বিআইডব্লিউটিএ প্রশাসনের কান্ড: জাল দরখাস্তের ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি গঠন!

বিশেষ প্রতিবেদকঃ
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ ( বিআইডব্লিউটিএ) প্রশাসনে এসব হচ্ছে কি? এ প্রশ্ন আজ দেশের প্রতিটি সচেতন নাগরিকের। রাষ্ট্রিয় কোষাগার থেকে মোটা অংকের বেতন ভাতা দিয়ে যে সব কর্মকর্তাদের ভোগ বিলাসী জীবন যাপনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে তারা কি দায়িত্ব পালন করছেন? তাদের কর্মকান্ডের জবাবদিহিতা নেবার কি কেউ নেই? বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যানই বা করেন কি? এই প্রশ্নটির উদ্ভব হয়েছে একজন কর্মচারির বিরুদ্ধে গঠিত ৩ সদস্যের একটি বিভাগীয় তদন্ত কমিটিকে কেন্দ্র করে। দরখাস্তকারীর পরিচয় নিশ্চিত না করেই একটি সরকারী তদন্ত কমিটি গঠন করে সরকারী অর্থ ও শ্রমের অপচয় করার কি কোন অর্থ হয়? হতে পারে না। সরকারী চাকুরী শৃংক্ষলা বিধিমালায় এমন কোন নিয়মও নেই। তাহলে বিআইডব্লিউটিএ প্রশাসন কিভাবে সেই কাজটি করলেন? নাকি একজন নিরীহ কর্মচারিকে চাকুরীচ্যুত করতে কর্মকর্তাদেরই একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র? আলোচ্য ঘটনাটি তেমন বলেই মনে হচ্ছে।
অনুসন্ধানে জানাগেছে, বিআইডব্লিউটিএর প্রশাসন ও মানব সম্পদ বিভাগ থেকে গত ০৯/০৩/২০২৩ ইং তারিখে ১৮.১১.০০০০.০০৮.৯৯.০০৪.২১.২০৩ নং স্মারকে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তের বিষয়বস্তু হলো: সংস্থার সাময়িক বরখাস্তে থাকা রেকর্ড কীপার সঞ্জীব কুমার দাস, শীপ পার্সোনাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট,চরমুগুরিয়া,বিআইডব্লিউটিএ মাদারীপুর এ ঠিকমত অফিসে উপস্থিত থাকেন কিনা এবং তিনি ব্ল্যকমেইল, চাঁদাবাজী. তদবীর বাণিজ্য,প্রতারণা ইত্যাদি অপরাধ কর্মকান্ডের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ সম্পদের মালিক হয়েছেন কি না? এ ছাড়া তিনি ঢাকায় থেকে অন্য লোকের মাধ্যমে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে বেতন ভাতা নেন কিনা? এ বিষয়ে সরেজমিনে তদন্ত করে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে সুনির্দিষ্ট মতামতসহ তদন্ত প্রতিবেদন সংস্থার চেয়ারম্যানের দপ্তরে জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
অভিযোগকারী বা দরখাস্তকারী হিসাবে জনৈক মো: আবুল হোসেন মোরাইল নং ০১৭১২-১২ ৪৫ ৯০ উল্লেখ করা হয়। বিষয়টি সাংবাদিকদের নজরে আনলে এ বিষয়ে সর্ব প্রথম অভিযোগটি কে করেছেন তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য দরখাস্তে থাকা অভিযোগের মোবাইল নম্বরে এ প্রতিবেদক কল দিলে তিনি কল রিসিভ করেন। তার পরিচয় জানতে চাইলে তিনি বলেন তার নাম মরফত আলী ,তিনি আনসার বাহিনীর একজন সদস্য। বর্তমানে তিনি সাভারে ডিউটিরত আছেন। তিনি আরো বলেন,বিআইডব্লিউটিএর কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারির বিরুদ্ধে তিনি সরকারের কোন দপ্তরে কোন প্রকার লিখিত অভিযোগ জমা দেন নি। তার অডিও রেকর্ডটি আমাদের সংগ্রহে রয়েছে।
এখন প্রশ্ন হলো: অভিযোগকাররী দরখাস্তে মোবাইল নম্বর উল্লেখ থাকার পরও তার পরিচয় নিশ্চিত না হয়ে এবং দরখাস্তের কোন প্রকার ভিত্তি আছে কি না সেটা যাচাই না করে কিভাবে একজন কর্মচারির বিরুদ্ধে চেয়ারম্যানের কাছে ফাইল উপস্থাপন,নোট প্রদান ও তদন্ত কমিটি গঠন করা হলো? তাহলে কি এভাবেই দায়িত্ব পালন করছেন বিআইডব্লিউটিএর প্রশাসন বিভাগের কর্মকর্তারা? এই জাল দরখাস্তের ওপর ভিত্তি করে যে কর্মচারির বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা চলছে তাদের বিচার করবে কে?
ঘটনাপ্রবাহে মনে হচ্ছে এ ঘটনার নেপথ্যে কর্মবর্তাদের গভীর এক ষড়যন্ত্র রয়েছে। যে কর্মচারীর বিরুদ্ধে জাল দরখাস্তের ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে তিনি একজন সাধারণ কর্মচারী নন। তিনি বিআইডব্লিউটিএ সিবিএ রেজি: নং ১৪৪০ এর নির্বাচিত সাংগঠনিক সম্পাদক। দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও সিবিএ নেতাদের বিরুদ্ধে সব সময়ই তিনি সোচ্চার ছিলেন। আর সে কারণেই তার বিরুদ্ধে একটার পর একটা ষড়যন্ত্র করে চাকুরী থেকে সাময়িক বরখাস্ত,ঢাকা থেকে মাদারীপুরে বদলী,মিথ্যা ধর্ষণ মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সর্বশেষ তার চাকুরী খেয়ে ফেলার জন্য জাল অভিযোগে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আর এসব ষড়যন্ত্রে নেপথ্যে আছেন বিআইডব্লিটিএর কয়েকজন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও কর্মচারী।
এ বিষয়ে মোবাইল ফোনে কথা বললে মাদারীপুর থেকে সঞ্জীব কুমার দাস বলেন, ‘বিআইডব্লিটিএ সিবিএর তিনি একজন নির্বাচিত নেতা। আমি বিআইডব্লিউটিএর কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও সিবিএ নেতাদের আক্রোশের শিকার হয়েছি। তারা নানা মিথ্যা অভিযোগ দাঁড় করিয়ে আমার চাকুরী খেয়ে ফেলার চেষ্টা চালাচ্ছেন। আপনারা তদন্ত করে প্রকৃত সত্য তুলে ধরলে আমি কৃতজ্ঞ থাকব। একই সাথে মাননীয় চেয়ারম্যান স্যারের কাছে আমার আকুল আবেদন,তিনি যেন এই ঘটনার সঠিক বিচার করেন। আমি যে তার সুবিচার পাই’।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য বিআইডব্লিউটিএর প্রশাসন ও মানব সম্পদ বিভাগের পরিচালক কাজী ওয়াকিল নওয়াজকে ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসেভ করেন নি।

খালাস পেলেন জামায়াত নেতা আজহারুল

স্টাফ রিপোর্টার:

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস দিয়েছেন আপিল বিভাগ। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মৃত্যুদণ্ডের রায় বাতিল করে সর্বোচ্চ আদালত এ রায় দেন।

মঙ্গলবার (২৭ মে) সকালে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৭ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।

বাংলাদেশের বিচার বিভাগের ইতিহাসে এই প্রথম মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি আপিল বিভাগের রায়ে খালাস পেলেন। এই রায়ের ফলে জামায়াত নেতা আজহারুল ইসলামের মুক্তিতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

আদালতে জামায়াত নেতা আজহারের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির, ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিক, ব্যারিস্টার ইমরান আবদুল্লাহ সিদ্দিক, ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন।

জামায়াত নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দলটির নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের, জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাসুম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জোবায়ের, অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন হেলাল, নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসেন, মাওলানা আব্দুল হালিম, অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান, জামায়াতের ঢাকা উত্তরের আমির সেলিম উদ্দিন, মাসুদ সাঈদী, জামায়াতের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নায়েবে আমির ড. হেলাল উদ্দিন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ।

এর আগে গত ৮ মে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানি শেষ হয়। এ বিষয়ে রায় ঘোষণার জন্য আগামী ২৭ মে দিন ধার্য করেন আপিল বিভাগ।

২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। তখনকার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ রায় দেন। পরে এই রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন করেন জামায়াত নেতা আজহারুল ইসলাম।

২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আজহারকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রংপুর অঞ্চলে ১২৫৬ ব্যক্তিকে গণহত্যা-হত্যা, ১৭ জনকে অপহরণ, একজনকে ধর্ষণ, ১৩ জনকে আটক, নির্যাতন ও গুরুতর জখম এবং শতশত বাড়ি-ঘরে লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগের মতো নয় ধরনের ছয়টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয় এটিএম আজহারের বিরুদ্ধে। এসব অভিযোগের মধ্যে ১ নম্বর বাদে বাকি পাঁচটি অভিযোগে তাকে ট্রাইব্যুনাল মৃত্যুদণ্ড দেন। যদিও এটি প্রহসনের রায় বলে আখ্যায়িত করে আসছে জামায়াতে ইসলামী।

২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি ১১৩ যুক্তিতে জামায়াত নেতা আজহারকে নির্দোষ দাবি করে খালাস চেয়ে আপিল করেন তার আইনজীবীরা। আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় ৯০ পৃষ্ঠার মূল আপিলসহ ২৩৪০ পৃষ্ঠার আপিল দাখিল করা হয়।

 

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম
জানানো যাচ্ছে অভিযোগ, থানায় বসলেই ভিডিওকলে হাজির এসপি প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে কার্গো ভিলেজের অগ্নিকাণ্ডে অত্যন্ত হতাশাজনক : মির্জা ফখরুল রাজনৈতিক দের মাঝে যে অনৈক্য কুমিরের দেখা মিলল রাজশাহীর পদ্মায় সরকার ও সেনাবাহিনী, গণতন্ত্রে উত্তরণ ও ন্যায়বিচার যেন ব্যাহত না হয় আজ থেকে আমরণ অনশন, প্রত্যাখ্যান শিক্ষকদের শিক্ষার্থীরা রোডম্যাপের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিলেন শাকসু নির্বাচনের জুলাই সনদে স্বাক্ষর করল গণফোরাম অন্যদেরও সই করার আহ্বান কমিশনের সূচক সাড়ে ৩ মাস আগের অবস্থানে লেনদেন ৪ মাসে সর্বনিম্ন আওয়ামীলীগ ফিরলে হাসিনার পা ধরেও মাফ পাবেন না: রাশেদ খান