কুমিল্লায় বজ্রপাতে স্কুলছাত্রসহ ৪ জনের মৃত্যু

স্টাফ রিপোর্টার:

কুমিল্লার দুই উপজেলায় বজ্রপাতে স্কুলছাত্রসহ ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও একজন। তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে জেলার বরুড়া ও মুরাদনগর উপজেলায় পৃথক দুইটি ঘটনায় তাদের মৃত্যু হয়। সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানার কোরবানপুর পূর্ব পাড়া কবরস্থানের পাশের মাঠে ধান কাটার সময় বজ্রপাতে দুই কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।

তারা হলেন, উপজেলার দেওড়া গ্রামের জসিম উদ্দিন ভূইয়ার ছেলে জুয়েল ভূইয়া (৩৫) ও কোরবানপুর গ্রামের পশ্চিমপাড়া (কালীবাড়ি) এলাকার মৃত বীরচরণ দেবনাথের ছেলে নিখিল দেবনাথ (৬০)।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, ওই সময় তারা মাঠে কাজ করছিলেন। হঠাৎ বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি শফিকুল ইসলাম (মেম্বার) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বাঙ্গরা বাজার থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান বলেন, আমরা স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়েছি। তাদের পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। এদিকে একই দিনে দুপুরের দিকে বরুড়া উপজেলার খোশবাস ইউনিয়নের পয়ালগুচ্ছ গ্রামে বজ্রপাতে দুই স্কুলছাত্রের মৃত্যু হয়েছে।

নিহতরা হলেন, ওই এলাকার মৃত খোকন মিয়ার ছেলে ফাহাদ হোসেন (১৩) এবং একই এলাকার আব্দুল বারেক মিয়ার নাতি সায়মন হোসেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুজনই উপজেলার বড় হরিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ছিল। হালকা মেঘলা আবহাওয়ায় তারা মাঠে ঘুড়ি উড়াচ্ছিল। আকস্মিক বজ্রপাতে মারাত্মক আহত হলে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলেও চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। হঠাৎ এই মর্মান্তিক ঘটনায় দুই এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

বরুড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী নাজমুল হক বলেন, ২ কিশোর ঘুড়ি উড়াতে গিয়ে বজ্রপাতে মারা যাওয়ার খবর স্থানীয়ভাবে জানতে পেরেছি।

এবারও ঈদযাত্রায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানজটের শঙ্কা

স্টাফ রিপোর্টার:

ঈদের সময় ঘরমুখো মানুষের যানবাহনের ভিড়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল যমুনা সেতু মহাসড়কে সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজটের। প্রতিবছর ঈদে এই মহাসড়ক দিয়ে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের ২৪ জেলার লাখ লাখ মানুষ যাতায়াত করে। যা অন্যান্য সময়ের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি। এই মহাসড়কটিতে গাড়ির চাপও থাকে বেশি। তাই প্রতি বছরের মতো এবারও ঈদযাত্রায় যানজটের শঙ্কা করছেন পরিবহন সংশ্লিষ্টরা। তবে জনভোগান্তি কমাতে নানা উদ্যোগের কথা জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়ক। রাজধানী ঢাকার সঙ্গে সড়ক পথে উত্তরবঙ্গের একমাত্র যোগাযোগমাধ্যম এই মহাসড়কটি। এ কারণে প্রতিবছর ঈদে এই সড়কে যানবাহনের জটলা লাগে। শুধু ঢাকা-টাঙ্গাইল যমুনা সেতু মহাসড়কের টাঙ্গাইলের অংশ ৬৫ কিলোমিটার।

এদিকে নানা জটিলতায় গত আট বছরেও শেষ হয়নি এলেঙ্গা-হাটিকুমরুল-রংপুর মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ’ প্রকল্পের টাঙ্গাইল অংশের কাজ। আসন্ন ঈদেও মহাসড়কটিতে যানজটের আশঙ্কা করছেন পরিবহন চালকরা। তারা বলছেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি ও তদারকির অভাবে কাজের এ ধীরগতি। আর যাত্রীরা বলছেন, সঠিক তদারকি হলে প্রতিবছরই মহাসড়কে আমাদের যানজট নামে এ দুর্ভোগ পোহাতে হতো না। পুলিশ সুপার জানিয়েছে, যান চলাচল নির্বিঘ্ন রাখতে মহাসড়কে সাড়ে সাত শতাধিক পুলিশ সদস্য থাকবে। সেইসঙ্গে নেওয়া হবে বিভিন্ন পদক্ষেপ।

পুলিশের ব্যাপক প্রস্তুতির পরেও যানজটের আশঙ্কা করছেন এই সড়কে চলাচলকারী পরিবহন চালক ও সাধারণ যাত্রীরা। পরিবহন চালকরা বলছেন, ঈদ এলেই শুরু হয় তড়িঘড়ি কাজ। এতে গাড়ির গতি ঠিক থাকে না এবং দেবে যাওয়া রাস্তায় গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। আর মহাসড়কের চার লেনের কাজ শেষ হয়েছে এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত। এলেঙ্গা থেকে যমুনা সেতু পর্যন্ত চারলেনের কাজ করছে। এর ফলে মহাসড়কে যানজটের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

পুলিশ এবং সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, যমুনা সেতুতে টোল আদায়ের সফটওয়ারে সমস্যার কারণে যদি টোল আদায় দীর্ঘক্ষণ বন্ধ থাকে এবং সেতুর ওপর যদি দীর্ঘ সময় গাড়ি আটকা থাকে। অপরদিকে সেতুর পশ্চিমে সিরাজগঞ্জের অংশে গাড়ি ঠিকমতো পাস না হয় তাহলে যানজটের শঙ্কা রয়েছে। গত কয়েক ঈদেও সিরাজগঞ্জের অংশে গাড়ি ঠিকমতো পাস না হওয়ার কারণে সেতুতে টোল আদায় বন্ধ থাকে। এতে করে টাঙ্গাইলের অংশে দীর্ঘ যানজট হয়। প্রতি বছরই ঈদকে সামনে রেখে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীরা সড়কে লক্করঝক্কর এবং ফিটনেসবিহীন গাড়ি বের করেন। এসব গাড়ি হঠাৎ করেই মহাসড়কে বিকল হয়ে যায়। এতে উভয় পাশের গাড়ি থেমে পড়ে। এক পর্যায়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। অনেক সময় চালকের অদক্ষতা, সড়ক দুর্ঘটনা এবং গাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় যানজট হয়।

উত্তরবঙ্গগামী পরিবহনের বাসচালক রমজান মিয়া বলেন, রাস্তার কাজ ধীরগতিতে হচ্ছে। এলেঙ্গা থেকে যমুনা সেতু পর্যন্ত রাস্তার কাজ করা হচ্ছে। ঈদের ৫-৬ দিন আগে যদি কাজ শেষ না হয়। তাহলে এবারও মহাসড়কে যানজটের আশঙ্কা করছি। গতবছরও এই মহাসড়কে দিয়ে যানজট হয়েছিল। প্রতিবছরই আমাদের যানজটের কবলে পড়তে হয়।

আরেক বাসচালক রশীদ মিয়া বলেন, প্রতিবছর এলেঙ্গা থেকে যমুনা সেতু পর্যন্ত যানজটের সৃষ্টি হয়। এ সময় ফিটনেসবিহীন গাড়ি মহাসড়কে চলাচল করে। ফিটনেসবিহীন গাড়ির জন্য রাস্তায় অনেক দুর্ঘটনা ঘটে। যার ফলে রাস্তায় যানজটের সৃষ্টি হয়। যানজটমুক্ত রাখতে হলে পুলিশের ভূমিকা রাখতে হবে।

আবদুল মোনেম লিমিটেডের প্রজেক্ট ম্যানেজার রবিউল আওয়াল বলেন, ঈদের আগেই মহাসড়কের উত্তরঙ্গগামী পুরো লেন চলাচলের জন্য ছেড়ে দেওয়া হবে। আশা করছি আগামী ২৫ তারিখ থেকে এই লেনে যানবাহন চলাচল করতে পারবে। এলেঙ্গা থেকে সেতু পর্যন্ত মহাসড়কের ৪০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম