কেরানীগঞ্জ মডেল ভুমি অফিসে চলছে ডিজিটাল প্রতারণা : রমরমা ঘুষ বাণিজ্য 

মেরি আক্তার, ঢাকাঃ

অনিয়ম আর ঘুষ বাণিজ্যের আখড়ায় পরিণত হয়েছে ঢাকার কেরানীগঞ্জ মডেল ভূমি অফিস। ওই অফিসের পিওন থেকে শুরু করে এসিল্যান্ড পর্যন্ত সকলেই সেই টাকা নেন ভাগাভাগি করে। দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা ঘুষ এখন ডিজিটাল প্রতারণায় পরিনত হয়েছে। এসব অভিযোগে সরেজমিনে এমন তথ্য মিলেছে।

প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত অফিস সহায়ক মোঃ আজাহারুল হক। তিনি অফিসের সেবা প্রত্যাশীদের কাছ থেকে পদে পদে ঘুষ নেন ডিজিটাল কায়দায়।

তথ্য বলছে, দীর্ঘদিন যাবত কেরানীগঞ্জ মডেল এসিল্যান্ড অফিসে কর্মরত এ অফিস সহায়কের বিরুদ্ধে অভিযোগে মাঠে নামে দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ পত্রিকার অনুসন্ধানী দল। সেবা প্রত্যাশিদের চোখে আঙুল দিয়ে ডিজিটাল প্রতারণা করে আসছে দীর্ঘদিন যাবত ধরে। এরমধ্যে নামজারি, নাম সংশোধনসহ (ক) তালিকা (খ) তালিকা খাস সম্পত্তি, অর্পিত সম্পত্তি এগুলো গেজেট দেখে (খ) তালিকা সম্পত্তি অবমুক্ত হলেও পাট ভি,পি দেখিয়ে ভুক্তভোগী জনসাধারণের কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ নেওয়া হয় বলে দাবি করেছেন ভুক্তভোগীরা৷ অপরদিকে (ক) তালিকার খাস অর্পিত তালিকার দাগ নাম্বার থাকলেও সেটা আংশিক আপত্তি বলে গ্রাহকের নিকট থেকে ৫০ হাজার টাকা থেকে ১ লক্ষ টাকা নিয়ে থাকেন তিনি।

মধু মাখা এ অফিসটিতে দীর্ঘদিন ধরে আকড়ে রাখার পাশাপাশি অন্য কোথাও বদলি হলে আবার টাকা পয়সা খরচ করে বদলী হয়ে আসেন এ অফিসেই। মোঃ আজাহারুল হক কিছুদিন আগে অন্যত্র বদলি হলেও আবার মোটা অংকের ঘুষ বিনিময়ে কেরানীগঞ্জ মডেল অফিসে যোগ দিয়ে বর্তমানে গড়ে তুলেছেন একটি সিন্ডিকেট। এখানে থেকে অবৈধ সম্পদের মালিক বনে গেছেন এ অসাধু ব্যক্তি৷ এরই মধ্যে ঘুষ বাণিজ্যে জড়িয়ে বিপুল সম্পদের মালিক বনে গেছেন তিনি। ভূমি-সংক্রান্ত যে কোনো সমস্যা সমাধানে পকেট কাটা হচ্ছে তাদের। এমন অভিযোগ সেবাপ্রার্থীসহ একাধিক ভুক্তভোগীর৷

কেরানীগঞ্জ মডেল ভুমি অফিসে সেবা নিতে আসা এমন একজন আব্দুল আলিম। তার সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, এখানেই ইট পর্যন্ত ঘুষের সাথে জড়িত।
টাকা ছাড়া কোন ফাইলে স্বাক্ষর দেন না এখানে দায়িত্বরতরা।

ব্যাপক তথ্য অনুসন্ধানে আরও বেশ কয়েকজনের নাম উঠে আসে তার মধ্যে অফিসের অফিস সহায়ক মোঃ আজাহারুল হক অন্যতম। এছাড়া, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জান্নাতুল মাওয়া, কানুনগো মোঃ শহিদুল ইসলাম, সার্ভেয়ার ও নাজির। এদের নাম ভাঙিয়ে প্রতিনিয়ত সেবা প্রার্থীদের পকেট কাটছে ওই চক্রটি। ওই চক্রটি ঘুষের টাকা হাতানোর জন্য দালাল সিন্ডিকেট গঠন করেছে। ওই দালাল সিন্ডিকেটের মাধ্যমে তাঁরা ঘুষের টাকা গ্রহণ করেন। এ অফিসে দালালদের শরণাপন্ন না হলে মাসের পর মাস ফাইল পড়ে থাকে। আর দালালদের দায়িত্ব দিলে কাজ হয় নিমেষেই।

ব্যাপক তথ্য অনুসন্ধানে আরো জানা যায়,
সম্প্রতি কয়েকজন গ্রাহকের কাছ থেকে লিগ্যাল জমি, খাস জমি দেখিয়ে ৬৫ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নিয়েছে মোঃ আজাহারুল হকসহ ওই দুর্নীতিবাজ চক্রটি।

প্রকাশ্যে ঘুষ নেওয়ার বিষয়ে জড়িত সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ পত্রিকার অনুসন্ধানী দল মাঠে নামলে। উঠে আসে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য।

অনুসন্ধান চলাকালীন সময়ে গোপন ক্যামেরায় অনেক তথ্য উঠে আসে। যেখানে দেখা যায় ঘুষের লেনদেন। প্রশ্ন করা হলে যিনি ঘুষ গ্রহণ করছেন তিনি বলেন, কমিশনার, কানুনগো, সার্ভেয়ার ও নাজির প্রত্যেক টেবিলেই তো এ টাকা চলে যায়।

অফিস সহায়ক আজহারুল হক প্রতিদিন ক তালিকা, খ তালিকা, খাস সম্পত্তি, অর্পিত সম্পত্তি এগুলো গেজেট দেখেন প্রতিদিন ৫ থেকে ১০ টির মত। তাতে দেখা যায় প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন তিনি। কোনো জমির নামজারি করতে হলে প্রথমে অনলাইনে আবেদন করতে হয়। এরপর শুরু হয় ঘুষ-বাণিজ্য। আবেদনের পর ইউনিয়ন সহকারী ভূমি অফিস থেকে প্রতিবেদন নিতে হলে ঘুষ দিতে হয় ১ হাজার থেকে ২ হাজার টাকা। এরপর সার্ভেয়ারের প্রতিবেদনও লাগে ঘুষ।

সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কেরানীগঞ্জের স্থানীয় এক ব্যক্তির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তার কাছ থেকে নামজারি করতে কেরানীগঞ্জ ভূমি অফিসের অফিস সহায়ক আজহারুল হক ৮ হাজার টাকা দিয়েছেন। এত টাকা ঘুষ দেওয়ার পরেও এখনো তিনি কাগজ হাতে পাননি।

দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ পত্রিকার অনুসন্ধানী দলকে তিনি বলেন, এ অফিসে ঘুষ ছাড়া কোনো কাজই যেন হয় না। আগের এসি ল্যান্ডের সময় ৩-৪ হাজার টাকায় নাম জারি করা যেত। এখন সেখানে ৬ থেকে ৮ হাজার টাকা না দিলে কাজ হয় না। অফিসে নতুন কর্মকর্তা এলেই ঘুষের পরিমাণ বেড়ে যায় দুই-তিন গুন। তিনি আরো বলেন, এখন দেখছি জমিজমা না থাকাই ভালো ছিল।

দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ পত্রিকার অনুসন্ধানী টিমের সাথে কয়েকজন দালালের কথা হয়। এছাড়াও ওই অফিসে ওৎ পেতে থাকা এ সব দালাল সিন্ডিকেটের একাধিক সদস্যে’র সঙ্গে কথা হয় অনুসন্ধানী টিমের।

এ সময় ওই দালাল সিন্ডিকেটের সদস্যরা বলেন, ইউনিয়ন ভূমি অফিসে আগে দিতে হতো এক হাজার টাকা এখন লাগে দুই হাজার টাকা। এসিল্যান্ড অফিসে প্রস্তাব পত্রের জন্য প্রত্যেকটা ফাইল প্রতি দিতে হয় ৩ থেকে ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত। তবে নতুন কর্মকর্তা যোগদানের কারনে বর্তমানে ঘুষের পরিমাণ এখন বেড়েছে। এ সময় তারা আরো বলেন, আপনারা সাংবাদিক। আপনাদের কোন কাজ থাকলে আমাদের দিলে কম খরচে করে দেব। তবে ৫ হাজারের নিচেয় দিলে হবে না।

সাংবাদিক পরিচয় গোপন করে তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে সহকারী কমিশনার অফিসের অফিস সহকারী আজারুল হক বলেন, যে কোনো জমির নামজারি করতে গেলে সমস্যা না থাকলেও ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা লাগবে। সমস্যা থাকলে টাকা আরও বেশি লাগবে। তিনি আরও বলেন, প্রকৃত কত টাকা লাগবে কাগজ না দেখে বলা যাবে না। আপনাদের কাজের কোনো সমস্যা হবে না। আমাকে দিয়ে কাজ করিয়ে নিতে পারেন। আমরা অফিসের লোক অন্যদের কাছে কাজ দিলে হয়তো দেরি হবে। আমাদের কাছে কাজ দিলে কোনো সময় লাগবে না। আর আমাদের কাছে টাকা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা নেই।

তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অফিস সহকারী আজহারুল হক বলেন, আপনার সাথে পরে কথা বলব নিউজ করার দরকার নাই। এ সকল বিষয়ে নিউজ না করার জন্য তিনি বিভিন্ন মাধ্যমে অনুসন্ধানী টিমের সদস্যদেরকে হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত।

এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জান্নাতুল মাওয়ার সাথে যোগাযোগ করা তিনি বলেন, জমির নামজারি করতে সরকারি খরচ ১ হাজার ১৭০ টাকা। এর বেশি কোনো টাকা নেওয়া হয় না। কেউ আমাদের নাম বলে টাকা নেয় কি না আমার জানা নেই।

ঢাকার পানি সম্পদ পরিকল্পনা সংস্থা (ওয়ারপো)-র নিয়োগে নৈতিক অবক্ষয়

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ঢাকার প্রধান কার্য্যালয় পানি সম্পদ পরিকল্পনা সংস্থা (ওয়ারপো)-warpo-(Water resources Planning organaization)-নিয়োগে দুর্নিতীর তথ্য মিলেছে।যানা- যায়, ১৯/০২/২০২২ ইং তারিখে পানি সম্পদ পরিকল্পনা সংস্থা (ওয়ারপো)-তে একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়। যাহার স্মারক নম্বর‌‌ ৪২.০২.০০০০.০০৩. ১৮.০১০.১৯ (৩য় খন্ড)-৬৩৯, উল্লেখিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির সদস্য সচিব (অঃদা)-ওয়ারপো-পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের অধিনস্থ-পানি সম্পদ পরিকল্পনা সংস্থা (ওয়ারপো)-তে এবিএম গোলাম ফারুক সাক্ষরিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয় পানি সম্পদ সংস্থা (ওয়ারপো)-তে রাজস্ব খাতে পদ সমূহে অস্থায়ী ভিত্তিতে ঢাকা বিভাগ ব্যাতীত ৭টি বিভাগীয় জেলা কার্যালয়ের জন্য ১ নং হতে ৪ নং ক্রমিক নম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন পদে মোট-৩৫ (পঁয়ত্রিশ) জন জনবল নিয়োগ দেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, যে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ১নং ক্রমিক নম্বরের নবসৃষ্টপদবী উপ-সহকারী প্রকৌশলী/কার্টোগ্রাফার ও ক্রমিক নং-২(দুই)-এর-হিসাব রক্ষক পদবীতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রদান করা ছিলো। অনুসন্ধানে পাওয়া-যায় ক্রমিক নং- ১ ও ২ পদবী সহ সকল পদেই নিয়োগ দিয়েছেন উল্লেখিত নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব এবিএম গোলাম ফারুক (অঃদাঃ)- পরিকল্পনা সংস্থা (Warpo) এর প্রধান কার্যালয়ের অধীনে উপ-সচিব পদ-মর্যাদায় কর্মরত আছেন।

পানি সম্পদ পরিকল্পনা সংস্থা(ওয়ারপো)’র প্রধান কার্যালয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে ও সরোজমিন অনুসন্ধানে পাওয়া যায়- উল্লেখিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে যাহারা নিয়োগ পেয়েছেন। নিয়োগ প্রাপ্তদের মধ্যে সিংহভাগ ব্যক্তি-ই অসাধু উপায়ে লিখিত পরীক্ষা ও নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশকৃত চাহিদা অনুযায়ী একাডেমিক সনদপত্র সহ সব কিছুই জ্বালিয়াতি ও অনিয়মের মাধ্যমেই উপস্থাপন করে নিয়োগ পেয়েছেন, যাহা একদম বে-আইনী দুর্নীতি হয়েছে,যা কিছু তথ্য-উপাত্তর ভিত্তিতে প্রমান পাওয়া গেছে। উল্লেখ্য যে- অসাধু উপায়ে নিয়োগ প্রাপ্তরা স্ব স্ব কর্মস্থলে যোগদানের পরো তাদের চাকুরী স্থায়ী হয় নাই-কারণ, উল্লেখিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে অসাধু উপায়ে যেসব ব্যক্তিরা নিয়োগ পেয়ে বিভিন্ন বিভাগীয় অফিসগুলোতে কর্মরত আছেন – আর এ অসাধু উপায়ে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে- সেই নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব এবিএম গোলাম ফারুক ও ডঃ মোঃ আমিনুল হক নিয়োগ কমিটির প্রাণবন্ত সদস্য,এই দুইজন কর্মকর্তার সক্রিয়তার কারণেই জ্বালিয়াতির মাধ্যমে নিয়োগ হয়েছে সেটা নিয়ে পানি সম্পদ পরিকল্পনা সংস্থা (warpo) কার্যালয় সহ বিভিন্ন শাখাতে ব্যাপক কানাঘোষা এখনো চলমান এবং এমন অনিয়ম করে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়েছে তাই এখন পর্যন্ত স্থায়ী করন নিয়ে উর্ধতন কর্মকর্তাদের মধ্যে মত-বিরোধ চলমান। এই আসাধু উপায়ে তৎকালীন নিয়োগ কমিটি’র সদস্য সচিব- বর্তমান উপ-সচিব পদ মর্যাদায় – এবিএম গোলাম ফারুকের কাছে অসাধু উপায়ে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে প্রসঙ্গে তাঁর মোবাইল ফোনে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন -এ নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে আপনি অফিসে এসে কথা বলেন,নতুবা আপনার মতো আপনি যা ইচ্ছে তাই করেন।

তবে বর্তমান দায়িত্বরত পানি সম্পদ পরিকল্পনা সংস্থার মহাপরিচালক মো:রেজাউল মকছুদ জাহেদীকে উল্লেখিত বিষয়ে জানানোর জন্য তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন কল রিসিভ করেনি।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম
জুলাই যোদ্ধা স্বীকৃতি পেতে আরও দেড় হাজারের বেশি আবেদন সতর্ক মন্ত্রণালয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরাতে আপিল শুনানি শুরু প্রধান প্রকৌশলীর আস্থাভাজন ইএম ২ এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কায়কোবাদ সম্পদের পাহাড় জানানো যাচ্ছে অভিযোগ, থানায় বসলেই ভিডিওকলে হাজির এসপি প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে কার্গো ভিলেজের অগ্নিকাণ্ডে অত্যন্ত হতাশাজনক : মির্জা ফখরুল রাজনৈতিক দের মাঝে যে অনৈক্য কুমিরের দেখা মিলল রাজশাহীর পদ্মায় সরকার ও সেনাবাহিনী, গণতন্ত্রে উত্তরণ ও ন্যায়বিচার যেন ব্যাহত না হয় আজ থেকে আমরণ অনশন, প্রত্যাখ্যান শিক্ষকদের শিক্ষার্থীরা রোডম্যাপের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিলেন শাকসু নির্বাচনের