রেললাইনের ওপর থেকে গৃহবধূর রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার

রেললাইনের ওপর থেকে গৃহবধূর রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার

কিশোরগঞ্জ রিপোর্ট:
কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার ছয়সূতী টিএনটি পাড়া সংলগ্ন রেললাইন থেকে সিমা বেগম (২২) নামের এক গৃহবধূর দ্বিখণ্ডিত লাশ উদ্ধার করেছে ভৈরব রেলওয়ে থানা পুলিশ। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সকালে স্থানীয়রা ওই গৃহবধূর দ্বিখণ্ডিত লাশ রেল লাইনের ওপর পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন।

সিমা বেগম উপজেলার টিএনটি পাড়া এলাকার বাসিন্দা শাহিন মিয়ার স্ত্রী। তার বাবার বাড়ি কুলিয়ারচর উপজেলার সালুয়া ইউনিয়নের মাইজপাড়া গ্রামে। সিমার স্বজনরা জানান, প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে পারিবারিকভাবে শাহিনের সঙ্গে সিমা বেগমের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে এক বছরের একটি সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে তার কলহ চলে আসছিল।

স্বজনরা জানান, এক সপ্তাহ বাবার বাড়িতে থাকার পর গত ২১ জুলাই সোমবার সিমা শ্বশুরবাড়ি ফেরত যায়। তবে সে শ্বশুর বাড়ি যেতে চায়নি, স্বামী তাকে জোরপূর্বক নিয়েছে বলে দাবি পরিবারের। তাদের অভিযোগ, সিমাকে হত্যা করে তার মরদেহ রেললাইনের ওপর ফেলে রাখা হয়েছে, যাতে এটি আত্মহত্যা হিসেবে প্রচার করা যায় এবং হত্যাকারীরা আইনের হাত থেকে বাঁচতে পারে।

এদিকে ঘটনার পর থেকেই সিমার স্বামী শাহিন, শ্বশুর ও শাশুড়ি ঘরে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে গেছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন, সিমা ও তার স্বামীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া-বিবাদ লেগে থাকত। সিমার মৃত্যু নিয়ে ধ্রম্রজালের সৃষ্টি হওয়ায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। প্রশাসনের প্রতি এলাকাবাসীর দাবি, ঘটনাটি যেন নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য উন্মোচন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

এ বিষয়ে ভৈরব রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সাইদ আহমেদ পিপিএম বলেন, মঙ্গলবার সকালে ছয়সূতী টিএনটি এলাকার রেললাইনের ওপর থেকে সিমা বেগম নামের এক গৃহবধূর দ্বিখণ্ডিত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এটি আত্মহত্যা না কি হত্যাকাণ্ড, তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে নিশ্চিত হওয়া যাবে। ওই গৃহবধূর পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

সমিতির আড়ালে চলছে চাঁদাবাজি

 

রায়হান হোসাইন, চট্টগ্রামঃ-

দোকান বানিজ্যের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে প্রতিনিয়তই রক্তক্ষয়ী সংঘাত ঘটছে পতেঙ্গা থানাধীন পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত বেড়িবাঁধ সংলগ্ন দুটি সংগঠনের চাঁদা উত্তোলনকে কেন্দ্র করে। ভাসমান দোকান থেকে চাঁদাবাজীকে উস্কে দেওয়ার ক্ষেত্রে
থানা পুলিশ ও টুরিস্ট পুলিশ প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
তথ্যমতে,দোকান মালিকদের জিম্মি করে প্রতিদিনই ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা চাঁদা আদায় করে নিজেদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। মূলত “পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত হকার ক্যামেরাম্যান সমবায় সমিতি লিঃ” ও “পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত দোকান মালিক সমবায় সমিতি লিঃ” নামক দুইটি কথিত সমবায় সমিতি আড়ালে এখানে দিনের পর দিন চলছে চাঁদাবাজি ও অপরাধকর্মকান্ড।

জানাযায়, কিশোরগ্যাং লিডার ওয়াহিদুল আলম ও সন্ত্রাসী মাইনুল ইসলামসহ তাদের নেতৃত্বে থাকা একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ ত্রাসেররাজত্ব কায়েম করেছে। তাদের বিরুদ্ধে মো. জুবায়ের নামক এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর অস্থায়ী দোকান স্থানীয় সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ কর্তৃক ভাঙচুর, লুট ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগে ৭ জনসহ ১০ থেকে ১২ জনকে অজ্ঞাত হিসেবে আসামী করে চীফ মেট্রোপলিটন হাকিমের আদালতে একটি ফৌজদারি অভিযোগ করেছেন। যার সি.আর মামলা নং সিআর -০৬/২৩

মো. জুবায়ের বলেন, তার আয়ের একমাত্র উৎস ভাসমান দোকানে স্থানীয় সন্ত্রাসী আসামী ১। ওয়াহিদুল আলম (৫৬), পিতা- মৃত আব্দুল জলিল, ২। মাইনুল ইসলাম (৩৮), পিতা- মৃত আব্দুল হক, ৩। আবদুল মজিদ (৪০), পিতা- এখলাছ মিয়া, ৪। আলমগীর হোসেন (৩২), পিতা- আব্দুল শুক্কুর, ৫। মোঃ হোসেন (৩৫), পিতা- মৃত ইসহাক মিয়া, ৬। শেখ আহমদ (৫০), পিতা- মৃত এজহার মিয়া, ৭। তাজুল ইসলাম (৪২), পিতা- মৃত নুর আহামদ, সহ তাদের লালিত ক্যাডার বাহিনীর আরো ১০/১২ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী একটি কথিত সংগঠনের নামে চাঁদারদাবীতে ২ দফায় তার দোকানে হামলা, ভাঙ্গচুরসহ তার অর্থ ছিনিয়ে নেয়।
তিনি আরো বলেন, গত ২৫ ডিসেম্বর ২০২২ সকাল আনুমানিক ৯ ঘটিকার সময় ১ম আসামী চিহ্নিত চাঁদাবাজ ও কিশোর গ্যাং লিডার ওয়াহিদুল আলম বেড়িবাঁধ সংলগ্ন তার অস্থায়ী দোকানে ৫০ হাজার টাকা দাবী করে। পরবর্তীতে তা না পেয়ে তাকে মারধর ও মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে ক্যাশে থাকা ১০ হাজার টাকা জোরপূর্বক নিয়ে যায়। এবং দ্রুত দোকান ছেড়ে চলে যাওয়ার আল্টিমেটাম দেয়। এরপরও মো. জুবায়ের দোকানটি না ছাড়ায় সর্বশেষ ২৮ ডিসেম্বর ২০২২ ইং তারিখ সকাল আনুমানিক ১১ ঘটিকায় ১নং আসামী ওয়াহিদুল আলমের নেতৃত্ব উপরোক্ত আসামীসহ বহিরাগত ১০/১২ জন সন্ত্রাসীরা দোকান ভাঙচুরসহ তাকে হত্যার চেষ্টা চালায় তবে পার্শ্ববর্তী দোকানদারদের বাধায় সন্ত্রাসীদের সে চেষ্টা ব্যর্থ হয় বলে জানান তিনি।
মো. জোবায়ের বলেন, টুরিস্ট পুলিশের সামনে তাকে এই হামলা করা হয়। হামলার শিকার হওয়ার পর তিনি পতেঙ্গা থানায় গেলে সেখান থেকে দীর্ঘক্ষন অপেক্ষার পরও মামলা বা অভিযোগ কোন আইনি সহায়তা না পেয়ে ন্যায্য বিচারের দাবীতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি।

হামলা, চাঁদাবাজিসহ হত্যার চেষ্টার বিষয়ে ১ নং আসামী ওয়াহিদুল আলমের মুঠো ফোনে আমাদের প্রতিবেদক যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আপনাদের সাথে কথা বলে কোন লাভ নাই আমার নিজের অনেক কাজ আছে বলে প্রতিবেদককে তার এলাকায় এসে কথা বলতে বলেন।
তিনি আরো বলেন, আমাদের সমিতির অনুমতি না নিয়ে রাতের অন্ধকারে জোবায়ের দোকান নির্মাণ করেছে। এসময় প্রতিবেদক দোকান বসাতে কেন সমিতির অনুমতি লাগবে এটি তো সরকারী জায়গা এই প্রশ্ন করলে তিনি এক পর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে পড়েন।

মো. জোবায়ের এর মামলার অভিযুক্ত ২নং আসামী মাইনুল ইসলাম আমাদের প্রতিবেদক কে বলেন, তিনি নিজেকে পতেঙ্গা থানা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও বিশ্ব মানচিত্র পত্রিকার প্রতিনিধিসহ ওয়ার্ল্ড ভিশন এবং একটি মানবাধিকার সংগঠনের সাথে জড়িত হিসেবে পরিচয় দেয়।
তিনি আরো বলেন, আমাদের যেহেতু ব্যবসা করার জায়গা দিয়েছে আমরা চাই জোবায়ের ব্যবসা করুক। তবে, প্রশ্নের জবাবে তিনি তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিষয়টি বারবার এড়িয়ে যান।

হামলার শিকার হওয়ার পরও মো. জুবায়ের থানা থেকে কোন আইনি সহায়তা না পাওয়ার অভিযোগের বিষয়ে পতেঙ্গা থানার তদন্ত কর্মকর্তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি চাঁদাবাজীসহ হামলার বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নেই বলে মন্তব্য করেন।

সি বীচ,পতেঙ্গা সৌন্দর্য নষ্ট করে বেড়িবাঁধের দোকানগুলোর পিছনে রয়েছে বড় অংকের লেনদেন। প্রতিটি দোকান বরাদ্দ দেওয়া হয় ৪০-৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত। যার প্রতিটা অংশ ভাগ বাটোয়ারা হয় নিজেদের মধ্যেই। সমবায় সমিতি গুলোর মূল কাজ যেন শুধু প্রকাশ্য চাঁদাবাজিকে ডেকে রাখা।

দোকান বানিজ্যসহ চাদাঁবাজির অভিযোগের বিষয়ে পতেঙ্গা সাব জোনের টুরিস্ট পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, আমরা প্রতিটি দোকানে কাউকে চাঁদা না দেওয়ার জন্য ইতিমধ্যে লিফলেট বিতরণ করেছি এবং সকল দোকানদারদের বলা হয়েছে কেউ চাঁদার দাবী করলে আমাদের তথ্যদিতে বলা হয়েছে বলে এ বিষয়ে তিনি আরো বলেন, কোন সমিতির নাম দিয়ে চাঁদা উত্তোলন না করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে যদি চাঁদা উত্তোলন করতে হয় তবে সমবায় অধিদপ্তর থেকে অনুমতিপত্র দেখাতে হবে বলে সমিতির সকলকেও জানানো হয়েছে।
তবে পতেঙ্গা বেড়িবাঁধ এলাকার আরো এক ভুক্তভোগী অভিযোগ করে বলেন, তাদের কাছ থেকে নিয়মিত সমিতি ও থানার কথা বলে দোকান ভেদে বিভিন্ন অংকের চাঁদা উত্তোলন করা হয়। তার মতে এই চাঁদার টাকা কোথায় খরচ হয় কই যায় জানেন না কোন ব্যবসায়ীরা।পতেঙ্গার গন্তব্যহীন চাঁদার লক্ষ লক্ষ টাকা এক ওপেন সিক্রেট বিষয়।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম