অতি দ্রুত জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়া হবে: মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার: অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে নির্বাচন নিয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা পাচ্ছেন না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হল প্রাঙ্গণে বিএনপির বর্ধিত সভার স্বাগত বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

ফখরুল বলেন, দেশের মানুষ অনেক আশা-ভরসা নিয়ে আছেন ৫ আগস্ট পরিবর্তনের পরে, ফ্যাসিস্ট হাসিনা দেশ থেকে পলায়নের পরে দেশের অবস্থার পরিবর্তন হবে। অতি দ্রুত দেশের জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়া হবে, তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন এবং তাদের জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করতে পারবেন। কিন্তু আমরা দুঃখের সঙ্গে দেখছি, সে লক্ষ্যে আমরা সুস্পষ্ট নির্দেশনা পাচ্ছি না।

তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি বিএনপিকে গণতন্ত্রের জন্য, জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য কী পরিমাণ ত্যাগের মধ্যদিয়ে সংগ্রাম করতে হয়েছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এরই মধ্যে দেশের অর্থনীতির অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। ক্রমান্বয়ে শিক্ষাঙ্গনগুলো বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার পরিবেশ থাকছে না।

তিনি অভিযোগ করেন, অবিভক্ত বাংলায় যেসব বরেণ্য, বিজ্ঞানী, সাহিত্যিক, বিশেষ করে যাদের পূর্ব বাংলার ভূখণ্ডে জন্ম হয়েছিল, তাদের নামগুলো বাদ দিয়ে এখন কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের নামকরণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

ফখরুল বলেন, আমরা ফ্যাসিবাদকে তাড়িয়েছি, শেখ হাসিনাকে তাড়িয়েছি। দেশের জনগণের যে আশা-আকাঙ্ক্ষা; আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের যে স্বপ্ন একটি আধুনিক-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ রূপান্তরিত করার, আমরা এখন সেই অপেক্ষায় আছি। সেই গণতন্ত্রকে বিঘ্নিত করার জন্য, বাধাগ্রস্ত করার জন্য একটি মহল বিভিন্নভাবে চক্রান্ত করার চেষ্টা করছে। বাইরে থেকেও চেষ্টা করা হচ্ছে। দেশের অভ্যন্তর থেকেও কিছু কিছু গোষ্ঠী ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।

বিএনপির বর্ধিত সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়েছেন দলটির চেয়াপারসন বেগম খালেদা জিয়া।

ফ্যাসিজম পুনর্বাসনে মত্ত বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মনি

ফ্যাসিজম পুনর্বাসনে মত্ত বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মনি

‎ নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

‎বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল বরগুনা জেলা শাখার পুনর্গঠিত কমিটিতে সভাপতি হয়েছেন বিগত আওয়ামী সরকারের অবৈধ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া নুরুল ইসলাম। একই কমিটিতে সহ সভাপতির পদ পেয়েছেন আমতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সহ-সভাপতি,সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা অ্যাডঃ একেএম সামসুদ্দিন সানু ওরফে কমান্ডার সানু। অবশ্য সহ সভাপতির পদ পাওয়া একেএম শামসুদ্দিন সানু জানান তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নুরুল ইসলাম মনির সাথে সাক্ষাৎ করে বিএনপিতে যোগদান করেছেন।



‎ওই কমিটির বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বেশ হাস্যরস সৃষ্টি হয় ও বিএনপি’র নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। কমিটির সভাপতি পদে আওয়ামী দোসরকে সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতাকে সহ-সভাপতির পদ দেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন উপজেলা বিএনপির দায়িত্বশীল নেতাসহ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের উপজেলা কমিটির সদস্যরা।

 

বরগুনা ‎জেলা মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক জানান,জেলা মুক্তিযোদ্ধা দলের সংশোধিত কমিটির বিষয়ে তিনি অবহিত নন। এ বিষয়ে তিনি কেন্দ্রীয় কমিটির সাথে কথা বলেছেন, তিনি প্রত্যাশা করেন শীঘ্রই এই কমিটি সংশোধন করবে কেন্দ্রীয় কমিটি।


‎সংশ্লিষ্টরা জানান, বরগুনা জেলা জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল থেকে পদত্যাগ করে মুক্তিযোদ্ধা সংসদে যোগদান করেন বরগুনা জেলার কয়েক জন নেতা। এতে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল বরগুনা জেলার কয়েকটি পদ শূন্য হয়ে যায়। এই শূন্য পদ পূরণের জন্য নতুন করে জাতীয়তাবাদী দলের অনুসারী মুক্তিযোদ্ধাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করতে কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে আবেদন করেন জেলা নেতৃবৃন্দ। পরে কেন্দ্রীয় কমিটি বরগুনা জেলার সংশোধিত কমিটি অনুমোদন দেয়। আর এতেই বাঁধে বিপত্তি।



‎মুক্তিযোদ্ধাদের একটি সূত্র জানায়, বর্তমান জেলা কমিটির সভাপতির দায়িত্বে থাকা মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম (কাস্টমস নুরু) একজন বিতর্কিত ও পল্টিবাজ ব্যক্তি। যিনি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একেক সময় বিএনপি’র, একেক সময় আওয়ামী লীগের, একেক সময় স্বতন্ত্র আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে প্রকাশ্যে সমর্থন ও নির্বাচনী প্রচার- প্রচারনা এবং সভা-সমাবেশ পর্যন্ত অংশ নিয়েছেন। এমনকি বিএনপি নির্বাচন বর্জন করলেও তিনি নিজেও গত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্ধিতা করে হাজারের উপড়ে ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন।


‎আমতলী উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক জহিরুল ইসলাম (ভিপি মামুন) বলেন, বিষয়টি আমাদের জন্য অত্যন্ত লজ্জার এবং বিব্রতকর। এটা কোনভাবেই এটা মেনে নেয়ার মত না। মুক্তিযোদ্ধা দলের কমিটির পদে থেকে চিহ্নিত আওয়ামী দোষরদের যারা ওই কমিটির মধ্যে অর্ন্তভূক্ত করেছেন তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে দাবি জানাই। আর দ্রুত জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল বরগুনা জেলা কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন করে প্রকৃত বিএনপিমনা বীরমুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে জেলা কমিটি গঠনের জন্য অনুরোধ জানাই।

 

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল বরগুনা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মোঃ মনিরুল ইসলাম তালুকদার বলেন, নতুন পুর্নগঠনের বিষয়ে আমি অবহিত নই। কমিটির বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানার পর আমি কেন্দ্রীয় কমিটির সাথে যোগাযোগ করেছি। আশা করি কেন্দ্রীয় কমিটি শীঘ্রই এ কমিটি সংশোধন করবেন।


‎উল্লেখ্য গত ২০ আগস্ট তারিখে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ইসতিয়াক আজিজ উলফাত স্বাক্ষরিত এক পত্রে ৪০ সদস্য বিশিষ্ট বরগুনা জেলার সংশোধিত কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ওই কমিটির বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বরগুনা জেলা জুড়ে হাস্যরস সৃষ্টি হয় ও বিএনপি’র নেতা-কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম