
ডেস্ক রিপোর্ট:
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ পরিদর্শনে গিয়ে অবরুদ্ধ থাকার কারণ জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। বুধবার (২৩ জুলাই) নিজের ভেরিফায়েড আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, মঙ্গলবার আমরা ৯ ঘণ্টা ধরে স্কুলে ছিলাম। চাইলে তার আগেও চলে আসতে পারতাম, কিন্তু উপদেষ্টারা সংকট সমাধানে শান্তিপূর্ণ পন্থা অবলম্বন করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিলেন।
তারা বলেছিলেন, যতক্ষণ দরকার, ততক্ষণ থাকবেন। আমরা কেবল তখনই স্কুল ত্যাগ করেছি, যখন সেটি প্রাসঙ্গিক ছিল। তিনি লেখেন, স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে মাইলস্টোন কলেজে একটি ‘কন্ট্রোল রুম’ স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই উপদেষ্টা। এই কন্ট্রোল রুমে প্রতিদিন নিহত ও আহতের সংখ্যা হালনাগাদ করা হবে এবং তা কলেজ রেজিস্ট্রার বইয়ের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হবে। উপদেষ্টারা পরামর্শ দিয়েছেন, এই প্রক্রিয়ায় কলেজের বর্তমান শিক্ষার্থী ও প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীদেরও সম্পৃক্ত করতে হবে। কন্ট্রোল রুমটি বুধবার থেকেই পুরোপুরি চালু হওয়ার কথা রয়েছে।
শফিকুল আলম লেখেন, মঙ্গলবার আপনাদের প্রার্থনা ও সহানুভূতির জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমরা মাইলস্টোন কলেজ পরিদর্শন করেছি। আমরা শোকাহত পরিবারগুলোর সঙ্গে দেখা করতে এবং সেইসব শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলতে, যারা এখনো এই মর্মান্তিক ঘটনার ধাক্কা সামলে উঠতে পারেননি। পুরো পরিবেশ ছিল শোক ও ক্ষোভে ভারাক্রান্ত। অনেক শিক্ষার্থী নিজের চোখে দেখা ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন এবং মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে বিভিন্ন তথ্যভ্রান্তির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
তিনি লেখেন, ২০০২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আমি অসংখ্য বড় দুর্ঘটনার সংবাদ কভার করেছি। সেই অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, বাংলাদেশে প্রাণহানির প্রকৃত সংখ্যা গোপন রাখা প্রায় অসম্ভব। সাধারণত দুর্ঘটনার পরপরই পরিবারগুলো প্রিয়জনকে নিখোঁজ হিসেবে জানায়। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতাল ও প্রশাসনিক সূত্র থেকে তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নিখোঁজদের অবস্থান শনাক্ত করা যায়। এ ঘটনাতেও মাইলস্টোন কলেজ কর্তৃপক্ষ চাইলে প্রতিদিনের উপস্থিতি তালিকা (অ্যাটেনডেন্স রেকর্ড) বিশ্লেষণ করে এখনো যাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, তাদের সুনির্দিষ্টভাবে শনাক্ত করতে পারবে।
তিনি আরও লেখেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ব্যক্তিদের অবস্থা সম্পর্কে নিয়মিত তথ্য দিচ্ছে। সামরিক বাহিনীও এই প্রচেষ্টায় সহায়তা করছে। আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, সরকারের পক্ষ থেকে প্রাণহানির সংখ্যা গোপন বা কম দেখানোর কোনো কারণ নেই। যারা এই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন তাদের প্রতি সহমর্মিতা জানাচ্ছি। এটি একটি জাতীয় ট্র্যাজেডি, এবং তারা সবাই শহীদ। আসুন, ভবিষ্যতে এ ধরনের মর্মান্তিক ঘটনা এড়াতে আমাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করি। সরকার জাতীয় নিরাপত্তা জোরদার করতে এবং আকাশপথে কোনো ধরনের দুর্ঘটনা শূন্যে নামিয়ে আনার লক্ষ্যে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।