ভোলায় দুই সাংবাদিকদের উপর হামলার প্রতিবা‌দে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ভোলা :
ভোলায় দুই সাংবা‌দিকদের উপর হামলার ঘটনার দ্রুত হামলাকারীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শা‌স্তির দাবী‌তে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বেলা সা‌ড়ে ১১ টার দি‌কে ভোলা প্রেসক্লা‌বের সাম‌নে ভোলা প্রেসক্লাব, ভোলা জেলা রির্পোটার ইউনিটি, দৈ‌নিক ভোলা টাইমস্ প‌রিবার ও ভোলা জেলা সংবাদপত্র হর্কাস ইউনিয়নের ব‌্যানা‌রে প্রায় ঘন্টাব‌্যাপী এই কর্মসূ‌চি পালন করা হয়।

এই সময় বক্তারা ব‌লেন, অভিযুক্ত কালিমুল্লাহ বোরহানউদ্দিন উপজেলার একটি ইউনিয়ন পরিষদের সচিব হওয়ার সুবাদে দীর্ঘদিন যাবত ভোলার বিভিন্ন খাদ্য গুদামের অসাধু কর্তাদের ও ইউনিয়ন পরিষদের কতিপয় চেয়ারম্যানদের যোগসাজশে সরকারী চাল কম দামে ক্রয় করে বস্তা পাল্টিয়ে বেশি দামে ভোলা খালপারের অবস্থিত নিজ দোকানে বিক্রি করার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও কয়েক বছর আগে সরকারী খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর চাল সংগ্রহ করে অন্য জেলায় পাঠানোর সময় জরিমানাও করা হয় কালিমুল্লাহকে। কিন্তু কোন এক অদৃশ্য ক্ষমতার কারনে বার বার ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যান ইউ’পি সচিব কালিমুল্লাহ।
এসময় বক্তারা প্রশাসনের দৃস্টি আকর্ষণ করে বলেন, আগামী ১২ঘন্টার মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় না আনলে সাংবাদিকরা প্রশাসনের সকল পজেটিভ নিউজ বর্জন করে অনিয়মের নিউজ প্রচার করবে।
এঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জা‌নি‌য়ে হামলাকারী দোষী‌দের দ্রুত গ্রেফতার ক‌রে দৃষ্টান্তমূলক শা‌স্তির দাবী ক‌রেন বক্তারা।
উলেখ্য, ভোলার আগার‌পোল এলাকার বা‌সিন্দা এবং খাল পাড়ের ব‌্যবসায়ী মোঃ কালীমুল্লাহ, মোঃ হাবিবুল্লাহ খোকনের সা‌থে তা‌দের আরেক ভাই অ‌লিউল্লাহর পৈত্রিক টাকা-পয়সা ও ব‌্যবসা প্রতিষ্ঠান নি‌য়ে দ্বন্দ্ব চ‌লে আস‌ছিল। এঘটনার প‌রি‌প্রেক্ষি‌তে অ‌লিউল্লাহ নিরুপায় হয়ে খাল পাড়া‌রের ব‌্যবসা প্রতিষ্ঠা‌নে তালা ঝু‌লি‌য়ে দেন। প‌রে মঙ্গলবার সকা‌লের দি‌কে কালীমুল্লাহ ও মোঃ হাবিবুল্লাহ খোকন সন্ত্রাসী দলবল নি‌য়ে তালা ভে‌ঙে ব‌্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল ও মালামাল নেওয়া চেষ্টার করার সময় সাংবা‌দিকরা ছ‌বি ও ভি‌ডিও কর‌তে গে‌লে কা‌লিমুল্লাহ, হা‌বিবুল্লাহ খোকন ও কামাল হো‌সে‌নসহ তা‌দের দলবল দৈ‌নিক ভোলা টাইমস্ এর প্রধান সম্পাদক মো: আলী জিন্নাহ রাজীব ও এক‌টি অনলাইন প‌ত্রিকার সাংবা‌দিক বিজয় বাইনের উপর চড়াও হ‌য়ে হামলা চালি‌য়ে আহত ক‌রেন। হামলার ঘটনায় চারজনের নাম উল্লেখ করে ২৫ জনের বিরুদ্ধে ভোলা সদর মডেল থানায় মামলা হলেও এখনো কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

মানববন্ধনে বক্তব‌্য রা‌খেন, ভোলার সি‌নিয়র সাংবা‌দিক মোকা‌ম্মেল হক মিলন, দৈ‌নিক আমার দেশ প‌ত্রিকার সাংবা‌দিক মো: ইউনুছ শরীফ, বাসস এর প্রতি‌নি‌ধি আল আমিন শাহ‌রিয়ার, ভোলাটাইমস্ এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক যুগান্তর ও জি‌টি‌ভির প্রতি‌নি‌ধি এম হেলাল উদ্দিন, শিমুল চৌধুরী, চ্যানেল ২৪ প্রতিনিধি আদিল হোসেন তপু, এশিয়া টিভি এন আলম, এসএ টিভি প্রতিনিধি বিল্লাল হোসেন, গ্লোবাল টিভির অনিক আহমেদ, এনটিভির রিয়াজ,সাংবাদিক মনিরুল ইসলাম,মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম আকাশ, আজকের পত্রিকা জেলা প্রতিনিধি, মোহাম্মদ মনসুর আলম চ্যানেল এস, জুয়েল সাহা, যমুনা টিভি, লিটন শেখ মানববন্ধনটি সঞ্চালনায় ছিলেন তুহিন খন্দকার সভাপতি অনলাইন প্রেস ক্লাব।

মির্জাগঞ্জে হতদরিদ্রের চাল বিতরণে চেয়ারম্যান লাবলুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ!

মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী) প্রতিনিধিঃ

বিঘা বিঘা জমি,পাকা পাকা ঘর বাড়ি,লাখ লাখ টাকার সম্পাদের মালিক,স্বচ্ছল ব্যবসায়ীসহ বিত্তবানরা পাচ্ছেন মির্জাগঞ্জে হতদরিদ্রদের জন্য বরাদ্দকৃত খাদ্যবন্ধব কর্মসূচির চাল। আছে অন্য উপজেলার বাসিন্দার নামও। এসবই হচ্ছে মির্জাগঞ্জের খাদ্যবন্ধব কর্মসূচির তালিকায়। এছাড়াও চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের স্বজনদের নামে পরিপূর্ণ করা হয়েছে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির তালিকা। তালিকায় নাম এক ব্যক্তির, অথচ চাল তুলছেন অন্য ব্যক্তিরা। এ উপজেলার খাদ্যবন্ধব কর্মসূচির তালিকা দেখলে মনে হবে এখানে অনিয়মই যেন নিয়মে পরিনত হয়েছে। হতদরিদ্রদের চাল বিতরনে এমনই অভিযোগ উঠেছে উপজেলার মাধবখালী ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে। প্রকৃত দরিদ্ররা বঞ্চিত হচ্ছে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির সুবিধা থেকে। তবে ওই সকল জনপ্রতিনিধিরা সকল অভিযোগ মিথ্যা বলে অস্বীকার করছেন ।

অনুসন্ধ্যানে জানা যায়, উপজেলার মাধবখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাজী মো. মিজানুর রহমান লাভলু তার ইউনিয়নে হতোদরিদ্রদের তালিকায় নাম অন্তর্ভূক্ত করার জন্য, প্রতি কার্ড বাবদ তিন থেকে চার হাজার টাকা আদায় করেছেন। আবার টাকা দিয়েও তালিকায় নাম মেলেনি অনেকের। তবে টাকা নেওয়ার বিষয়টা অস্বিকার করেছেন চেয়ারম্যান লাভলু। আমাদের হাতে আসা কর্মসূচির তালিকায় থাকা ওইসব হতদরিদ্রের খোঁজ নিতে গেলে দেখা যায়, মাধবখালী ইউনিয়নের রামপুর গ্রামের মো. সুমন রেজা তার নাম রয়েছে হতদরিদ্রের তালিকায়, কিন্তু তিনি থাকেন তার নিজের নির্মাণ করা দোতলা পাকা বাড়িতে। রামপুর গ্রামের বাসিন্দা মোসাঃ নাহিদা সুলতানার নামও রয়েছে এ তালিকায় খোঁজ নিয়ে দেখা যায় নাহিদার স্বামী চাকরিজীবি থাকেন নিজেদের পাকা বাড়িতে। এছাড়াও তালিকায় নাম রয়েছে পার্শ্ববর্তী দুমকী উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা মাকসুদার,যার ভোটার আইডি কার্ড সহ সকল ঠিকানাই দুমকীর উপজেলায়।

এদিকে মাধবখালী ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. উজ্জল মৃধার স্ত্রী লাকি আক্তার ও তার আপন ভাই সাকিব ইসলামের নামও রয়েছে হতদরিদ্রদের চালের তালিকায়। ইউপি চেয়ারম্যান এর চাচাতো ভাই কাজি আবু জাফরের নাম রয়েছে তালিকায়। খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, তিনি বিপুল অর্থ সম্পদের মালিক। এতালিকায় রয়েছে চেয়ারম্যানের বোন নাসিমা আলম ও শাহিনা বেগমের নামও। চেয়ারম্যানের আরেক স্বজন পূর্ব চৈতা গ্রামের বাসিন্দা মো. সোহেল মৃধা নামক এক ব্যবসায়ীর নামও রয়েছে তালিকায়। বাজিতা গ্রামের বাসিন্দা মো.মোসলেম আলী ও সাজ্জাল যার বিপুল পরিমানে জমিজমাসহ পাকা বাড়ির মালিক এই একই ঘরের বাসিন্দা পিতা পুত্রের নামও রয়েছে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির তালিকায়। তবে যাদের নাম তালিকায় রয়েছে তারা অনেকেই জানান, তাদের নাম শুধুমাত্র কাগজে কলমে আছে। এদের নামে চাল কারা তোলেন তারা অনেকেই জানেন না।

কার্ডধারী ভুক্তভোগী সাজ্জাল জানান,‘ প্রথম দিকে আমার নামে চাল পেলেও এখন চেয়ারম্যান কিংবা ডিলারের কাছে গেলে আপনার নামে চাল নেই বলে জানান। কারা এ চাল উত্তোলণ করেন তাও জানেন না। রামপুর গ্রামের বাসিন্দা মোসাঃ নাহিদা সুলতানা বলেন, আমার পাকা ঘর তাতে কি! চালের নামের জন্য চেয়ারম্যানকে ৪ হাজার টাকা দিতে হয়েছে এরপরই চালের নাম পেয়েছি।

এদিকে ওই ইউনিয়নের মনিকা রাণী নামের আরেক হতদরিদ্র জানান, আমি হতদরিদ্র হওয়া সত্তেও এক হাজার টাকা দিয়েও চালের নাম পাইনি, অথচ যারা ৪-৫ হাজার টাকা দিয়েছে তারা বিত্তবান হওয়ার পরও চাল পাচ্ছেন। এই ইউনিয়নে চালের নাম পেতে হলে চেয়ারম্যান মেম্বারদের স্বজন হতে হবে নয়তো মোটা অংকের ঘুস দিয়ে হতোদরিদ্রের তালিকায় না দিতে হবে।
এসকল অভিযোগের বিষয় কথা হয় মাধবখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাজী মো. মিজানুর রহমান লাভলুর সাথে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন আমার জানা মতে কোন বিত্তবানের নাম তালিকায় নাই। এছাড়া তালিকায় কোনো নাম দেওয়ার বিনিময়ে টাকা পয়সার লেনদেন হয়নি।

মির্জাগঞ্জ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা ডি এম শাহাদাৎ হোসেন, বলেন আমিও কিছুটা শুনেছি,যেহেতু এদের নামরে তালিকা ইতি পূর্বে অনলাইন হয়ে গেছে পরবর্তী সময়ে যখন কর্তনের সুযোগ হবে তখন তালিকা যাচাই করে বিত্তবানদের বাদ দেয়া হবে।

মির্জাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইয়েমা হাসান বলেন,‘ এই চাল হতদরিদ্রের জন্য এখানে বিত্তবানরা চাল পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। বিত্তবান হওয়া সত্তেও যাদের নাম তালিকায় রয়েছে, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে নির্বাচন হয়েছে এক বছর তিন মাস। এই সময়ে চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান লাবলু হয়েছেন টাকার কুমির। কাঠালতলী বাসস্টান্ড’র পশ্বিম পাশে দশকাঠা জমির উপরে নির্মান শুরু করেছেন বহুতল ভবন। টি আর খাবিখা কাবিটা সালিস বানিজ্য, জবর দখল, মাদক ব্যবসা সব সেক্টরই তার নিয়ন্ত্রনে। এসব সেক্টর থেকে মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা তিনি আয় করেন।

এ নিয়ে ক্ষ্ােভ প্রকাশ করেন মাদবখালী ইউনিয়ন আওয়ামীগ এর সভাপতি। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, চেয়ারম্যান ইউনিয়ান আওয়ামীলীগ এর সাধারন সম্পাদক ও এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তাই তার কাছে যেন সব অনিয়মই নিয়মে পরিনত হয়েছে। এসব বিষয়ে কথা বলার জন্য চেয়ারম্যান লাবলুর মোবাইল নম্বরে বারবার কল দিলেও তিনি কল রিসিভ করেন নি।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম