সিটি টোল এর নামে সজীব ও দুলালের প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি 

স্টাফ রিপোর্টার:

হাইকোর্টের রিট পিটিশন নং ৪৬/৪০/২০২২ এর আদেশ মোতাবেক টার্মিনাল ব্যতিরেকে কোন সড়ক বা মহাসড়কে টোল উত্তোলন করা যাবে না। আদেশে আরো বলা হয় কেবলমাত্র পৌর মেয়র নির্মিত টার্মিনাল হলে সেই টার্মিনাল থেকে টোল আদায় করা যাবে। টোল আদায় করতে হবে টার্মিনাল এর ভিতরে, কোন অবস্থাতেই সড়ক বা মহাসড়কে নয়। হাইকোর্টের এই আদেশকে অমান্য করে রাজধানীর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন স্থানে অবৈধভাবে টোল আদায় করা হচ্ছে। ৪টি স্থানের টোল এর বৈধতা থাকলেও প্রায় অর্ধশত স্পট থেকে জোর করে টাকা তুলছে ইজারাদারদের সহযোগীরা। প্রায় রাজধানীর প্রতিটি রাস্তার প্রবেশ করার সড়ক মুখেই প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি চলছে। গুলিস্থান, মতিঝিল, কমলাপুর, যাত্রাবাড়ী, জুরাইন, কদমতলী, পোস্তগোলা, শনির আখড়া, রায়েরবাগ, কোনাপাড়া, ডেমরা, মাতুয়াইল, মেরাদিয়া, স্টাফ কোয়ার্টার, নন্দীপাড়া, মাদারটেক, সহ প্রায় আরো ৩০-৪০ টি স্পটে চলছে সিটি কর্পোরেশনের নামে চাঁদাবাজি। প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকা চাঁদা আদায় করছে ইজারাদারদের লোকজন। তেমনই স্টাফ কোয়ার্টারের পেট্রোল পাম্পের সামনে দাঁড়িয়ে পিকাপ, কাভার্ডভ্যান, ও নাভানা থেকে প্রতিবার ৩০ টাকা মূল্যের চাদা আদায় করেন দুলাল ও সজীবের লোকজন। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে মারধরও হয়রানির শিকার হতে হয় গাড়িচালকদের। একইভাবে সড়কের গাড়ি থামিয়ে চাঁদা তোলার জন্য যানজট তৈরি হওয়া সহ বিভিন্ন রকম দুর্ঘটনার সম্মুখীন হতে হয় পথচারী ও যাত্রীদের। এতে ভোগান্তির শিকার হয় পথচারী ও নানা পেশাজীবী মানুষসহ আগত ছাত্র- ছাত্রী নারী পুরুষ সহ প্রায় সকলেই। সরেজমিনে গিয়ে গত শনিবার ৯-১২-২৩ তাং সাংবাদিকদের একটি অনুসন্ধানী টিম দেখতে পায় প্রকাশ্যেই দুলাল ও সজীবের লোকজন চাঁদা তুলছে, কাছে গিয়ে জানতে চাইলেই মুহূর্তেই দৌড়ে পালিয়ে যায় দুলাল সজীবের দুজন কর্মচারী। এ বিষয়ে পাশেই ডিউটিরত পুলিশ কর্মকর্তা বিষ্ণু সাহেব কে প্রশ্ন করলে তিনি জানায় এই টোলের ইজারার বৈধতা রয়েছে বলেই জানিয়ে আসছেন উক্ত চক্র। অথচ এই পুলিশ কর্মকর্তার বক্তব্যে বেরিয়ে আসে র‍্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (RAB)কতৃর্ক দুলাল ও সজীবের লোকদের পূর্বে গ্রেফতারের বিষয়টি।এছাড়াও তিনি জানান ইতিপূর্বে তাদের আগে কয়েকবার থানায় নিয়ে গেলেও বিভিন্নভাবে তারা থানা থেকে চলে আসে।সিটি টোলের নামে এই চাঁদাবাজি নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি পরিষ্কার করে বলতেও পারিনি আদৌ এর কোন বৈধতা আছে কিনা? পরবর্তীতে তিনি জানান তাদেরকে দেখিয়ে দিতে পারলে তিনি গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যাবেন। এদিকে স্থানীয় কয়েকজন দোকানদারকে প্রশ্ন করলে তারা জানায় আমরা জানি এটা অবৈধ কিন্তু কিছু বলি না ভয়ে।যদি আমাদের সাথে কোন ঝামেলা হয়। এ বিষয়ে সজীব দুলালের সাথে কথা হলে মুঠোফোনে তারা জানায় এটা ৭-এলিভেন এন্টারপ্রাইজের ৫কোটি ২০ লক্ষ টাকা ইজারার ডাকা একটি সিটি টোল।দুলাল সাহেবের বক্তব্যে বেরিয়ে আসে বিভিন্ন মাধ্যমে লোকদের টাকা পয়সা দেওয়ার গল্প। এখন সচেতন মহলের প্রশ্ন হল চারটি টার্মিনাল থেকে অভ্যন্তরীণ চাঁদা আদায় বৈধ হলে, স্টাফ কোয়ার্টারের এই চাঁদার বৈধতা কি করে পাওয়া সম্ভব?যেখানে সড়কে টোল আদায় সম্পূর্ণ আইনত অপরাধ তাহলে কি করে দুলাল ও সজীব এই চাঁদা প্রকাশ্যে প্রশাসনের সম্মুখেই তুলছে?হাইকোর্টের আদেশের বিষয়ে পুলিশ সদস্যের এই না জানার বিষয়টি কোন দিকে ইঙ্গিত করে।এবং সাংবাদিকদের কে চাঁদাবাজ চক্রকে ধরিয়ে দিতে বলেন।তাহলে কি ডিউটিরত পুলিশ কর্মকর্তারা বিষয়টি দেখছেন না?নাকি তাদের অজানা।প্রশাসনের নাকের ডগায় দুলাল ও সজীব চক্রের এই চাঁদাবাজি তাহলে রুখবে কে?পথচারী ও গাড়ির চালকরা দুঃখ প্রকাশ করে এ সকল চাঁদাবাজদের দ্রুত শাস্তির আওতায় আনতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের জোর পদক্ষেপ কামনা করেন। এছাড়াও স্থানীয় সচেতন মহল মনে করেন দ্রুত এই চাঁদাবাজি বন্ধ করে যানজট নিরসন ও গাড়িচালকদের হয়রানীর থেকে মুক্ত করতে কতৃপক্ষের কঠোর ভূমিকা পালন করা জরুরি। অন্যদিকে শ্যামপুর থানা পুলিশ সোহেল ও তানজিল নামে ২ জন চাদাবাজকে আটক করে এ এস আই বিকাশ, তাদেরকে থানায় নিযে যাবার পর এই ২ চাঁদা বাজকে ছেরে দেয়ার পায়তারা করছে শ্যামপুর থানার নবাগত ওসি।( চলবে)

 

বিআইডব্লিউটিএ এর অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সাইদুরের ভয়াবহ দুর্নীতি

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)-এর ড্রেজিং শাখার দায়িত্বরত প্রধান প্রকৌশলী সাইফুরের ব্যাপক ঘুষ , অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের দীর্ঘ ১৫ বছরের দুর্নীতিবাজ তালিকায় ঘুরে ফিরে উঠে এসেছে প্রকৌশলী মো. সাইদুর রহমান এর নাম। অভিযোগ রয়েছে, এই কর্মকর্তা ক্যাপিটাল ড্রেজিং প্রকল্পে নদী খননের নামে ১৩৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে অঢেল সম্পদের পাহাড় গড়েছেন।

সাইদুর রহমানের বিরুদ্ধে রয়েছে ভোগাই ও কংস নদ খননের নামে ভয়াবহ অর্থ লোপাট, জাল সনদ ব্যবহার, একাধিক গাড়ি ও বেনামী সম্পদের মালিক হওয়া, এবং সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কর্মকর্তাদের জিম্মি করে রেখে অবৈধ উপায়ে হাজার কোটি টাকা হাতিয়েছেন।

জানা গেছে, তাঁর নেতৃত্বে ড্রেজিং শাখায় তৈরি হয়েছে একটি শক্তিশালী দুর্নীতিবাজ চক্র, যারা দরপত্র, নিয়োগ ও বদলি বাণিজ্যের মাধ্যমে কয়েকশ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে,দুদক তাঁর বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করলেও মামলা কার্যক্রম দীর্ঘসূত্রতায় ঝুলে থাকায় দৃশ্যমান হচ্ছে না কোন এক অদৃশ্য ইশারায়। অভিযোগ রয়েছে, কিছু দুর্নীতিপরায়ণ দুদক কর্মকর্তার সহায়তায় তার মামলা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা ও তদবির অব্যহত রয়েছে । ইতোপূর্বে সাইদুর ও তার স্ত্রীসহ অন্যদের সম্পদের তথ্য বিবরণী জমা পড়লেও তিন বছরেও যাচাই সম্পন্ন করতে পারেন নি কর্তৃপক্ষ।

বিআইডব্লিউটিএর অভ্যন্তরীণ সূত্র জানায়, প্রকল্প বাস্তবায়নে নামে-মাত্র খননের কাগজপত্র তৈরি করে ভুয়া বিল-ভাউচারে তোলা হয় প্রকল্পের টাকা। প্রকল্পের কাজে অংশ নেওয়া ঠিকাদারদের সঙ্গে আঁতাত করে সাইদুর রহমান ও তাঁর সহযোগীরা ওই অর্থ ভাগাভাগি করে নিয়েছেন।

এদিকে, দীর্ঘদিন একটানা একই পদে বহাল থেকে সাইদুর রহমান সরকারি চাকরি বিধিমালার চরম লঙ্ঘন করেছেন। আবার এলজিইডি থেকে চাকরি বরখাস্তের পর তথ্য গোপন করে ২০০৩ সালে বিআইডব্লিউটিএতে চাকরি নেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

এদিকে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিআইডব্লিউটিএর একাধিক সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা স্বার্থ চরিতার্থ করা এ দুর্নীতির সিন্ডিকেট থেকে মুক্তি চান এবং দুর্নীতিবাজ সাইদুরের অবিলম্বে অপসারণ দাবি জানিয়ে আসছেন।

সাম্প্রতিক অন্তর্বর্তী সরকার ঘোষিত দুর্নীতিবিরোধী ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির বাস্তবায়নে সাইদুর রহমানের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে ভুক্তভোগী কর্মচারীসহ সচেতন মহল।

সূত্র জানায়,বিআইডব্লিউটিএর ড্রেজিং বিভাগের নাম এখন দুর্নীতির প্রতীক। সেখানে প্রকৌশলী সাইদুর রহমানের অনিয়ম , দুর্নীতি সিন্ডিকেট সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে। তাঁর দুর্নীতির অভিযোগে কি ব্যবস্থা নেয় এটাই এখন দেখার বিষয়—অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং দুদক সত্যিকার অর্থে ব্যবস্থা গ্রহণ করে কি না সাধারণের নজর দুর্নীতি দমন কমিশনের দিকে।
এসব অনিয়মের বিষয় অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোঃ সাইদুর রহমান এর মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি কোন রেসপন্স করছেন না।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম