ঢাকায় ছিনতাই বেড়ে যাওয়ার কথা স্বীকার

স্টাফ রিপোর্টারঃ

সম্প্রতি ঢাকায় ছিনতাই প্রবণতা বেড়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করে নিজের মোবাইল ও ব্যাগ নিজ দায়িত্বে নিরাপদে রাখার মাধ্যমে পুলিশকে ‘সহায়তা’ করতে বলেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী।

বুধবার (৮ জানুয়ারি) ঢাকা ক্লাবে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা আপনাদেরকে এ ব্যপারে সাহায্য করব। কিন্তু নিজের ব্যক্তিগত ব্যাগ এবং মানিব্যাগ, পার্স, মোবাইল নিজে একটু নিরাপদে রাখার চেষ্টা করবেন। তাহলে এ কাজটির মাধ্যমে আপনি আমাদের সহযোগিতা করতে পারবেন।’

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘ইদানিং যে অপরাধটি মানুষের মধ্যে শঙ্কার সৃষ্টি করেছে সেটি ছিনতাই। ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত অধিকাংশ মাদকাশক্ত অল্প বয়সের ছেলেরা। ১৫ থেকে ২২ বছরের ছেলেরা মাদকে আশক্ত হয়ে এই ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে।’

তিনি বলেন, ‘ছিনতাইয়ের ঘটনায় ৮০ ভাগই মোবাইল ফোন ছিনতাই হয়। বাসে বা প্রাইভেটকারে যখন কথা বলে তখন মোবাইল নিয়ে দৌড় দেয়। তাদেরকে হাতেনাতে ধরা অত্যন্ত কঠিন কাজ। আমার অফিসারদের কাছে বড় অস্ত্র থাকে, বুট পরা, ইউনিফর্ম পরা থাকে। ছিনতাইকারী থাকে খালি পায়ে বা একটা কেডস পরা। তার সাথে দৌড়ে পারাটা অনেক কঠিন। তাই প্রথমত আমি ঢাকাবাসীকে অনুরোধ করব, আপনার মোবাইল, মহিলারা যারা পার্স ব্যবহার করেন আপনার পার্স বা হ্যান্ডব্যাগ নিজের নিরাপত্তায় ভালোভাবে রাখার চেষ্টা করেন।’

তিনি বলেন, ছিনতাইয়ের ব্যপারে গত এক সপ্তাহে ব্যপক ব্যবস্থা নিয়েছি। দিনে এবং রাতে পেট্রোল সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। ডিবিকেও এ কাজে লিপ্ত করেছি। গত এক সপ্তাহে তথ্য মোতাবেক আগের তুলনায় ছিনতাই কমে এসেছে। আশা করছি আমরা ছিনতাইকে আরও নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হবো।’

এদিকে, ছিনতাই প্রতিরোধে গত ২২ ডিসেম্বর থেকে রাজধানীজুড়ে ‘বিশেষ অভিযান’ পরিচালনা শুরু করে ডিএমপি। পরদিন অভিযানের প্রথম ২৪ ঘণ্টায় ৯৩ জন ছিনতাইকারীকে গ্রেফতারের তথ্য দিয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার এস এন মো. নজরুল ইসলাম জানিয়েছিলেন, এই ছিনতাই প্রবণতা ‘কমে না আসা পর্যন্ত’ বিশেষ অভিযান অব্যাহত থাকবে।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘ঢাকায় দুই থেকে আড়াই কোটি লোকের বসবাস। এখানে হতদরিদ্র, নিন্মবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির সংখ্যাই বেশি। বেকারত্বের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। নানাবিধ সামাজিক সমস্যা প্রকারন্তরে পুলিশের ঘাড়েই এসে পড়ে। ইদানিং বিভিন্ন গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের লোকেরা ছোটখাট দাবি আদায়ের জন্য রাজপথকেই বেছে নেয়। সবাই মনে করে রাজপথ দখলে নিলে তাদের দাবিদাওয়া দ্রুত আদায় হবে বা সমস্যার সমাধান হবে। যার ফলে ঢাকার ভঙ্গুর ট্রাফিক আরও নাজুক অবস্থায় চলে যায়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা মানুষকে রাস্তায় থাকতে হয়।’

ঢাকার উত্তর থেকে দক্ষিনে মূলত মিরপুর রোড, এয়ারপোর্ট রোড ও রামপুরা রোড, এই তিনটি সড়কের কথা তুলে ধরে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘একটি রোড বন্ধ হলে পুরো শহর অচল হয়ে যায়। আমরা এ সমস্যার প্রতিনিয়ত সম্মুখীন হচ্ছি। তাই অনুরোধ দাবির ব্যপারে খোলা মাঠ, অডিটোরিয়াম, সভাস্থল বেছে নিন। যথাযথ কর্তৃপক্ষকে সেখানে ডেকে টেবিলে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করুন। ঢাকাবাসীর ট্রাফিক ব্যবস্থাকে আরও ভঙ্গুর করে তুলবেন না এটি আমার সবিনয় নিবেদন।’ ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘বিগত ১৫ বছর ডিএমপি সদস্যরা যেরূপ আচরণ করেছে, সেই আচরণ থেকে বের হয়ে আসতে চাই। কিন্তু এজন্য সময়ের প্রয়োজন। আমার সকল অফিসারের নতুন করে প্রশিক্ষণের বিশেষভাবে প্রয়োজন। প্রশিক্ষণ ছাড়া হঠাৎ করে ৪০ হাজার সদস্যকে পরিবর্তন সম্ভব না। তাই আমরা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ইতোমধ্যে শুরু করেছি। কোথায় কী পরিমান বল প্রয়োগের প্রয়োজন সেদিকে আমরা দৃষ্টি রাখছি। অচিরেই আপনারা সেই পরিবর্তন লক্ষ্য করবেন।’

৫ অগাস্টের পরে ডিএমপির মনোবল ‘একদম ভেঙে পড়ে’ এবং বিগত পাঁচ মাসের ‘অক্লান্ত পরিশ্রমে’ অনেকটাই কাটিয়ে উঠার কথা জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার। তিনি বলেন, ‘পুলিশ যদি নিস্ক্রিয় থাকে তার ফলাফল কি হয় ৫ অগাস্টের পরে ঢাকাবাসী মর্মে মর্মে উপলব্দি করেছে। এই পুলিশ আপনাদের লাগবে। আমাদের অনেক শর্টকামিংস দুর্বলতা আছে, সেগুলা থেকে বের হয়ে আমরা আপনাদের সেবা দিবো। কিন্তু ডিএমপি আপনাদের লাগবে।’

এসময় নানাবিধ প্রতিবন্ধকতা’ স্বত্ত্বেও ‘সকল কষ্ট স্বীকার’ করে ঢাকাবাসীকে সেবা দেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।  ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘আমার সহকর্মীদের অনেক ভুল ভ্রান্তি হয়ে যায়। সেই ভুলভ্রান্তি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ। সেসব সংশোধন করে যেন ঢাকাবাসীকে যেন সেবা দিতে পারি সকলের কাছে কামনা করছি। সীমিত সংখ্যক পুলিশ দিয়ে সকল সমস্যার সমাধান অত্যন্ত দূরুহ। সম্মিলিতভাবে চেষ্টা করলে আমরা অবশ্যই ভালো থাকবো।’

 

সবা:স:জু- ৬৯৯/২৫

অবশেষে দুদক তদন্তে নেমেছে শামীম আখতারের বিরুদ্ধে

স্টাফ রিপোর্টার॥
দুর্নীতির মাধ্যমে গণপূর্ত অধিদপ্তরকে নিজের কুক্ষিগত করে রাখা শামীম আখতারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্তে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। গত ১৭ মে দুদক হাউজিং এন্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইন্সটিটিউটকে শামীম আখতারের দুর্নীতির সুষ্ট তদন্তের স্বার্থে সকল তথ্য ও রেকর্ডপত্র চেয়ে একটি চিঠি ইস্যু করেছে।

দুদকের চিঠিতে অভিযোগের সংক্ষিপ্ত বিবরণে উল্লেখ করা হয়েছে: জনাব মোহাম্মদ শামীম আখতার, প্রধান প্রকৌশলী, গণপূর্ত অধিদপ্তর, ঢাকা ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে ভিভিআইপি প্রেগ্রামের নামে অর্থ লোপাট, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ।

বর্ণিত অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে নিম্নবর্ণিত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করা একান্ত প্রয়োজন।

এমতাবস্থায়, চাহিত রেকর্ডপত্র পত্র প্রাপ্তি স্বাপেক্ষে জরুরি ভিত্তিতে দুর্নীতি দমন কমিশন, প্রধান কার্যালয়, ১, সেগুনবাগিচা, ঢাকায় নিম্নস্বাক্ষরকারীর নিকট সরবরাহ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সবিনয় অনুরোধ করা হলো।

চাহিত রেকর্ডপত্র/তথ্যাদির বিবরণ:

১। শামীম আখতার হাউজিং এন্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট এর মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্বপালনকালীন প্রকল্প (ক) ২০১৮-১৯ অর্থবছরে গৃহিত স্বয়ংক্রিয় ব্লক নির্মাণ প্ল্যান্ট প্রকল্প; (খ) ২০১৯-২০ অর্থবছরে গৃহীত: “ব্লক মেকিং প্ল্যান্ট-এর জন্য স্টিল শেড নির্মাণ এবং ব্লক মোল্ড, অটোমেটিক প্যালেট ফিডার ও সিমেন্ট সাইলো সরবরাহ; এবং এএসি প্ল্যান্টের জন্য ২০ ঘনমিটার এএসি ব্লক/প্যানেল দৈনিক উৎপাদনের উদ্দেশ্যে এএসি প্ল্যান্ট নির্মাণ, সরবরাহ, স্থাপন, ট্রায়াল রান এবং উৎপাদন” প্রকল্প; (ঘ) “বেসরকারি খাতের সঙ্গে যৌথভাবে পরিচালিত ভেরিফিকেশন সার্ভের আওতায় ৮০০ কেভিএ বৈদ্যুতিক সাব-স্টেশন এবং ১৫০ কেভিএ ইমার্জেন্সি জেনারেটর স্থাপন” প্রকল্প, যা “নন-ফায়ার্ড সলিডিফিকেশন ব্রিক ম্যানুফ্যাকচারিং প্রসেসে জাপানি প্রযুক্তির প্রচার” প্রকল্প এর প্রাক্কলন, ব্রাদ্ধপত্র, দরপত্র বিজ্ঞপ্তি, প্রাপ্ত দরপ্রস্তাবসমূহ (সংযুক্তিসহ), দরপত্র উন্মুক্তকরণ শীট, দরপত্র মূল্যায়ন/কারিগরি কমিটির প্রতিবেদন, তুলনামূলক বিবরণী, নোটিফিকেশন অব অ্যাওয়ার্ড, চুক্তিপত্র, কার্যাদেশ, রিসিভিং কমিটির প্রতিবেদন, পরিশোধিত বিল-ভাউচার, চেক, চেক বিলি রেজিস্টার ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক রেকর্ডপত্রের ছায়ালিপি।

২। বেসরকারি খাতের সঙ্গে যৌথভাবে পরিচালিত ভেরিফিকেশন সার্ভে নন-ফায়ার্ড সলিডিফিকেশন ব্রিক ম্যানুফ্যাকচারিং প্রসেসে জাপানি প্রযুক্তি প্রচার অটোক্লেভড অ্যারেটেড কনক্রিট (এএসি) ব্লক/ব্রিক, বালু-সিমেন্ট হোলো ব্লক, এক্সটেন্ডেড পলিস্টাইরিন প্রকল্পের স্থানীয় পরামর্শক ব্যয় এর প্রাক্কলন, আরডিপিপি, ইওআই, নিয়োগ সংক্রান্ত রেকর্ডপত্র, সম্মানীর আবেদন, পরিশোধিত বিল ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক রেকর্ডপত্রের ছায়ালিপি।

এছাড়াও ২০২২ সালের ১৯ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক-৩ আব্দুল্লাহ আল খায়রুম স্বাক্ষরিত একটি চিঠি গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর পাঠানো হয়। চিঠিতে গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী ও এইচবিআরআই এর প্রাক্তন মহাপরিচালক মোহাম্মদ শামীম আকতারকে লেবাসধারী ভণ্ডপীর ও দুর্নীতিবাজ আখ্যায়িত করা হয় এবং শামীম আকতারের দুর্নীতির বিষয়ে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে গৃহীত ব্যবস্থা সম্পর্কে কার্যালয়কে অবহিত করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশের প্রেক্ষিতে গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আখতারের অনিয়ম-দুর্নীতির তদন্তে ৩ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটিও গঠন করে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। ২০২৩ সালের ২ জানুয়ারি এই কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটিকে পরবর্তী ১৫ কর্ম দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে পীর সাহেবের কেরামতির কারণে ওই প্রতিবেদনটি আর আলোর মুখ দেখেনি।

গণপূর্তের প্রধান প্রকৌশলীর পদে আসার আগে শামীম আখতার ছিলেন হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এইচবিআরআই) মহাপরিচালকের দায়িত্বে। সেখানে কোনো কোনোক্ষেত্রে প্রকল্প পাস না করে, কখনো টেন্ডার হওয়ার আগে কোটি কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ পেয়ে যান মুরিদ ঠিকাদাররা। মাসে লাখ টাকা বেতনে প্রকল্পের পরামর্শক, কর্মকর্তা-প্রকৌশলী থেকে বাবুর্চি-মালির মতো পদগুলোয় পান নিয়োগ। মুরিদদের সুবিধা দেয়ার ক্ষেত্রে তৎকালীন মহাপরিচালকের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়েছে এইচবিআরআই থেকে একটি তদন্ত কমিটি। মুরিদদের ঠিকাদারিসহ নানা সুযোগ-সুবিধা প্রদানসহ আর্থিক ও প্রশাসনিক অনিয়মের সুনির্দিষ্ট ১১টি অভিযোগ নিয়ে সম্প্রতি গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে জমা পড়ে এইচবিআরআইয়ের এ তদন্ত প্রতিবেদন।

২০১৯ সালের এপ্রিলে ‘নন ফায়ার ব্রিক প্ল্যান্ট’নির্মাণের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কিংডম বিল্ডার্সের সঙ্গে চুক্তি করে এইচবিআরআই। আইন অনুযায়ী, ১০ থেকে ৫০ কোটি টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ প্রকল্পের জন্য পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হয়। এক্ষেত্রে তা করা হয়নি। এমনকি এ ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়নে এইচবিআরআইয়ের বাজেটও নেই। তার পরও ‘নন ফায়ার ব্রিক প্ল্যান্ট’নির্মাণের প্রায় ১৪ কোটি টাকার কাজ কিংডম বিল্ডার্সকে দেন সংস্থাটির তৎকালীন মহাপরিচালক। কিংডম বিল্ডার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ নুসরত হোসেনকে পীর সাহেবের ঘনিষ্ঠ মুরিদ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে এইচবিআরআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে। কিংডম বিল্ডার্স, কিংডম হাউজিং, কিংডম কনস্ট্রাকশনসহ একাধিক প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার নুসরত হোসেন।

২০১৮-১৯ অর্থবছরে এইচবিআরআইয়ের গবেষণা খাতে ২ কোটি ৮০ লাখ টাকা বরাদ্দ ছিল। এ টাকা থেকে ১ কোটি ১১ লাখ টাকায় ‘অটোমেটিক ব্লক মেকিং প্ল্যান্ট’স্থাপনের কাজও পায় কিংডম বিল্ডার্স। এ ধরনের কাজ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সংস্থার অভিজ্ঞ ব্যক্তি বা প্রকৌশলীদের নিয়ে কমিটি গঠনের নিয়ম থাকলেও সে ধরনের কোনো কমিটিই হয়নি। অন্যদিকে একই প্ল্যান্টের শেড নির্মাণের জন্য ৭০ লাখ টাকার কাজে কোনো ধরনের চুক্তি ছাড়াই কিংডম বিল্ডার্সকে নিযুক্ত করা হয়। অর্ধকোটি টাকায় একই কাজ আরেক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অর্থি এন্টারপ্রাইজকে দেয়া হয়, যার মালিক আল আমীনকেও পীর সাহেবের মুরিদ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে এইচবিআরআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে।

দৈনিক ২০ ঘনমিটার ব্লক উৎপাদন শুরু করার লক্ষ্যে ‘এসিসি প্ল্যান্ট’উন্নয়নকাজে ২০১৯ সালে ব্যয় হয়েছে প্রায় ২ কোটি টাকা। কাজটি করে কিংডম বিল্ডার্স, অর্থি এন্টারপ্রাইজ ও জামান বিল্ডার্স।

একই সময়ে প্রায় ১ কোটি টাকায় এইচবিআরআইয়ে বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র নির্মাণের কাজ পায় কিংডম বিল্ডার্স। অন্যদিকে দরপত্রের আগেই অফিস সংস্কারের কাজ শুরু করে দেয় অর্থি এন্টারপ্রাইজ।

এইচবিআরআইয়ের মহাপরিচালক থাকাকালে পীর সাহেবের আরেক ঘনিষ্ঠ মুরিদ ছিলেন মোহাম্মদ ইয়ামীন। ক্যামিকন গ্রুপ নামের একটি কেমিক্যাল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের মালিক তিনি। প্রতি মাসে ১ লাখ টাকা বেতনে ইয়ামীনকে স্যান্ড সিমেন্ট ব্লক তৈরির কাজে পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ দেন এইচবিআরআইয়ের তৎকালীন মহাপরিচালক মোহাম্মদ শামীম আখতার। কোনো টেন্ডার ছাড়াই আড়াই কোটি টাকার কাজ দেন ইয়ামীনকে। নিযুক্ত করেন গবেষণার কাজে। এইচবিআরআইয়ের টাকায় গবেষণা করে উৎপাদন করা কেমিক্যাল এইচবিআরআইয়ের কাছেই বিক্রি করেছেন ইয়ামীন।

মোহাম্মদ শামীম আখতারের এসব অনিয়ম-দনর্িীতির বিষয়ে এইচবিআরআই ও দুর্নীতি দমন কমিশনে একাধিক চিঠিও দিয়েছেন এইচবিআরআইয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

এইচবিআরআই এর এসব অনিয়ম-দুর্নীতি সংক্রান্ত বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন (৩৭৩ পাতা) গণপুর্ত মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে এসব দুর্নীতির বিরুদ্ধে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়নি। এমন কি দুদককে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ বা নির্দেশও দেয়নি। ফলে বাধ্য হয়ে ক্ষতিগ্রস্থরা দুদক চেয়ারম্যান বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সর্বশেষ ৬৬৬ এ কল করে বিষয়টি তদন্তের দাবী জানান।

এরআগেও গত ৩ নভেম্বর ২০২২ তদপ্রেক্ষিতেই দুদকের এনফোর্সমেন্ট ইউনিটের স্মারক নং ০০.০১.০০০০.১০৯.২৮.০০১.২২.১৬৬৪ মোতাবেক বিষয়টি তদন্তের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য শামীম আখতারের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। পরে তাকে ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি উত্তর দেননি।  স্টাফ অফিসার এর সাথেও যোগাযোগ করা হলেও তিনি উত্তর দেননি।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম
বাড়িভাড়া ৫০০ টাকা বৃদ্ধি করে প্রজ্ঞাপন জারি শিক্ষকদের সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড মামলার পথেই হাঁটছে বকশীগঞ্জের সাংবাদিক নাদিম হত্যা মামলা রাজউকের ইমারত পরিদর্শক মনিরুজ্জামান ৭ বছরেই শত কোটি টাকার মালিক শাহজালাল বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ নতুন ইতিহাস গড়লেন দীপিকা পাড়ুকোন বাংলাদেশকে রাজস্ব ও আর্থিক খাত সংস্কার অব্যাহত রাখতে হবে ডেঙ্গুতে আরও ১ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৬১৯ ৩০ কোটি বছর আগে মহাকাশ থেকে ছুটে এসেছিল একটি বিশাল পাথর কুমিল্লায় হত্যার পর নারীর লাশ বেডশিট দিয়ে মুড়িয়ে খাটের নিচে রেখে গেল দুর্বৃত্তরা দীর্ঘদিন পর গাজায় একসঙ্গে জুমার নামাজ আদায় করলেন হাজারো ফিলিস্তিনি