রোজাদারের জন্য যেসব কাজ মাকরুহ ও নাজায়েজ

স্টাফ রিপোর্টার:

রোজাদারের জন্য মিথ্যা বলা, মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া, গীবত করা, চুগলখুরী করা, মিথ্যা কসম খাওয়া, অশ্লীল কাজ করা, অশ্লীল কথাবার্তা বলা, জুলুম করা, কারো সঙ্গে শত্রুতা রাখা, বেগানা নারীদের সঙ্গে মেলা-মেশা করা, বেগানা নারীকে দেখা, সিনেমা দেখা, মোবাইল ফোনে বেগানা নারী কিংবা বেগানা পুরুষের ছবি দেখা- এ সবই গুনাহ ও নাজায়েয।

রোজাদারের জন্য এগুলোর পাশাপাশি সব ধরণের খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকা আবশ্যক। এসব নাজায়েজ কাজ করলে যদিও রোজা নষ্ট হয় না; কিন্তু রোজা মাকরুহ হয় এবং রোজার সওয়াব কমে যায়।

রোজা অবস্থায় বিনা প্রয়োজনে কোন জিনিস চিবানো বা চেখে দেখা মাকরূহ। তবে বদমেজাযী স্বামীর পক্ষ থেকে কঠোরতা ও বাড়াবাড়ির আশংকা থাকলে খাদ্য ও তরকারীকে (জিহ্বার অগ্রভাগ দিয়ে) চেখে তা ফেলে দেওয়ার অবকাশ রয়েছে।

পায়খানার রাস্তা পানি দ্বারা এত বেশী ধৌত করা যে, ভিতরে পানি পৌঁছে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, এরূপ করা মাকরূহ।

ওজুতে নাকে পানি দেওয়ার সময় অধিক পরিমাণে পানি পৌঁছানো মাকরূহ। কেননা, এর ফলে হয়তো কণ্ঠনালীতে পানি চলে যেতে পারে। এমনিভাবে কুলি করার সময় গড়গড়া করা মাকরূহ। সুতরাং রোজা অবস্থায় কুলি বা নাকে পানি দেওয়ার ক্ষেত্রে খুবই সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।

রোজা অবস্থায় শাহওয়াত (কামভাব) এর সঙ্গে স্ত্রীকে চুম্বন করা ও আলিঙ্গন করা মাকরূহ। তবে শাহওয়াত (কামভাব) না থাকলে মাকরূহ হবে না।

রাতে স্ত্রী সহবাস করার পর সুবহে সাদেকের পূর্বে গোসল করা হয়নি, বরং সুবহে সাদেকের পর গোসল সম্পন্ন করা হয়েছে। এমতাবস্থায় রোজা মাকরূহ হবে না। তবে এমনটি না করাই উত্তম।

দুর্বল ও ক্লান্ত মুসাফির ব্যক্তির যদি রোজা রাখলে কষ্ট হয়, তবে তার জন্য তখন রোজা রাখা মাকরূহ।

চুল কাটালে বা নখ কাটলে রোজার কোন সমস্যা হয় না।

সফর অবস্থায় মুসাফির ব্যক্তি রোজার নিয়ত করলে এবং সে দিনেই মুকিম হয়ে গেলে, তখন তার জন্য ওই দিনের রোজা ভেঙ্গে ফেলা জায়েজ নেই।

চোখে সুরমা লাগানো বা কোন ঔষধ দেওয়ার দ্বারা রোজা ভাঙ্গে না এবং মাকরুহও হয় না।

ইরানে হিজাব খুলে ফেলতে উদ্বুদ্ধ করলে কঠোর শাস্তি ঘোষণা

অনলাইন ডেস্কঃ

যারা নারীদের হিজাব খুলে ফেলতে উদ্বুদ্ধ করবেন তাদের কঠোর শাস্তি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরান। দেশটির ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আলী জামাদী শনিবার (১৫ এপ্রিল) এমন হুঁশিয়ারি বাক্য উচ্চারণ করে বলেছেন, যারা এ ধরনের কাজ করবে তাদের বিচার করা হবে অপরাধ আদালতে। এছাড়া এ অভিযোগে যারা শাস্তি পাবেন তারা শাস্তির বিরুদ্ধে কোনো ধরনের আপিল করার সুযোগও পাবেন না।

তিনি এমন সময় এ হুঁশিয়ারি দিলেন যখন ইরানে দিনে দিনে নারীদের মধ্যে হিজাব ছাড়াই বাইরে বের হওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। শপিং মল, রেঁস্তোরা, দোকান, রাস্তা এবং অন্যান্য পাবলিক এরিয়াগুলোতে হিজাব ছাড়া অসংখ্য নারীকে ঘোরাফেরা করতে দেখা যাচ্ছে।

ইরানের নারী অধিকারকর্মী ও তারকারা কয়েকদিন ধরে হিজাব ছাড়াই ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে প্রকাশ করেছেন। এরমাধ্যমে মূলত হিজাব না পরতে অন্যদের উদ্বুদ্ধ করছেন তারা।

এসব তারকা ও নারী অধিকারকর্মীদের আকারে-ইঙ্গিতে হুঁশিয়ারি দিয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আলী জামাদী বলেছেন, ‘হিজাব খুলে ফেলতে উদ্বুদ্ধ করার অপরাধের বিচার করা হবে অপরাধ আদালতে। এই আদালতের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হবে এবং এর বিরুদ্ধে কোনো আপিল করা যাবে না। ’

তিনি আরও বলেছেন, ‘হিজাব খুলে ফেলার চেয়ে হিজাব খুলে ফেলতে উদ্বুদ্ধ করার অপরাধের সাজা আরও কঠোর হবে। কারণ এটি দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়ার অন্যতম পরিষ্কার উদাহরণ। তবে কী ধরনের শাস্তি দেওয়া হবে এ বিষয়টি পরিষ্কার করে জানাননি তিনি।

২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে মাহসা আমিনী নামের এক কুর্দি তরুণী হিজাব ইস্যু নিয়ে পুলিশের হাতে আটক হন। এরপর পুলিশ হেফাজতেই মারা যান তিনি। তার মৃত্যুর পর পুরো ইরানজুড়ে হিজাব বিরোধী আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। ওই আন্দোলনের পরই অনেক নারী হিজাব ছাড়া বাইরে বের হওয়া শুরু করেন।

এদিকে হিজাব ছাড়া নারীদের শনাক্ত ও তাদের বিচারের মুখোমুখি করতে শনিবার বিভিন্ন জায়গায় ক্যামেরা বসিয়েছে ইরান পুলিশ। গত সপ্তাহে ক্যামেরা বসানোর ঘোষণা দিয়েছিল তারা।

সূত্রঃ রয়টার্স

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম