মেঘনা পেট্রোলিয়ামে রেজা মোঃ রিয়াজউদ্দিনের দুর্নীতির সিন্ডিকেট:

নিজস্ব প্রতিবেদক :

সরকারি খাতের অন্যতম বৃহৎ জ্বালানি কোম্পানি মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড এখন দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। এই অবস্থার পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছেন প্রতিষ্ঠানটির জেনারেল ম্যানেজার (মার্কেটিং) এবং কোম্পানি সচিব অ.দা. হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী রেজা মোঃ রিয়াজউদ্দিন।যোগ্য লোক থাকা সত্ত্বেও একাধিক পদে দীর্ঘদিন যাবত ছিল।

তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, রিয়াজউদ্দিন একটি প্রভাবশালী নিয়োগ সিন্ডিকেট গঠন করে বছরের পর বছর ধরে পদ বিক্রি এবং অযোগ্য ব্যক্তিদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়ে প্রতিষ্ঠানকে দুর্বল করেছেন। বিশেষ করে আউটসোর্সিংয়ের নামে কোটি টাকার বাণিজ্য হয়েছে, যেখানে যোগ্যতার ভিত্তিতে নয়, বরং ঘুষ ও রাজনৈতিক আনুগত্যের ভিত্তিতে লোক নিয়োগ করা হয়েছে।

তেল চুরির এক নতুন মডেল:

অভিযোগ রয়েছে, রিয়াজউদ্দিনের নেতৃত্বে একদল কর্মকর্তা ও ঠিকাদার মিলে জ্বালানি তেল সরবরাহ চক্রে ভয়াবহ চুরি করে আসছে। সড়ক ও নৌ পথে বিভিন্ন পাম্পে পাঠানো তেলের পরিমাণ এবং আসল সরবরাহের মধ্যে বিস্তর ফারাক পাওয়া গেছে সাম্প্রতিক এক অডিট প্রতিবেদনে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুধু ২০২৩-২৪ অর্থবছরেই প্রায় ৪০ কোটি টাকার জ্বালানি তেল গায়েব হয়েছে রহস্যজনকভাবে।

বদলির রাজনীতি এবং শেখ হাসিনার ছত্রছায়া:

বিশ্বস্ত সূত্র বলছে, রেজা মোঃ রিয়াজউদ্দিন বারবার বদলি হয়ে সুবিধাজনক স্থানে আসতে পেরেছেন শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী আমলে রাজনৈতিক ছত্রছায়া ব্যবহার করে। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই শাসকদলের বিভিন্ন প্রভাবশালী মহলের সাথে সখ্য বজায় রেখে প্রতিষ্ঠানটিকে পারিবারিক সম্পত্তির মতো ব্যবহার করছেন।

সংবাদমাধ্যমে উঠে এসেছে বাস্তবতা:
সাম্প্রতিক সময়ে গণমাধ্যমে একাধিক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে উঠে এসেছে রিয়াজউদ্দিন ও তার ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির চিত্র। সংবাদগুলোতে তুলে ধরা হয়েছে কীভাবে একটি রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের মুখে পড়েছে শুধুমাত্র সিন্ডিকেট-নির্ভর, অযোগ্য ও দুর্নীতিপরায়ণ কর্মকর্তাদের কারণে।

জরুরি তদন্তের দাবি:

প্রতিষ্ঠানটির সৎ কর্মকর্তাদের একাংশ জানিয়েছেন, যদি এভাবে লুটপাট ও দুর্নীতি চলতে থাকে, তাহলে শিগগিরই মেঘনা পেট্রোলিয়ামকে সরকারকে বার্ষিক ভর্তুকি দিয়ে টিকিয়ে রাখতে হবে, কারণ এর স্বাভাবিক আয় ব্যয় মেলানোই দুঃসাধ্য হয়ে উঠছে।

জনস্বার্থে তারা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের কাছে রেজা মোঃ রিয়াজউদ্দিনসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে তদন্ত্র ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানিয়েছেন।

মেঘনা পেট্রোলিয়ামের মতো রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতি কেবল আর্থিক ক্ষতির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না; এটি জ্বালানি নিরাপত্তা, জাতীয় স্বার্থ এবং জনগণের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে, যা অবহেলা করার সুযোগ নেই।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম