
মো. আনোয়ার হোসেন,মেঘনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লা মেঘনা উপজেলার সিংহবাগ সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় এ রাস্তাগুলো দিয়ে চরম ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে বিভিন্ন ধরণের বৈধ-অবৈধ ভারী গাড়ি। ভারী যান চলাচলের কারণে সড়কের বিভিন্ন স্থান দেবে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমসহ বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় একাধিকবার সংবাদ প্রকাশিত হলেও ব্যবস্থা নেয়নি স্থানীয় প্রশাসন। প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের অবহেলার কারণে চরম ভোগান্তিতে মেঘনা উপজেলার বাসিন্দারা।
সরেজমিনে দেখা যায়, মেঘনার কয়েকটি অকেজো রাস্তার মধ্যে মেঘনা উপজেলা থেকে সাড়ে ৯ কিলোমিটার ভাটেরচর নতুন সড়ক পর্যন্ত যে রাস্তাটি রয়েছে, এর মধ্যে ৮ কিলোমিটারই বেহাল দশা। এমনকি সড়কের পিচ, সুরকি, ইট উঠে গিয়ে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি হলেই এসব গর্তে পানি আটকে থাকে। মাঝেমধ্যে ছোটখাটো দুর্ঘটনাও ঘটে যায়। এছাড়া, বৃষ্টির পানিতে এসব গর্তে পানি জমে কাদামাটিতে পরিণত হয় বলেও অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পথচারী ও গাড়ির যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে উপনীত হয়েছে। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, ভ্যান, ইঞ্জিনচালিত গাড়ি ও ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করছে এই সড়ক দিয়ে। প্রতিদিন প্রায় ছয়টি থানার (মেঘনা, হোমনা, তিতাস, বাঞ্ছারামপুর, চান্দিনা, নবীনগর) শত শত গাড়ি চলছে। তবে দুর্ঘটনা এড়াতে গাড়ি ধীরগতিতে চালাতে হয়।
এসময় কয়েকজন অটো রিকশাচালকের সঙ্গে এই প্রতিনিধির সঙ্গে কথা হয়। তারা জানান, রাস্তায় অনেক খানাখন্দ থাকায় প্রতিদিনই ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। এই সড়কে যাতায়াত করতে গিয়ে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছে। অনেক সময় রিকশায় বা অটোরিকশায় রোগী নিয়ে হাসপাতালে গেলে তাদের অবস্থা আরো করুণ হয়ে পড়ে। ভাঙাচোরা রাস্তায় গাড়ির নাটবল্টু খুলে যাওয়া এই এলাকার নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। ফলে সারাদিন ব্যাটারি চালিত অটো রিকশা চালিয়ে যা রোজগার করি, তার একটা অংশ মেরামতেই শেষ হয়ে যায়। ২০ মিনিটের রাস্তা যেতে সময় লাগে ৪০-৪৫ মিনিট।
উপজেলার প্রকৌশলী মো. অহিদুল ইসলাম সিকদার বলেন, চলতি বছরের গত মে মাসে উপজেলার বাসস্ট্যান্ড থেকে উমরাকান্দা ব্রীজ পর্যন্ত রাস্তাটি সংস্কারের জন্য আবেদন করেছি ১৫-৩০ দিনের মধ্যে টেন্ডারটি পাস হবে। ওমরাকান্দা ব্রিজ থেকে লুটেরচর ব্রিজ পর্যন্ত খুব শীঘ্রই আবেদন করবো। আশা করি, এটাও দ্রুত পাস হয়ে যাবে। লুটেরচর থেকে ভাটেরচর নতুন রাস্তা পর্যন্ত রোডস অ্যান্ড হাইওয়ে। এটা আমাদের আওতাধীন নয়।
উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো.সাইফুল্লাহ মিয়া রতন শিকদার বলেন, গ্রুপ অব কোম্পানির সিমেন্টের ওভার লোড গাড়ি সহ বিভিন্ন গাড়ি এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করে। দাউদকান্দি টুল ফি ফাঁকি দেওয়ার জন্য ড্রাইভাররা ঐদিক দিয়ে না গিয়ে সড়কটি দিয়ে চলাচল করে। যার ফলে রাস্তার আজ বেহাল দশা। প্রতিদিনই দূর্ঘটনা হচ্ছে। এ বিষয়ে আমি জেলা সমন্বয় কমিটিতে উত্থাপন করেছি কিন্তু কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইফতেখার আলী বলেন, বাসস্ট্যান্ড থেকে ওমরাকান্দা ব্রিজ পর্যন্ত টেন্ডারটি পাস হয়ে যাবে। ওমরাকান্দা ব্রীজ থেকে লুটেরচর ব্রিজ পর্যন্ত যে বাকি অংশটুকু আছে, ইস্টিমেট পাঠালে সেটাও একসঙ্গে হয়ে যাবে।