কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকারও

স্টাফ রিপোর্টার:

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের মতো এবারের বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রেখেছে অন্তর্বর্তী সরকার। তবে ঢালাওভাবে সব খাতে নয়, ফ্ল্যাট বা অ্যাপার্টমেন্ট কেনার ক্ষেত্রে এই সুযোগ রাখা হচ্ছে।

সোমবার (২ জুন) অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে এ সুবিধা বহাল রাখেন।

অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করার ক্ষেত্রে দুটি শর্তও দেওয়া হয়েছে। যদি আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনের অধীনে কোনো অপরাধমূলক কার্যক্রম হতে উদ্ভূত হয় এবং কোনো বৈধ উৎস হতে উদ্ভূত না হয়, তাহলে এই আইনের এই ধারার আওতায় কালো টাকা সাদা করা যাবে না।

এর মানে দাঁড়ায়, যদি অপ্রদর্শিত অর্থ মানি লন্ডারিং, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, মাদক বা সন্ত্রাসবাদের অর্থায়ন ইত্যাদি অপরাধমূলক উৎস থেকে অর্জিত হয় এবং সেটা বর্তমানে বলবৎ অন্য কোনো আইনের আওতায় অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়, তাহলে তা এই সুবিধার আওতায় আসবে না।

দ্বিতীয়, অপ্রদর্শিত অর্থের উৎস ‘বৈধ উৎস’ না হলে সেটি সাদা করা যাবে না। অর্থাৎ যেখানে অর্থ উপার্জনের উৎস নিজেই অবৈধ, যেমন—ঘুষ বা চুরি, সেখানে কর দিয়ে বৈধতা মিলবে না।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে কালো টাকা সাদা করার ঢালাও সুযোগ বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় এসে গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর বাতিল করে। কিন্তু এবারের বাজেটে অর্থ উপদেষ্টা নতুন করে করহার বাড়িয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিলেন।

এদিকে, গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে অন্তর্বর্তী সরকারের এ উদ্যোগের কড়া সমালোচনা করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) বলেছে, রাষ্ট্রীয় সংস্কার, বিশেষ করে দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কারের মূল উদ্দেশ্যের সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী অবস্থান নিয়েছে সরকার। এ সিদ্ধান্ত একই সঙ্গে অনৈতিক, বৈষম্যমূলক ও সংবিধান পরিপন্থী।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘যেভাবেই ব্যাখ্যা করা হোক না কেন, এটি স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে রাষ্ট্র সংস্কার—বিশেষ করে দুর্নীতিবিরোধী সংস্কারের মূল উদ্দেশ্যকে রীতিমতো উপেক্ষা করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। একইসঙ্গে, দুর্নীতিকে উৎসাহ দিয়ে রিয়েল এস্টেট লবির ক্ষমতার কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। করহার যা-ই হোক না কেন, এটি সংবিধানের ২০(২) অনুচ্ছেদের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন, যেখানে বলা হয়েছে রাষ্ট্র এমন ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে যে অনুপার্জিত আয় অবৈধ হবে। কালো টাকা সাদা করার সুযোগ একই সঙ্গে বৈষম্যমূলক, কারণ এই সিদ্ধান্তের ফলে আবাসন খাতে অবৈধ অর্থের মালিকদের অধিকতর একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হবে এবং সৎ উপার্জনকারীদের ফ্ল্যাট বা ভবনের অংশীদার হওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করবে।’

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘সবচেয়ে আশঙ্কা ও হতাশার ব্যাপার হলো, সরকারের এই সিদ্ধান্ত দুর্নীতিকে উৎসাহ দেবে। এর মাধ্যমে সরকার বাস্তবে পুরো বছরজুড়ে অবৈধ ও অপ্রদর্শিত অর্থ-সম্পদ অর্জনের জন্য নাগরিকদের উৎসাহিত করছে এবং বছর শেষে কালো টাকাকে বৈধতা দেয়ার অঙ্গীকার করছে। বৈধতা দেয়ার অজুহাত হিসেবে যে খাতের তোষণ করা হচ্ছে, সে আবাসন খাতই দেশের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত খাতের একটি হিসেবে চিহ্নিত।’

বিদেশে অর্থ পাচার ঠেকাতে এই উদ্যোগ কিছুটা কার্যকর উল্লেখ করে এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. আবদুল মজিদ বলেন, ‘তবে এটা নীতিগতভাবে অনুচিত। সব ধরনের কালো টাকা সাদা করার সুযোগ বাতিল করা উচিত। এটি সামাজিক ন্যায্যতার পরিপন্থী এবং ছাত্র-জনতার আন্দোলনের দাবির বিরোধী।’

এ পর্যন্ত সব মিলিয়ে অপ্রদর্শিত প্রায় ৪৭ হাজার কোটি টাকা ঘোষণায় এসেছে অর্থাৎ সাদা হয়েছে বলে এনবিআর সূত্র জানা গেছে।

আ’লীগ সরকারের ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই: মির্জা আব্বাস

অনলাইন ডেস্কঃ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, সমাবেশ হওয়ার কথা ছিল হয়েছে ১০ তারিখে। আর ৮ তারিখেই মহাসচিবসহ আমাকে গ্রেফতার করা হয়।

আমরা বুঝতে পারলাম না আমাদের কেন গ্রেফতার করা হয়েছে। এ গ্রেফতার, নির্যাতন, গুম, খুন ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য। বাংলাদেশকে লুটের আখড়া বানিয়েছে। টাকা কামানোর মেশিন বানিয়েছে বাংলাদেশকে। আর আমরা তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছি। এ সরকারের আর ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই।

রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা আব্বাস এসব কথা বলেন। শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজশাহীর সোনাদীঘির মোড়ে বিএনপি এ বিভাগীয় সমাবেশের আয়োজন করা হয়। দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছর পর এখানে সমাবেশের অনুমতি পায় বিএনপি।

সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ভোটের রাজনীতি আর নেই। ১৫ বছর আগে যারা ভোটার হয়েছেন তারা আজও একটি ভোট দিতে পারেননি। আমিও ভোট দেওয়া ভুলে গেছি।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার দাবিটা আওয়ামী-জামায়াতের উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপি সরকারের সময় আওয়ামী-জামায়াত ঐক্যবদ্ধ হয়ে একসঙ্গে বারবার বলেছিলেন ‘এ মুহূর্তে দরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকার’। আজকের প্রধানমন্ত্রী পরিষ্কার ভাষায় বলেছিলেন, চিরদিনের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার থাকতে হবে। আজ ক্ষমতায় এসেই এ আওয়ামী লীগ সরকার একনায়কতন্ত্র কায়েম করার জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার উঠিয়ে দিলেন। আদালতের রায়ে বাংলাদেশের জনগণ সব সময় চলে না। আদালতের রায়ে রাজনীতি নির্ধারণ হয় না। রাজনীতি রাজনীতির মতোই চলবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংসদ থেকে পাস করে সংবিধানকে কাটাছেড়া করে সংবিধানের বারোটা বাজিয়ে দিয়েছেন।

মির্জা আব্বাস বলেন, আজকে আমাদের আন্দোলন করতে হচ্ছে অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থানের দাবিতে। আজকে গরিবের পেটে খাওয়া নেই, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, কথায় কথায় তেলের দাম বাড়িয়ে দেন, বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে দেন। কারণ আপনাদের তো ভোটের দরকার নেই। যদি ভোটের দরকার থাকতো তবে জনগণের চাওয়া কী তা তাকিয়ে দেখতেন। জনগণ কী ভাবছে তা আপনারা ভাবতেন। এমন কিছুই ভাবছেন না আপনারা। কারণ আপনারা জানেন বিকল্প পন্থায় ক্ষমতায় চলে আসবেন।

তিনি বলেন, আমরা যখন মিছিল করি, স্লোগান দেই তখন আওয়ামী লীগের বুকে কাঁপন ধরে। আমরা রাস্তায় হাঁটি, পদযাত্রা করি আর উনারা বলে এটা হলো বিএনপির মরণ যাত্রা। আমরা বলতে চাই। এটা হলো আওয়ামী লীগের অগ্রিম শবযাত্রা। যা সারা বাংলাদেশে শুরু হয়েছে। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন। দেখবেন রাজশাহী নয় সারা বাংলাদেশ বিএনপির ঘাঁটি হয়ে গেছে। আমরা কয়টা আসন পাবো জানি না। তবে জনগণ আওয়ামী লীগকে আর ভোট দেবে না।

রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী ঈশার সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু ও হাবিবুর রহমান।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম
ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা প্রধানকে কেন বরখাস্ত করলেন নেতানিয়াহু কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন বুয়েট শিক্ষার্থী শ্রীশান্ত রায়কে ওসাকা এক্সপো–২০২৫: কৃত্রিম দ্বীপে এ যেন এক টুকরা ফিলিস্তিন জেনেভা ক্যাম্পের মাদক সম্রাট বশির মোল্লার হাতে নাশকতার নীলনকশা বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার নয়, সরকারের নিরপেক্ষ ভূমিকা চেয়েছে: আসিফ নজরুল রাজধানীতে পৃথক ঘটনায় দুই যুবকের মরদেহ উদ্ধার শিশুকে বাসায় নিয়ে ধর্ষণ, ট্রাফিক কনস্টেবল কারাগারে আবহাওয়া অফিস বৃষ্টি নিয়ে যে বার্তা দিলো মায়ের বিয়ের বেনারসি শাড়িতে জয়া আহসান পিআর পদ্ধতি ছাড়া জামায়াত ৪-৫টা আসনও পাবে না: আবু হেনা রাজ্জাকী