সেতু ভবনে আগুনের নেপথ্যে মাঈনুল

স্টাফ রিপোর্টার॥
তথ্য অবাক করার মতো । ৫ আগস্টের আগে মহাখালীর সেতু ভবন, ঢাকা সড়ক বিভাগ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর ও বনানি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের টোল প্লাজাসহ বিভিন্ন স্থাপনা আগুনে পুড়ে দেওয়ার নেপথ্যের নায়ক ছিল ওবায়দুল কাদের নিজে। আর তিনি এই কাজে সহযোগিতা নিয়েছেন সড়ক ভবনের কাদের সিন্ডিকেট সদস্যদের। ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশে তিতুমীর কলেজ ছাত্রলীগ স্থাপনাগুলোতে ব্যাপক ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালানো হয়। এই নাশকতার পুরো অর্থায়ন করেন মঈনুল হাসান। মহাখালী এলাকা জুড়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে ছাত্রলীগ নাশকতা চালালেও সেতু ভবনের ৫০ মিটার রেডিয়াসের মধ্যে অবস্থিত মঈনুল হাসানের সরকারি বাসভবন ছিলো সম্পূর্ণ সুরক্ষিত। এরকম পালা করেই ছাত্রলীগ-যুবলীগ পাহারা দিতো তার বাসভবন। মহাখালী জলখাবার মোড়ে এ নিয়ে ব্যাপক গুঞ্জন রয়েছে।

প্রকৌশলী আহাদের কাছ থেকে কি উপকৌটন নিল মাঈনুল :

মঈনুল হাসান সড়কের সর্বোচ্চ ধূর্তদের একজন। নিজের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি বাসভবনে কোন প্রকার টেন্ডার ছাড়াই ঠিকাদার ও ঢাকা সড়ক বিভাগের সদ্য বিদায়ী আওয়ামীপন্থি নির্বাহী প্রকৌশলী আহাদ উল্যার কাছ থেকে আড়াই কোটি টাকার আসবাবপত্র ও ইন্টেরিয়র কাজ করান। পুরস্কার হিসাবে নির্বাহী প্রকৌশলী আহাদ উল্যাহকে প্রধান প্রকৌশলী মঈনের একক হস্তক্ষেপে গত ৯ সেপ্টেম্বর সুনামগঞ্জ সড়ক বিভাগে পদায়ন করা হয়।
আর আহাদ উল্যাহর স্থানে স্থলাভিষিক্ত করা হয় সাবেক প্রেসিডেন্ট আব্দুল হামিদের পিএস অশোক বাবুর ভগ্নী জামাই রিতেশ বড়ুয়াকে। অথচ বিগত আওয়ামী সরকারের আমলে দীর্ঘদিন যাবত এই রিতেশ বড়ুয়া ছিল সাবেক প্রেসিডেন্ট আব্দুল হামিদের ছত্রছায়ায় কিশোরগঞ্জ সড়ক বিভাগে কর্মরত। তথাকথিত সড়ক সজ্জন সৈয়দ মঈনুল হাসান ময়মনসিংহ সড়ক জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্বরত অবস্থায় তার অধীন তৎকালীন কিশোরগঞ্জ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এই রিতেশ হয়ে উঠে বেপরোয়া ও লাগামহীন। তৎকালীন সময়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে তার বিরুদ্ধে কিশোরগঞ্জের প্রায় সকল সেতুতেই লোহার পাতের পরিবর্তে বাঁশ ব্যবহার করার প্রমাণসহ প্রতিবেদন এসেছিল। সেতুতে লোহার পরিবর্তে বাঁশ ব্যবহার করার প্রচলনের এ খবর দেশব্যাপী ব্যাপক চাঞ্চল্য ও সমালোচনার ঝড় উঠলেও সড়কের কথিত সজ্জন মঈনুল হাসান কে দেখা যায়নি তার বিরুদ্ধে কোনোপ্রকার ব্যবস্থা নিতে।

মাঈনুলের নেতৃত্বে বেপরোয়া আওয়ামীপন্থীরাঃ

সওজের এই প্রধান প্রকৌশলী মঈনুলের বিরুদ্ধে আছে আওয়ামীপন্থীদের পুনর্বাসন ও পদায়নের আরো ব্যাপক অভিযোগ। অর্ন্তর্বতী সরকারের নতুন সচিব ও উপদেষ্টাকে সংস্কারের কথা বলে আওয়ামীপন্থি কর্মকর্তাদের পদায়ন করছেন তিনি। পুনর্বাসন করছেন আওয়ামী দুর্দিনে পরীক্ষিত ছাত্রলীগ নেতাদের।একারণে ঠিকাদারসহ কর্মকর্তাদের মধ্যে তৈরি হয়েছে ব্যাপক অসন্তোষ।
৫ই আগস্ট পরবর্তী সময় তার নানা অপকর্মের হোতা তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ওরফে ম্যাক আজাদকে অপসারেনের ব্যাপক দাবি উঠলে, উলটো তাকে গত ৮ সেপ্টেম্বর ৩৫.০২২.০৬০.০০.০০.০০৭.২০০৯ (অংশ-১) ৪৯৩ নং স্মারকে একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রকিউরমেন্ট সার্কেল থেকে লোক দেখানো সরিয়ে দিলেও আরো বড় দায়িত্ব সড়ক গবেষণাগার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হিসাবে পদায়ন করা হয়। এই ম্যাক আজাদ ছিলেন সড়ক বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের সদ্য বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক। ১৫ই আগস্টসহ বঙ্গবন্ধু সম্পর্কিত যাবতীয় দিবসের সড়কের সকল প্রোগ্রামের অন্যতম আয়োজক তিনি। পছন্দের ঠিকাদারদের সুবিধা দিতে সাধারণ ঠিকাদারদেরকে কোণঠাসা করে রাখার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তিনি ছিলেন আওয়ামী যুগের মঈনুল সিন্ডিকেটের দুর্নীতি ও বদলি বাণিজ্যের অর্থ সংগ্রাহক। অনুসন্ধানে জানা যায়, এই সিন্ডিকেটের অন্যান্য সদস্য ইসকন সদস্য কুষ্টিয়া সড়ক সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বিকাশ চন্দ্র দাস, সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক ও বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাহী প্রকৌশলী অমিত কুমার চক্রবর্ত্তী, ইসকন সদস্য ও সাবেক পাবনা সড়ক সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সমীরণ রায়, ওবায়দুল কাদেরের দীর্ঘদিনের সহচর নোয়াখালী সড়ক সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী রানাপ্রিয় বড়ুয়া, প্রধান প্রকৌশলীর বন্ধু অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ড. আবদুল্লাহ-আল-মামুন।

এখনো সক্রিয় প্রকৌশলী মনির চক্র :

দুদকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত ও কয়েকমাস কারাবাস করা সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মনির পাঠানের দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তকালীন সময়েও অর্থ সংগ্রাহক ও তার ব্যাপক দুর্নীতির সহযোগী হিসেবে ম্যাক আজাদের নাম আসে। দুর্নীতির দায়ে পাঠান অভিযুক্ত হলেও প্রভাবশালী ম্যাক আজাদ থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাহিরে। তাকে গত ২০২৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর ০০.০১.০০০০.৫০১.০১.০১২.০২৩/৪৮৯৭৪ স্মারকে দুদকে হাজির হয়ে বক্তব্য প্রদান করতে বলা হলেও হাজির হননি তৎকালীন প্রকিউরমেন্ট সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ ওরফে ম্যাক আজাদ। তার পক্ষে ওবায়দুল কাদেরের রাজনৈতিক সচিব ও বর্তমানে খুনের মামলায় গ্রেপ্তারকৃত মতিন, বর্তমান প্রধান প্রকৌশলী মঈনুল (তৎকালীন রক্ষণাবেক্ষণের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী), গোপালগঞ্জ সড়ক সার্কেল এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোঃ জিকরুল হাসান দুদক চেয়ারম্যান এর সাথে সরাসরি দেখা করে উলটো দুদকের তদন্তকারী কর্মকর্তা সহকারী পরিচালককে অপসারণের জন্য চাপ দেন। কিন্তু ততদিনে ম্যাক আজাদের বক্তব্য ছাড়াই মনির পাঠানের তদন্ত শেষ হয়। নানা মহলে রিপোর্টটি চলে গেলে দুদকের সেই কর্মকর্তা সাময়িক রক্ষা পায়।
অন্যদিকে সড়ক গবেষণাগার থেকে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ আহসান হাবিবকে ম্যাক আজাদের স্থলাভিষিক্ত করে প্রকিউরমেন্ট সার্কেল এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হিসেবে পদায়ন করা হয়। যিনি দীর্ঘদিন পর্দার আড়ালে থেকে মঈনুলের নানা অনিয়মের মাস্টারমাইন্ড হিসাবে কাজ করে আসছে।

শেখ পরিবারের অর্থ পাচারকারী আসলামকে যেভাবে ঢাকায়, নেপথ্যে মাঈনুল :

এছাড়াও ৩৫.০০২.০৬০.০০.০০.০০৭.২০০৯ (অংশ-১) ৪৯২ নং স্মারকে আওয়ামীপন্থি সৈয়দ আসলাম আলিকে খুলনা জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী থেকে ঢাকা জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে পদায়ন করা হয়। অথচ নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবেই চরম ব্যর্থ ও দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত আসলাম একসময় পূর্ণ করতে পারেনি ঢাকা সড়ক বিভাগে তার তিন বছর মেয়াদ। আওয়ামী লীগ আমলে শেখ হেলাল ও শেখ তন্ময়ের অবৈধ অর্থ যশোরের বেনাপোল দিয়ে ভারতে পাচার করতো এই আসলাম আলী। দুর্নীতি ও বদলি বাণিজ্যের অবৈধ অর্থ বিদেশে পাচার সিন্ডিকেটের প্রধান ছিলেন ঝিনাইদহের বাসিন্দা এই আসলাম। এ-কাজে আসলামের সহযোগী ছিলেন দিনাজপুর সড়ক সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোঃ মাহাবুবুল আলম খান ও কুষ্টিয়া সড়ক সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এবং ইসকন সদস্য বিকাশ চন্দ্র দাস। মিস্টার ২% খ্যাত আসলাম ছিলেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা। লিয়াজোঁ রক্ষায় গণভবনের কাছাকাছি মোহাম্মদপুর থানা সংলগ্নে কোটি টাকায় কেনেন বিলাসবহুল ফ্ল্যাট। অভিযোগ আছে ৫ই আগস্ট পরবর্তী সময়ে শতাধিক আওয়ামী নেতাকর্মীদের ভারতে পালাতে সহযোগিতা করেন তিনি।
তবে নানা মহলের ব্যাপক চাপের মুখে বিগত ২২ জানুয়ারি উপসচিব মোহাম্মদ নুরুজ্জামান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপন নং ৩৫.০০.০০০০.০২২.১৯.০০৯.২৫-১৯ এর মাধ্যমে আসলাম আলিকে ঢাকা জোন থেকে সরিয়ে বৃহৎ প্রকল্প ঢাকা বাইপাসে পদায়ন করে চূড়ান্ত পূনবার্সন করা হয়। আর একই প্রজ্ঞাপনে আসলাম এর স্থলে ঢাকা জোনে পদায়ন করা হয়, ময়মনসিংহ জোনের অধীনে কর্মরত অবস্থায় প্রধান প্রকৌশলী মঈনুল এর দীর্ঘদিনের বিশ্বস্ত সহচর অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী এ.কে.এম আজাদ রহমানকে। অন্যদিকে আসলামকে স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছিল ছাত্রজীবনে কোনো রাজনীতির সাথে সরাসরি জড়িত না হয়েও ওবায়দুল কাদেরকে সর্বোচ্চ প্রটোকল দেওয়াদের মধ্যে অন্যতম ও আলোচিত কর্মকর্তা অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সবুজ উদ্দিন খানের স্থলে। বর্তমানে তাকে ন্যস্ত করা হয় সরাসরি প্রধান প্রকৌশলীর দপ্তর সংলগ্ন ছুটি, প্রশিক্ষণ ও প্রেষনজনিত সংরক্ষিত (সিভিল) পদে।
সওজের কোন কোন জোনে এখনো সক্রিয় মাঈনুল চক্র :
অভিযোগ আছে আওয়ামী সরকারের পুরো সময় জুড়ে সড়কের পক্ষ থেকে মন্ত্রী-এমপিদের সর্বোচ্চ প্রটোকল দেওয়ায় তৎপর ছিল সবুজ উদ্দিন খাঁন, চট্টগ্রাম জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আতাউর রহমান, ময়মনসিংহ জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী শওকত আলী, কুমিল্লা জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আবু হেনা মোঃ তারেক ইকবাল, সদ্য সিলেট জোনে সাবেক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ফজলে রব্বে, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী নুরে আলম, কুমিল্লা সড়ক সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জিয়াউল হায়দার ও ছাত্রজীবনে ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে যুক্ত থাকলেও বিগত ১৬ বছরে সর্বোচ্চ আওয়ামী সুবিধাভোগীদের অন্যতম সদ্য বিদায়ী রাজশাহী জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামান। যদিও গত ২২শে জানুয়ারি উপসচিব মোহাম্মদ নুরুজ্জামান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপন নং ৩৫.০০.০০০০.০২২.১৯.০০৯.২৫-১৯ এর মাধ্যমে তাকে পরিকল্পনা ও রক্ষণাবেক্ষণ উইং এর অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে পদায়ন করা হয়। যা সওজ এর প্রকৌশলীদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদ হিসেবে বিবেচিত।

সংস্কারে নামে ১০ কর্মকর্তাকে বলির পাঠা বানালো মাঈনুল চক্র ঃ

গত ৯ই সেপ্টেম্বর প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মঈনুল হাসান স্বাক্ষরিত ৩৫.০১.০০০০.১৫০.১৯.০২১.০৫ (১১ম খণ্ড) ৭১৪ নং স্মারকে প্রজ্ঞাপনে নির্বাহী প্রকৌশলী ড. মোহাম্মদ আহাদ উল্লাহ ছাড়াও একসঙ্গে ৯ জন নির্বাহী প্রকৌশলীকে তুলনামূলক ভাল পদে পদায়ন করে পুনর্বাসন করা হয়। অথচ তারা সকলেই আওয়ামী সুবিধাভোগী ও আর্শীবাদপুষ্টরা ছিলেন। অন্যদিক মঈনুলের ইচ্ছেমতো গত ৬ নভেম্বর ৩৫.০২২.০১৯.০০.০০.০০৯.২০০৩ (অংশ-১)-৬০৪ নং স্মারকে বলির পাঠা হিসেবে ১০ কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়। অথচ তাদের কেউই কোন রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। অর্ডারটিতে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোঃ জাহাঙ্গির আলম, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোঃ ফজলে রব্বে, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোঃ আনিসুজ্জামান মাসুদ, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী তপসি দাস ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোঃ আবু হেনা মোস্তফা কামালকে ওএসডি করা হয়। কিন্তু একই প্রজ্ঞাপনে আওয়ামী সুবিধাভোগী তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোঃ জাহাঙ্গির আলমকে খুলনা সড়ক সার্কেলে পদায়ন করলে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। একইসঙ্গে সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ শাখার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোঃ জিকরুল হাসানের একই পদে বহাল থাকার বিষয়টি সবচেয়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। তিনি ছিলেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও বর্তমান সড়ক বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের সভাপতি। একাধিকবার আইইবি নির্বাচনে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা সবুর-মঞ্জু প্যানেলে নির্বাচনে অংশ নেন। শেষ ২০২২-২৩ এর নির্বাচনে কাউন্সিল মেম্বার হিসেবে, তার ব্যালট নং ছিল ৫৫, ফেলো আইইবি সদস্য নং ৮১৯৯।
চতুর প্রধান প্রকৌশলীর মতই কিছু আওয়ামী সুবিধাভোগী কর্মকর্তা দফতরটিতে রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাহিরে। এর মধ্যে গোপালগঞ্জ সড়ক জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সাদেকুল ইসলামের বহাল তবিয়তে থাকা সড়ক সংশ্লিষ্টদের মধ্যে কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে। যিনি আওয়ামী লীগ আমলের দলীয় স্বার্থরক্ষায় শেখ সেলিম ও শেখ মারুফের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নে বিভিন্ন কর্মকর্তাকে গোপালগঞ্জে পদায়ন করতেন। তিনি ছিলেন সরাসরি শেখ পরিবারের লিয়াজু সিন্ডিকেটের প্রধান। এই সিন্ডিকেটের আরেক সদস্য ছিলেন রংপুর সড়ক জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সুরুজ মিয়া। শেখ হাসিনার শ্বশুরবাড়ি খ্যাত রংপুর জোনে পদায়নের পূর্বে সুরুজ মিয়া ছিলেন, গোপালগঞ্জ সড়ক জোনে। এভাবেই চলতো কখনো নিজ বাড়ি আবার নিজ বাড়ির পর শ্বশুরবাড়ি পদায়ন।
পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে একই পদে বহাল নিয়ে আরো ব্যাপকভাবে আলোচনায় রয়েছে ভুঁইয়া কনস্ট্রাকশন নামক কতিপয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অঘোষিত মালিক ও আওয়ামী আর্শীবাদপুষ্ট সিলেট সড়ক সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আহসান উদ্দিন আহমেদ, শেরপুর সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাকিরুল ইসলাম ও কুমিল্লা সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীতি চাকমার নাম। প্রকৌশলী আহসান দীর্ঘদিন ফরিদপুর সড়ক সার্কেলে কর্মরত থাকার পর, সরাসরি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের বিশেষ সুপারিশে স্থানান্তরিত হয়েছিল সিলেট সড়ক সার্কেলে।অন্যদিকে আওয়ামী মদদপুষ্ট ও অত্যন্ত আস্থাভাজন হওয়ায় প্রকৌশলী শাকিরুল চাকরিজীবনের অধিকাংশ সময় গোপালগঞ্জ সড়কে কর্মরত ছিল।গোপালগঞ্জে আওয়ামী স্বার্থরক্ষায় বিশেষ সফলতায় ওবায়েদুল কাদেরের একক হস্তক্ষেপে তাকে পরবর্তীতে নোয়াখালীতে স্থানান্তর করা হয়। কাদের পরিবারের আর্থিক লেনদেনের মূল দায়িত্বে ছিল এই শাকিরুল।
ট্রেইনিং এর নামে অর্থ পাচার যেভাবে করলো মাঈনুল :

গত ৫ই আগস্টের পর ট্রেনিং ও উচ্চশিক্ষার নামে বিভিন্ন মেয়াদে ৩০ কর্মকর্তার বিদেশ গমনের অনুমোদন ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। সড়ক সূত্রের তথ্যমতে, মূলত সরাসরি প্রধান প্রকৌশলী মঈনের তত্ত্বাবধানে এই ৩০ জন আওয়ামী সুবিধাভোগী কর্মকর্তার মাধ্যমেই শেখ পরিবার ও ওবায়দুল কাদেরের বিপুল অবৈধ অর্থ ইতোমধ্যেই বিদেশে পাচার করা হয়েছে। অর্থপাচারের সরাসরি যুক্ত হলেন মঈনুল হাসান। এজন্যই সড়কের একজন নিয়মিত সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার পরেও আওয়ামী বিশেষ মহলের সরাসরি হস্তক্ষেপে তাকে অধিকাংশ সময় ডেপুটেশনে বিভিন্ন পদে স্থানান্তর করা হয়। তাকে সংযুক্ত করা হয় মিনিস্ট্রি অফ ফরেন অ্যাফেয়ার্স এর ডিরেক্টর পদে। এরপর তাকে পোস্টিং করা হয় রোমের বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সিলর পদে। আওয়ামী সরকারের অর্থপাচার আরো নির্বিঘ্ন ও ত্বরান্বিত করতে তার সাথে পরবর্তীতে যুক্ত করা হয় তারই স্ত্রী ফেরদৌসী শাহরিয়ারকে। ফেরদৌসী শাহরিয়ারও বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডারের কর্মকর্তা। তিনি দীর্ঘদিন ওয়াশিংটন ডিসিতে ডেপুটি চিপ অফ মিশন হিসেবে বাংলাদেশের যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসে কর্মরত ছিলেন। কোন সরকারের বিশেষ নেক নজর ছাড়া আমেরিকার মতো দেশের দূতাবাসে ডেপুটি চিপ অফ মিশন হিসাবে কর্মরত থাকার সুযোগ নেই। তৎকালীন সরকারের সময় তাকে আমেরিকার নানা সভা, সেমিনার ও অনুষ্ঠানে আওয়ামী তথা শেখ হাসিনা বন্দনার বক্তব্য দিতেও দেখা যায়।
গুঞ্জন রয়েছে ওবায়দুল কাদেরের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের আমেরিকায় অর্থপাচার করত এই মঈন

যেভাবে ভোট কিনে মাঈনুল :

মঈনুল হাসানের আপন চাচাতো ভাই শামসুল আলম কচি মল্লিকপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি এবং নড়াইল জেলা পরিষদের আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত সদস্য। সাধারণ ব্যাংক কর্মকর্তা হিসাবে কর্মজীবন শেষ করলেও জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিটি ভোট দেড় থেকে দুই লাখ টাকায় কিনে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেন তিনি।

সওজের “মামা ভাগনে” জোন :

মঈনুল হাসানের ভাগনে সহকারী প্রকৌশলী সৈয়দ মুনতাসির হাফিজ সড়ক ডিপ্লোমা প্রকৌশলী সমিতির আওয়ামী প্যানেলের দুইবারের নির্বাচিত সভাপতি। এর আগেও ছিলেন একই সমিতির পর পর দুইবারের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক।
অভিযোগ রয়েছে সড়ক নিয়ন্ত্রণের জন্যই মঈনুলের বিশেষ হস্তক্ষেপই মুনতাসীরের উত্থান হয়। মধ্যম সারির যেকোনো কর্মকর্তার পদায়ন বা বদলিতে মঈনুল ভাগনে মুনতাসিরে আর্শিবাদপুষ্ট হতে হতো। বদলি কিংবা পদায়নে আর্থিক লেনদেন এর মূল দায়িত্বে থাকতো মুনতাসির। বদলি-পদায়নের মাধ্যমে অর্জিত অর্থ পরবর্তীতে জমা দেয়া হতো অর্থ সংগ্রাহক সিন্ডিকেট প্রধানের হাতে। বিরোধী মতাদর্শের মধ্যমসারির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শায়েস্তা করতে মুনতাসিরের ছক অনুযায়ী করা হতো ওএসডি কিংবা শাস্তিমূলক বদলি। এ কাজে তার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিল তৎকালীন আওয়ামী আর্শিবাদপুষ্ট প্রশাসন ও সংস্থাপনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আমানউল্লাহ্ ও ডিপ্লোমা সমিতির সদ্য বিদায়ী সেক্রেটারি মো. মনিরুল আলম। তাদের একক দৌরাত্ম্যে ঢাকা সড়ক জোন পরিণত হয় ‘মামাভাগ্নে জোনে’। প্রধান প্রকৌশলী মঈনুলের তত্ত্বাবধানে ডিপ্লোমা সমিতির ব্যানারে চলতো লোক দেখানো দুস্থদের মাঝে খাদ্য ও ত্রাণসামগ্রী বিতরণের নামে দেশব্যাপী শেখ হাসিনা বন্দনা।
এদিকে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চেয়ে সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের (সওজ)”র প্রধান সওজ সৈয়দ মঈনুল হাসান সাথে সওজের ওয়েবসাইটে দেয়া (০১৭৩…..৫০০) এই নাম্বারে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কোন সাড়া মেলেনি।

কার বলে বলিয়ান এলজিইডির বাবু

 

স্টাফ রিপোর্টার:
একসময় অভাবের কারণে বাবা আবদুল মোতালেবের হাত ধরে সেই শরীয়তপুর থেকে ঢাকায় আসেন শহিদুল। ঢাকায় এসে ঘাটি গাড়েন আগারগাঁও বিএনপি বস্তুিতে। জানা গেছে, এই বস্তুিতেই তার বেড়ে ওঠা। করতেন পাশপোর্ট অফিসের দালালি। এখন সে মারাত্মক নেতা। তার ভয়ে পিলে চমকাবে যে কারো। স্থানীয় কাউন্সিলর, মন্ত্রী থাকে তার পকেটে। অর্থাভাবে লেখা পড়া ঠিকমতো করতে না পারলেও এলজিইডির নিয়োগ পত্রে দাখিল করেছে বিএ পাশের সার্টিফিকেট। অথচ খোজ নিয়ে জানা গেছে সে তেমন লেখা পড়া করে নাই। যে কারণে দপ্তরে কানা ঘুষা হয় দেশে লেখা পড়া করা এতো বেকার যোগ্য যুবক থাকতে কিভাবে শহিদুল সরকারি চাকরিতে এখনও বহাল রয়েছে। সুত্র বলছে ২০১৩-১৪ সালে এলজিইডির সাবেক প্রধান প্রকৌশলী ওয়াহিদুর রহমানের আমলে প্রায় চার হাজার চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী চাকরি স্থায়ী করনের জন্য আদালতে মামলা দাখিল করে। ঠিক সেই সুযোগে চতুর শহিদুল নিজের নামটি (এইচপিপিপি) নামক ভূয়া প্রকল্পে ১৮-১১-১৯৯৯ সালে হিসাব সহকারী হিসেবে নাম ঢুকিয়ে দপ্তরটিতে জায়গা করে নেন। অথচ খোজ নিয়ে জানা গেছে এ ধরনের কোন প্রকল্পের অস্তিত্ব এ দপ্তরে কখনোই ছিলোনা। পরবর্তীতে দেশের সর্বোচ্চ আদালত চাকরি স্থায়ী করনের পক্ষে রিট মামলা/ সিপি নং ৩৫৩৬/২০১০, সিপি নং-৬০২/২০১১ ক্রমিক নং-১২ রায় দিলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গ্রামীণ সড়ক ও হাটবাজার অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক ২৩-১০-২০১২ তার নামটি স্থায়ী হয়। দেশের বেশির ভাগ সরকারি দপ্তরের তৃতীয়/ চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের কারনে বদনাম হচ্ছে স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানের। তারা রাজনীতির নাম ভাঙ্গিয়ে দপ্তরগুলোতে এক ধরনের সেচ্ছাচারি আধিপত্য বিস্তার করেছে। কেউ কেউ আবার একাধিক সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষসহ সবাইকে তটস্থ করে রেখেছে। অনেকেই আবার স্থানীয় মন্ত্রী এমপিদের সাথে ছবি তুলে সেই ছবি অফিসে বা বাসায় ঝুলিয়ে রেখে সাধারণ মানুষকে বুঝাতে চান মন্ত্রী এমপিদের সাথে তার চরম সম্পর্ক, তারে ছাড়া তাদের বাঁচা দায়। সে যদি তাদের রাজনীতি না করে তাহলে গদি বাঁচানোই সম্ভব না। ভাব ভংগিমাতেও এরা অনেক এগিয়ে। যে কারণে সাধারণ মানুষ তাদের কথায় আকৃষ্ট হয় খুব সহজে। চাকরি, বদলি, টেন্ডার পাইয়ে দেয়া তাদের কাছে কোন ব্যাপারইনা। এখানেই প্রতারিত হয় সাধারণ মানুষ। এভাবে ভুক্তভোগীদের অনেকেই নিঃস্ব হয়েছেন- এদের খপ্পরে পড়ে। কিছু কিছু দপ্তরে কোন ধরনের কর্মচারী ইউনিয়নের অফিস নেই অথবা অনুমতি নেই তারপরও তারা অত্র দপ্তরের সভাপতি/সাধারন সম্পাদক পরিচয় দিয়ে দপ্তরগুলোতে একধরনের ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। তাদেরই একজন এলজিইডির শহিদুল ইসলাম বাবু (হুজুর বাবু)। দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ’র অনুসন্ধানী টিম যায় তার জাতীয় পরিচয়পত্রে দেওয়া ঠিকানায়, সেখানে গিয়ে স্থানীয় লোকজন ও মেম্বার জাকির হোসেনের সাথে কথা হলে তারা কেউ তার পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেননি। এমনকি মুক্তারের চর ইউপি চেয়ারম্যান বাদশা শেখও একই কথা বলেছেন। তিনি বলেন বাবু কেন এ ধরনের প্রতারণার আশ্রয় নিলো কর্তৃপক্ষের বিষয়টি যাচাই করা উচিত। ইতিহাস থেকে জানা যায় দপ্তরটি ১৯৮৪ সালের অক্টোবরে ওয়ার্কস প্রোগ্রাম উইং রাজস্ব বাজেটের আওতায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল ব্যুরো (এলজিইবি) রূপে গঠিত হয়। ১৯৯২ সালের আগস্ট মাসে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) হিসেবে রুপান্তরিত করা হয়। প্রায় তিন দশকের স্বনামধন্য এ প্রতিষ্ঠানটিতে অনেক ভালো মানুষের আগমন যেমন ঘটেছে, তেমনি কিছু দুর্নীতি বাজের আগমনও ঘটেছে। যাদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের অর্থনীতি, বদনামও হয়েছে দপ্তরের। নিজ আখের গোছাতে কোন কৌশলই বাদ দিচ্ছেন না তারা। এবার পাওয়া গেল স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে (এলজিইডি) চীপের (প্রধান প্রকৌশলী) বিকল্প চীফ। নাম- শাহিদুল ইসলাম (বাবু), পিতা- আব্দুল মোতালেব, গ্রাম-শের আলী মাতবর কান্দি, ওয়ার্ড নং-৮, ইউনিয়ন-মোক্তারের চর উপজেলা-নড়িয়া, জেলা-শরিয়তপুর। পদবী – অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর, শ্রেণী-তৃতীয়, গ্রেড-১৬, বেতন পায় সাকুল্যে ২৬২৭৬ টাকা। অথচ হাকান দামী গাড়ী, আছে কোটি টাকা মূল্যের ফ্ল্যাট, নামে বেনামে জায়গা জমিসহ অনেক কিছু। চলনে বলনে মনে হবে কোন রাজা বাদশা। প্রধান প্রকৌশলীসহ দপ্তরটির কর্মকর্তা কর্মচারীদের তার হুকুম ছাড়া নড়াচড়া করার ক্ষমতা নেই বলে জানা যায়। কেনইবা যাবে, মাননীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী নাকি তার ডান হাত। বাবুর কথার বাহিরে নাকি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী এক পাওয়ো সামনে এগোয়না। তিনি বলে বেড়ান ১২তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাবু না থাকলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পাশ করার কোন সম্ভাবনাই ছিলোনা। আপনারা ছবি দেখে বোঝেননা তার সাথে আমার কি সম্পর্ক। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলজিইডির একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা বলে জানা গেছে, নিজ সার্থ হাসিলের জন্য সে অনেকের গায়ে হাতও তুলেছে। যে কারণে তার বিরুদ্ধে টুঁশব্দ করার সাহস পায়না কেউ। বাবু চাকরি করে নামে মাত্র কিন্তু তার মুল কাজ হলো বদলি, টেন্ডার বানিজ্য। জানা যায় বঙ্গবন্ধু পরিষদের নেতা পরিচয় দিয়ে বিএনপি জামায়ত ঘেষা এই কর্মচারী বছরের পর বছর আরসিসি ভবন (এলজিইডি) তে অফিসারদের মত এলজিইডির গুরুত্ব বিষয় সিদ্ধান্ত দিয়ে যাচ্ছে।
সামান্য একজন কর্মচারী যার শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং নিয়োগ নিয়েও রয়েছে নানা প্রশ্ন। এলজিইডির উর্ধ্বতন কর্মকর্তারতারা তার কথা না শুনলে সে কথিত বঙ্গবন্ধু পরিষদের নেতা পরিচয় দিয়ে কয়েকজন সন্ত্রাসী নিয়ে অফিসারদের ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের সঙ্গে দুরব্যবহারের মাধ্যমে জোরপূর্বক বিভিন্ন ধরনের কাজের ফায়দা লুটে নিচ্ছে। নিয়োগ বদলী বাণিজ্য ঠিকাদারী কাজের অনৈতিক সুবিধা নিতে সে অফিসারদের বিভিন্ন ভাবে নাজেহাল করে যাচ্ছে বলে জানা যায়। তার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না। বিভিন্ন কর্মচারীদের মামলা পরিচালনা ও চাকুরী স্থায়ী করার জন্য সে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে জানা গেছে। বিভিন্ন সুত্র বলছে বাবু অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর হলেও সে যে সার্টিফিকেট জমা দিয়েছে তা জাল। কম্পিউটার সম্পর্কে তার কোন ধারণাই নেই। এমনকি এলজিইডির ইঞ্জিনিয়াররা সরকারি বরাদ্দের গাড়ি না পেলেও ক্ষমতার দাপট খাটিয়ে ঢাকা মেট্রো-গ ১৫-৪৮১৯ গাড়িটা সে ব্যবহার করে। যা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে দপ্তরটিতে। তার ব্যক্তিগত গাড়ী ব্যবহারের বিষয়টি সরকারি প্রটোকলের সাথে যায়না বলেও অনেকে মনে করে। আর এসব অনৈতিক সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সুবিধা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর ছবি তার ছবির সাথে অফিস কক্ষে টাঙিয়ে দিনের পর দিন বীরদর্পে বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম করে যাচ্ছে শহিদুল। তার হেনস্তার ভয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ভুক্তভোগী দৈনিক সকালের সময়’কে জানিয়েছেন সবাই অফিসে আসে সকালে আর বাবুর অফিস শুরু হয় বিকেল ৪টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত। কেন এতো রাত পর্যন্ত অফিসে থাকে জানতে চাইলে অনেকেই বলেছেন বিভিন্ন ড্রাইভারের কাছে বাবু মাদক বিক্রি করে। তার পেশাগত কাজে খোজ খবর নিতে গত ১৬-০৫-২৪ বৃহস্পতিবার এলজিইডি ভবনে গেলে বাবুর হুকুমে আব্দুল মান্নানের নেতৃত্বে বেশ কিছু লোকজন তার উপর হামলা চালায় এতে কবির মারাত্মকভাবে আহত হয়। তারই প্রেক্ষিতে শেরেবাংলা নগর থানার এসআই ইমরুলের নেতৃত্বে একটি টিম গিয়ে তৎক্ষনাৎ এলজিইডিতে গিয়ে তাকে উদ্ধারসহ ঘটনার সত্যতা পায়। আঘাত পরবর্তী সময়ে কবির কে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। ভুক্তভোগী এব্যাপারে থানায় সাধারন ডাইরি দাখিল করেছেন। একজন তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী হয়ে সরকারি আচরণ বিধি লংঘন করে তার উপরের বড় বড় কর্মকর্তাদের ভাই সম্মোধন করেও কথা বলতে দেখা গেছে। এলজিইডিতে বৈধ কোন ট্রেড ইউনিয়ন না থাকলেও বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে শহিদুল ইসলাম ওরফে (হুজুর বাবু) এলজিইডির মত স্বনাম ধন্য প্রতিষ্ঠানকে নানা প্রশ্নের সম্মুখিন করছে। তার মত একজন কর্মচারীর আচরনে পুরো এলজিইডি ভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন বাবুর মত সন্ত্রাসী লোকের সরকারী চাকুরী করার যোগ্যতা অনেক আগেই হারিয়েছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ কেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করছে না তা রহস্য জনক। এ ব্যাপারে মন্তব্য জানতে বাবুর  নম্বরে একাধিকবার কল করলেও তিনি ফোন না ধরে কেটে দেন।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম