
রংপুর জেলা প্রতিনিধি:
রংপুরের তারাগঞ্জে সনাতন ধর্মাবলম্বী দুইজনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। একইসঙ্গে এ ঘটনায় ন্যায়বিচার দাবি করেছে সংস্থাটি।
সোমবার (১১ আগস্ট) এক বিবৃতিতে আসক এ দাবি জানায়।
গণমাধ্যমের বরাতে জানা যায়, গত ৯ আগস্ট উপজেলার ঘনিরামপুর এলাকার রুপলাল দাস (৪০) ও মিঠাপুকুর উপজেলার প্রদীপ দাসকে (৩৫) ভ্যান চোর সন্দেহে স্থানীয়রা পিটিয়ে হত্যা করেন। সম্পর্কে তারা ভাগনি জামাই ও শ্বশুর।
রুপলাল দাস জুতা সেলাইয়ের কাজ করতেন এবং প্রদীপ দাস ভ্যানচালক ছিলেন। রুপলালের মেয়ের বিয়ের দিন ঠিক করার জন্য প্রদীপ দাস ভ্যান চালিয়ে আত্মীয়ের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। পথে বটতলা এলাকায় স্থানীয়রা তাদের থামিয়ে সন্দেহজনকভাবে পিটিয়ে হত্যা করে।
এ হত্যার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে আইন ও সালিশ কেন্দ্র বলছে, আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে হত্যা করা দেশের আইনের শাসন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল। সংবিধানের ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদে প্রত্যেক নাগরিকের আইনগত সুরক্ষা ও জীবন রক্ষার অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে, যা এখানে ভঙ্গ হয়েছে।
আসক বিবৃতিতে জানায়, এ ধরনের গণপিটুনির ঘটনা দেশে ধারাবাহিকভাবে ঘটছে, যা জনগণের মধ্যে গভীর নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি করেছে। শুধু ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত কমপক্ষে ১১১ জন মব সন্ত্রাসের শিকার হয়েছেন এবং নিহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ এবং নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও নিরাপত্তা দেওয়ার দাবি জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র। পাশাপাশি সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তারা আহ্বান জানিয়েছে, সংঘবদ্ধ প্ররোচনামূলক কর্মকাণ্ডে জড়িতদের ছাড় দেওয়া যাবে না, তাদের শনাক্ত করে কঠোরভাবে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। কারণ এ ধরনের ঘটনা মানবাধিকারের ভিত্তিকে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত করে।