কয়রায় বিএনপি নেতা বাবুলের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবি

কয়রায় বিএনপি নেতা বাবুলের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবি

খুলনা সংবাদদাতা:

খুলনার কয়রা উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব নুরুল আমিন বাবুলের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (১১ আগস্ট) দুপুর ১২টায় কয়রা উপজেলা বিএনপি ও সকল অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের আয়োজনে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। বিএনপি নেতা মাওলানা গোলাম মোস্তফার সভাপতিত্বে ও মোস্তাফিজুর রহমানের পরিচালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন আমেরিকা প্রবাসী বিএনপি নেতা বায়োজিদ হোসেন বাচ্চু, কয়রার বিএনপি নেতা শেখ সিরাজুল ইসলাম, প্রভাষক আবুল কালাম আজাদ, আ. মজিদ মিস্ত্রি, আ. গফফার, এফ এম মোহররম হোসেন, নাজমুল হুদা, কামরুল ইসলাম, শেখ মাসুদুর রহমান, এ করিম, যুবদল নেতা আহাদুর রহমান লিটন।

আরও বক্তব্য রাখেন মোস্তাফিজুর রহমান খোকন, আওছাফুর রহমান, মোস্তাফিজুর রহমান বাবু, আবু তায়েব, রফিকুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান বাবু, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা নজরুল ইসলাম, রাশেদুল ইসলাম, ইলিয়াস জনী। উপজেলা জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) সভাপতি জামাল ফারুক জাফরুন, সাধারণ সম্পাদক ডা. আমিনুল ইসলাম, শ্রমিক দল নেতা আকবার হোসেন, আ. রউফ, আজিজুল ইসলাম, তাঁতী দল নেতা আবুল কালাম, সিরাজুল ইসলাম, ছাত্রনেতা মেহেদী হাসান সবুজ, শেখ মামুন, তৌহিদুর রহমান, মেহেদী, মহিলা দল নেত্রী ফাতেমা খাতুন, মাহফুজা, রুবিনা।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, কয়রার দুঃসময়ের বিএনপির কান্ডারি নুরুল আমিন বাবুলের বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার করতে হবে। তার মতো নির্যাতিত নেতার বিএনপিতে প্রয়োজন। বিগত দিনে কয়রার ৭টি ইউনিয়নের বিএনপি ও তার সহযোগী সংগঠনকে শক্তিশালী করতে তিনি দিনরাত পরিশ্রম করেছেন। তারা আরও বলেন, নুরুল আমিন বাবুলকে মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে বহিষ্কার করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ও খুলনা জেলা বিএনপি নেতাদের কাছে তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানাই।

খুলনার নদ–নদী থেকে এক বছরে ৫০ লাশ উদ্ধার

ডেস্ক রিপোর্ট :

খুলনার পাইকগাছা উপজেলার শিবসা নদীর চর থেকে গত শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে ইকরাম হোসেন (৪৩) নামে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে নৌ পুলিশ। এর এক দিন আগে বৃহস্পতিবার সকালে একই উপজেলার জিরবুনিয়া খাল থেকে ভাসমান অবস্থায় রানা খলিফা নামে আরেক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়।

খুলনার বিভিন্ন নদ–নদী থেকে গত ১ বছরে এমন ৫০টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ তথ্য নৌ পুলিশের। এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশ মানবাধিকার ব্যুরোর কয়রা উপজেলা সভাপতি তরিকুল ইসলাম বলেন, নদী থেকে লাশ উদ্ধারের ঘটনায় রহস্য উদ্‌ঘাটন ও অপরাধী শনাক্তকরণে দীর্ঘসূত্রতার কারণে অপরাধ বেড়েই চলেছে। তার মতে প্রতিটি ঘটনার দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করা গেলে এ প্রবণতা কমে আসবে।

পরিসংখ্যান কি বলছে :

নৌ পুলিশের সামগ্রিক পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের আগস্ট পর্যন্ত ১ বছরে খুলনা অঞ্চলের নদ-নদী থেকে মোট ৫০টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩২ জন পুরুষ, ৭ জন নারী ও ১১টি শিশু। উদ্ধার হওয়া লাশের মধ্যে ২০ জনের পরিচয় অশনাক্ত থেকে গেছে।এর মধ্যে নৌ পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত খুলনা অঞ্চলের নদ-নদী থেকে উদ্ধার হয়েছে ৩০টির বেশি লাশ। জানুয়ারিতে ১টি, ফেব্রুয়ারিতে ২টি, মার্চে ৪টি, এপ্রিলে ৩টি, মে ও জুনে ৬টি করে ১২টি, জুলাইয়ে ৩টি এবং আগস্টে ৮টি লাশ উদ্ধার হয়। এর মধ্যে ১৩টি লাশের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।

নদীভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, রূপসা নদী থেকে উদ্ধার হয়েছে মোট লাশের ৪০ শতাংশ, ভৈরব নদ থেকে ৩০ শতাংশ, পশুর নদ থেকে ২০ শতাংশ এবং বাকি ১০ শতাংশ উদ্ধার হয়েছে অন্যান্য নদ–নদী থেকে।

নৌ পুলিশসুপার মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, নদ-নদীতে লাশ ফেলা অপরাধীদের কাছে নিরাপদ কৌশল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। স্থলভাগে লাশ ফেলার তুলনায় নদীতে ফেললে হত্যাকারীদের শনাক্ত করা কঠিন হয়ে যায়। পানিতে দীর্ঘ সময় থাকার কারণে লাশ বিকৃত হয়, জলজ প্রাণী দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ফিঙ্গারপ্রিন্টসহ অন্যান্য পরিচয় শনাক্ত করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। তখন পরিচয় জানা সম্ভব হয় কেবল ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে, যা সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল। পরিচয় পাওয়া গেলে স্বজনেরা মামলা করেন আর অচেনা লাশের ক্ষেত্রে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে। অশনাক্ত লাশগুলো আঞ্জুমানে মফিদুলের মাধ্যমে দাফন করা হয়। সাম্প্রতিক সময়ে নদী থেকে লাশ উদ্ধারের সংখ্যা বেড়েছে এবং অধিকাংশই হত্যাকাণ্ডের শিকার বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

নদীতে গাছের গুড়ি ভাসতে দেখলেও মনে হয় লাশ ভাসে:

কয়রার বাগালী গ্রামের বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম বলেন, মে মাসে আমাগের বাড়ির পাশের নদীর চরে এক বুড়া মানুষের লাশ পাওয়া গেছিল। চরে লোহার শিকলে বান্দা ছিল মানুষটা। আবার জুনে কাছারিবাড়ি বাজারের পাশের পুকুরির মধ্যি এক মেয়ের লাশ ভাইসে উঠল। তার আগে বাগালীতেই নদীর চর থিকে আরেক অচেনা মেয়ের লাশ পেয়েছিল পুলিশ। তখন থিকেই নদীতে নামতি বড্ড ভয় লাগে। মাছ ধরতি গেলিও মনডা কেমন করে। নদীতে কোনো গাছের গুড়ি ভাসতি দেখলিও মনে হয়, লাশ ভাসতিছে।’

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) খুলনা জেলা সাধারণ সম্পাদক কুদরত-ই-খুদা বলেন, পুলিশ এখন মূলত রুটিন কাজেই সীমাবদ্ধ। অপরাধীদের শনাক্ত করে বিচারের মুখোমুখি করার ক্ষেত্রে তাদের তৎপরতা খুবই কম।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম