গুয়ারেখার চেয়ারম্যান মিজান গাজীর রোশানলের স্বীকার সংবাদ কর্মী সোহেল

( পিরোজপুর) স্বরূপকাঠি প্রতিনিধি:

গ্রামের কূটকৌশলী রাজনীতির মারপ্যাচে সাধারণ মানুষকে বলির পাঠা বানানোর গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগ উঠেছে গুয়ারেখা ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। আর সেই অভিযোগের মহা নায়ক গুয়ারেখা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজান রহমান গাজী ও তার ভাই প্যানেল চেয়ারম্যান লাভলু গাজীর বিরুদ্ধে। স্থানীয় সূত্র জানায় গত ইউনিয়নের উপ নির্বাচনের রেশ ধরে চলতি সময়ে গুয়ারেখা ইউনিয়নের মধ্যে এক ধরনের রাম রাজত্ব কায়েম করার গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগ উঠেছে দুই ভ্রাতৃত্বের বিরুদ্ধে। আর সেই সূত্র ধরেই গত ২২/১০/২৩ তারিখে সুপরিকল্পিত ভাবে জালিস মাহমুদ রানাকে টার্গেট করে ঠান্ডা মাথায়।জামাত শিবিরের স্টাইলে রাতের অন্ধকারে মিজান গাজীর বাহিনীরা সন্ত্রাসী কায়দায় মারধর করে। একপর্যায়ে চেয়ারম্যান নিজেই নির্বাচনের পূর্ব শত্রুতার জের ধরে বাসায় এনে এলোপাতাড়ি ভাবে মারধর করে। এদিকে ২২/১০ তারিখের সমগ্র বিষয়টি জানাজানি হওয়ার সাথে সাথে স্থানীয় সুশীল সমাজের লোকজন সহ আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা মিজান গাজীর বাসা থেকে জালিসকে উদ্ধার করার চেষ্টা করেন। অবশ্য জালিসের বাবা ইদ্রিস গাজী কোন কিছুর উপায় না দেখে মুহুর্তের মধ্যে ৯৯৯ নম্বরে কল দেয়। আর সেই কারণে স্থানীয় পাটিকেলবাড়ীর পুলিশ ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জালিসকে উদ্ধার করেন। সেই কারণে বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ মিজানুর রহমান গাজী দারুণ ইমেজ সংকটে পড়েছে। বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না গুয়ারেখা ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের।

ঘটনার রাত্রে প্রশাসনের মাধ্যমে উদ্ধার হওয়ার পর রক্তাক্ত অবস্থায় জালিস মাহমুদ রানা গণ মাধ্যম কর্মীদের বলেন, নির্বাচনে রেশ ধরে জামাত বিএনপির সন্ত্রাসীরা হামলা করে আমার উপর। ঘটনার সময়ে বাবু শেখ, রাসেল শেখ,মহিউদ্দিন হাওলাদার, শফিক হাওলাদার, রাজু হাওলাদার, রানা শেখ, শাহরিয়ার রাহাত, ফুল গজী ও শাকিল সিকদার আমার উপর অমানুবিক কায়দায় হামলা করে। সয়ং চেয়ারম্যান মোঃ মিজানুর রহমান গাজীও মারধর করে বলে জানান। প্রশাসন উদ্ধার করতে সক্ষম না হলে চেয়ারম্যান ও তার বাহিনীররা আমাকে মেরে ফেলতো।

এদিকে পূর্বের ঘটনার দশদিন যেতে না যেতে আবারও বেপরোয়া গুয়ারেখা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ মিজানুর রহমান মিজান গাজীর ভাই ( ওয়ার্ডের জনপ্রতিনিধি) মোঃ লাভলু গাজী ( প্যানেল চেয়ারম্যান) ও তার সঙ্গী আলতাফ গাজী, রাকিব গাজী,আল আমিন হাওলাদার, মাহমুদ গাজী, মোঃ মহিউদ্দিন হাওলাদার ও জাহাঙ্গীর হাওলাদার পরিকল্পিত ভাবে জালিস মাহমুদ রানার মামলার প্রধান সাক্ষী মোঃ সোহেল হাওলাদার ও তার মাকে বেদম মারধর করার গুরুত্বপূর্ণ মিশনে ছিল। অভিযোগ উঠেছে মামলার সাক্ষী সোহেল হাওলাদারকে কোন ভাবে বুঝ করতে না পারার কারনেই সোহেল ও তার পরিবারের সদস্যরা বর্তমান চেয়ারম্যানের কাছে জিম্মি। স্থানীয় সূত্র আরও জানায়,গত ২২/১০/২৩ তারিখ জালিসের মামলার প্রধান সাক্ষী ছিল মোঃ সোহেল হাওলাদার। স্থানীয় চেয়ারম্যান সহ তার ভাই জনপ্রতিনিধি লাভলু গাজী বহু রগচটা প্রস্তাব দেয় মামলার সাক্ষী মোঃ সোহেল হাওলাদারকে। গণ মাধ্যম কর্মী সোহেল সত্যের মধ্যে থেকে কোন আপোষ করেনি বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ মিজানুর রহমান মিজান গাজীর সাথে। আর সেই কারণে সুকৌশলে ৩১/১০/২৩ তারিখ সকাল ০৮টর দিকে হঠাৎ সুপরিকল্পিত ভাবে ঠান্ডা মাথায় হামলা করে বর্তমান জনপ্রতিনিধি ও তার বাহিনীরা। এসময়ে সোহেল হাওলাদারকে এলোপাতাড়ি ভাবে মারধর করে। হামলার আঘাতে সোহেল হাওলাদারের হাত ভেঙে যায় বলে এলাকার বেশীরভাগ লোকজন গণ মাধ্যম কর্মীদের বলেন। এদিকে সোহেলের পাশাপাশি সোহেলের মাকে আঘাত করে বলে জানান।

সরেজমিনে জেলার ও স্থানীয় গণ মাধ্যম কর্মীরা সরাসরি গুয়ারেখা ইউনিয়নে যান। ঘটনার সত্যতা বাছাই করা হয়। এলাকার বেশীরভাগ লোকজন গণ মাধ্যম কর্মীদের বলেন, মামলার প্রধান সাক্ষী মোঃ সোহেল হাওলাদারকে সাক্ষী থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করে সয়ং চেয়ারম্যান মোঃ মিজানুর রহমান মিজান গাজী । পাশাপাশি বেচে থাকার জন্য চমৎকার চাকুরিরও প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু সব কিছু প্রস্তাব উপেক্ষা করে নীতি গত ভাবে সব প্রস্তাব প্রত্যাক্ষান করা হয়। আর সেই কারণেই ৩১/১০/২৩ তারিখ মঙ্গলবার আকর্ষিক হামলার শিকার হয়। এ ব্যাপারে এলাকার চেয়ারম্যান সহ জনপ্রতিনিধি লাভলু গাজীকে বহুবার ফোন দেওয়া হয়। কিন্তু একটি বারের জন্যও ফোন রিছিব করেননি। তবে স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিষয়টি লোকমুখে শুনেছে। তবে এখনো পর্যন্ত কোন ধরনের অভিযোগ পাননি বলে গণ মাধ্যম কর্মীদের বলেন।

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী কথা হয় আহত সোহেল হাওলাদারের সাথে। সোহেলের মা গণ মাধ্যম কর্মীদের বলেন, আমার ছেলে চেয়ারম্যানের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ার কারণে আমাকে এবং সোহেল হাওলাদার কে মারধর করে। আমার ছেলের হাত ভেঙে দিয়েছে বর্তমান চেয়ারম্যানের ভাই মেম্বার মোঃ লাভলু গাজী ও তার বাহিনীর লোকজনরা। আমি কঠিন শাস্তির দাবি জানাই। আহত সোহেল বলেন, আমি পূর্বের মামলার প্রধান সাক্ষী। আমাকে সামাজিক ভাবে চাপে রাখার চেষ্টা করেন চেয়ারম্যান । পাশাপাশি সাক্ষী না দেওয়ার প্রস্তাব করেন।আমি চেয়ারম্যানের প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ার খেশারাত স্বরূপ আমার উপর নগ্ন হামলা করে। আমি দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি চাই। জামাত বিএনপির সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধ হোক। আমাদের এলাকায় গত কয়েক মাস ধরে রাম রাজত্ব কায়েম করে যাচ্ছে বর্তমান চেয়ারম্যান। আমার মতো অনেকে নিরাপদ নয় গুয়ারেখা ইউনিয়নের মধ্যে।

সাংবাদিক তালুকদার মাসউদ হত্যা সাত আসামীর রিমান্ড মঞ্জুর

 

বরগুনা প্রতিনিধিঃ
সাংবাদিক তালুকদার মাসউদ হত্যা মামলার সাত আসামীর রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। মামলার তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের প্রেক্ষিতে শুনানী শেষে বুধবার বরগুনা অতিরিক্ত মূখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক মোঃ হারুন অর রশীদ আসামীদের রিমান্ড মঞ্জু করেণ। এছাড়াও একইদিনে আসামীদের জামিন আবেদনেরও শুনানী অনুষ্ঠিত হয়। শুনানী শেষে জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানো আদেশ দেয় আদালত।

সাংবাদিক মাসউদ তালুকদার হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বরগুনা সদর থানার উপ পরিদর্শক মোঃ হেলাল উদ্দিন জানান, মামলায় জেল হাজতে থাকা সাত আসামীর পাঁচদিন করে রিমান্ড চেয়ে গত সোমবার আদালতে রিমান্ড আবেদন করলে আদালত বুধবার (আজ) শুনানীর তারিখ ধার্য্য করেছিল। শুনানী শেষে ৩নং আসামী দৈনিক সংবাদ প্রকাশ পত্রিকার বরগুনা প্রতিনিধি কাসেম হাওলাদার ও সময় টিভির বরগুনা প্রতিনিধি মামলার ৫নং আসামী সাইফুল ইসলাম মিরাজকে থানা হাজতে এনে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেণ। মামলার বাকী ৫ আসামী এনটিভির বরগুনা জেলার নিজস¦ প্রতিবেদক সোহেল হাফিজ, তার (এনটিভির) ক্যামেরা পার্সন আরিফলু ইসলাম মুরাদ, বাংলা নিউজের বরগুনা প্রতিনিধি জাহিদুল ইসলাম মেহেদি, দৈনিক আজকের দর্পন পত্রিকার ওলি উল্লাহ ইমরাণ ও তাদের সহযোগী সোহাগ হাওলাদারকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।

বাদী পক্ষের নিয়োজিত আইনজীবী মো: নেসার উদ্দীন জানান, গত সোমবার আসামীদের পক্ষে জামিন চেয়ে আবেদন করার পর বুধবার (আজ) শুনানীর জন্য তারিখ নির্ধারণ করেছিল আদালত। শুনানী শেষে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করা হয়। এছাড়াও মামলার ১২নং আসামী মোঃ শহিদুল ইসলাম আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে আদালত আবেদন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানো আদেশ দেন।

আসামী পক্ষের আইনজীবী মোঃ আবদুর রহমান বলেন, ‘আদালত জামিন নামঞ্জুর করেছে। পরবর্তিতে আমরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জামিন আবেদন করব। নিম্ন আদালতে জামিন নামঞ্জুর হলে উচ্চাদালতে জামিন আবেদন করা হবে।’

গত ১৯ ফেব্রুয়ারী বরগুনা প্রেসক্লাবে আটকে রেখে মারধর ও নির্যাতনের ১১ দিন পর ২মার্চ চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাংবাদিক তালুকদার মাসউদের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ৪মার্চ নিহতের স্ত্রী সাজেদা বাদি হয়ে বরগুনা সদর থানায় ১৩জনকে আসামী করে হত্যা মামলা রুজু করেন। তালুকদার মাসউদ ‘দৈনিক ভোরের ডাক’ পত্রিকার বরগুনা প্রতিনিধি ও সদর উপজেলার নলটোনা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য ছিলেন।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম