রামগড় পাহাড়ের প্রান্তে এক সম্ভাবনাময় জনপদ

মোঃমাসুদ রানা,খাগড়াছড়ি জেলা প্রতিনিধিঃ

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তে, খাগড়াছড়ি জেলার দক্ষিণে অবস্থিত একটি ছোট্ট উপজেলা রামগড়। এখানকার প্রকৃতি পাহাড়ি, অথচ সমতলের ছোঁয়াও আছে। সীমান্তবর্তী এই জনপদের একদিকে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য, অন্যদিকে বাংলাদেশের ফেনী জেলা। পাহাড় আর সীমান্ত ঘেরা এই জনপদের পরিচয় যেন বহুমাত্রিক ভৌগোলিক, ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক এবং অর্থনৈতিক সম্ভাবনার এক অনবদ্য মিশেল।
রামগড় উপজেলা গঠিত হয় ১৯৮৩ সালে, কিন্তু তার ইতিহাস অনেক পুরনো। এখানকার ভূপ্রকৃতি ও জনজীবন প্রাচীনকাল থেকেই ভিন্নধর্মী। পাহাড়ি জনগোষ্ঠী চাকমা, ত্রিপুরা, মারমা সমতলের বাঙালি বসতি মিলে রামগড়ে তৈরি হয়েছে এক বিচিত্র সামাজিক বিন্যাস। ফেনী নদী রামগড়কে বিভক্ত করে রেখেছে বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ড ও ত্রিপুরার সঙ্গে, আর সেই নদীর বুকেই এখন গড়ে উঠছে এক আন্তর্জাতিক স্থলবন্দর।

রামগড়ের জনসংখ্যা প্রায় ৭০ হাজার, এখানকার অধিকাংশ মানুষ কৃষিজীবী। পাহাড়ি জমিতে আনারস, আদা, হলুদ আর জুম চাষ হয় বছরের বড় একটি সময়জুড়ে। অন্যদিকে সমতলের মানুষ ধান চাষ আর হাট বাজার ভিত্তিক ব্যবসা-বাণিজ্যে নিয়োজিত। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে, এত সম্ভাবনার পরও রামগড়ের অর্থনৈতিক অবস্থা বেশ দুর্বল। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে ঘাটতি, সড়ক যোগাযোগের সমস্যা এবং সীমান্তবর্তী ঝুঁকি—সব মিলিয়ে রামগড় এক ধরনের উন্নয়ন বঞ্চনার চিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে।

রামগড়ের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য তার সীমান্ত ঘেঁষা চরিত্র। এখান থেকে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সাবরুম শহর মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে। দুই দেশের মধ্যে একসময় ছিল মানুষের যাতায়াত, পারস্পরিক বাজার, আত্মীয়তার সম্পর্ক। এখন সীমান্তের কাঁটাতার সবকিছু আলাদা করে দিয়েছে। তবুও এখান থেকে স্থলবন্দর গড়ে ওঠার সম্ভাবনা অনেক দূর এগিয়েছে। ২০১৭ সালে রামগড়-সাবরুম স্থলবন্দরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। এটি পুরোপুরি কার্যকর হলে দুই দেশের মধ্যে একটি নতুন বাণিজ্যিক দ্বার খুলে যাবে।

রামগড় শুধু সীমান্ত নয়, এটি এক ধরনের সংস্কৃতি ও সম্প্রীতির কেন্দ্র। এখানকার পাহাড়ি-বাঙালি সহাবস্থান অনেকটা অনন্য। যদিও অতীতে কিছু সহিংস ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু বর্তমানে সামাজিক সম্পর্ক স্বাভাবিক এবং শান্তিপূর্ণ। ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের ‘গরিয়া পূজা’ হোক বা বাঙালি মুসলমানদের ঈদ, কিংবা মারমাদের ‘ওয়াগেইন উৎসব’—সবই রামগড়ে মিলেমিশে উদযাপিত হয়।

তবে রামগড়ের সবচেয়ে বড় অভাব হলো অবকাঠামো ও সেবাব্যবস্থার উন্নয়ন। বিদ্যুৎ, স্বাস্থ্য, পানীয়জল এবং শিক্ষার অভাবে মানুষ প্রতিনিয়ত কষ্ট করছে। সীমান্তবর্তী এলাকার বিশেষ চাহিদা থাকলেও জাতীয় নীতিমালায় সেগুলো বারবার উপেক্ষিত। ফলে রামগড়ের মানুষ প্রতীক্ষায় থাকে—কখন উন্নয়নের ছোঁয়া তাদের পাহাড়ি জনপদে এসে পৌঁছাবে।

কিডনি ড্যামেজ হওয়ার লক্ষণ

স্টাফ রিপোর্টার: কিডনির স্বাস্থ্যের কথা বলতে গেলে, বেশিরভাগ মানুষই কোমরের ব্যথা এবং প্রস্রাবের পরিবর্তনের মতো সাধারণ লক্ষণগুলো সম্পর্কে সচেতন। তবে কিডনির ক্ষতি অস্বাভাবিক উপায়ে প্রকাশ পেতে পারে যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই উপেক্ষা করা হয়। সেই প্রাথমিক সতর্কতা লক্ষণগুলো সনাক্ত করতে পারলে তা জটিলতা প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। চলুন জেনে নেওয়া যাক কিডনি ড্যামেজ হওয়ার কিছু লক্ষণ সম্পর্কে-

মুখের মধ্যে ধাতব স্বাদ

দীর্ঘস্থায়ী ধাতব স্বাদ বা মুখে দুর্গন্ধ কিডনির ক্ষতির লক্ষণ হতে পারে। এটি রক্তপ্রবাহে বিষাক্ত পদার্থ জমা হওয়ার কারণে ঘটে, যা ইউরেমিয়া নামে পরিচিত। যা স্বাদ উপলব্ধি এবং নিঃশ্বাসের গন্ধকে পরিবর্তন করে।

চুলকানি এবং শুষ্ক ত্বক

যদিও ত্বকে চুলকানি বিভিন্ন কারণে হতে পারে, তবে ক্রমাগত শুষ্কতা এবং জ্বালা কিডনির কর্মহীনতা নির্দেশ করতে পারে। কিডনি খনিজ এবং তরল ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। কিডনি ড্যামেজ হতে শুরু করলে ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাসের ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি করতে পারে, যার ফলে ত্বকের গুরুতর সমস্যা দেখা দিতে পারে।

অস্বাভাবিক স্থানে ফোলাভাব

এটি কিডনি রোগের একটি সুপরিচিত লক্ষণ, তবে এটি সবসময় গোড়ালি এবং পায়ের মতো স্থানে দেখা যায় না। মুখ, হাত, এমনকি চোখের চারপাশে ফোলাভাব কিডনির কার্যকারিতা হ্রাসের একটি প্রাথমিক সতর্কতা লক্ষণ হতে পারে।

শ্বাসকষ্ট

হালকা কাজের পরে যদি বাতাসের জন্য হাঁপাতে থাকেন, তবে এটি কিডনির ক্ষতির সঙ্গে সম্পর্কিত হতে পারে। কিডনি শরীরে তরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং সঠিকভাবে কাজ না করলে ফুসফুসে অতিরিক্ত তরল জমা হতে পারে, যার ফলে শ্বাস নিতে অসুবিধা হয়।

ক্লান্তি

দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগের ফলে লোহিত রক্তকণিকা উৎপাদন কমে যেতে পারে, যার ফলে রক্তস্বল্পতা দেখা দিতে পারে। এর ফলে মস্তিষ্ক এবং পেশীতে অক্সিজেন সরবরাহ কমে যায়। যার ফলে ক্রমাগত ক্লান্তি এবং মনোযোগ দিতে সমস্যা দেখা দেয়।

ঘন ঘন পেশীতে খিঁচুনি

ক্যালসিয়ামের কম মাত্রা এবং ফসফরাসের উচ্চ মাত্রার মতো ইলেক্ট্রোলাইট ভারসাম্যহীনতা ঘন ঘন পেশীতে খিঁচুনি সৃষ্টি করতে পারে। যদি আপনি কোনো আপাত কারণ ছাড়াই এই সমস্যাগুলো অনুভব করেন, তাহলে কিডনির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে নিন।

সব সময় ঠান্ডা লাগা

কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা উষ্ণ পরিবেশেও অস্বাভাবিক ঠান্ডা লাগার কথা জানান। এটি রক্তস্বল্পতার সঙ্গে সম্পর্কিত। যা টিস্যুতে অক্সিজেন সরবরাহ কমিয়ে দেয়, এর ফলে ক্রমাগত ঠান্ডা লাগার অনুভূতি হয়।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম