চাঁদাবাজির মামলায় প্রতারক সিকদার লিটনের জামিন নাকচ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

চাঁদাবাজির অভিযোগে করা মামলায় বহুরুপী প্রতারক ও ফরিদপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মঞ্জুর হোসেন বুলবুলের পিএস সিকদার লিটনের জামিন আবেদন না মঞ্জুর করেছেন আদালত। বুধবার দুপুরে জামিনের আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ফরিদপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শারমিন সুলতানা সুমি।
আদালত সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

গত বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে ফরিদপুর শহর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সদস্যরা।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তৎকালীন এমপির ছত্রছায়ায় নানা অপকর্মে জড়িত ছিল সিকদার লিটন। তার বিরুদ্ধে ঢাকায় ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে একাধিক হত্যা, হত্যাচেষ্টা মামলা রয়েছে। এছাড়া শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় ভাঙচুর ও নাশকতার অভিযোগে করা বিস্ফোরক ও নাশকতার মামলার এজাহারনামীয় আসামি সে।
২০২০ সালে একাধিক মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকা সিকদার লিটনকে ভাঙ্গা থেকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। দীর্ঘদিন কারাগারে থাকার পর জামিনে বেরিয়ে আবারও প্রতারণামূলক মিথ্যা মামলা বাণিজ্য শুরু করে সিকদার লিটন। সমাজের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী, চাকরিজীবীসহ অনেকের নামে মিথ্যা মামলা দেয় সে।

এর আগে চলতি বছরের ৫ মে ঢাকার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মামলায় ফরিদপুর থেকে ডিবি পুলিশ সিকদার লিটনকে গ্রেপ্তার করে।
সিকদার লিটন সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে নানা ধরনের প্রতারণা করে আসছিল। মামলা বাণিজ্যে পারদর্শী লিটনের বিরুদ্ধে মামলার ভয় দেখিয়ে অর্থ উপার্জনের অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তার বিকাশে তিন মাসে সাড়ে ২২ লাখ টাকা লেনদেনের তথ্য পেয়েছে।
পাঁচ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দিন কারাগারে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান জাবেদ নামে এক যুবক। নিহতের পরিবারের সঙ্গে লিটনের কোনো সম্পর্ক না থাকলেও খালাতো ভাই দাবি করে কেরানীগঞ্জ সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করে সিকদার লিটন।
এই মামলায় আসামি করার ভয় দেখিয়ে অনেকের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে সে। ঘটনা জানাজানি হলে নিহত জাবেদের ভাই মাইনুদ্দীন ঢাকার মোহাম্মদপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।

আরও যত অভিযোগ সিকদার লিটনের বিরুদ্ধে:

কারা হেফাজতে তথাকথিত নির্যাতনের শিকার এমন ভুয়া অভিযোগে পুলিশসহ বহু কারা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন করে সিকদার লিটন। এর আগে মামলায় নাম দেওয়ার ভয় দেখিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে অর্থ আদায় ছিল তার প্রধান উদ্দেশ্য। মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়াও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ একাধিক মন্ত্রী, নেতার পাশাপাশি কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার এবং ঢালাওভাবে কারারক্ষীদের আসামী করে।

২০২৪ সালের অক্টোবরে সিকদার লিটন চাঁদাবাজি মামলা করে ফরিদপুরের ডাচ বাংলা ব্যাংকের কর্মকর্তা জামাল আবু নাসের ও আব্দুল আজিজের নামে। এটিও মূলত পাতানো সাজানো মামলা। একইভাবে আরেকটি চাঁদবাজির ভুয়া অভিযোগে ফরিদপুরের আদালতে মামলার আবেদন করেছে এই প্রতারক, যেখানে ফরিদপুর-১ নির্বাচনী এলাকার পরস্পরবিরোধী একাধিক নেতার নাম দিয়েছে।

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার চরডাঙ্গা গ্রামের সিদ্দিক সিকদারের ছেলে সিকদার লিটন স্থানীয় লোকজনের কাছে প্রতারক ও ছদ্মবেশী অপরাধী হিসেবে পরিচিত।
দুর্নীতি দমন কমিশনের— দুদক চার্জশিটভুক্ত মামলার আসামি সিকদার লিটন। পাবনায় একজন ব্যবসায়ীর করা প্রতারণার মামলায় ‘অর্থ হাতিয়ে’ নেওয়ার প্রমাণ পেয়েছে সংস্থাটি।

দুদক বলছে, বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম, দালালি, প্রতারণা এবং মানুষকে ঠকিয়ে টাকা নেয়াই ছিল লিটনের মূল কাজ। এভাবে অনেকের সঙ্গেই তিনি প্রতারণা করেছেন। বর্তমানে দুদকের মামলাটি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।

এমন কোনো অপরাধ নেই, যার সঙ্গে জড়িত নয় সিকদার লিটন। নিজের শ্বশুর জাপান মুন্সির নামেও পাঁচটি মামলা করেছিলো সে। কিছু অসৎ রাজনৈতিক নেতাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে লিটন একের পর এক অপরাধ কর্মকাণ্ড নির্বিঘ্নে চালিয়েছে। সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরে চাকরি দেওয়ার নাম করেও হাতিয়েছে লাখ লাখ টাকা।

জুলাই গণহত্যা মামলা: শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রথম সাক্ষ্যগ্রহণ আজ

ডেস্ক রিপোর্ট:
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার জুলাই গণহত্যা মামলার সূচনা বক্তব্য এবং প্রথম সাক্ষ্যগ্রহণ আজ রোববার (৩ আগস্ট)। আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে তা সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।
গতকাল শনিবার (২ আগস্ট) ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম এ তথ্য তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, প্রথমদিন ট্রাইব্যুনালে জুলাই আন্দোলনের আহতরা সাক্ষ্য দেবেন।
এর আগে, গত ১০ জুলাই জুলাই-আগস্টের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিচার শুরুর আদেশ দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। মামলা থেকে আসামিদের অব্যাহতির আবেদন খারিজ করে বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই আদেশ দেন।
এই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল পলাতক রয়েছেন। অন্যদিকে, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন অপরাধ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হয়েছেন।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম
ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা প্রধানকে কেন বরখাস্ত করলেন নেতানিয়াহু কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন বুয়েট শিক্ষার্থী শ্রীশান্ত রায়কে ওসাকা এক্সপো–২০২৫: কৃত্রিম দ্বীপে এ যেন এক টুকরা ফিলিস্তিন জেনেভা ক্যাম্পের মাদক সম্রাট বশির মোল্লার হাতে নাশকতার নীলনকশা বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার নয়, সরকারের নিরপেক্ষ ভূমিকা চেয়েছে: আসিফ নজরুল রাজধানীতে পৃথক ঘটনায় দুই যুবকের মরদেহ উদ্ধার শিশুকে বাসায় নিয়ে ধর্ষণ, ট্রাফিক কনস্টেবল কারাগারে আবহাওয়া অফিস বৃষ্টি নিয়ে যে বার্তা দিলো মায়ের বিয়ের বেনারসি শাড়িতে জয়া আহসান পিআর পদ্ধতি ছাড়া জামায়াত ৪-৫টা আসনও পাবে না: আবু হেনা রাজ্জাকী