এই সপ্তাহেই রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধবিরতি চুক্তি, আশা ট্রাম্পের

স্টাফ রিপোর্টার:

যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন যে, তিনি আশা করেন রাশিয়া ও ইউক্রেন এই সপ্তাহেই যুদ্ধ বন্ধের জন্য একটি চুক্তিতে পৌঁছাবে। তবে, তিনি স্পষ্ট করেননি, কী ধরনের শর্তে এই চুক্তি হতে পারে।

সোমবার (২১ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

বার্তাসংস্থাটি বলছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্থানীয় সময় রোববার আশাবাদ প্রকাশ করে বলেছেন, তিনি চান রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলমান যুদ্ধ শেষ করতে দুই পক্ষই এই সপ্তাহে একটি সমঝোতায় পৌঁছাক।

নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যাল-এ দেওয়া এক বার্তায় ট্রাম্প বলেন, “দুই দেশ যদি একটি চুক্তিতে পৌঁছে যায়, তাহলে তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বড় ব্যবসা করতে পারবে—আর এই ব্যবসা থেকে বিশাল অংকের মুনাফা অর্জন করবে! যুক্তরাষ্ট্র এখন উন্নতির পথে।”

চলতি বছরের জানুয়ারিতে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধ বন্ধে কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করেছে। রাশিয়া ও ইউক্রেন—দুই দেশের সঙ্গেই সমঝোতার পথ খুঁজতে নিয়মিত আলোচনায় রয়েছে ওয়াশিংটন।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিয়া ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরু করেছিল। তারপর থেকে যুদ্ধ চলছে। ট্রাম্প সম্প্রতি বলেছেন, কিয়েভ ও মস্কোকে সমঝোতায় আসার জন্য উৎসাহ দেখাতে হবে। এরপর গত শনিবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ঘোষণা করেন, ইস্টারের জন্য সংক্ষিপ্ত যুদ্ধবিরতি হবে।

তবে এরপর দুই দেশই একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছে।

প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার আগ্রাসন চালানোর পর থেকে যুদ্ধ চলছেই। এতে উভয় পক্ষেই ব্যাপক প্রাণহানি ও ধ্বংসযজ্ঞ ঘটেছে এবং এখন পর্যন্ত কোনও স্থায়ী শান্তিচুক্তি হয়নি।

 

ভারতীয় অর্থনীতিতে মনমোহন সিং-এর অবদান

সবুজ বাংলাদেশ ডেস্ক: 

ভারতীয় অর্থনীতিতে মনমোহন সিং-এর অবদান ভোলার নয়। অর্থমন্ত্রী হিসেবে যেসব সংস্কারমূলক কাজ তিনি করে গিয়েছেন, তার সুফল আজ পাচ্ছে বর্তমান ভারত। উদারীকরণের পর ভারতীয় অর্থনীতির যে উত্থান হয়েছে তা কখনওই সম্ভব ছিল না মনমোহনের অবদান না থাকলে। দেশের তেরোতম প্রধানমন্ত্রী হওয়ার অনেক আগে থেকেই দেশবাসীর জন্য তিনি কাজ শুরু করে দিয়েছিলেন।

পিভি নরসিংহ রাও-এর জমানায় ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী ছিলেন মনমোহন সিং। সেসময় ভারতীয় অর্থনীতিতে টালমাটাল দশা। নরসিংহ রাও-এর সঙ্গে হাত মিলিয়ে মনমোহনই অর্থনীতিকে উন্নয়নের রাস্তায় নিয়ে এসেছিলেন। ভারতীয় অর্তনীতির উদারীকরণ করেন তি্নি। লাইসেন্স রাজ কমিয়ে সরকারি নিয়ন্ত্রণনীতিতে লাগাম পরান মনমোহন। এর ফলে শিল্পক্ষেত্রে সরকারের নাক গলানো অনেকাংশে কমে যায়। সরকারি চোখ রাঙানি হ্রাস পাওয়ায় কোনও উন্নয়নমূলক কাজের জন্য নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হতে থাকেন শিল্পপতিরা। আমদানিতে শুল্ক কমিয়ে বামিজ্যিক সংস্কার শুরু করেছিলেন মনমোহন। তার ফলে শুরু হয়েছিল খোলাবাজারের অর্থনীতি। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ বা এফডিআই নীতি শুরু করেন মনমোহন। যার ফলে আজকের ভআরতের এই অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভবপর হয়েছে।

টাকার অবমূল্যায়নের কথা মাথায় রেখে রফতানিতে জোর দেন মনমোহন। যার ফলে এই ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতায় নেমে পড়ে ভারতীয় রফতানি শিল্পও। কর কাঠামোয় পরিবর্তন করে সেখানেও সংস্কার করেছিলেন মনমোহন। ১৯৯১ সালে যখন অর্থমন্ত্রী হিসাবে নিজের প্রথম বাজেট পেশ করেছিলেন তিনি, সেখানে আশাপ্রকাশ করে তিনি বলেছিলেন, এবার দেশে অর্থনৈতিক স্তিরতা আসবে বলেই তিনি বিশ্বাসী। এরপর প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার পর ভারতের জিডিপি-র হার সাত শতাংশে তুলে নিয়ে যান মনমোহন। ২০০৮-এ যখন সারা দেশে অর্থনৈতিক অস্থিরতা শুরু হয়েছিল, সেসময় মনমোহনের ক্ষুরধার বুদ্ধি আর সংস্কারী পদক্ষেপের ফলে ভারতীয় অর্থনীতি সেই ধাক্কা সামলে ওঠে। বিশ্ব অর্থনীতিতে অস্থিরতার ফলে ধাক্কা লেগেছিল সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাপনে। কড়া হাতে সেই পরিস্থিতি সামাল দিয়েছিলেন তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং।

আর্থিক নীতি শিথিল করে দেয় আরবিআই। মানুষের চাহিদা বাড়াতে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে। মহাত্মা গান্ধী জাতীয় গ্রামীণ গ্যারান্টি নীতি বা মনরেগা মনমোহনেরই শুরু করা সংস্কারমূলক কাজ। এই নীতির ফলে গ্রামে গ্রামে ১০০ দিনের কাজ পেতে থাকেন গরিবরা। যার সুফল মেলে গ্রামীণ অর্তনৈতিক উন্নয়নে। জনকল্যাণমূলক কাজে তছরুপ রুখে সরাসরি টাকা পাইয়ে দিতে ডিরেক্ট বেনিফিট ট্রান্সফার শুরু করেছিলেন মনমোহন। এজন্য আধার প্রকল্পের উদ্বোধন করেন তিনি। এটাই পরের সরকারকে জনকল্যাণমূলক কাজে বিভিন্ন সংস্কারমূলক পদক্ষেপের সহায়ক হয়ে ওঠে।

একজন প্রধানমন্ত্রী এবং দক্ষ অর্থনীতিবিদ হিসাবে মনমোহন সিং উপলব্দি করতে পেরেছিলেন যে বিশ্ববাজারে ভারতের আর্থিক উন্নতি তখনই সম্ভব যখন পরমাণু শক্তি ক্ষেত্রেও সাবলম্বী হবে দেশ। তাঁর আমলেই ভারত-আমেরিকা অসামরিক চুক্তি সাক্ষরিত হয়। ফলে অসামরিক ক্ষেত্রে পারমাণবিক ব্যবহার শুরু হয় দেশে। ভারতের অর্থনৈতিক ক্ষেত্র এক সংস্কারমূলক যুগের মধ্যে দিয়ে গিয়েছিল মনমোহন সিং-এর সময়ে। অর্থমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী হিসাবে তাঁর সুদূরপ্রসারী দৃষ্টিই আজকের ভারতের অর্তনৈতিক উন্নয়নের কান্ডারি।

সবা:স:জু- ৫৩৫/২৪

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম