ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা প্রধানকে কেন বরখাস্ত করলেন নেতানিয়াহু

ডেস্ক রির্পোট:

ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জাচি হানেগবিকে বরখাস্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। গতকাল মঙ্গলবার হানেগবি নিজেই এক বিবৃতিতে এমন কথা জানিয়েছেন। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বলা হয়েছে, পরিষদের উপপ্রধান গিল রিচকে জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের (এনএসসি) ভারপ্রাপ্ত প্রধান হিসেবে নিযুক্ত করা হবে।

গতকাল সন্ধ্যায় হানেগবি এক বিবৃতিতে বলেন, প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু আজ (মঙ্গলবার) আমাকে বলেছেন, তিনি জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদে নতুন করে কাউকে প্রধান হিসেবে নিয়োগের পরিকল্পনা করছেন। এই প্রেক্ষাপটে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের প্রধান হিসেবে আমার মেয়াদ আজ শেষ হলো।

এর কিছুক্ষণ পরই নেতানিয়াহুর কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, নেতানিয়াহু জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের উপপ্রধান গিল রিচকে পরিষদের ভারপ্রাপ্ত প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেবেন।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গত তিন বছর ধরে জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের প্রধান হিসেবে সেবা দেওয়ার জন্য জাচি হানেগবিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি তাঁর ভবিষ্যতের সাফল্য ও সুস্বাস্থ্য কামনা করেছেন।

গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলাকে কেন্দ্র করে অনেক দিন ধরেই হানেগবি ও নেতানিয়াহুর মধ্যে বিরোধ চলছিল। এ দ্বন্দ্বের কারণে হানেগবির জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের প্রধান হিসেবে সরে যাওয়াটা প্রত্যাশিতই ছিল।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, গাজা নগরীকে সম্পূর্ণভাবে সামরিক দখলের বিরোধিতা ও হামাসের সঙ্গে আংশিক চুক্তিকে সমর্থন দিয়ে আসছিলেন হানেগবি। এ নিয়ে নেতানিয়াহুর সঙ্গে তাঁর দ্বন্দ্ব তৈরি হয়।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাস হামলা চালিয়েছিল। হানেগবি তাঁর বিবৃতিতে ওই হামলা ঠেকাতে ব্যর্থতার কারণ জানার জন্য পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। এ ঘটনায় তিনি নিজের ব্যর্থতার দায়ও স্বীকার করেছেন।

নেতানিয়াহু সরকার এখনো এই ঘটনার তদন্তে কোনো কমিশন গঠন করেনি। ইসরায়েলের বিরোধী দলের অভিযোগ, তিনি এই প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করছেন।

জাচি হানেগবিকে বরখাস্ত করার সমালোচনা করেছেন ইসরায়েলের সাবেক সেনাপ্রধান ও বিরোধী নেতা গাদি আইজেনকোট।

প্রভাশালী লিকুদ নেতা ও নেতানিয়াহুর দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র হানেগবি ২০২৩ সালে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পান। তিনি জননিরাপত্তা, গোয়েন্দা ও আঞ্চলিক সহযোগিতাবিষয়ক মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন।

বাংলাদেশ-পাকিস্তান জেইসি বৈঠক হচ্ছে

কূটনৈতিক প্রতিবেদক॥

বিশ বছর পর যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের (জেইসি) নবম বৈঠকে বসতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। আগামী ২৭ অক্টোবর ঢাকায় বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ উদ্দেশ্যে ঢাকা আসছেন পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী আহাদ খান চিমা।

আসন্ন জেইসি বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। আর পাকিস্তান প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন দেশটির অর্থনৈতিক বিষয়কমন্ত্রী আহাদ খান চিমা। বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় অর্থনৈতিক সহযোগিতার বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করবে দুই দেশ। আহাদ খান চিমার ঢাকা সফরের সময় জেইসি বৈঠকে অংশ নেওয়া ছাড়াও একাধিক বৈঠকের কথা রয়েছে। সফরকালে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে পারেন। দুই দেশের যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের সবশেষ বৈঠকটি ২০০৫ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

সূত্রে জানা গেছে, জেইসির বৈঠকে পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী যখন ঢাকায় থাকবেন, কাছাকাছি সময়ে ইসলামাবাদ সফরের কথা রয়েছে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের। পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী জাম কামাল খানের আমন্ত্রণে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক সহযোগিতা নিয়ে আলোচনার জন্য শেখ বশিরউদ্দীনের ওই সফরের কথা রয়েছে।
গত বছরের আগস্টে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর সম্পর্ক স্বাভাবিক করার অংশ হিসেবে ব্যবসা-বাণিজ্যের নানা ইস্যু নিয়ে উদ্যোগ আর আলোচনা হচ্ছে। তাই এবারের জেইসি বৈঠকে দুই দেশ সরাসরি অর্থনীতির সঙ্গে যুক্ত সহযোগিতার বিষয় নিয়ে আলোচনা করার বিষয়টি ঠিক করেছে। সে ক্ষেত্রে ব্যবসা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানো, কৃষিতে সহায়তা, আর্থিক সেবা খাত, ব্যাংকিংসহ সংশ্লিষ্ট খাতে কীভাবে সামনের দিনে সহায়তা এগিয়ে নেওয়া যায়, তাতে গুরুত্ব দেওয়া হবে।

এক কর্মকর্তা জানান, বৈঠকে বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি পরিমাণে শুল্ক ও কোটামুক্তভাবে চা, পাটজাত পণ্য, মেডিসিন, তৈরি পোশাক, ইলেকট্রনিকস সামগ্রী আমদানির জন্য পাকিস্তানকে অনুরোধ করা হবে।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর আহাদ খান চিমার সফরটি হবে বাংলাদেশে পাকিস্তানি মন্ত্রী পর্যায়ের চতুর্থ সফর। সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার প্রথম ধাপ হিসেবে গত এপ্রিলে পররাষ্ট্র সচিবদের বৈঠকে অংশ নিতে ঢাকায় এসেছিলেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ। এরপর ঢাকা আসেন বাণিজ্যমন্ত্রী জাম কামাল খান এবং উপপ্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম