সন্ত্রাস বিরোধী মামলায় আ’লীগের নেতাসহ ফেসে গেলেন জামায়াতের নেতারাও

সন্ত্রাস বিরোধী মামলায় আ'লীগের নেতাসহ ফেসে গেলেন জামায়াতের নেতারাও

ইসমাইল হোসেনঃ সন্ত্রাস বিরোধী আইনে আওয়ামী লীগের ৭২ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৭২ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। একই মামলায় আরও ৩শ থেকে ৫শ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। মামলাটি দায়ের করেন পঞ্চগড়ের সদর উপজেলার ইসলামবাগ এলাকার জুয়েল রানা। সে একই এলাকার ফয়জুল ইসলামের ছেলে। মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে দেবীগঞ্জ উপজেলা কৃষকলীগের সাধারন সম্পাদক ও দেবীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম এমুকে। মামলায় পঞ্চগড় সদর, বোদা, দেবীগঞ্জ উপজেলার আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ছাত্রলীগসহ অংগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের নামে মামলা দায়ের করা হয়।

গত ৫ জুন তিনি দেবীগঞ্জ থানায় মামলাটি দায়ের করেন। বাদী এবং থানা কর্তৃপক্ষ মামলা দাখিলের বিষয়টি গোপন রাখলেও রবিবার সন্ধায় তা সাংবাদিকদের নজরে আসে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ১৬ মে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের ভার্চুয়াল বৈঠকে আসামিরা দেবীগঞ্জে বিভিন্ন স্থানে নাশকতার পরিকল্পনা করেন। বৈঠকের একটি আট মিনিটের অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে জনমনে আতঙ্ক ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। অডিও ক্লিপে দেবীগঞ্জ উপজেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল আলম এমুর কণ্ঠে নাশকতার পরিকল্পনা শোনা যায়। তিনি ইসলামী ব্যাংকের কয়েকটি শাখায় আগুন লাগানোর এবং বিএনপি-জামায়াতের প্রথম সারির অন্তত ১০ জন নেতার বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার কথা বলেন। ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। সে সময় এমুর শাস্তির দাবিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছিল।

দেবীগঞ্জ থানায় আওয়ামী লীগের দোসরদের নামে মামলা দায়ের হওয়ার পরে সে মামলায় জামায়াতের নেতাদের নাম অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় জামায়াতের নেতাকর্মীদের মাঝে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। ৭২ জনকে সন্ত্রাস বিরোধী ওই মামলায় আসামি করা হয় ব্যবসায়ী হেলাল শেখ ও জামায়াতের নেতা মকসেদুল, বেলাল হোসেনকে। স্থানীয়রা জানান, হেলাল শেখ চাকুরি করার পর সে ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত ছিল। রাজরীতি করতো না। মকসেদুল এবং বেলাল হোসেন জামায়াতের রাজনীতি করতো। অথচ তাদেরকে আসামি দেয়া হয়।

হেলাল শেখের স্বজনরা ওই কমিটির মূল কপি ও ভুয়া তালিকার কপি গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে দিয়ে জানান, সৈয়দপুর উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির তালিকায় হেলাল শেখের নাম ঢুকানো হয়। সে ভুয়া তালিকার নাম দেখিয়ে মামলা করা হয় হেলাল শেখের নামে কিন্তু যুবলীগের কমিটির প্রকৃত তালিকায় নাম রয়েছে সাজিদ আহমেদ। তাকে মিথ্যা মামলায় ফাসাঁনোর জন্যই তার নাম দেয়া হয়েছে।

পঞ্চগড় জেলা শ্রমিক কল্যান ফেডারেশনের সভাপতি আবুল বাশার বসুনিয়া জানান, ফ্যাসিস্টদের সাথে যারা জামায়াতের কর্মীদের মামলা জড়ানো জামায়াতের প্রতি জুলুম করেছে। যারা এ কাজ করেছে তারা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। মামলা হতে জামায়াতের দুই কর্মীর নাম প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।

মামলার স্বাক্ষী শোভন, সৈকত ও হিরাকে ফোন দেয়া হলে তারা কেউ মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

মামলায় অন্য আসামীরা হলেন, দেবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হাসনাৎ জামান চৌধুরী জর্জ ও দেবীগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আবু বক্কর সিদ্দিক, বোদা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক আলম টবি, সাবেক রেলপথ মন্ত্রীর ছেলে ও যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কৌশিক নাহিয়ান নাবিদ, পঞ্চগড় জেলা ছাত্র লীগের সাধারণ সম্পাদক প্লাবন পাটোয়ারী, দেবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক রিতু আক্তার, বোদা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাংবাদিক রাশেদুজ্জামান বাবু, পঞ্চগড়ের সাংবাদিক তোতা মিয়া ও সাংবাদিক আছমা আক্তার আখি, দেবীগঞ্জ উপজেলার সুন্দরদীঘি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও কালীগঞ্জ এলাকার সাংবাদিক কামাল উদ্দীনসহ ৭২ জন।

দেবীগঞ্জ থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) প্রবীর কুমার সরকার জানান, ওসি স্যার ছুটিতে আছেন। এ বিষয়ে আমি কিছু জানিনা। ওসি স্যারের সাথে কথা বলেন।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম