মাইলস্টোনে বিমান দুর্ঘটনা : শোক প্রকাশ বিসিবি-বাফুফের

মাইলস্টোনে বিমান দুর্ঘটনা : শোক প্রকাশ বিসিবি-বাফুফের

ডেস্ক রিপোর্টার:
উত্তরায় বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় সারা দেশেই শোকের পরিবেশ বিরাজ করছে। দেশের ক্রীড়াঙ্গনেও সেই শোকের ছোঁয়া লেগেছে। তারকা খেলোয়াড়রা অনেকেই এরই মধ্যে শোক প্রকাশ করেছেন। এবার দেশের ক্রীড়াঙ্গনের শীর্ষ দুই সংগঠন- বিসিবি ও বাফুফেও এই ঘটনায় শোক প্রকাশ করল।

আজ (২১ জুলাই) বিসিবি থেকে প্রকাশিত এক শোক বার্তায় বলা হয় মাইলস্টোন কলেজের মর্মান্তিক বিমান পাশে বিধ্বস্তের ঘটনায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড গভীরভাবে শোকাহত। স্বজন হারানোদের পরিবারের প্রতি বিসিবির গভীর সমবেদনা থাকবে। যারা এই দুর্ঘটনায় আক্রান্ত হয়েছেন তাদের সবার জন্য আমাদের দোয়া থাকবে। বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়ালও এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক ঘটনার খবরে আমরা গভীরভাবে শোকাহত ও ব্যথিত। যেসব শিক্ষার্থীরা প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং আহত সকলের দ্রুত সুস্থতা প্রার্থনা করছি।

নিহত ও আহতদের সমবেদনা জানিয়ে তিনি বলেন এই শোকের মুহূর্তে আমরা নিহত ও আহতদের পরিবারের সকল সদস্য এবং বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা ও সংহতি প্রকাশ করছি। শুধু ক্রীড়া সংস্থাই নয়, উত্তরার এই ঘটনায় মন কাঁদছে খেলোয়াড়দেরও। ইতোমধ্যে এই ঘটনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শোকবার্তা দিয়েছেন জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল। শোকবার্তা দিয়েছেন ওয়ানডে দলের অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ এবং টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক লিটন দাস। তারকা পেসার মুস্তাফিজুর রহমান, মুমিনুল হক এবং শাদমান ইসলামও এই ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন।

আজ (২১ জুলাই) রাজধানী ঢাকার উত্তরায় দুর্ঘটনাটি ঘটে। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর এফ-৭ বিজেআই মডেলের একটি প্রশিক্ষণ বিমান দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন কলেজ এরিয়ার মধ্যে বিধ্বস্ত হয়। এখন পর্যন্ত এই ঘটনায় ৪ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে হতাহতের সংখ্যা আরও বড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ঢাকার উত্তরায় অবস্থিত মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় দেশজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সর্বস্তরের মানুষ থেকে শুরু করে বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকেও এই ঘটনায় সহমর্মিতা প্রকাশ করা হচ্ছে, যেখানে রয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)।

এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বিসিবি এক বিবৃতিতে শোক প্রকাশ করেছে। “ঢাকার মাইলস্টোন কলেজের সামনে বিমান দুর্ঘটনায় হতাহতদের খবরে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। আহত ও নিহতদের পরিবারের প্রতি আমাদের আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি। এই ভয়াবহ ঘটনার শিকার হওয়ার সবার জন্য আমাদের প্রার্থনা রইল। বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়ালও বিবৃতিতে জানিয়েছেন শোকাবহ প্রতিক্রিয়া। “উত্তরার মাইলস্টোন স্কুলে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক দুর্ঘটনার খবরে আমরা অত্যন্ত ব্যথিত ও শোকাহত। যারা প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি। নিহত ও আহতদের পরিবার এবং বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রতি আমরা গভীর সমবেদনা ও সংহতি প্রকাশ করছি।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিমান বাহিনীর ‘এফ-৭ বিজেআই’ মডেলের প্রশিক্ষণ বিমানটি উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়ে যাওয়ার সাথে সাথেই সেখানে আগুন ধরে যায়। আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে দ্রুত কাজ শুরু করে।

মহাখালী গণপূর্তের ডিউক আ.লীগ ঘনিষ্ঠ ঠিকাদারদেরই কাজ পাইয়ে দেয়

নিজস্ব প্রতিবেদক॥

আওয়ামী ম্যানিফেস্টো বাস্তবায়নে নেমেছে মহাখালী গণপূর্ত বিভাগ। আ. লীগ দলীয় ঠিকাদারদের ডেকে এনে কাজ দেওয়াসহ দপ্তরটির নির্বাহী প্রকৌশলী এএইচএম ফয়জুল ইসলাম ডিউকের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জুলাইয়ের রাজনৈতিক সহিংসতায় ক্ষতিগ্রন্থ মহাখালী এলাকার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবন, বিআরটিএ ও সেতু ভবনের মেরামত কাজ দরপত্র আহ্বানের আগেই শুরু করার নির্দেশ দেন প্রকৌশলী ডিউক। পরে ওটিএম পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করে নির্ধারিত কিছু আ’লীগ ঘনিষ্ঠ ঠিকাদারদের কাজ পাইয়ে দেন, যার বিনিময়ে কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ডিভিশনটিতে এভাবে ইচ্ছেকৃত বৈষম্য তৈরীর কারণে প্রকৌশলী ডিউক যে কোন সময় বঞ্চিত ঠিকাদারদের রোষানলে পড়ে লাঞ্ছিত হতে পারেন বলে সংশ্লিষ্ট অনেকে আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন। আর এ রকম পরিবশে তৈরী হওয়ার কারণে জানুয়ারী মাস থেকে শুরু করে চলতি বছরের জুনক্লোজিং পর্যন্ত হাতে গোনা কয়েকদিন ডিভিশনে অফিস করেছেন তিনি। অথচ একই ক্যাম্পাসের অন্যান্য নির্বাহী প্রকৌশলীরা নিয়মিত অফিস করলেও তিনি কখনো হজ্জ্ব ক্যাম্প কখনো সার্কেল অফিস আবার কখনো জোন অফিসে বসে ফাইলপত্র স্বাক্ষর করেছেন বলে সংশ্লিষ্ট নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়।
স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ পাওয়া কাজগুলো সাধারণত এলটিএম পদ্ধতিতে সম্পন্ন হলেও, অর্থবছরের শেষপ্রান্তে প্রায় অর্ধকোটি টাকার কাজ ওটিএম পদ্ধতিতে করে নিজের পছন্দের ঠিকাদারদের দিয়ে করানো হয়েছে। এছাড়াও, গত অর্থবছরের ৪-৫ কোটি টাকার বকেয়া বিল ছাড় করতে গিয়ে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের কাছ থেকে ১৫/২০% পর্যন্ত ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রকৌশলী ডিউকের বিরুদ্ধে।
একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, গোপণ কোটেশন দেখিয়ে ওই অর্থবছরে আরও প্রায় অর্ধকোটি টাকা আত্মসাত করা হয়েছে। উল্লেখ্য, স্বৈরাচার আমলে ডিউক ছিলেন শেরেবাংলা নগর ৩নং সাব-ডিভিশনের এসডিই ও পরবর্তীতে ২নং ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী। এই সময়েও তার বিরুদ্ধে বেনামী ঠিকাদারী ব্যবসাসহ ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া যায়। পরবর্তীতে অধিদপ্তরের সমন্বয় শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত থাকার সুবাদে দেশব্যাপী ফান্ড ডিজবারসমেন্টে বরাদ্দের ০.৫% কোন কোন ক্ষেত্রে ১% নগদ আদায় করতেন বিভাগীয় বরাদ্দ থেকে। অনেক ক্ষেত্রে বরাদ্দ কেটে দেয়ার ভয় দেখিয়ে বরাদ্দ বাড়িয়ে দেয়ার আশ্বাস দিয়ে ২% করে আদায় করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সেখানে বর্দ্দা কাটাছেড়ার কাজ করেছেন প্রায় ৬বছর।
অপরদিকে, ডিভিশনটির মহাখালী সাব-ডিভিশনের এসডিই ওয়াহিদ বিন ফরহাদের বিরুদ্ধেও বেনামী ঠিকাদারি ব্যবসা ও নানা অনিয়মের অভিযোগ করেছেন সাধারণ ঠিকাদাররা। তিনি ইতোপূর্বে মতিঝিল গণপূর্ত বিভাগের অধীনে ঢাকা গণপূর্ত উপবিভাগ-৭ এর দায়িত্বে থ্কাতে বেনামী ঠিকাদারী ব্যবসাসসহ বহুবিধ জাল-জালিয়াতির দায়ে অভিযুক্ত। ওই সাবডিভিশনের আওতায় কোন ঠিকাদার কাজ পেলে কাজ উঠানো বাবদ চুক্তিমূল্যের ৪০% থেকে ৫০% অর্থ নিজেই হিসাব করে রেখে দিতেন ঠিকাদারের কাছ থেকে। ওই সাবডিভিশনে থাকতে আওয়ামী প্রভাব খাটিয়ে সাধারণ ঠিকাদারদের ওপরে ঘুষ দুর্নীতির ষ্টীম রোলার চালিয়েছেন তিনি। চাকরির সল্প ব্যবধানে এভাবে তিনি নামে-বেনামে কয়েক কোটি টাকার সহায়-সম্পদের মালিক হয়েছেন বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়। এসব বিষয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন গণমাধ্যম প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।
ঠিকাদারদের অভিযোগ, ডিউক দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বিভাগটি হরিলুটের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। পুরনো ঠিকাদারদের বিশেষ সুবিধা দিয়ে তিনি কোটি টাকার প্রকল্প ভাগ করে দিয়েছেন।
বিশেষত ৪.১৮ কোটি ও ১.৪৮ কোটি টাকার বরাদ্দে সেতু ভবনের সিভিল, স্যানিটারি, অডিটোরিয়াম এবং রেক্টোফিটিং কাজ দিয়েছেন অনিক ট্রেডিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন লিমিটেড নামক প্রতিষ্ঠানকে, যাদের রেক্টোফিটিংয়ে অভিজ্ঞতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বঞ্চিত প্রতারিত সাধারন ঠিকাদাররা।
৩.৬০ কোটি টাকার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবনের সংস্কার কাজ দিয়েছেন এনএল ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন-কে।
২.৫৩ কোটি টাকায় একই ভবনের অ্যালুমিনিয়াম জানালা, ফলস সিলিং, রং ও বাউন্ডারি ওয়াল সংস্কারের কাজ পেয়েছে খান এন্টারপ্রাইজ।
যদিও মার্চ মাসে এসব কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল, বাস্তবে জুলাই পর্যন্ত অনেক কাজ অসম্পূর্ণ রয়েছে। একইভাবে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশের ৮টি বিভাগীয় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ক্যান্সার ইউনিট নির্মাণ প্রকল্পে উত্তরায় কুয়েত-মৈত্রী হাসপাতালে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ভবন তৈরী, রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিং, এসটিপি, ডিপটিউবওয়েল. আন্ডারগ্রাউন্ড ওয়াটার রিজার্ভার, পাম্প হাউজ ও পানির বিতরণ লাইন, ফুটপাত, বাউন্ডারী ওয়াল লিংক কোরিডর নির্মাণ কাজগুলোতে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এ সকল কাজে সিডিউল বহির্ভূত নিম্নমাণের নির্মাণ উপকরণ ব্যবহার করা সহ কাজ শেষ না হওয়া সত্ত্বেও চলতি বছরের জুন মাসে এডভান্স বিল দেয়া হয়েছে মোটা অংকের পার্সেন্টেজের বিনিময়ে। বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলার জন্য প্রকৌশলী ডিউকের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করলেও তার কোন রেসপন্স পাওয়া যায়নি।
ভুক্তভোগী ঠিকাদারদের দাবি, এই অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে পুরো বিভাগে সুশাসনের স্থিতি বিনষ্ট হবে। এ বিষয়ে বিস্তারিত থাকছে পরবর্তীতে।

 

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম