
ষ্টাফ রিপোটার:
মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার নদীবেষ্টিত ইউনিয়ন গুয়াগাছিয়া । এই ইউনিয়নে দিন দিন অপরাধের প্রবনতা বেড়েই চলছে৷ এমন কোন অপকর্ম নেই, এখানে হচ্ছেনা। রাজনৈতিক ভাবেও রয়েছে সক্রিয় বিবাদ মান দুটো পক্ষ। এক পক্ষ অপর পক্ষকে সন্ত্রাসী তকমা দিতে বরাবরই তৎপর । এই ইউনিয়নে সক্রিয় একাধিক ডাকাত ও জলদস্যু বাহিনী, তা সর্বজন স্বীকৃত । ইতিমধ্যে যৌথ বাহিনীর সাড়াশি অভিযানে গাঢাকা দিয়েছে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও নৌডাকাত পিয়াস, নয়ন ও আক্তার বাহিনীর সকল সদস্যেরা। তবে দীর্ঘ বছর ফের এলাকায় আনাগোনা বেড়েছে পিয়াস গ্রুপের প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসী গ্রুপের সদস্য নুন্যতম চল্লিশ মামলার আসামি জিতু রাড়ী সহ তার সকল সদস্যদের । সন্ত্রাসী এক গ্রুপের পলায়ন আরেক গ্রুপের আগমন, শ্বতিতে নেই গুয়াগাছিয়া ইউনিয়ন বাসী। চরম আতংক দিন কাটছে স্থানীয়দের।
এলাকাবাসীর দীর্ঘ দিনের দাবী একটি পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপনের৷ অনেক চড়াই উৎরাই পার করে অবশেষে তা বাস্তবায়নে রুপ নিয়েছে । চলতি মাসের ২২ তারিখ থেকে এই অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পটি কার্যক্রম চালু হয়৷ । তবে শুরুতেই জামেলা বাঁধে পুলিশ ক্যাম্প কার্যক্রমের স্থান নিয়ে । স্থানীয় আওয়ামীলীগ দোসর জলদস্যু জিতু রাড়ীর গডফাদার হিসেবে পরিচিত কাইয়ুম দেওয়ানের বিল্ডিংয়ে পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের বিরোধিতায় নামেন স্থানীয় জনতার বৃহৎ অংশটা । তারাই ধারাবাহিকতায় আওয়ামিলীগ দোসরের বিল্ডিংয়ে নয় বরং নিরপেক্ষ জায়গায় পুলিশ ক্যাম্পের কার্যক্রম এবং কাইয়ুম দেওয়ানসহ তার সহযোগীদের গ্রেফতারের দাবীতে মানববন্ধনের করে স্থানীয়রা৷ গুয়াগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সামনে অনুষ্ঠিত এই মানববন্ধনে অংশগ্রহনকারীরা দাবী করে পুলিশ ক্যাম্পটি নিরপেক্ষ কোন জায়গায় স্থাপন করা হউক৷ পাশাপাশি স্থানীয়দের এও দাবী পুলিশ ক্যাম্পকে প্রভাবিত করে স্থানীয় আওয়ামিলীগ দোসররা এবং জলদস্যু জিতু রাড়ী এলাকায় ফেরার পায়তারায় লিপ্ত । যেহেতু আওয়ামিলীগ দোসর কাইয়ুম দেওয়ানের বিল্ডিংয়ে পুলিশ ক্যাম্প। তাই তিনি স্থানীয় ভাবে প্রভাব বিস্তার করবে, এরকম আশংকা স্থানীয়দের । এদিকে নিরপেক্ষ জায়গায় পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের দাবীতে ২৫ আগষ্ট স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও আইজিপি বরাবর লিখিত আবেদনও করেছেন স্থানীয়রা৷ আবেদনে আওয়ামিলীগ দোসর কাইয়ুম দেওয়ানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগও তুলে ধরেছে ।
এদিকে কাইয়ুম দেওয়ানের নেতৃত্বেও এলাকায় একটা পক্ষ বিদ্যমান৷ স্থানীয়দের মানববন্ধনের পরের দিন অর্থাৎ ২৩ আগষ্ট দেওয়ান বাড়ির সামনে পাল্টা মানববন্ধনের আয়োজন করে কাইয়ুম দেওয়ান অনুসারীরা৷। তারা দাবি করেন আগের দিন মানববন্ধনে অংশ গ্রহণকারীরা সন্ত্রাসী গ্রুপের সদস্য এবং তারা পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের বিপক্ষে । আসলে কি তাই ? গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনগণের দাবি একটাই, যে কোন মুল্যে এখানে পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের ।
এদিকে ২৫ আগষ্ট বিকাল পাঁচটার দিকে পুলিশ ক্যাম্প সংলগ্ন জামালপুর গ্রামে মেঘনা নদীর বেলতলী লঞ্চ ঘাট এলাকায় নৌডাকাত বাহিনী পিয়াস গ্রুপটি মহরা দিতে আছে৷, মুহূর্তে খবর পেয়ে গজারিয়া থানা অফিসার্স ইনচার্জ আনোয়ারুল আজাদের নেতৃত্বে ডাকাত বাহিনীকে ধাওয়া করে৷। শুরু হয় পুলিশ ও ডাকাত বাহিনীর সাথে গোলাগুলি৷ পিছু হটে ডাকাত বাহিনী। পাশাপাশি জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে পুলিশ ক্যাম্পে কোন হামলা হয়নি । কিন্তু শোশাল মিডিয়া এবং স্থানীয় কতিপয় মিডিয়া কর্মী প্রচার করছে পুলিশ ক্যাম্পে ডাকাত বাহিনীর হামলা৷ এদিকে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো ঘটনায় ডাকাত পিয়াসকে প্রধান করে ২০ জন জলদস্যুর নামে গজারিয়া থানায় মামলা করা হয়েছে৷ বাদী হয়েছে এসআই সৈয়দ নজরুল ইসলাম, মামলা নাম্বার ২৫, এতে আরও অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে ২০/২৫ জনকে । এছাড়া ডাকাত বাহিনীকে গ্রেফতার করতে গতকাল যৌথ বাহিনী কর্তৃক অভিযান পরিচালিত হয়েছে৷
যতদুর জানা গেছে এই অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পকে পুঁজি করে নিজেদের আধিপত্য বিস্তারের দ্বন্দ্বে জড়িয়ে গেছে দুটো গ্রুপ। তবে স্থানীয় জনগণের আশা আকাংখা এই অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পের মাধ্যমেই গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নে শান্তি ফিরে আসবে ।