জীবন নিয়ে উদ্বিগ্ন নই আমরা-ছাত্রদল

হাফসা আক্তার॥

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, তারা জীবন নিয়ে উদ্বিগ্ন নন, উদ্বিগ্ন রাষ্ট্র নিয়ে। হাজারো শিক্ষার্থীর জীবন নিয়ে।ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান বলেন, গণতন্ত্রের পক্ষে, গণমানুষের ভোটাধিকার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠায়, সাম্য-মানবিক মর্যাদা- সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠার এই লড়াই যত বেগবান হচ্ছে, শহিদ, গ্রেফতার, আহত ও পঙ্গুত্বের সংখ্যা, গুমের সংখ্যা তত বেশি দীর্ঘতর হচ্ছে। অস্ত্র উদ্ধারের মতো দুর্বল স্ক্রিপ্টের নাটকের সংখ্যাও দীর্ঘতর হচ্ছে। কিন্তু আমরা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, অবৈধ ক্ষমতার দখলদারদের এ ধরনের নিপীড়ন-নির্যাতন, মোসাহেবদের হুমকি-ধমকি, নানান কল্পকাহিনি সাজানোতে আমরা ন্যূনতমও বিচলিত নই। গণতন্ত্রের পক্ষে যে রক্তস্নাত পথচলা, সেই পথচলা কোনো কিছুতেই থামবে না, থামানো যাবে না। আমাদের সহযোদ্ধাদের প্রতিবিন্দু রক্ত, প্রতি ফোঁটা চোখের জল আমাদের কাছে অত্যন্ত মূল্যবান। যারা আজকে ক্ষমতার মোহে অন্ধ হয়ে, মোসাহেবির নেশায় বুঁদ হয়ে, ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাদের মতো বক্তব্য দিয়ে নিজেদের ফ্যাসিবাদের বড় দোসর প্রমাণের প্রতিযোগিতা করছেন, তারা কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নন। দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার পর, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার পর আপনাদের অবশ্যই এসব অপকর্মের জবাবদিহি করতে হবে।
তিনি বলেন, বিজয় আমাদের অনিবার্য। রক্তস্নাত পথ পেরিয়ে সেই অবশ্যম্ভাবী বিজয় অচিরেই অর্জিত হবে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েলসহ আরও উপস্থিত ছিলেন সহসভাপতি তানজিল হাসান, সিরাজুল ইসলাম, তবিবুর রহমান সাগর, রিয়াদ ইকবাল, নিজামউদ্দিন রিপন, মহিবুবব মিয়া, আক্তারুজ্জামান আক্তার, নাসির উদ্দিন নাসির, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিব, যুগ্ম সম্পাদক মারজুক আহমেদ আলামিন, মাকসুদুর রহমান সুমিত, মিলন হাওলাদার, সালেহ মো. আদনান, মঞ্জুর রিয়াদ, ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদক মানসুরা আলম, সহ-কর্মসূচি প্রণয়ন ও পরিকল্পা সম্পাদক তাইফুর রহমান ফুয়াদ প্রমুখ।

ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সম্প্রতি বিএনপি সহিংসতার জন্য অস্ত্র সংগ্রহ করছে বলে বক্তব্য দিয়েছেন। আর এই বক্তব্যের পরই তার বক্তব্যের সত্যতা প্রমাণে মাঠে নেমে পড়েছে কিছু অতিউৎসাহী গোয়েন্দা কর্মকর্তা। তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মমিনুল ইসলাম জিসানকে গ্রেফতার করে। এর পর হাসপাতালে রোগী দেখা শেষে বের হওয়ার পথে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সহসভাপতি আবুল হাছান চৌধুরীকেও তুলে নিয়ে যায় ডিবি পুলিশের সদস্যরা। জিসানকে খুঁজতে তার বাসায় গেলে সহসাধারণ কেন্দ্রীয় সংসদের সহসাংগঠনিক সম্পাদক শাহাদাত হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহসভাপতি হাসানুর রহমান, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আর রিয়াদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দিন বাবর ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা আরিফ বিল্লাহকে গ্রেফতার করা হয়। বেআইনিভাবে দীর্ঘ সময় আটক রাখার পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো সরব হয়ে উঠলে একপর্যায়ে অস্ত্রসহ গ্রেফতারের নাটক সাজিয়ে তাদেরকে গণমাধ্যমের সামনে উপস্থাপন করা হয়। হেফাজতে থাকার সময়ে ছাত্রনেতাদের ওপর বর্বর নির্যাতন করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছাত্রনেতা জিসানের শরীরের জমাট বাঁধা কালচে রক্তের ছাপগুলোই যেন আজকের বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি।

কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র নদে ২১ বছর পর ডাকাতি

স্টাফ রিপোর্টার:

কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র নদে দীর্ঘ ২১ বছর পর ডাকাতির ঘটনা ঘটল। শনিবার সকালে চিলমারী- রৌমারী উপজেলায় নদের মাঝপথে দুইশ বিঘা নামক স্থানে এই ঘটনা ঘটে।

এদিন সকাল সাড়ে আট টার দিকে ১৮ জন যাত্রী নিয়ে রৌমারী থেকে রওনা দেয় একটি নৌকা। দুইশ বিঘা নামক নির্জন স্থানে পৌঁছালে নৌকায় ডাকাতরা হানা দেয়। এসময় যাত্রীদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন ও নগদ অর্থসহ প্রায় তিন লাখ টাকার মালামাল নিয়ে যায় যাকাতরা।

জানা যায়, কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ধরলা সেতুর পূর্বপাড়ে ফজলুল করীম (রহ.) জামিয়া ইসলামিয়া মাদরাসা প্রাঙ্গণে ৩ দিনব্যাপী ইজতেমার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সেই উপলক্ষে রৌমারীর চরমোনাই অনুসারীরা ইজতেমার উদ্দেশে রওয়ানা দেন।

দুইশ বিঘায় পৌঁছালে প্রায় ২০ থেকে ২২ জন মুখোশধারী ডাকাতদল নৌকায় অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় তারা নৌকার যাত্রীদের মারধর করে মোবাইল ফোনগুলো নিয়ে পানিতে ফেলে দেয়। পরে সবার কাছে থাকা নগদ টাকা ও দামি জিনিসপত্র নিয়ে চলে যায়।

এ ঘটনায় নৌকায় থাকা বেশিরভাগ যাত্রী মারধরের শিকার হয়ে অসুস্থ হয়। তবে নৌকাতে থাকা উপজেলার পুরারচর গ্রামের ময়েজ উদ্দিন নামের এক ব্যবসায়ী কাছে থাকা ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা নিয়ে যায় বলে জানা গেছে।

নৌকার মাঝি আবু তালেব বলেন, ‘আমরা রৌমারী থেকে ইজতেমার উদ্দেশে রওনা দেই। হঠাৎ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত ২২ জনের মতো ডাকাতের দল এসে আমাদের ভয়ভীতি দেখায় ও মারধর করে। ভয়ে যা বলছে তাই শুনতে বাধ্য হয়েছি। ২০০২-২০০৩ সালের পর প্রথম ডাকাতির ঘটনা ঘটল বলে জানান তিনি।

ব্যবসায়ী ময়েজ উদ্দিন জানান, একদল ডাকাত নৌকার কাছে এসে অতর্কিত হামলা চালায়। বলে যার কাছে যা আছে দিয়ে দাও ঝামেলা করলে নদীতে ফেলে দেব। পরে আমার কাছে থাকা এক লাখ ৮০হাজার টাকা ও মোবাইল ফোন জীবনের ভয়ে দিয়ে দেই।

রৌমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লুৎফর রহমান জানান, ‘ডাকাতির ঘটনা শুনেছি। তবে ঘটনাটি আমার এরিয়ার মধ্যে নয়। তাই কিছু করা সম্ভব হয়নি।’

সবা:স:জু- ৪৭৬/২৪

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম