হাটহাজারীতে ইউপি চেয়ারম্যানের সাময়িক বরখাস্ত আদেশ প্রত্যাহার

পারভেজ মাহমুদ হাটহাজারী ঃ
চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নুরুল আবছার এর সাময়িক বরখাস্ত আদেশ প্রত্যাহার করেন স্থানীয় সরকার বিভাগ।

১৪ই অক্টোবর, বৃহস্পতিবার দুপুরে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, ইউপি-১ শাখা কর্তৃক স্মারক নং ৪৬.০১৭.০২৭.০০.০০.০১৮.২০১৪.৮৪৫ মূলে মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের ‘চেয়ারম্যান’ সাময়িক বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করেন। স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সচিব মো. আবু জাফর রিপন পিএএ এর স্বাক্ষরিত এই প্রজ্ঞাপনে উল্লেখিত রয়েছে, চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ৩ নং মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নুরুল আবছার ভবিষ্যতে এ ধরণের কর্মকান্ড আর করবেনা মর্মে সতর্কীকরণ পূর্বক স্থানীয় সরকার বিভাগ হতে ১২ এপ্রিল ২০২০ইং তারিখের ৩৬২ নং স্মারকে জারীকৃত তাঁর সাময়িক বরখাস্ত সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন নির্দেশক্রমে এতদ্বারা প্রত্যাহার করা হলো।

উল্লেখ্য, করোনাকালীন সময়ে ত্রাণের চাল বিতরণে অনিয়ম এবং ইউপি সদস্যদের অনাস্থার প্রেক্ষিতে মির্জাপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. নুরুল আবছার কে গত ১২ই এপ্রিল ২০২০ সাময়িক বরখাস্ত করেছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগ। আজ এ আদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানা যায় ।

৫ আগস্ট হয়ে উঠুক মানবিক মানুষ হয়ে ওঠার অঙ্গীকারের দিন

৫ আগস্ট হয়ে উঠুক মানবিক মানুষ হয়ে ওঠার অঙ্গীকারের দিন

ডেস্ক রিপোর্ট:

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন আজ ও আগামীর প্রতিটি ৫ আগস্ট হয়ে উঠুক গণতন্ত্র সুশাসন প্রতিষ্ঠা আর মানবিক মানুষ হয়ে ওঠার অঙ্গীকারের দিন। এই অঙ্গীকার বাস্তবায়নের দেশের জনগণের সমর্থন ও সহযোগিতা আশা করেন তিনি। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সকালে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভিডিও বার্তায় তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন আজ ও আগামীর প্রতিটি ‘৫ আগস্ট’ হয়ে উঠুক গণতন্ত্র, সুশাসন প্রতিষ্ঠা আর মানবিক মানুষ হয়ে ওঠার অঙ্গীকারের দিন। এই সুমহান অঙ্গীকার বাস্তবায়নের দীর্ঘ যাত্রায় আমি ও আমার দল বিএনপি দেশের সব গণতন্ত্রকামী জনগণের সমর্থন এবং সহযোগিতা আশা করছি।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বাংলাদেশের ইতিহাসের ঘৃণ্যতম ফ্যাসিস্ট পালিয়ে যাওয়ার পরপরই বীর জনতার উদ্দেশে দেওয়া অভিনন্দন বার্তায় আমি বলেছিলাম, বিজয়ীর কাছে পরাজিতরা নিরাপদ থাকলে বিজয়ের আনন্দ মহিমান্বিত হয়। সেটি পুনরায় স্মরণ করিয়ে দিয়ে দেশের গণতন্ত্রকামী জনগণের প্রতি আমার আহ্বান, কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। মব ভায়োলেন্সকে উৎসাহিত করবেন না। নারীর প্রতি সহিংস আচরণ করবেন না। অন্যের স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকুন। মায়ের চোখে বাংলাদেশ যেমন আমরা তেমন একটি বাংলাদেশ গড়তে চাই, যেখানে দলমত ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বিশ্বাসী অবিশ্বাসী সংশয়বাদী প্রতিটি সন্তান, প্রতিটি মানুষ নিরাপদে থাকবে।

আজ ও আগামীর প্রতিটি ‘৫ আগস্ট’ হয়ে উঠুক গণতন্ত্র, সুশাসন প্রতিষ্ঠা আর মানবিক মানুষ হয়ে ওঠার অঙ্গীকারের দিন। এই সুমহান অঙ্গীকার বাস্তবায়নের দীর্ঘ যাত্রায় আমি ও আমার দল বিএনপি দেশের সব গণতন্ত্রকামী জনগণের সমর্থন এবং সহযোগিতা আশা করছি। বিএনপির এ নেতা বলেন, আজ থেকে ঠিক এক বছর আগে ২০২৪ সালের এই দিনে ফ্যাসিস্ট বাংলাদেশ ছেড়ে পালিয়েছে। রাহুমুক্ত হয়েছে দেশ। স্বাধীনতা প্রিয় গণতন্ত্র প্রিয় জনগণের জন্য দিনটি আনন্দের। দিনটি বিজয়ের। আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে তারেক রহমান বলেন, একুশ শতকের এই বাংলাদেশে পলাতক স্বৈরাচার এক বিভীষিকার রাজত্ব কায়েম করেছিল। গুম, খুন, অপহরণ, হামলা, মামলা, নির্যাতন নিপীড়নকে সাধারণ ও স্বাভাবিক ঘটনায় রূপান্তর করেছিল।

তিনি অভিযোগ করেন, গণতন্ত্রকামী মানুষের কণ্ঠ রুদ্ধ করতে পলাতক স্বৈরাচারের নির্দেশে দেশে শত শত গোপন বন্দিখানা ‘আয়নাঘর’ বানানো হয়েছিল। সেই আয়নাঘরের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে জলজ্যান্ত মানুষকে দিনের পর দিন, রাতের পর রাত, বছরের পর বছর আটকে রাখা হতো। অনেককে চিরতরে গায়েব করে দেওয়া হয়েছে। বিএনপির সাবেক এমপি ইলিয়াস আলী কিংবা কমিশনার চৌধুরী আলমের আজও খোঁজ মেলেনি। দেশের অর্থনীতি বিপর্যস্ত করে দেওয়া হয়েছিল উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ব্যাংকগুলোকে দেউলিয়া করে ফেলা হয়েছিল। দেশ থেকে ২৮ লাখ কোটি টাকা পাচার করে দেওয়া হয়েছে। অন্যায়, অনিয়ম, অনাচার, দুরাচার, লুটপাট দৈনন্দিন চিত্র হয়ে উঠেছিল। দেশে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছিল ব্যক্তিতন্ত্র।

তারেক রহমান বলেন, ১৯৭১ সালে ছিল স্বাধীনতা অর্জনের যুদ্ধ। আর ২০২৪ সালে ছিল স্বাধীনতা রক্ষার যুদ্ধ। ৭১’ সালের শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের বাংলাদেশ ভোলেনি। ২৪’ এর গণঅভ্যুত্থানের শহীদদেরও বাংলাদেশ ভুলবে না। গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার প্রথম উদ্যোগ নির্বাচন বিএনপির শীর্ষনেতা বলেন, একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার প্রথম ও রাজনৈতিক উদ্যোগ হচ্ছে জনগণের সরাসরি ভোটে জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ জবাবদিহিমূলক একটি রাষ্ট্র ও সরকার প্রতিষ্ঠা। জনগণের কাছে দায়বদ্ধ একটি সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কাজ করছে। তিনি বলেন, বিগত দেড় দশকের ফ্যাসিবাদী আন্দোলনের সঙ্গে স্বাধীনতা পরবর্তী তিন সাড়ে তিন বছরের সময়কাল ছাড়া আর কোনো শাসনামলের তুলনা চলে না। সুতরাং, আমি সবাইকে বিনীতভাবে আহ্বান জানাব, হিটলারের নাৎসিবাদ সম্পর্কে যেমন কেউ গৌরব না করে, পলাতক ফ্যাসিস্টের শাসনকাল নিয়েও গৌরব করার কিছু নেই।

তারেক রহমান বলেন, ডাকাতি করে কিছু সম্পদ চ্যারিটি করলেও জনগণের চোখে ডাকাত যেমন গ্রহণযোগ্য নয়, তেমনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ব্যর্থতা খুঁজতে গিয়ে কৌশলে পলাতক ফ্যাসিস্টের পক্ষে সাফাই গাওয়াও গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। তিনি বলেন, যারা কৌশলে ফ্যাসিবাদী শাসনের সঙ্গে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তুলনা করতে চান, তাদের স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলতে চাই, ৫ আগস্ট বাংলাদেশে যা ঘটেছে, এটি শুধু বাংলাদেশ নয় বিশ্বের ইতিহাসেও মনে হয় নজিরবিহীন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ৫ আগস্ট গণভবন ছেড়ে ফ্যাসিস্ট পালিয়েছে। সংসদ ভবন রেখে সাংসদ পালিয়েছে। আদালত ছেড়ে প্রধান বিচারপতি পালিয়েছে। বায়তুল মোকাররম ছেড়ে প্রধান খতিব পালিয়েছে। ক্যাবিনেট ছেড়ে মন্ত্রীরা পালিয়েছে। ফ্যাসিস্টের দোসররা গা ঢাকা দিয়েছে। তবে উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, পলাতক এই ফ্যাসিস্ট চক্রের মনে এখনো কোনো অনুতাপ অনুশোচনা নেই। আর কখনোই ফ্যাসিবাদ কায়েম হবে না

দেশবাসীর উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, হাজারো শহীদের রক্তস্নাত রাজপথে ফ্যাসিবাদবিরোধী অভূতপূর্ব জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠেছে। বাংলাদেশে আর কখনোই ফ্যাসিবাদ কায়েম হবে না, কাউকে গণতন্ত্র হত্যা করার সুযোগ দেওয়া হবে না, বাংলাদেশকে আর কখনোই তাঁবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করতে দেওয়া হবে না। আমি মনে করি, এসব প্রশ্নে জাতীয় ঐক্য বহাল আছে, থাকবে।

তিনি উল্লেখ করেন, ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে যার যার দলীয় আদর্শ এবং লক্ষ্য বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ইস্যুভিত্তিক ভিন্নমত থাকবে। এটি বিরোধ নয়, বরং ভিন্নমত। এটিই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। তবে ভিন্নমত কিংবা বিরোধের মাত্রা যেন ফ্যাসিবাদ, উগ্রবাদ, চরমপন্থার উত্থান কিংবা পুনর্বাসনের কারণ না হয়ে দাঁড়ায়, সে ব্যাপারে প্রতিটি রাজনৈতিক দল এবং গণতন্ত্রকামী জনগণের প্রতি সতর্ক থাকার আহ্বান জানাই, বলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।

তারেক রহমান বলেন, আমি মনে করি, প্রতিটি রাজনৈতিক দল, যার যার দলীয় কর্মসূচি কিংবা এজেন্ডা নিয়ে জনগণের আদালতে যাবেন। জনগণ কোনটি গ্রহণ করবেন কিংবা বর্জন করবেন এটি সম্পূর্ণ জনগণের এখতিয়ার। এভাবেই প্রতিদিনের রাজনৈতিক চর্চার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রে জনগণকে শক্তিশালী করে তুলতে হবে। তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার থেকে আরম্ভ করে জাতীয় সংসদ পর্যন্ত প্রতিটি স্তরে জনগণ যতদিন সরাসরি নিজের পছন্দের প্রার্থীকে নিজের ভোট প্রয়োগ করে প্রতিনিধি নির্বাচন করে সরকার গঠন কিংবা সরকার পরিবর্তনের ক্ষমতা অর্জন করতে না পারবে ততদিন পর্যন্ত রাষ্ট্র ও সরকারে জনগণের ক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত হবে না।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, তাই আসুন, রাষ্ট্র, সরকার, শাসন, প্রশাসন পরিচালনা আর প্রতিদিনের কার্যক্রমে জনগণের গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক অধিকার চর্চা প্রয়োগের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে আমরা জনগণকে শক্তিশালী করে তুলি। জনগণকে শক্তিশালী করে তুলতে না পারলে শেষ পর্যন্ত কোনো কিছুই শক্তিশালী এবং টেকসই হবে না।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম