সাভারে তরুণীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ,পুলিশের গড়িমসিতে হয়নি মামলা!

আলী রেজা রাজু:

সাভারে সিনথিয়া(১৬) নামে এক গামেন্টস শ্রমিককে জোর পূর্বক তুলে নিয়ে রাতভর ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগের নেতার ছোট ভাইয়ের বিরুদ্ধে।

সাভারের তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নের হেমায়েতপুর নতুনপাড়া এলাকায় ম্যাক্স কম্পজিট গামেন্টস কর্মী সিনথিয়া।
সিনথিয়া গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ থানার মাস্তা দক্ষিণ গ্রামের দুদু মিয়া মেয়ে।
সোমবার(১৮ নভেম্বর) রাত ১০ টায় প্রতিদিনের মত কাজ শেষে ভাড়া বাসায় ফিরছিলেন ভুক্তভোগী তরুণী’র রাস্তা ঘিরে দাঁড়ায় হৃদয় বাহিনীর সদস্যরা, জোরপূর্বক তুলে নিয়ে একটি বহুতল ভবনের ফ্ল্যাটের নিয়ে মুখ বেধে আওয়ামী লীগ নেতা মামলত খানের ছোট ভাই হৃদয় তাকে রাতভর ধর্ষণ করে।
মঙ্গলবার(১৯ নভেম্বর)সকালে অবরুদ্ধ ঐ তরুণীকে ফ্ল্যাট থেকে তার পরিবার উদ্ধার করে।

ভুক্তভোগী তরুণী বলেন,উক্ত ঘটনা কাউকে যদি বলি তাহলে আমাকে ও আমার পরিবারকে প্রানে শেষ করে ফেলবে বলে হুমকি দেয় ধর্ষক হৃদয়।

ভুক্তভোগী তরুণী সিনথিয়া বুধবার(২০নভেম্বর) সাভার মডেল থানায় উপস্থিত হয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। কিন্তু সাভার মডেল থানা পুলিশের গড়িমসি ও নানা রকম টালবাহানা অভিযোগের দুইদিন পার হয়ে গেলেও এখনো মামলা রুজু হয় নাই,যেখানে চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে ২৪ থেকে ৭২ মধ্যে ধষর্ণের আলামত সংগ্রহ না করিলে আলামত নষ্ট হয়ে যায়।
যা আদালতে ধর্ষণের শিকার হওয়া ভুক্তভোগী’র সাথে ঘটে যাওয়া অপরাধ প্রমাণ করতে আশঙ্কা থাকে যায়।
ভুক্তভোগী তরুণী ও তার মা সংবাদকর্মীদের মাধ্যমে সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানান।

এবিষয়ে অভিযোগ তদন্ত কর্মকর্তা শিল্প নগরী পুলিশ ফাঁড়ি’র উপপরিদর্শক(এসআই) আমির হোসেনের কাছে কি কারণে মামলা রুজু হয় নাই, মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি সাক্ষাৎতে বলবো।

এ”বিষয়ে সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি)জুয়েল মিয়া’র সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করে যোগাযোগ করা সম্ভবনি।

ফরিদ গংদের দোষলেন আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল হওয়া আ. লীগের সেই নেতা

নিজস্ব প্রতিবেদক॥
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সবুজবাগ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লায়ন চিত্ত রঞ্জন দাসের আপত্তিকর একটি ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর তিনি ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন। এদিকে ভুক্তভোগী ওই নারী থানায় চিত্ত রঞ্জন দাসের বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করেছেন। সোমবার ওই মামলায় জামিন পাওয়ার পর চিত্তরঞ্জন দাস এ বিষয়ে একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়েছেন।

এতে তিনি ওই ভিডিও ভাইরালের পেছনে সবুজবাগ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক ৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আশ্রাফুজ্জামান ফরিদকে দায়ী করেন। যারা ফেসবুকে ভিডিওটি ভাইরাল করেছেন তারা সরাসরি আওয়ামী লীগ সভাপতি ফরিদের মদদপুষ্ট হয়ে ওই কাজ করছেন বলে অভিযোগ তার।

ফেসবুক স্ট্যাটাসে সবুজবাগ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লায়ন চিত্ত রঞ্জন দাস বলেন, ‘আমার প্রিয় সবুজবাগবাসী, বিশেষ করে ৫ নং ওয়ার্ডবাসীর কাছে ক্ষমা চাচ্ছি, ভুল করে হোক বা ষড়যন্ত্রের স্বীকার হয়েই হোক আমি আপনাদের মনে কষ্ট দিয়েছি। আমি জানি, অতীতের ন্যায় সব সময় আপনারা আপনাদের ভালোবাসা দিয়ে আমার পাশে থাকবেন। আমি এই ষড়যন্ত্রের পেছনে থাকা মুখগুলোর মুখোশ উন্মোচন করবোই।’

তিনি বলেন, রাজনীতির বাইরেও আমি একজন সাংস্কৃতিক পৃষ্ঠপোষক ও অনুরাগী। প্রতি বছর শারদীয় দূর্গা উৎসবে আমি নানা সামাজিক নাটক মঞ্চায়ন করার ব্যবস্থা করি।এটি সকলেরই জানা। এবারো পূজা সামনে রেখে একটি নাটক মঞ্চায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। নাটকটির নাম ‘ঢাকার অসুখ- ডাক্তার চাই’। নাটকটিতে আমারও একটি চরিত্র রয়েছে।

ঘটনার দিন আমি আমার কার্যালয়ের পাশের রুমে নাটকটির পরিচালক সাইফ বাপ্পী ও এক অভিনেত্রীর সঙ্গে নাটকের রিহার্সেল করছিলাম। ঠিক তখনই ওই নারী তার স্বামীসহ সেখানে উপস্থিত হন। তারপর কিছুক্ষণ অবস্থান করে আমাদের রিহার্সেল দেখতে থাকেন। তারপর আমার সঙ্গে জরুরি কথা আছে বলে সবাইকে পাশের রুমে যেতে বলেন। সবাই অন্যরুমে যাওয়ার পর সে আমার সঙ্গে একটু অভিনয় করবে বলে আবদার করে। এবং তার স্বামীকে নিয়ে বাইরে চলে আসে। কিছুক্ষণ পর আবার এসে আমাকে আমার সাথে রিহার্সেল করতে চায় এবং আমি সরল মনে রাজি হয়ে নাটকের একটি দৃশ্য অভিনয় করি। আর অভিযোগকারী নারী এই সুযোগে গোপন ক্যামেরায় তা ধারন করে নানা প্রযুক্তি ব্যবহার করে এডিটিং করে বিষয়টিকে বাজেভাবে সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল করে। আমাকে রাজনীতি থেকে বিতারিত করতে পারলে ফরিদ গংদের অবৈধ কর্মকাণ্ড পুনরায় শুরু করতে পারবে বিধায় অভিযোগকারীকে মোটা অংকের টাকা আর নানা সুযোগ সুবিধার প্রলোভন দেখিয়ে তারা এই ভাইরাল করার কাজটি করে।

অতীতেও বহুবার তারা আমাকে এমন বিব্রতকর ও সম্মানহানিকর পরিস্থিতিতে ফেলেছিল কিন্তু প্রতিবারই আমি আমার দৃঢ় মনোবল ও জনগণের দোয়ায় সকল প্রতিকূলতা জয় করেছি। এবারো তাদের এই ষড়যন্ত্র থেকে আইনি মোকাবিলার মাধ্যমে বেরিয়ে আসব।

ঢাকার সবুজবাগ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লায়ন চিত্ত রঞ্জন দাস দাবি করেন, আমার বিরুদ্ধে যে নারীটি শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনেছেন। তার শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের শত্রুতা। এটি ব্যক্তিগত কোনো শত্রুতা নয়। বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ঐতিহ্যবাহী মন্দির শ্রী শ্রী বরদেশ্বরী কালিমাতা মন্দির ও মহাশ্মশানের জায়গা অন্যায়ভাবে অবৈধ দখল করে রেখেছিল অভিযোগকারী নারীর শ্বশুরবাড়ির পরিবারের কয়েকজন সদস্য।

তিনি আরও দাবি করেন, ১৯৯৫ সালে আমি মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর থেকে এই পরিবারসহ মন্দিরের জায়গা অবৈধ দখল করে রাখা সকলের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা সহ সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলি। তাদের অনেক আর্থিক ও সামাজিক ক্ষতি করতে সক্ষম হই। সেই থেকেই এই সরদার বাড়ির সঙ্গে আমার শত্রুতার সূত্রপাত। এর আগেও বহুবার তারা আমাকে বহু হামলা মামলার সম্মুখীন করেছে। কিন্তু প্রতিবারই ব্যর্থ হয়েছে।

বর্তমানে যে ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে তারা আমাকে রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে চাইছে তার ছক তারা বহুদিন আগে থেকে এঁকেছেন। এর পিছনে সবুজবাগ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক ৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আশ্রাফুজ্জামান ফরিদ এর সরাসরি মদদপুষ্ট হয়ে করছেন। ফরিদ অতি অল্প সময়ে ক্যাসিনো কাণ্ড, মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ ও রাজনৈতিক শক্তির অপব্যবহার করে অঢেল সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। গত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে দলীয় মনোয়ন বঞ্চিত হবার পর থেকেই আমার পেছনে নানা ষড়যন্ত্রের জাল বুনতে থাকে। এছাড়াও আমি কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই ফরিদ, তার ভাই মুরাদ ও ভাগ্নে শাওনের মাদক ব্যবসাসহ সকল অপকর্ম বন্ধে জোরালো ভূমিকা রাখি। তার জেরেই তারা অভিযোগকারী এই পান্নাকে আমার পেছনে লেলিয়ে দেয় বলে আমি নিশ্চিত। এটি এই দুই গ্রুপের পূর্ব পরিকল্পনার অংশ।

মামলা প্রসঙ্গে এ আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, অভিযোগকারী নারী ও তার স্বামী অনলাইন সাংবাদিকতা করে বলে দীর্ঘদিন যাবৎ তারা আমার বিভিন্ন মানবিক ও সামাজিক কার্যক্রমের নিউজ কভার করতো এবং নানা সময়ে আমার কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা নিয়ে চলতো বিধায় তাদের সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক ছিল।

সেই সম্পর্কের সুযোগ নিয়ে গত কয়েকদিন আগে অভিযোগকারী নারী ও তার স্বামী আমার কাছে আসে এবং অবৈধভাবে দখল করা মন্দিরের একটি দোকান তার শ্বশুর সমির উদ্দিন সরদার অন্য কারো কাছে বিক্রি করে দিয়েছে বলে আমাকে জানায়। এখন তাদেরকে দোকানটি সংস্কার করার অনুমতি দেয়ার জন্য অনুরোধ করে। লুকিয়ে মন্দিরের সম্পত্তি অন্য কারো কাছে বিক্রি করায় আমি তাদেরকে তিরষ্কার করি এবং মন্দিরেত বকেয়া ভাড়া ৪০ হাজার টাকা রশিদের মাধ্যমে পরিশোধ করে তারপর দোকানটি সংস্কার করতে পারবে বলে জানিয়ে দেই। সেদিন সহ তারা আরো কয়েকদিনএকই দাবি নিয়ে আমাকে বুঝানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে তারা ফরিদকে সাথে নিয়ে এই অপকৌশলের আশ্রয় নেয়।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম