৭২ ঘণ্টা পরিবহন ধর্মঘটের হুঁশিয়ারি

৭২ ঘণ্টা পরিবহন ধর্মঘটের হুঁশিয়ারি

ডেস্ক রিপোর্ট:

আট দফা দাবি আদায়ে ৭২ ঘণ্টা ধর্মঘটের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা। আগামী ১১ আগস্টের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে পরদিন থেকে এই ধর্মঘট পালন করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। রবিবার বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ হুঁশিয়ারি দেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব সাইফুল আলম।

সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ সংশোধনসহ ৮ দফা দাবি আদায়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি, বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব সাইফুল আলম বলেন, ১১ আগস্টের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে পরদিন ১২ আগস্ট সকাল ৬টা থেকে ১৫ আগস্ট সকাল ৬টা পর্যন্ত ৭২ ঘণ্টা দেশে সকল প্রকার বাণিজ্যিক পরিবহন বাস, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, প্রাইমমুভার পণ্যবাহী পরিবহন চলাচল বন্ধ থাকবে।

তিনি বলেন, সড়ক পরিবহন দেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সেক্টর। জাতীয় অর্থনৈতিক, যোগাযোগ ব্যবস্থা ও পণ্য পরিবহনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তাই এই সেক্টরকে সুশৃংখল, যানজটমুক্ত, দুর্ঘটনামুক্ত ও চাঁদাবাজমুক্ত করে উন্নত যাত্রী সেবাবান্ধব-সার্বজনীন পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। সাইফুল আলম বলেন, সম্প্রতি সরকারের নির্দেশনায় ২০ ও ২৫ বছরের পুরাতন বাস ও ট্রাক সড়ক থেকে অপসারণের জন্য বিআরটিএ’র কার্যক্রম শুরুর প্রেক্ষিতে দেশের বিভিন্ন জেলা ও বিভাগের মালিক-শ্রমিকরা আঞ্চলিকভাবে ধর্মঘটের ডাক দেয়।

এতে করে সারা দেশের পরিবহন ব্যবস্থাপনায় অচলাবস্থার সৃষ্টির আশঙ্কা দেখা দেয়। এ বিষয়টি আলোচনা ও নিষ্পত্তির লক্ষ্যে গত ২০ জুলাই ঢাকায় সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতৃত্বদানকারী সংগঠন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি, বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন এবং বিভাগীয় মালিক ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দ সমন্বয়ে এক যৌথ সভা করে। সভায় মালিক এবং শ্রমিক নেতৃবৃন্দ বিস্তারিত আলোচনার পর মালিকদের ব্যবসায়িক স্বার্থ এবং শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার সমুন্নত রেখে সড়ক ব্যবস্থাপনাকে সচল রাখার জন্য আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে নিরসন করার জন্য সরকারকে লিখিতভাবে অনুরোধ জানানোর সিদ্ধান্ত হয়। এই সময়ের মধ্যে দাবি মানা না হলে মালিক ও শ্রমিকরা যৌথভাবে সারা দেশে পরিবহন ধর্মঘটে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

তাদের দাবিগুলো হলো সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এর ৯৮ ও ১০৫ নম্বর ধারাসহ অন্যান্য সুপারিশ করা ধারাগুলো সংশোধন করতে হবে। বাণিজ্যিক মোটরযানের ইকোনমিক লাইফ ২০ ও ২৫ বছর থেকে বৃদ্ধি করে ৩০ বছর পর্যন্ত বিবেচনা করতে হবে। এছাড়া যেসব গাড়ি ফিটনেস পাবে না বা বায়ুদূষণ যন্ত্রের মাধ্যমে পরিবেশ দূষণ করে বলে প্রমাণিত হয়, সেসব গাড়ি নতুন-পুরাতন বিবেচনা যাইহোক না কেন, চলাচলে অযোগ্য ঘোষণা করতে হবে। পূর্বে পুরাতন গাড়ি অপসারণের ক্ষেত্রে নিয়ম ছিল মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়ি শুধুমাত্র মেট্রোপলিটন এলাকায় চলাচল করতে পারবে না। লোকাল জেলায় বিআরটিএ’র ফিটনেস পাওয়া সাপেক্ষে চলাচল করতে পারবে।

এই বিষয়টি বহাল রাখতে হবে। উল্লেখিত সমস্যা নিরসন না হওয়া পর্যন্ত বিআরটিএ কর্তৃক ২০ ও ২৫ বছরের পুরাতন গাড়ির বিরুদ্ধে অভিযান স্থগিত রাখতে হবে। বাজেটে বাণিজ্যিকভাবে চলাচলকারী যানবাহনের ওপর আরোপিত দ্বিগুণ অগ্রিম আয়কর (প্রিজাম্পটিভ ইনকাম ট্যাক্স) কমিয়ে পূর্বের ন্যয় বহাল রাখতে হবে। মেয়াদোত্তীর্ণ যানবাহন রাস্তা থেকে সরানোর জন্য সহায়ক হিসেবে বাণিজ্যিক রিকন্ডিশন যানবাহন (বাস, ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, প্রাইম মুভার) আমদানির মেয়াদ ৫ বছর থেকে বৃদ্ধি করে ১২ বছর করতে হবে। দুর্ঘটনা কবলিত গাড়ি থানায় আটক হলে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে মালিকের জিম্মায় দেওয়ার বিধান রয়েছে। যা বাস্তবে কার্যকর করা হয় না। এটা কার্যকর করতে হব।

মেয়াদোত্তীর্ণ পুরাতন যানবাহনের জন্য স্ক্র্যাপ নীতিমালা তৈরি করতে হবে। মহাসড়কে তিন চাকার যানবাহন (অটো-টেম্পু, অটোরিক্সা) সহ বিআরটিএ কর্তৃক অনুমোদনবিহীন হালকা যানবাহনের পৃথক লেনে চলাচলের ব্যবস্থা করতে হবে। অধিকাংশ দুর্ঘটনাই এসব যানবাহন মহাসড়কে একত্রে চলাচলের কারণে হয়ে থাকে। ড্রাইভিং লাইসেন্স ও নবায়ন দ্রুততার সঙ্গে ডেলিভারি দিতে হবে এবং শ্রমিক ফেডারেশনের ১২ দফা দাবি বাস্তবায়ন করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি কফিল উদ্দিন আহমেদ, কার্যকরী সভাপতি এম এ বাতেন, সহ-সভাপতি মো. তোফাজ্জল হোসেন মজুমদার, বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান রমেশ চন্দ্র ঘোষ, সহ-সাধারণ সম্পাদক এম হুমায়ূন কবির, সাবেক সাধারণ সম্পাদক কফিল উদ্দিন আহমেদ এবং সাবেক-সভাপতি ফারুক তালুকদার সোহেল, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আব্দুর রহিম বক্স দুদু ও সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন কবির খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

তাজিয়া মিছিল শুরু

ডেস্ক রিপোর্ট:

পবিত্র আশুরা উপলক্ষে শোক ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে রাজধানী ঢাকায় শুরু হয়েছে তাজিয়া মিছিল।

রোববার (৬ জুলাই) সকাল ১০টার পরে ঐতিহাসিক হোসেনি দালান ইমামবাড়া থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে মিছিল শুরু হয়। চারশ বছরের পুরনো এই ইমামবাড়ায় ভোর থেকেই ঢাকাসহ আশপাশের এলাকা থেকে শিয়া সম্প্রদায়ের হাজারও মুসলিম জড়ো হতে থাকেন।

মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের অধিকাংশই কালো পোশাক পরিধান করেছেন, যা শোক প্রকাশের প্রতীক। অনেকের হাতে প্রতীকী ছুরি, আলাম, নিশান, বেস্তা ও বইলালাম- যা কারবালার ঘটনা স্মরণ করিয়ে দেয়।

সরেজমিনে দেখা গেছে, পরিবেশ ছিল ভারাক্রান্ত ও আবেগঘন। ‘হায় হোসেন, হায় হোসেন’ ধ্বনিতে রাজধানীর বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। শোকযাত্রাটি আজিমপুর, নীলক্ষেত, নিউ মার্কেট, সায়েন্সল্যাব হয়ে ধানমন্ডিতে গিয়ে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

মিছিলে অংশ নিতে আসা মহব্বত বলেন, এই দিনটি আমাদের জন্য বেদনার। ইমাম হোসেন ও তার পরিবারকে যেভাবে কারবালার প্রান্তরে শহীদ করা হয়েছিল, সেটি আমরা কখনো ভুলতে পারি না। প্রতিবছর আমি এই মিছিলে অংশগ্রহণ করি, যেন নিজেকে তাদের সেই ত্যাগের সঙ্গে একাত্ম করতে পারি।

তাজিয়া মিছিল নির্বিঘ্নভাবে সম্পন্ন করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা চোখে পড়ার মতো। হোসেনি দালান ও আশপাশের এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে সেনাবাহিনী, সোয়াট, অতিরিক্ত পুলিশ ও র‌্যাব সদস্য।

পবিত্র আশুরা ইসলামের ইতিহাসে এক শোকাবহ দিন। হিজরি ৬১ সালের ১০ মুহাররম কারবালার প্রান্তরে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর প্রিয় দৌহিত্র ইমাম হোসেন (আ.) ও তার পরিবারের সদস্যরা ইয়াজিদের বাহিনীর হাতে শহীদ হন। সেই ঘটনাকে স্মরণ করেই প্রতিবছর আশুরার দিন তাজিয়া মিছিল আয়োজন করে থাকেন শিয়া মুসলিমরা।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম