শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন, বিচার শুরু

ডেস্ক রিপোর্ট:

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।

মামলা থেকে আসামিদের অব্যাহতির আবেদন খারিজ করে বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ আদেশ দেন। এর মাধ্যমে শেখ হাসিনাসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হলো।

এদিনে সকালে অভিযোগ গঠনের শুনানি ঘিরে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

এর আগে, গত ৭ জুলাই ২০২৪ সালের জুলাইয়ে গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন বিষয়ে আদেশের জন্য আজকের তারিখ ধার্য করা হয়। মামলায় শেখ হাসিনার পাশাপাশি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন আসামি। আসামিদের মধ্যে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান পলাতক। তাদের পক্ষে আমির হোসেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী।

সেদিন অভিযোগ গঠন বিষয়ে ট্রাইব্যুনালের শুনানিতে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের অব্যাহতির আবেদন করেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন। মামলার অপর আসামি পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন গ্রেপ্তার আছেন।

গত ১ জুলাই জুলাই-আগস্টে গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের পক্ষে শুনানি শেষ করে প্রসিকিউশন।

সেদিন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন।

শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন। সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের পক্ষে আইনজীবী জায়েদ বিন আমজাদ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে জুলাই-আগস্টে গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য ১ জুলাই দিন নির্ধারণ করেন ট্রাইব্যুনাল।

নির্মম হত্যাযজ্ঞের সর্বোচ্চ শাস্তি চাইলেন অ্যাটর্নি জেনারেল

নির্মম হত্যাযজ্ঞের সর্বোচ্চ শাস্তি চাইলেন অ্যাটর্নি জেনারেল

ডেস্ক রিপোর্ট:

জুলাই আগস্ট আন্দোলনে ইতিহাসের যে নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছে তার সর্বোচ্চ শাস্তির আবেদন জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। রোববার (৩ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনালে সূচনা বক্তব্যে এ আবেদন জানান তিনি।

অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামান বলেন, আমরা শাস্তি চাই আইনি পরিকাঠামোয়। যে উপাদান প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে আনবে সেগুলো বিশ্লেষণ করে এবং সাক্ষ্য শুনে আগামী প্রজন্মের জন্য ন্যায়বিচার চাই। বিগত আমলে গুম খুনের পলিটিকাল কালচার সৃষ্টি হয়েছিল। বাংলাদেশের মানুষের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য এমন একটি ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা দরকার, যেখানে খুনের রাজনীতি বন্ধ হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে গুম খুন চাঁদাবাজি, টাকা পাচার করা হয়েছে। আর এর বিরুদ্ধেই ছিল বৈষম্যবিরোধী জুলাই আন্দোলন।

তিনি বলেন, স্বৈরাচারদের যদি কোনো সমিতি করা হয়, শেখ হাসিনা সেই সমিতির সভাপতি হতে পারেন। আর মিথ্যার পিএইচডি করার জন্য হিটলারও হয়তো শেখ হাসিনার কাছে আসতেন। আমাদের কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে ক্ষোভ নেই, আমরা অপরাধের বিরুদ্ধে এসেছি। আমরা ন্যায় বিচার চাই। দেশের মানুষের স্বপ্নের বিচার চাই। আমরা ন্যায় বিচার চাইব, ন্যায় বিচারের মধ্য দিয়েই আমরা সর্বোচ্চ শাস্তি চাইব। শেখ হাসিনার পাশাপাশি এই মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালও আসামি। এই মামলায় সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন আসামি হলেও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায় স্বীকার করে নিয়েছেন। এখন তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে বিবেচিত হয়েছেন। গত ১০ জুলাই শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে পাঁচটি অপরাধের আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (চার্জ) গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। একইসঙ্গে এ মামলায় প্রসিকিউশনের সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য ৩ আগস্ট এবং সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ৪ আগস্ট দিন ঠিক করা হয়। মামলায় সাক্ষী হিসেবে রয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টা ও জাতীয় দৈনিকের এক সম্পাদকসহ ৮১ জন। শেখ হাসিনা ও কামালের বিরুদ্ধে গণ-অভ্যুত্থানের সময় প্রায় দেড় হাজার মানুষকে হত্যার উসকানি, প্ররোচনা ও নির্দেশদান সুপিরিয়র কমান্ড রেসপনসেবলিটি এবং জয়েন্ট ক্রিমিনাল এন্টারপ্রাইজের মোট ৫ অভিযোগ আনা হয়েছে। আন্দোলনকারীদের ওপর মারণাস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেয়া সংক্রান্ত শেখ হাসিনার অডিও রেকর্ড এবং সাক্ষ্যপ্রমাণ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দাখিল করে প্রসিকিউশন।

এরপর প্রসিকিউশন বাদী হয়ে শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করে। প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছর ১৭ অক্টোবর শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম