
ডেস্ক রিপোর্ট:
বিশ্ব বাঘ দিবস ২০২৫ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনায় পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন বাঘ শুধু একটি বন্যপ্রাণী নয় এটি বাংলাদেশের গর্ব ও জাতিসত্তার প্রতীক। বাঘ সংরক্ষণে জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি এবং চোরা শিকারিদের বিরুদ্ধে সর্বশক্তি প্রয়োগে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বন ভবনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সচিবালয় থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সভার আয়োজন করে বন অধিদপ্তর।
উপদেষ্টা বলেন যেমন আমরা সুন্দরবন নিয়ে গর্ব করি তেমনি গর্ব করি রয়েল বেঙ্গল টাইগার নিয়েও। সাহস ভালোবাসা ও বীরত্বের প্রতীক হিসেবে আমরা বাঘকে দেখি। ক্রিকেটারদের টাইগার নামে ডাকাও সেই আবেগের বহিঃপ্রকাশ। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বাঘশুমারির তথ্য তুলে ধরে তিনি জানান ইতিবাচক কিছু উদ্যোগের ফলে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে যা আশাব্যঞ্জক। তবে হরিণ শিকারে নিয়ন্ত্রণ বারবার অগ্নিকাণ্ড রোধ এবং চোরা শিকার বন্ধে দীর্ঘমেয়াদি কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদ দেন তিনি।
রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন বাঘের মৃত্যু ও পাচারের মধ্যে সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। মানুষ বাঘ দ্বন্দ্ব বেড়েছে। এজন্য সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকায় সামাজিক সুরক্ষা বলয় গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। কারা প্রকৃত চোরাকারবারি আর কারা বিকল্প জীবিকার সুযোগ পেলে তা বেছে নেবে এই পার্থক্য নির্ধারণ করতে হবে। তিনি বলেন আমাদের ঐতিহ্য রক্ষা ও পরিবেশ সংরক্ষণের স্বার্থে বাঘ টিকিয়ে রাখতে হবে। এ জন্য সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ। সভাপতিত্ব করেন বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী। আলোচনায় অংশ নেন দেশ বিদেশের পরিবেশবিদ ও বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মধ্যে ছিলেন বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ ও দুবাই সাফারি পার্কের প্রাক্তন প্রিন্সিপাল ওয়াইল্ডলাইফ স্পেশালিস্ট ড. মোহাম্মদ আলী রেজা খান ওয়াইল্ডটিমের প্রধান নির্বাহী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম আইইউসিএন বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ বিপাশা হোসেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এম এ আজিজ খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক ইমরান আহমেদ এবং বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চলের বন সংরক্ষক মো. ছানাউল্যা পাটওয়ারী। অনুষ্ঠানে সুন্দরবনে সংঘাতপ্রবণ বাঘ ব্যবস্থাপনা নির্দেশিকা এবং টাইগারস্ অব দ্য সুন্দরবন শীর্ষক দুটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। পাশাপাশি সুন্দরবনভিত্তিক পটের গান পরিবেশন করেন স্থানীয় শিল্পীরা।