ছাত্রলীগে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্‌যাপনের পর ইউপি কার্যালয়ে তালা

স্টাফ রিপোর্টারঃ

ঘড়ির কাঁটায় তখন বেলা ১১টা। তবুও টাঙানো হয়নি জাতীয় পতাকা। প্রধান ফটকে ঝুলছে তালা। আসেননি চেয়ারম্যান, সচিব ও সদস্যরা। কয়েকজন গ্রাম পুলিশ বসে আছেন। আর ফিরে যাচ্ছেন সেবাপ্রত্যাশীরা। আজ সোমবার কুষ্টিয়ার কুমারখালীর ৮ নম্বর যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে এ চিত্র দেখা যায়। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সেবা প্রত্যাশীরা।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, গত শনিবার রাত ৮টার দিকে যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের ৭৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কেক কেটে বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয়। ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানার নেতৃত্বে এ আয়োজন করা হয়। পরে কেক কাটার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার হলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। এর প্রতিবাদে ইউনিয়ন ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা রাত ৯টার দিকে ইউপি কার্যালয়ে তালা দেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গ্রাম পুলিশ আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল রোববার দুপুরে বিএনপির নেতা-কর্মীরা তালা লাগিয়েছেন। সন্ধ্যায় নেতারা পতাকা খুলে নিয়ে গেছেন। আর আজ সকালে কার্যালয় বন্ধ দেখে সচিব চলে গেছেন। জনগণ এসে ফিরে ফিরে যাচ্ছেন।

মোবাইল ফোনে কথা হয় যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সচিব রেজাউল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘সকালে গিয়ে দেখি কার্যালয়ে তালা ঝুলছে। পরে ইউএনও কার্যালয়ে এসেছি বিষয়টি জানাতে।’

তাঁর ভাষ্য, রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে যদুবয়রা জয়বাংলা বাজার থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। মিছিল যদুবয়রা পশুহাটের টোলঘরে ভাঙচুর করে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে যায়। সেখানে গিয়ে সচিব, গ্রাম পুলিশ ও সেবাপ্রত্যাশীদের বের করে দেয় এবং ভবনের প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে দেয়।

সোমবার সকালে দুই শিশু নিয়ে পরিষদে সেবা নিতে আসেন ইউনিয়নের বিলকাটিয়া গ্রামের আলিফ হোসেনের স্ত্রী বন্যা খাতুন। তিনি বলেন, ‘স্কুলে ভর্তির জন্য বাচ্চার জন্ম নিবন্ধন করা জরুরি। গতকাল এসে ফিরে গেছি। আজও ফিরে গেলাম। মানুষের কষ্ট দেখার কেউ নাই।’

এ সময় কেশবপুর গ্রামের যুবক মো. সিজান বলেন, ‘পাসপোর্ট করার জন্য চেয়ারম্যানের প্রত্যয়নপত্র দরকার। গত রোববার দুপুরে এসেছিলাম। ওই সময় অনেক লোকজন এসে সবাইকে বের করে দিল। আজও কার্যালয় বন্ধ।’

জানতে চাইলে যদুবয়রা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম আসাদ বলেন, ‘আওয়ামী লীগের দোসর ও দেশদ্রোহীদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত পরিষদের তালা খোলা হবে না। হাটে কেউ টোল তুলতে পারবে না। এতে কিছুদিন জনগণের হয়রানি হবে। তবুও দুর্নীতিবাজদের ঠাঁই দেওয়া হবে না।’

এ বিষয়ে যদুবয়রা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ও যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, ‘বিএনপির লোকজন পরিষদে তালা দিয়েছে। সে জন্য সেবা থেকে বঞ্চিত মানুষ।’

কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম মিকাইল ইসলাম বলেন, ‘দ্রুত সেবা চালুর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’

জেলা প্রশাসক মো. তৌফিকুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

সবা:স:জু- ৬৭০/২৫

ঝিনাইদহের একটি রাস্তা এখন ৭ গ্রামের মানুষের ভোগান্তির কান্না

 

ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধি:

ঝিনাইদহ জেলার হরিনাকুন্ডু উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের চাঁদপুর বাওর (বন্ধ) জল মহলের দক্ষিণ পাশ দিয়ে রাস্তাটি কেটে দেয়ার ফলে সাত গ্রামের মানুষের দুঃখ কষ্ট এবং চরম ভোগান্তির কান্না হিসেবে পরিচিত লাভ করেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে যে একসময়ের নবগঙ্গা নদীর প্রবাহমান স্রোতধারা চাঁদপুর গ্রামের মাঝ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ইউ টার্ন হয়ে পুনরায় সোজা হয়ে প্রভাত প্রবাহিত হয়ে যায়। নদীর এই ইউট্রেন বাকের ফলে এই অঞ্চলের সাত গ্রামের মানুষের ঝিনাইদহ শহরে যাতায়াত কঠিন হয়ে পড়ে। মানুষের এই জনদুর্ভোগের কথা সরকার বিবেচনা করে নদীর প্রবাহমান স্রোতধারার উপর একটি রাস্তা নির্মাণ করে এবং জন মানুষের কয়েক বিঘা জমি অধিগ্রহণ করে ১৯৭৯ সালে নদীর স্রোতধারা সোজা করে দেয়।

এই রাস্তা নির্মাণের ফলে চাঁদপুর ইউনিয়ন ও দৌলতপুর ইউনিয়নের হামেরহাটি, যাদবপুর খালকুলা ,দারিয়াপুর ,পৈলানপুর ও রূপদাহ এই ৭ গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ ঝিনাইদহ শহরে পল্লী বিদ্যুৎ হাসপাতাল এবং আদালত সহ বিভিন্ন স্থানে অতি সহজে যাতায়াত করত। শুধু তাই নয়, এই গ্রামগুলোর মানুষের শত বিঘা জমি চাষাবাদ করতো। এই গ্রামগুলিতে রয়েছে ৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ২টা কমিউনিটি ক্লিনিক।

এই বছরের শুরুতে ফেব্রুয়ারি মাসের দিকে এই জলমহলের দক্ষিণ পাশে রাস্তাটি ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক ভেকু দিয়ে অপসারণ করে দেয়। জেলা প্রশাসকের এই রাস্তাটি অপসারণ করে দেয়ার ফলে এই অঞ্চলের মানুষের চরম ভোগান্তির কান্না হয়ে দাঁড়ায়। ঝিনাইদহ জেলা শহরে যেতে হলে এখন তাদের আরো ৫ কিলোমিটার রাস্তা অধিক পাড়ি দিতে হচ্ছে। যেখানে তারা ঝিনাইদাহ শহরে ৪ কিলোমিটার রাস্তা পাড়ি দিলেই পৌঁছাতে পারতো এখন তাদের ঝিনাইদহ শহরে যেতে হচ্ছে ৯ কিলোমিটার রাস্তা পাড়ি দিয়ে। শুধু তাই নয়, এই অঞ্চলের মানুষের প্রায় শতাধিক বিঘা জমি চাষ করতে আসতে হচ্ছে ১২/১৩ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে। এই রাস্তা নির্মাণের ফলে একটি জলমহল সৃষ্টি হয়েছিল যাহা থেকে দেশের রাজস্ব খাতে প্রতিবছর ৮ থেকে ৯ লক্ষ টাকা জমা হতো। জল মহলে প্রতিবছর জেলেরা প্রচুর মাছ উৎপাদন করত যাহা দেশের পুষ্টির চাহিদা পূরণে ব্যাপক অবদান রাখতো। এই অঞ্চলের প্রায় ৫০ টি পরিবারের অর্থ উপার্জনের স্থান হয়ে উঠেছিল এই জলমহলটি। এই রাস্তায় জনমানুষের চলাচলের সুবিধার্থে ১৮-১৯ অর্থবছরে ১৪ লক্ষ টাকা ব্যয় করে একটি সেতু নির্মাণ করে দেন। যাহা এখন হাস্যরসের বস্তুতে পরিণত হয়েছে। এই রাস্তাটি অপসারনের ফলে এখন ৭ গ্রামের ২০ হাজার মানুষের ভোগান্তির কান্না হয়ে উঠেছে।

বাওড়পাড়ের এই রাস্তা দিয়ে ওপারে চাষ করেন চাঁদপুর গ্রামের নজির বিশ্বাস, শাহাদত, ফজলু, হায়দার, জাহিদ, রেজাউল, জমির বালিথা, সরোয়ার সহ অনেকে শুধু চাঁদপুর গ্রাম নয় হামেরহাটি গ্রামের বজলু নান্নু পিন্টু ও মকবুল বিশ্বাস এবং পৈলানপুর গ্রামের ওমর আলী সহ ৭/৮ জন এবং রুপদা গ্রামের বাহারসহ ৫-৬ জন কৃষক চাষাবাদ করেন।

এই গ্রামগুলোর কৃষকরা জানায় আমাদের এখন ওই জমিগুলো চাষ করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে এই জমিগুলো এখন আমাদের হয় বিক্রি করে ফেলতে হবে নইলে ফেরে রাখতে হবে।

এই প্রসঙ্গে চাঁদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামাল আহমেদ দাবি করেন যে এই রাস্তাটি পুনঃনির্মাণ অতি জরুরী। যার মাধ্যমে আমার ইউনিয়নের ১০ হাজার মানুষ অতি সহজে ঝিনাইদহ যেতে পারবে এবং এই বাওড়ে মাছ উৎপাদন হলে দেশের পুষ্টি চাহিদা পূরণে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। এই রাস্তাটি কাটার ফলে জনগণের ব্যাপক অসুবিধা। জেলা প্রশাসক অপরিকল্পিতভাবে কিছু মানুষের উস্কানিতে এই রাস্তাটি কেটে দিয়েছেন। যাহা এখন জনসাধারণের ব্যাপক জনদুর্ভোগ এর কারণ হয়ে উঠেছে।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম
জানানো যাচ্ছে অভিযোগ, থানায় বসলেই ভিডিওকলে হাজির এসপি প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে কার্গো ভিলেজের অগ্নিকাণ্ডে অত্যন্ত হতাশাজনক : মির্জা ফখরুল রাজনৈতিক দের মাঝে যে অনৈক্য কুমিরের দেখা মিলল রাজশাহীর পদ্মায় সরকার ও সেনাবাহিনী, গণতন্ত্রে উত্তরণ ও ন্যায়বিচার যেন ব্যাহত না হয় আজ থেকে আমরণ অনশন, প্রত্যাখ্যান শিক্ষকদের শিক্ষার্থীরা রোডম্যাপের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিলেন শাকসু নির্বাচনের জুলাই সনদে স্বাক্ষর করল গণফোরাম অন্যদেরও সই করার আহ্বান কমিশনের সূচক সাড়ে ৩ মাস আগের অবস্থানে লেনদেন ৪ মাসে সর্বনিম্ন আওয়ামীলীগ ফিরলে হাসিনার পা ধরেও মাফ পাবেন না: রাশেদ খান