জেনেভা ক্যাম্পের মাদক সম্রাট বশির মোল্লার হাতে নাশকতার নীলনকশা

জেনেভা ক্যাম্পের মাদক সম্রাট বশির মোল্লার হাতে নাশকতার নীলনকশা

মোঃ মহিব্বুল্লাহঃ

রাজধানী ঢাকা আবারও নাশকতার আতঙ্কে। মোহাম্মদপুর, তেজগাঁও, শেরেবাংলা নগর, মানিক মিয়া এভিনিউসহ ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগের মিছিলে জনবল সরবরাহের অভিযোগ উঠেছে কুখ্যাত বশির মোল্লা ওরফে ওয়াশি আলম বশিরের বিরুদ্ধে।

 

সূত্র জানায়, বশির মোল্লা দীর্ঘদিন ধরে জেনেভা ক্যাম্প ও আশপাশের বিহারি ক্যাম্পগুলো থেকে জনবল ভাড়া করে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন মিছিল ও আন্দোলনে অংশগ্রহণ করিয়ে আসছে। ঢাকা-১৩ আসনের সাবেক এমপি জাহাঙ্গীর কবির নানকের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় বশিরের রয়েছে আওয়ামী লীগের বহু প্রভাবশালী নেতার সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ।

 

 নাশকতার ছক সিন্ডিকেট কার্যক্রম:

নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশনা ও অর্থ সহায়তায় মোল্লা বশির বর্তমানে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় গোপনে সক্রিয়। দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত প্রলোভন দেখিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। গভীর রাত বা ভোরবেলা মিছিল সাজিয়ে কয়েক সেকেন্ডের ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।

 

মিছিলের সময় অংশগ্রহণকারীদের অধিকাংশই মুখে মাস্ক ব্যবহার করে। কেউ আটক বা আহত হলে, তার পরিবারের দায়িত্ব নেয় বশিরের সিন্ডিকেট। এ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য রয়েছে তার নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী, যার প্রধান ঘাঁটি মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে।

 

 ২৪ এর জুলাই আগস্টের নারকীয় হামলা:

গত ৫ আগস্ট মানিক মিয়া এভিনিউ, ধানমন্ডি ২৭ ও মোহাম্মদপুর এলাকায় বশির মোল্লা ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী সাবেক এমপি নানকের পিএস বিপ্লব, সাবেক কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজিব, আসিফ আহমেদ ও হাসান নূর ইসলাম রাষ্টনের সঙ্গে যোগসাজশে ছাত্র-জনতার উপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে।  গুলিতে অনেকে ঘটনাস্থলেই মারা যান এবং অনেক আহত ব্যক্তি পরবর্তীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ঢাকার সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি ঘটে মোহাম্মদপুর এলাকায়। সরকার পতনের পর নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে মোহাম্মদপুর থানায় একাধিক হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। এর মধ্যে অন্তত ছয় থেকে সাতটি মামলায় বশির মোল্লার নাম আসামি হিসেবে উল্লেখ রয়েছে, তবে সে এখনো আইনের বাইরে।

 

 জেনেভা ক্যাম্পে বশিরের আস্তানা:

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেনেভা ক্যাম্পের ৫নং সেক্টরে বশির মোল্লা তার নিজস্ব ঘাঁটি স্থাপন করেছে। সেখান থেকেই সে নাশকতা ও মিছিলের জন্য লোকবলের সমন্বয় করে। ক্যাম্পের ভেতরে তার ৪-৫টি ঘর ও সশস্ত্র বাহিনী রয়েছে, যেখানে তার অনুমতি ছাড়া কেউ প্রবেশ করতে পারে না। অভিযোগ রয়েছে, জেনেভা ক্যাম্পের মাদক ব্যবসায়ীদের হাতে থাকা ৪-৫টি অস্ত্র বশির মোল্লার মাধ্যমেই সরবরাহ করা হয়েছে।

 

 অস্ত্র সরবরাহ আত্মগোপন:

স্থানীয়দের দাবি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় তৎকালীন এমপি নানক ও কাউন্সিলর রাষ্টন মোল্লা বশিরকে অস্ত্র সরবরাহ করেছিলেন। এসব অস্ত্র ছাত্র ও নিরীহ জনতার উপর হামলায় ব্যবহার হয়। সরকার পতনের পর বশির মোল্লা ওই অস্ত্রগুলোর কিছু বিক্রি করে আত্মগোপনে চলে যায়। পরে পুনরায় জেনেভা ক্যাম্পে ফিরে এসে নিজেকে “বিহারি নেতার” পরিচয়ে প্রতিষ্ঠিত করে এবং নতুনভাবে সিন্ডিকেট চালু করে।

 

 বশির মোল্লার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলাসমূহ:

* মামলা নং ৫৫৭/২০২৪ – বাদী মোহাম্মদ নাজমুল হোসেন। ধারা: ৩০২/১০৯/৩৪ দণ্ডবিধি।

তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আব্দুল কাদের বলেন, “আসামি বশির মোল্লাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, তবে তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

* মামলা নং ২৪/২০২৪ – বাদী আকলিমা বেগম। ধারা: ৩০২/১০৯/১১৪/৩৪। মামলাটি বর্তমানে ডিবিতে তদন্তাধীন। তদন্ত কর্মকর্তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

* মামলা নং ১৪/২০২৪ – বাদী মো. রফিকুল ইসলাম। ধারা: ৩০২/১০৯/১১৪/৩৪। তদন্ত কর্মকর্তা জানান, “তদন্ত চলমান রয়েছে, টিমের সঙ্গে সমন্বয় শেষে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।”

* সি.আর মামলা নং ৫২১/২০২৪ – বাদী মো. মিলন ফরাজি। ধারা: ৩০২/১০৯/৩৪। মামলাটি পিবিআই তদন্ত চলমান রয়েছে।

 

 প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন:

একাধিক হত্যা ও নাশকতা মামলায় আসামি থাকা সত্ত্বেও বশির মোল্লা এখনো গ্রেফতার হয়নি। স্থানীয়দের অভিযোগ—প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তার সহযোগিতা এবং মাদক ব্যবসায়ীদের অর্থবলেই বশির এখনো আইনের বাইরে থেকে মাদক ও নাশকতার সিন্ডিকেট চালিয়ে যাচ্ছে।

 

জনমনে প্রশ্ন উঠেছে এত মামলা, এত অভিযোগের পরও বশির মোল্লা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে কেন?

রাজশাহীতে জুতা দেখে উদ্ধার হলো শিশুর লাশ

স্টাফ রিপোর্টারঃ

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় পানিতে জুতা ভাসতে দেখে জাল ফেলে নিখোঁজ এক শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যার পর উপজেলার মাড়িয়া ইউনিয়নের যাত্রাগাছি গ্রামের এক ডোবা থেকে লাশটি উদ্ধার করেন স্থানীয় লোকজন।
শিশুটির নাম ইমন হোসেন (৭)। সে যাত্রাগাছি গ্রামের কৃষক আমজাদ হোসেনের ছেলে। তিন ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট ছিল ইমন। তার মৃত্যুতে পরিবারে শোক নেমে এসেছে।

শিশু ইমনের স্বজনেরা বলেন, প্রতিদিনের মতো গতকাল বিকেলে ইমন পাড়ার অন্য শিশুদের সঙ্গে বাড়ির পাশে খেলছিল। বিকেল পাঁচটার দিকে ইমনকে অন্যদের সঙ্গে দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। আশপাশের বাড়িতে খোঁজ করা হয় তার। তবে সন্ধান না পাওয়ায় আশপাশের পুকুর ও ডোবাতে খোঁজ করা শুরু হয়। একপর্যায়ে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে বাড়ির পাশের একটি ডোবাতে শিশুর একটা জুতা ভাসতে দেখেন খুঁজতে যাওয়া লোকজন। পরে ডোবায় নেমে খোঁজ করা হয়। পাওয়া না গেলে সেখানে জাল ফেলা হয়, পাশাপাশি স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সকে জানানো হয়। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই স্থানীয়দের ফেলা জালে শিশুটি উঠে আসে। পরে অচেতন অবস্থায় ইমনকে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নেওয়া হলে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

শিশু ইমনের বাবা আমজাদ হোসেন বলেন, ডোবাটি গভীর। খেলার ফাঁকে হয়তো ডোবায় জুতা পড়ে যায়। সেটা তুলতে গিয়ে সম্ভবত ডুবে মারা যায় ইমন। ছেলেকে এবার স্থানীয় মাদ্রাসায় ভর্তির চিন্তাভাবনা করেছিলেন তিনি। তা আর হলো না।

বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম বলেন, পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু হয়েছে। পরিবার থেকে কোনো আপত্তি বা অভিযোগ নেই।

সবা:স:জু- ৬৩৩/২৫

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম