ক্লাস পরীক্ষা শুরুর আশ্বাসে আন্দোলন থেকে সরলেন বাকৃবির শিক্ষার্থীরা

ক্লাস পরীক্ষা শুরুর আশ্বাসে আন্দোলন থেকে সরলেন বাকৃবির শিক্ষার্থীরা

ময়মনসিংহ সংবাদদাতা:

হল ছাড়ার নির্দেশনা প্রত্যাহার, এক সপ্তাহের মধ্যে ক্লাস ও পরীক্ষা শুরুর আশ্বাসে আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) রাতে পাঁচ ঘণ্টার আলোচনা শেষে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আপাতত কর্মসূচি বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন। তবে যে দাবিতে তারা আন্দোলনে নেমেছিলেন সেই সমন্বিত বা কম্বাইন্ড ডিগ্রির বিষয়ে এখনই কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। এ বিষয়ে সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হবে বলে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পাঁচ ঘণ্টার আলোচনা শেষে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক শহীদুল হক।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি এএইচ এম হিমেল বলেছেন, এসব আশ্বাসে বুধবারের আন্দোলন প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর ব্যাত্যয় হলে আবার কর্মসূচি দেওয়া হবে।
সমন্বিত ডিগ্রির দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর বহিরাগতদের হামলার পর উপাচার্যের ক্ষমা চাওয়া ও হামলাকারী বহিরাগতদের গ্রেপ্তারসহ ছয় দফা দাবির নতুন কর্মসূচি নিয়ে আন্দোলন শুরু করেছিলেন বাকৃবির শিক্ষার্থীরা।

দ্বিতীয় দিনের মতো তারা ঢাকা-ময়মনসিংহ রেললাইন অবরোধ করেছিলেন। পরে সেখান থেকে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ গিয়ে ব্যাংকের শাখা এবং ট্রেজারি ভবনে তালা দেয়।
এমন প্রেক্ষাপটে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ৪০ সদস্যের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে নিঃশর্ত আলোচনায় বসেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কৃষি অনুষদের হল রুমে রাত ১২টা পর্যন্ত চলে আলোচনা। আলোচনায় জুমে অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ কে এম ফজলুল হক ভূঁইয়া।

দীর্ঘ পাঁচ ঘণ্টার আলোচনা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক শহীদুল হক বলেন, ছাত্র-শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনা ফলপ্রসু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে শিক্ষার্থীদের হলে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। বুধবার সিন্ডিকেট মিটিংয়ের মাধ্যমে হল ত্যাগের নির্দেশনা প্রত্যাহার করা হবে। এক সপ্তাহের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে কর্তৃপক্ষের প্রতিশ্রুতিও শিক্ষার্থীদের দেওয়ার কথা তুলে ধরেন তিনি। কম্বাইন্ড ডিগ্রির বিষয়ে তিনি বলেন, আপাতত তিন ডিগ্রি অর্থ্যাৎ একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে। আর অন্যান্য বিষয়ে সিন্ডিকেট সভায় সিদ্ধান্ত হবে।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি এ এইচ এম হিমেল বলেন, সভায় কর্তৃপক্ষের তরফে চলমান আন্দোলনের দাবিগুলোর বিষয়ে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। এরপর তারা বুধবারের কর্মসূচি থেকে সরে আসার কথা বলেছেন। সভায় নেওয়া সিদ্ধান্তের বিষয়ে তিনি বলেন, হল ছাড়ার নির্দেশনা প্রত্যাহার, এক সপ্তাহের মধ্যে ক্লাস-পরীক্ষা স্বাভাবিক করা, বহিরাগতদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের হয়রানি না করা এবং কম্বাইন্ড ডিগ্রি নিয়ে সিন্ডিকেট সভায় আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়ে সভায় সবার সম্মতি এসেছে। ভেটেরিনারি অনুষদ এবং পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থীদের প্রায় এক মাস ধরে কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবিতে আন্দোলন চলছিল। দুই অনুষদের ডিগ্রিকে একীভূত করে একটি সমন্বিত ডিগ্রি দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিলেন শিক্ষার্থীরা।

গত রোববার একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় বিষয়টি সমাধান না হওয়ায় দুপুর ১টার দিকে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনে উপাচার্যসহ প্রায় ২০০ শিক্ষক-কর্মকর্তাকে আটকে রেখে তালা মেরে দেন শিক্ষার্থীরা। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপাচার্যের বাসভবনের পাশ থেকে ২৫০-৩০০ জন বহিরাগত দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করে। শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়লে বহিরাগতরা তালা ভেঙে দিলে অবরুদ্ধ শিক্ষকরা বেরিয়ে যায়। এসময় সাংবাদিক শিক্ষার্থীসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়। এমন পরিস্থিতিতে রোববার রাত সাড়ে ৯টায় অনলাইনে অনুষ্ঠিত জরুরি সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্তে অনির্দিষ্টকালের জন‍্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়। সব ছাত্র-ছাত্রীকে সোমবার সকাল ৯টার মধ্যে হল ত‍্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়। এ সিদ্ধান্ত না মেনে পরদিন হল না ছেড়ে আন্দোলন চালিয়ে যেতে থাকেন তারা।

প্রসূতিকে স্বাভাবিক প্রসব করাতে গিয়ে,নবজাতকের মৃত্যু

প্রসূতিকে স্বাভাবিক প্রসব করাতে গিয়ে,নবজাতকের মৃত্যু

জামালপুর জেলা সংবাদদাতা: জামালপুর শহরে প্রসূতিকে স্বাভাবিক প্রসব করাতে গিয়ে নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (৫ জুলাই) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে পৌর শহরের পশ্চিম ফুলবাড়িয়া এলাকার নগর মাতৃসদন কেন্দ্রে ওই নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নগর মাতৃসদন কেন্দ্রের নার্স ও আয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ফয়সল মো. আতিক।

প্রসূতি নওরিন জান্নাত মৌ (২১) সদর উপজেলার নারিকেলি এলাকার সোহেল আনসারীর স্ত্রী।

নবজাতকের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় নওরিন জান্নাত মৌয়ের (২১) প্রসববেদনা উঠলে জামালপুর পৌর শহরের নগর মাতৃসদন কেন্দ্রে ভর্তি করে তার পরিবারের লোকজন। ওই সময় নগর মাতৃসদন কেন্দ্রে কোনো গাইনি চিকিৎসক ছিলো না। পরে শনিবার ভোররাতে স্বাভাবিক প্রসবের চেষ্টা করেন নার্স শিরিন আক্তার ও আয়া ময়না বেগম। এ সময় ওই নবজাতকের মৃত্যু হয়। ঘটনার পর থেকে হাসপাতালের পরিচালকসহ অন্যান্যরা গা ঢাকা দিয়েছেন।

নিহত নবজাতকের চাচা সৌরভ বলেন, ‘এখানে এসে দেখি বাচ্চার গলায় ছিলে গিয়েছে, নাক দিয়ে রক্ত ঝরছে। এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচাই চাই।’

নিহত নবজাতকের বাবা সোহেল আনসারী বলেন, ‘হাসপাতালে কোনো ডাক্তার ছিলেন না। নার্স ও আয়া দুইজন মিলে টেনেহিঁচড়ে বাচ্চা বের করছেন, এজন্য শিশুটি মারা যায়। বাচ্চার শরীরে একাধিক জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।’

এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের বক্তব্য নেওয়ার জন্য নগর মাতৃসদন কেন্দ্রে গেলে কাউকে পাওয়া যায়নি। তাদের মোবাইলে কল দিলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এ ঘটনায় পরিস্থিতি বিবেচনায় নার্স ও আয়াকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

জামালপুরের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আজিজুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘নবজাতকের মৃত্যুর খবর শুনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে সত্যতা পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম