম্ভাবনা নাকচ করে দেয়।

এ পরিস্থিতিতে বিশ্লেষকদের অনেকেই বলছেন, জোট সরকার গড়ার আলোচনা ব্যর্থ হওয়ায় রক্ষণশীলরা অস্ট্রিয়ার অতি ডানদের সঙ্গে আলোচনায় ঝুঁকতে পারে কিংবা দেশটিতে নতুন করে নির্বাচন হতে পারে।

গত সেপ্টেম্বরের নির্বাচনে ফ্রিডম পার্টি প্রায় ২৯ শতাংশ ভোট পায়। চ্যান্সেলর কার্ল নেহামার কনজারভেটিভ পিপলস পার্টি ছিল দ্বিতীয় অবস্থানে। দলটি ভোট পেয়েছে ২৬ দশমিক ৩ শতাংশ। আর ২১ শতাংশ ভোট পেয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটরা।

ফ্রিডম পার্টিকে রাশিয়ার প্রতি বন্ধুভাবাপন্ন বলে মনে করা হয়। এর আগে দলটি ক্ষমতাসীন জোটের নেতৃত্ব দিয়েছে। দলটি নতুন নির্বাচনের পক্ষে। কেননা, সেপ্টেম্বর থেকে দলটির জনপ্রিয়তা ক্রমেই বেড়েছে বলে জনমত জরিপগুলোয় উঠে এসেছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে ফ্রিডম পার্টি জানায়, নির্বাচনের পরবর্তী সময়ে জোট গড়ার আলোচনায় এরই মধ্যে তিন মাস নষ্ট হয়েছে। কিন্তু এ সময়ে স্থিতিশীলতার পরিবর্তে বিশৃঙ্খলা দেখা গেছে।

ফ্রিডম পার্টির নেতা হার্বার্ট কিকল দেশবাসীর নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করার জন্য ‘অস্ট্রীয় দুর্গ’ গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

দলটি অভিবাসীদের আইনি বিষয়ে কঠোর অবস্থানের পক্ষে। এমনকি অভিবাসীদের নিয়ে ‘রিমিগ্রেশনের’ ধারণা প্রচার করে দলটি। এর মধ্যে রয়েছে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়াও।

সবা:স:জু- ৬৪৩/২৫

শুরু হলো ভাষা আন্দোলনের মাস ফেব্রুয়ারি

সবুজ বাংলাদেশ ডেস্কঃ

ভাষা আন্দোলনের মাস শুরু হলো আজ বুধবার। এদিন থেকে ধ্বনিত হবে সেই অমর সংগীতের অমিয় বাণী ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি।’ বাঙালি জাতি পুরো মাসজুড়ে ভালোবাসা জানাবে ভাষার জন্য যারা প্রাণ দিয়েছিলেন তাদের প্রতি। রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ঢাকার রাজপথে যারা জীবন উৎসর্গ করেছিলেন, তাদের অমলিন স্মৃতি স্মরণের মাস ফেব্রুয়ারি।

বাঙালির কাছে এই মাস ভাষার মাস, দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হওয়ার মাস। তাইতো বাঙালি জাতি নানা আয়োজনের মাধ্যমে পুরো ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে ভালোবাসা জানাবে ভাষা শহিদদের প্রতি।

‘উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা’ পাকিস্তান সরকারের এমন ঘোষণার প্রেক্ষাপটে পূর্ব বাংলায় অবস্থানকারী বাংলাভাষী সাধারণ জনগণের মধ্যে গভীর ক্ষোভের জন্ম হয়। জাগে বিরূপ প্রতিক্রিয়া। পূর্ব বাংলার বাংলাভাষী মানুষ আকস্মিক ও অন্যায্য এ সিদ্ধান্তকে মেনে নিতে পারেনি। তাই বাংলাভাষার সমমর্যাদার দাবিতে পূর্ব বাংলায় আন্দোলন দ্রুত দানা বেঁধে ওঠে। আন্দোলন দমনে পুলিশ ১৪৪ ধারা জারি করে ঢাকা শহরে মিছিল, সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।

১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি এই আদেশ অমান্য করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু সংখ্যক ছাত্র ও প্রগতিশীল রাজনৈতিক কর্মী মিলে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। মিছিলটি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের কাছাকাছি গেলে পুলিশ ১৪৪ ধারা অবমাননার অজুহাতে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলিবর্ষণ করে। রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে নিহত হন সালাম, জব্বার, শফিক, বরকত ও রফিকসহ নাম না জানা আরও অনেকে।

এরপর পথ পরিক্রমায় রক্তের বিনিময়ে বাঙালি জাতি পায় মাতৃভাষার মর্যাদা এবং আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেরণা। সেই পথ ধরে শুরু হয় বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন এবং একাত্তরে নয় মাসব্যাপী স্বাধীনতা যুদ্ধ। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।

ভাষার জন্য বাংলার দামাল সন্তানদের আত্মত্যাগ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায় ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর। এদিন ইউনেস্কো ২১ ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ ঘোষণা করে। এর মধ্য দিয়ে একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে এখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পালন করা হয়। কেননা পৃথিবীর একমাত্র জাতি হিসেবে বাঙালিই ভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছিল।

ভাষা আন্দোলনের মাস ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন থেকেই শুরু হচ্ছে নানা কর্মসূচি। কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার আবার হয়ে উঠবে জমজমাট। এছাড়া বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এ মাসে আয়োজন করবে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম