নতুন ভোটার ৪৫ লাখ, বাদ যাচ্ছে ২১ লাখ

নতুন ভোটার ৪৫ লাখ, বাদ যাচ্ছে ২১ লাখ

ডেস্ক রিপোর্ট:

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সম্পূরক খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। খসড়া অনুযায়ী ভোটার তালিকায় এবার নতুন করে যুক্ত হচ্ছে ৪৫ লাখ ভোটার। সেইসঙ্গে মৃত ভোটার হিসেবে বাদ পড়েছে ২১ লাখ ৩২ হাজার ৫৯০ জন। হালনাগাদের পর দেশে মোট ভোটার দাঁড়াল ১২ কোটি ৬১ লাখ ৭০ হাজার ৯০০ জনে।

রবিবার (১০ আগস্ট) সম্পূরক খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ গণমাধ্যমে বলেন, খসড়া তালিকার ওপর দাবি-আপত্তি জমা দেওয়া যাবে ২১ আগস্ট পর্যন্ত। এসব দাবি-আপত্তি নিষ্পত্তি করে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে ৩১ আগস্ট।

সচিব বলেছেন, সারা দেশের নির্বাচন অফিসগুলোতে একযোগে রোববার হালনাগাদ ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। হালনাগাদ ভোটার তালিকায় নতুন যুক্ত হয়েছে ৪৫ লাখ ৭১ হাজার ২১৬ জন ভোটার।

৩১ আগস্ট চূড়ান্ত হালনাগাদ ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে উল্লেখ্য করে তিনি বলেন, আইন অনুযায়ী এ বছরের ২ মার্চ ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছিল ইসি। তখন ভোটার ছিল ১২ কোটি ৩৭ লাখ ৩২ হাজার ২৭৪ জন। ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ৪৫ লাখ ৭১ হাজার ২১৬ জনকে নতুন করে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তবে মৃত ও কর্তন করা ভোটার হিসেবে ২১ লাখ ৩২ হাজার ৫৯০ জনকে বাদ দেওয়া হয়। ৩১ আগস্ট চূড়ান্ত হালনাগাদ ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে।

নবীন ভোটারদের প্রসঙ্গে সচিব আরও বলেন, এ ছাড়া আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত যাদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হবে, তারাও ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন। নবীন ভোটারদের এক বছর অপেক্ষা না করানোর জন্য নতুন আইনে এ সুযোগ রাখা হয়েছে।

আখতার আহমেদ বলেন, এ বছর আসলে মোট তিনটি ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে ইসি। ২ মার্চ প্রকাশের পর ৩১ আগস্ট এবং ৩১ অক্টোবর প্রকাশিত তালিকাগুলো প্রকাশ হবে।

এর আগে, এদিন সকালে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সম্পূরক খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই ভোটারদের তথ্য খসড়া সম্পূরক তালিকায় অন্তর্ভুক্ত থাকবে; যা উপজেলা কর্মকর্তারা নির্দিষ্ট স্থানে টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সংশোধনের জন্য দাখিল করা আবেদন আগামী ২৪ আগস্টের মধ্যে নিষ্পত্তি করবে ইসি। সব প্রক্রিয়া শেষে ৩১ আগস্ট চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে।

ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের কারণ জানালেন প্রেস সচিব

স্টাফ রিপোর্টার॥

নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ কেন নিষিদ্ধ হয়েছে তার কারণ তুলে ধরেছেন অর্ন্তবর্তী সরকার প্রধানের প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সারা দেশে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের মাধ্যমে ছাত্রলীগ অনিরাপদ পরিবেশ তৈরি করেছিল। এ জন্যই ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে নিরাপদ বাংলাদেশ চাই শিরোনামে আয়োজিত সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় নতুন করে রাষ্ট্র মেরামত করতে হলে শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস দূর করতে হবে বলেও জানান প্রেস সচিব। তিনি বলেন, শিক্ষাঙ্গনকে নিরাপদ করতে হবে। যাতে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়ায় মনোযোগী হতে পারে। ক্যাম্পাসগুলোকে কোনো ধরনের সন্ত্রাসের আখান্ডা করা যাবে না। নতুন বাংলাদেশ গড়তে যেন শিক্ষার্থীরা নিরাপদ ক্যাম্পাসে থেকে উদ্ধুদ্ধ হয়। প্রেস সচিব আরও বলেন, জুলাই-আগস্টে ছাত্রদের আন্দোলনের বিপক্ষে ছিল ছাত্রলীগ। ফ্যাসিবাদের বয়ান তৈরি করেছে ছাত্রলীগ। পুরো জাতিকে জিম্মি করে রেখেছিল তারা। চাকরির ক্ষেত্রে বৈষম্য তৈরি করে রেখেছিল। সাধারণ ছেলে-মেয়েদের চাকরি পাওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করে রাখে। বাংলাদেশকে নিরাপদ করতে হলে শিক্ষাঙ্গনকে নিরাপদ করতে হবে। শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস দূর করতে হবে।
এর আগে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অঙ্গ-সংগঠন ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে নিষিদ্ধ করে অন্তর্বর্তী সরকার। গত ২৩ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। প্রকাশিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, যেহেতু বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে বিশেষ করে বিগত ১৫ বছরের স্বৈরাচারী শাসনামলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ হত্যা, নির্যাতন, গণরুমকেন্দ্রিক নিপীড়ন, ছাত্রাবাসে সিট বাণিজ্য, টেন্ডারবাজী, ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নসহ নানাবিধ জননিরাপত্তা বিঘœকারী কর্মকান্ডে জড়িত ছিল এবং এতৎসম্পর্কিত প্রামাণ্য তথ্য দেশের সকল প্রধান গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে এবং কিছু সন্ত্রাসী ঘটনায় সংগঠনটির নেতাকর্মীদের অপরাধ আদালতেও প্রমাণিত হয়েছে।

যেহেতু ১৫ জুলাই থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রী ও সাধারণ জনগণকে উন্মত্ত ও বেপরোয়া সশস্ত্র আক্রমণ করিয়া শতশত নিরপরাধ শিক্ষার্থী ও ব্যক্তিদের হত্যা করিয়াছে এবং আরও অসংখ্য মানুষের জীবন বিপন্ন করেছে। যেহেতু সরকারের নিকট যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ আছে, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক, ধ্বংসাত্মক ও উসকানিমূলক কর্মকান্ড এবং বিভিন্ন সন্ত্রাসী কাজের সাথে জড়িত।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, সেহেতু সরকার সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০০৯ এর ধারা ১৮ এর উপ-ধারা (১) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ-কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করিল এবং ওই আইনের তফসিল-২ এ বাংলাদেশ ছাত্রলীগ নামীয় ছাত্র সংগঠনকে নিষিদ্ধ সত্তা হিসেবে তালিকাভুক্ত করল।

সবা:স:সু-৬৩/২৪

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম