চট্টগ্রাম প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীর উপর হামলা

চট্টগ্রাম্ প্রতিনিধি।

প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের প্রথম সেমিস্টারে’র ছাত্রী ফারজানা আফরিন আক্তার’র উপর অতর্কিত ভাবে একদল সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। জানা যায়, ২৮ নভেম্বর (সোমবার) বায়েজিদ থানাদিন ড্রিমল্যান্ড আবাসিক এলাকার ৩০ নং প্লট গেইটের সামনে দুপুর সাড়ে ১১ঘটিকায় সময় সন্ত্রাসীরা গেইটের পকেট দরজায় কড়া নাড়লে আফরিন পড়ার টেবিল থেকে উঠে এসে পকেট দরজা খুলতেই পূর্বে থেকে উৎ পেতে থাকা ১০/১২ সন্ত্রাসীরা হাতে থাকা হাতুড়ি দিয়ে আফরিনের মাথায় আঘাত করলে তার চিৎকারে ঘর থেকে তার বাবা মাওলানা তাজুল ইসলাম ভূইয়া মেয়েকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসলে তার উপর হামলা চালায়। সন্ত্রাসীদের হামলা গুরুতর আহত হয় আফরিন ও তার মা জান্নাতুল ফেরদৌস, বাবা মাওলানা তাজুল ইসলাম ভূইয়া। বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাদিন রয়েছে। আহত তাজুল ইসলাম জানান চন্দনাইশ পৌরসভার পরাজিত কাউন্সিলর ও ছাত্রলীগ নেতা সাইফুল ইসলাম সাহেদের নেতৃত্বে ১০/১২ সন্ত্রাস এ হামলা চালায় এবং হামলা চালিয়ে যাওয়ার সময় চিৎকার করে বলতে থাকেন আমরা আবু মো. মহিউদ্দিনের লোক তুরা এখানে কিভাবে থাকস আমরা দেখে নিবো। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এখনো থানায় কোন মামলা হয়নি বলে জানা যায়।

নিজেই মাদকাসক্ত মাদক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা; মাসে মাসোহারা আদায় ৭লাখ!

 

নিজস্ব প্রতিবেদক;
দুর্নীতি, অনিয়ম, মাসোহারা, ঘুষ বাণিজ্য, সাধারণ মানুষকে হয়রানি, জুয়া, নারীবাজীসহ অন্তহীন অভিযোগে অভিযুক্ত কুমিল্লা জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক শরিফুল ইসলাম।
মোটা অংকের টাকা ও আওয়ামীলীগের তৎকালীন প্রভাবশালী এক মন্ত্রীর তদবিরে ডিএনসির চাকরী জীবনের শুরু সহকারী প্রসিকিউটর হিসেবে। এরপর কর্মজীবনে সেই মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে ভালো ভালো জায়গায় পোস্টিং নিয়ে হয়েছেন আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ। এছাড়াও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক জামাল উদ্দিনের স্ত্রীকে ভার্সিটির বড় বোন ডেকে সখ্যতা তৈরি করেন। কর্মক্ষেত্রে সেই প্রভাব বিস্তারসহ নানান অনিয়মের মাধ্যমে কামিয়েছেন বেসুমার। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পোস্টিং নিয়ে বেপরোয়া দুর্নীতি ও নির্দোষ মানুষকে হয়রানিসহ নানা ভাবে অবৈধ অর্থ অর্জনের সীমাহীন অভিযোগ রয়েছে কুমিল্লা ডিএনসিতে কর্মরত এই শরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে। মাদকপ্রবন জেলা ফেনী, মৌলভীবাজার, চুয়াডাঙ্গার কেরু এন্ড কোং, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া ও বর্তমান কুমিল্লাসহ যেখানই চাকরি করেছেন সেখানেই বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন শরিফুল। আওয়ামী দোসর শরিফুল বিগত সময়ে সহকর্মীদের সাথে অসদাচরণের কারনেও নানা ভাবে সমালোচিত হন বহুবার। সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন রেষ্ট হাউজ ও আবাসিক হোটেলে তার নারীবাজীর চিত্রও উঠে এসেছে অনুসন্ধানে।
জানা যায় ক্ষমতার অপব্যবহার ও তদবিরে সহকারী প্রসিকিউটর হিসেবে যোগদান করলেও, মোটা অঙ্কের টাকা খরচ করে এখনো পরিদর্শক হিসেবে চাকুরীর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন শরিফুল ইসলাম। এছাড়া মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম নিজেই মাদকাসক্ত বলেও জানা গেছে অনুসন্ধানে।

দীর্ঘ অনুসন্ধানে জানা যায়, তার কর্মজীবন নানান অনিয়ম, দুর্নীতি ও অপকর্মে ভরপুর। তিনি যখনই যে কর্মস্থলে ছিলেন সেখানেই জড়িয়ে পড়েন নানাবিধ অপকর্মে। কুমিল্লায় বর্তমান কর্মস্থলে যোগদান করার পরেই তিনি বিভিন্ন মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে নানা ভাবে সখ্যতা গড়ে তোলেন। নগরীর ধর্মপুরের নারী মাদক ব্যবসায়ী নার্গিসের কাছ থেকে প্রতি মাসে ত্রিশ হাজার, একই এলাকার সাফিয়ার কাছ থেকে বিশ হাজার, বাদশা মিয়ার বাজারের অবৈধ চোলাই মদ ব্যবসায়ী লাল চাঁন মিয়ার স্ত্রী’র থেকে প্রতি মাসে পয়তাল্লিশ হাজার টাকা মাসোহারা নেন। এছাড়াও জেলার ব্রাহ্মণপাড়া, বুড়িচং, সদর দক্ষিণ, চৌদ্দগ্রামসহ বিভিন্ন মাদকের স্পট ও সীমান্তের চিহ্নিত মাদক কারবারিদের থেকে মাসে অন্তত পাঁচ থেকে ৭ লক্ষাধিক টাকা মাসোহারা আদায় করেন। এসব মাসোহারা আদায়ে তার অন্যতম সহযোগী হিসেবে রয়েছে সহকারী উপপরিদর্শক কামরুল হাসান।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, তিনি প্রায়ই বিভিন্ন নারী ও জেলার সুন্দরী নারী মাদক কারবারিদের নিয়ে কুমিল্লাস্থ বিভিন্ন আবাসিক হোটেল ও সরকারি গেস্ট হাউজে স্ত্রী পরিচয় দিয়ে রাত্রি যাপন করেন। গেলো কদিন আগেও কুমিল্লা শাসনগাছা এলাকায় কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের গেস্ট হাউজে কথিত স্ত্রী পরিচয়ে এক নারীকে নিয়ে রাত্রি যাপন করেন। এর আগে গত ফেব্রুয়ারীর মাঝামাঝি সময়ে আলেখারচর এলাকায় একটি আবাসিক হোটেলে অপর নারীকে নিয়েও রাত্রি যাপনের তথ্য প্রমাণ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

একাধিক নারীর সাথে অবৈধ সম্পর্ক ও এসব নারী ঘটিত কার্যকলাপ তার বিবাহিত স্ত্রী টের পেয়ে এসবের প্রতিবাদ করায় দীর্ঘদিন ধরেই সংসারেও চলছে অশান্তি। পরনারীতে আসক্ত শরিফুল প্রায়শই তার বিবাহিত স্ত্রী’কে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন। স্ত্রী নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে গত বছট ৬ জুলাই কুমিল্লার কোতয়ালী মডেল থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করেন। তবে তৎকালীন আওয়ামী এই দোসর শরিফুল সরকারের ক্ষমতা ও টাকার জোরে ধামাচাপা দিয়ে ম্যানেজ করেন থানার তদন্ত কর্মকর্তাকে। এসব নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করলে ভুক্তভোগী স্ত্রী’কে তালাক হত্যা ও তার বাবাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে দমিয়ে রেখেছেন শরিফুল। জামালপুরে কর্মরত কালীন সময়েও স্ত্রীকে শারিরীক নির্যাতনের কারণে তার শশুর অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা তৎকালীন ময়মনসিংহ বিভাগীয় অতিরিক্ত পরিচালকের কাছেও অভিযোগ দায়ের করেন। তবে অদৃশ্য কারণে বিচার চেয়েও বিচার পাননি ভুক্তভোগী।

বিশ্বস্ত সূত্রের তথ্য মতে, তিনি প্রায়ই মাদক সেবন করে তার স্ত্রীর উপর অমানুষিক শারিরীক নির্যাতন চালান। বিভিন্ন স্পট ও মাদক কারবারিদের থেকে মাসোহারা নেয়ার পাশাপাশি মাদকও গ্রহণ করেন শরিফুল।
এছাড়াও জানা যায় শরিফুল ঢাকার বিভিন্ন ক্লাবে ও কুমিল্লার বিভিন্ন স্থানে নিয়মিত জুয়া ও ক্যাসিনোর আসরে বসেন।

আওয়ামী দোসর পরিদর্শক মো: শরিফুলের ক্ষমতার দাপটে তার বিগত ২১ সালে ১২ অক্টোবর মৌলভীবাজার জেলার বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু করার নির্দেশ প্রদান করলেও অদ্যাবধি তার বিরুদ্ধে কোন বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। বিষয়টি নিয়ে অধিদপ্তরের বেশকিছু কর্মকর্তা/কর্মচারীদের মধ্যেও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়ে আছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শরিফুল মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেছেন। আর এসব কথা তিনি নিজেই সহকর্মীদের কাছে গর্ব করে প্রকাশ করেন।

অভিযোগ রয়েছে, তিনি মাদকাসক্ত মানসিক বিকারগ্রস্ত ও মাদকাসক্ত একজন মাদক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা। কর্মক্ষেত্রে মাঝে মাঝেই তিনি উশৃংখল আচরণ করেন। তিনি কাউকেই সম্মান করে কথা বলেন না। ফেনিতে কর্মকালীন তিনি বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের’কে তুমি ও ভাই বলে সম্বোধন করতেন। এর ফলে বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ তৎকালীন জেলা প্রশাসক বরবার নালিশ করলে জেলা প্রশাসক তাকে ডেকে নিয়ে তিরস্কার ভৎর্সনা করেন। এর ফলে সেখানে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সাথে জেলা প্রশাসনের দুরুত্ব তৈরি হলে মাদক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয় বলেও জানা যায়।

সম্প্রতিক সময়ে অনুসন্ধানে শরিফুলের নানা অনিয়মের তথ্য প্রমাণ সাংবাদিকদের সামনে এলে ঢাকা বা পুরোনো অন্য কর্মস্থলে বদলীর জন্য জোর তদবির চালাচ্ছেন বলেও জানা গেছে।
এদিকে, মাদকাসক্ত দুর্নীতিবাজ স্বেচ্ছাচারী পরিদর্শক শরিফুল ইসলামের অনিয়ম, ঘুষ বাণিজ্য, মাসোহারা ও মাদক কারবারিদের সাথে সখ্যতাসহ নানা কারনে কুমিল্লা জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্যক্রমে নেমে এসেছে স্থবিরতা। বেপরোয়া হয়ে উঠেছে মাদক কারবারিরা। তার এসব অপকর্মের বিষয়ে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কুমিল্লা কার্যালয়ের কর্মকর্তা কর্মচারীদের মোটামুটি সকলেই অবগত থাকলেও ভয়ে তার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কথা বলেতে রাজি নয় কেউই। জেলাজুড়ে মাদক কারবারিদের সাথে শরিফুলের সখ্যতায় দীর্ঘদিন ধরেই জেলায় মাদক বিরোধী কর্মকাণ্ড নেই বললেই চলে।

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কুমিল্লা জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক শরিফুল ইসলাম বলেন, সব অভিযোগ সত্যি নয়। এছাড়া সংবাদটি প্রকাশ না করার শর্তে তিনি প্রতিবেদককে ভিন্ন উপায়ে ম্যানেজের চেষ্টাও করেন।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম