প্রথমবারের মতো মক্কার বাইরে পবিত্র কাবার সম্পূর্ণ কিসওয়া প্রদর্শন

অনলাইন ডেস্কঃ

ইসলামিক সংস্কৃতি এবং শিল্পের সমৃদ্ধ ঐতিহ্যকে উদযাপন করার জন্য, ২০২৫ সালের ইসলামিক আর্টস বিয়নালে একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ গ্রহণ করতে চলেছে। প্রথমবারের মতো, পবিত্র কাবার সম্পূর্ণ কিসওয়া(কাবা ঘরকে আবৃত করে রাখার বিশেষ কাপড়) মক্কা শহরের বাইরে প্রদর্শিত হবে।সউদী আরবের জেদ্দায় এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হচ্ছে।

দিরিয়াহ বিয়নালে ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, “অ্যান্ড অল দ্যাট ইজ ইন বিটুইন” (And all that is in between) শিরোনামে এই দ্বিতীয় সংস্করণের বিয়নালে ২৫ জানুয়ারি থেকে ২৫ মে ২০২৫ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। এটি জেদ্দার কিং আবদুল আজিজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পশ্চিম হজ টার্মিনালে আয়োজিত হবে। এই প্রদর্শনীতে পবিত্র কাবার কিসওয়া প্রথমবারের মতো মক্কার বাইরে প্রদর্শিত হবে, যা বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের জন্য গভীর অর্থবহ এবং তাৎপর্যপূর্ণ।

কিসওয়া প্রদর্শনের এই উদ্যোগটি একটি বিশেষ সময়ে হচ্ছে, যখন পবিত্র কাবার কিসওয়া ফ্যাক্টরি (কিং আবদুল আজিজ কমপ্লেক্স)-এর প্রতিষ্ঠার প্রথম হিজরি শতবর্ষ উদযাপিত হচ্ছে। এই ফ্যাক্টরি ১৩৪৬ হিজরি (১৯২৭ সাল) থেকে কিসওয়া তৈরির দায়িত্ব পালন করছে।

কিসওয়া হলো সেই বিশেষ কাপড়, যা পবিত্র কাবাকে আবৃত করে রাখা হয়। প্রতি বছর নতুন কিসওয়া তৈরি করা হয়, এবং এবারের বিয়নালেতে গত বছরের কাবাকে আবৃত করা কিসওয়া প্রদর্শিত হবে। সিল্ক, স্বর্ণ এবং রূপার সূক্ষ্ম সুতায় বোনা কিসওয়ার নকশা ও অলংকরণ ইসলামি শিল্পের সেরা সৃষ্টির উদাহরণ।

প্রদর্শনীতে কিসওয়ার ইতিহাস, এর নির্মাণশৈলী এবং কারিগরি দক্ষতাকে তুলে ধরা হবে। এটি দর্শকদের সামনে কিসওয়ার সূক্ষ্ম বুনন এবং সূচিকর্মের সৌন্দর্য তুলে ধরবে। এ ছাড়াও, ইসলামিক আর্টস বেনালে ২০২৫-এ ঐতিহাসিক ইসলামিক নিদর্শন এবং সমসাময়িক শিল্পকর্মের একটি বিশাল সংগ্রহ প্রদর্শিত হবে, যা ইসলামি সভ্যতার সৃজনশীলতার গভীরতা সম্পর্কে অনুপ্রাণিত করবে।

২০২৩ সালের প্রথম ইসলামিক আর্টস বিয়নালে, “আওয়াল বায়ত” (প্রথম ঘর), ৬ লক্ষাধিক দর্শকের মনোযোগ আকর্ষণ করেছিল। এই বছর কিসওয়ার প্রদর্শনী বিয়নালেকে আরও স্মরণীয় করবে।

ইসলামিক শিল্প(আর্টস) বিয়নালে ২০২৫ শুধুমাত্র শিল্প ও ঐতিহ্য প্রদর্শনের সুযোগ নয়, বরং এটি ইসলামি সংস্কৃতির প্রতি গর্ব জাগ্রত করার একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ। সউদী আরবের পবিত্র দুই মসজিদের রক্ষণাবেক্ষণ এবং ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ করার দায়িত্ব প্রতিফলিত করতে এই প্রদর্শনী একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। মে মাসে বিয়নালে শেষ হওয়ার পর, কিসওয়া আবার কিসওয়া ফ্যাক্টরির জিম্মায় ফিরিয়ে দেওয়া হবে।

 

সবা:স:জু- ৭৫০/২৫

অবৈধপথে শত কোটি টাকার সম্পদের মালিক: রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির পরিচালকের বিরুদ্ধে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ: তদন্ত কমিটি গঠন!

স্টাফ রিপোর্টার:

বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির জনবল নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সোসাইটির একজন পরিচালক তার ইমেইল থেকে এই প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে প্রমান পাওয়াগেছে। ঘটনাটি বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির সদর দপ্তরে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানাগেছে,গত ১২ মে ২০২৪ ইং তারিখে সোসাইটির ডিসিআরএম বিভাগের জিআরআইপি প্রকল্পের স্কিল ডেভলপমেন্ট অফিসার পদে লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। মোট ৮ জন পরীক্ষার্থী লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন। পরীক্ষা চলাকালে পরীক্ষায় অংশ গ্রহনকারী পরীক্ষার্থী সৈয়দ আতাউর রহমানের পরীক্ষার হলে বসে প্রশ্ন ও পুর্বে তৈরীকৃত উত্তরপত্র বের করে পরীক্ষার খাতায় উত্তর লিখতে থাকেন। এ সময় পরীক্ষার দায়িত্বরত কর্মকর্তা উপ-মহাসচিব সুলতান আহমেদ ও সহকারী পরিচালক মিস ফারজানা আক্তার ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে প্রশ্ন ও উত্তরপত্র জব্দ করেন।
জব্দকৃত প্রশ্নপত্রটি কমিটির আহবায়কের কাছে জমা দিলে তিনি দেখতে পান যে, সোসাইটির পরিচালক ডিসিআরএম ইমাম জাফর শিকদার এর ইমেইল থেকে সেটি উক্ত পরীক্ষার্থীর ইমেইলে প্রেরন করা হয়েছে এবং প্রশ্নের সাথে জব্দকৃত প্রশ্নের শতভাগ মিল রয়েছে। উক্ত ঘটনা তদন্তের জন্য ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা হলেন: মো: মাহাবুবার রহমান তালুকদার, আহবায়ক। মুন্সী কামরুজ্জামান কাজল,সদস্য। এডভোকেট সোহানা তাহমিনা,সদস্য। আলহাজ¦ গাজী মোজাম্মেল হক,সদস্য। এবং মো: তৌহিদুর রহমান,সদস্য।
এই কমিটিকে ঘটনাটি তদন্ত করে একটি সুপারিশ সহ তদন্ত প্রতিবেদন চেয়ারম্যানের দপ্তরে জমা দিতে বলা হয়েছে। সোসাইটির মহাসচিব কাজী শফিকুল আযম এর স্বাক্ষরে গত ১৪ ই মে ২০২৪ এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
এ দিকে অভিযুক্ত পরিচালক (যুব ও স্বেচ্ছাসেবক বিভাগ) ইমাম জাফর শিকদার সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে জানাগেছে তার গ্রামের বাড়ী বরিশাল জেলায়। তিনি বিএনপির সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরীর ঘনিষ্ট আত্মীয়। তিনি বরিশাল বিএল কলেজ শাখা ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন। সোসাইটির সবার কাছেই তিনি আপদমস্তক একজন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা হিসাবে স্বীকৃত। ৫ লাখ টাকার বিনিময়ে তিনি প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছেন বলে গুঞ্জন চলছে। এ ছাড়া ভুয়া বিল-ভাউচারে সোসাইটির প্রচুর টাকা তিনি আত্মসাত করেছেন বলে প্রচার আছে। তিনি সোসাইটির একজন প্রভাবশালী কর্মকর্তা। আজ প্রায় ২৫ বছর এই প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করছেন। এর আগে শেওন্তি নামে জাতীয় সদর দপ্তরের যুব প্রধান (নারী) চেয়রম্যান বরাবরে সেক্সচুয়াল হেরাজমেন্ট ও দুর্নীতির লিখিত অভিযোগ করেন।
তিনি বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটিতে দীর্ঘদিন যাবত বেনামে ঠিকাদারী ব্যবসা করছেন। তার ঠিকাদারী ২টি ফার্মের নাম প্রগ্রেসিভ ও ফারহান ইঞ্জিনিয়ারিং। সোসাইটিতে বেনামে ঠিকাদারী ব্যবসা, নিয়োগ ও টেন্ডার বাণিজ্য করে তিনি শত কোটি টাকা ও সম্পদের মালিক হয়েছেন এমন তথ্য পাওয়াগেছে। এ সব টাকায় তিনি কক্সবাজার,চট্রগ্রাম,ঢাকা ও বরিশালে বেশ কয়েকটি বাড়ী নির্মাণ ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। ঢাকায় তার আলীশান ফ্ল্যাট আছে। ২ খানা গাড়িও ক্রয় করেছেন। ২০২৫ সালের ডিসেম্বর মাসে তিনি অবসরে যাবেন বলে জানাগেছে।

বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির দেশপ্রেমিক কর্মকর্তা ও কর্মচারিরা এই পরিচালকের অপসারণ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়েছেন। একই সাথে তিনি কিভাবে শত কোটি টাকা ও সম্পদের মালিক হয়েছেন তা অনুসন্ধান ও তদন্ত করার জন্য দুদকের চেয়ারম্যানের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
এ সব বিষয়ে কথা বলার জন্য পরিচালক ইমাম জাফর শিকদার এর মোবাইল ফোনে কয়েকবার কল দিলেও তিনি কল রিসিভ করেন নি।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম